প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু চাহিদা থাকে। চাহিদা ছাড়া কোন মানুষ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। পার্থক্য এই, কারও চাওয়া বেশি, কারও চাওয়া কম; কিছু চাওয়া নির্দোষ, কিছু চাওয়া খারাপ, ভুল বা অপরাধ। আমিও মানুষ। আমারও অনেক চাওয়া আছে। বোধ হয় তার পরিমাণ একটু বেশিই। তবে স্রষ্টার অশেষ কৃপায় বেশিরভাগ চাওয়াই আমার পূরণ হয়েছে। তিনি মনে হয় আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। 'মনে হয়' বলাটা ঠিক না, তিনি আসলেই আমাকে অনেক বেশি ভালবাসেন। তাই আমার ছোটবড় বেশিরভাগ চাওয়াই তিনি পূরণ করেছেন।
মানুষের অনেক রকম চাহিদা থাকে। কিছু ক্ষণকালীন, কিছু দীর্ঘকালীন। কিছু শারীরিক, কিছু মানসিক, কিছু আত্মিক। দীর্ঘকালীন চাহিদাগুলো পূরণ হওয়ার জন্য মানুষ ধৈর্য্ ধরে অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু ক্ষণকালীন চাহিদা পূরণ হওয়ার জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করা যায় না। অনেক কষ্ট হয়। আর সেই চাহিদাটা পূরণ না হলে আরও বেশি কষ্ট হয়। এমনই একটা চাহিদা হলো দেহের চাহিদা। চাহিদাটা যদি শুধু দেহের হয়, তবে তা পূরণ না হলে মানুষ অস্বস্তি আর অশান্তিতে ভোগে। গুরুতর ক্ষেত্রে কেউ কেউ অনৈতিক কাজ , এমনকি অপরাধও করে বসে। অবশ্য একে কোনভাবেই বৈধতা দেয়া যায় না। যা খারাপ, তা সবসময়ই খারাপ। তা যত নিরূপায় হয়েই করা হোক না কেন।
দেহের এই চাহিদা এমনিতেই অস্বস্তিকর, যতক্ষণ না তা পূরণ হয়। আর এর সাথে যখন মনের চাহিদাও যুক্ত হয় তখন অস্বস্তিটা এক ধরনের অপূর্ণতা, এক ধরনের যন্ত্রণায় পরিণত হয়। মনের চাহিদা মানে ভালোবাসার মানুষটাকে আপন করে পাবার চাহিদা। দেহমন উজাড় করে নিজের ভালোবাসা তার কাছে প্রকাশ করার চাহিদা। মন আর দেহ মিলিয়ে তৈরি হওয়া এই চাওয়া যখন পূরণ হয় না, মনের মানুষটাকে কাছে পেয়েও নিজের করে নেয়া যায় না, নিজেকে ও তাকে জোর করে সংযত করে রাখতে হয় ভবিষ্যতের আশায়, তখন অসহ্য একটা অপূর্ণতা কাজ করে নিজের ভেতর। “কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশিবিষে দংশে নি যারে”...... পরম চাওয়াকে পেয়েও না পাওয়া যে কী কষ্টের, কী যন্ত্রণার, এই আশিবিষ যাকে দংশন করে নি সে বুঝবে না।
তবুও যাতনা সইতে হয়, গুরুজনের বিশ্বাস যেন আর না ভাঙ্গে সে জন্য; কাছের মানুষটার মনের গহীনে যেন অবচেতনভাবেও কোন অবিশ্বাসের বীজ না জন্মে সে নিশ্চয়তায়, একটা সুন্দর ভবিষ্যত যেন পাওয়া যায় সে আশায়।
(ছবি: ইন্টারনেট)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫