পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষের পথে। দু'য়েক দিন বা মাসে এটি নির্মিত হয়নি। যথেষ্ট সময় লেগেছে। এতোদিন সব জলযান নিরাপদে চলাচল করলেও এর নির্মাণকাজ সমাপ্তির পথে এসে এক মাসের (মাত্র পঁচিশ দিন) মধ্যে কিছু অপ্রত্যাশিত অঘটন ঘটার কারণগুলো খতিয়ে দেখার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
২০ জুলাই রো রো ফেরি শাহ মখদুম পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
২৩ জুলাই রো রো ফেরি শাহজালাল ধাক্কা খায় ১৭ নম্বর পিলারের সাথে।
৯ আগস্ট বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামের ফেরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুটির ১০ নম্বর পিলারের সাথে ধাক্কা খায়।
১৩ আগস্ট কাকলী নামের আরেকটি ফেরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পদ্মা সেতুর সেই ১০ নম্বর পিলারের সাথেই আবার ধাক্কা খায়।
হাতুড়ী বা কোন শক্ত বস্তু দিয়ে একটি কংক্রীটের পিলারের উপর একবার দুবার আঘাত করলে সেটা না ভাঙ্গলেও ক্রমাগত দূর্বল হয়ে পড়ে। আঘাতের পর আঘাতে একটা সময় তা ভেঙ্গে পড়বেই। ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতুতে এভাবেই আঘাতের পর আঘাত হানা হচ্ছে ক্রমাগত। কারণ কি শুধুই ফেরিগুলোর চালকের নিয়ন্ত্রণ হারানো? একেকটা পিলারের দুরত্ব দেড়শো মিটার। এই ফাঁকা জায়গা দিয়ে আট-দশ মিটার চওড়া একটি ফেরি অনায়াসে চলাচল করতে পারছে না। এটা কি কোন স্বাভাবিক যুক্তি?
আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উন্নয়নের মাইলফলকই শুধু নয়, বিশ্বব্যাংকের সাথে চ্যালেঞ্জ দিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। তাই এই সেতু অনেক মোড়ল দেশেরই চোখের বালি। বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে এর নির্মাণকালে। এখন ষড়যন্ত্র করে কেউ ফেরি চালকদের কোটি টাকার প্রস্তাব রাখছে নাতো এতে আঘাতের জন্য? একজন ফেরিচালকের সাড়া জীবনের উপার্জনের বেশি অর্থ যদি একটি আঘাতের কারণে পায়, দেশপ্রেম কতোটা ধরে রাখতে পারবে সে, তা কিন্তু সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। আমাদের শত্রুর অভাব নেই, সরাসরি শত্রু, বন্ধুবেশি শত্রু, বিভিন্ন ধরণের শত্রু রয়েছে। যেমন ছিল মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তরকালীন। ষড়যন্ত্রের গাঁটছড়াও এরা কম বাঁধেনি। এখনো নিছক কম হচ্ছে না। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই এগুতে হবে। বিষয়টা নিয়ে আরো গভীরে ভাবা প্রয়োজন। সর্বোপরি এই সেতুকে রক্ষার সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
দ্রঃ চিত্রটি নেট(গ্রীনপেইজ) থেকে সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:৪৬