ঈদের দিনটা বাসায় সবার সাথে কাটাতেই ভালো লাগে।তাই ভেবেছিলাম কোথাও যাব না।আর শরীরটাও কিছুদিন ভাল নেই।কয়েকদিন ধরেই আত্নীয়স্বজন,বন্ধুবান্ধব সবাই ঈদ উপলক্ষ্যে বাসায় যাবার জন্যে ফোন করছিল।ঈদের দিন তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেল।মন রক্ষার্থে সবাইকে বলছিলাম যাবার চেষ্টা করব,যদিও যাবার কোন ইচ্ছাই ছিল না।আমার ২ বান্ধবীর আব্বু অসুস্হ।ওরা যমজ।দুজনেই আমার বান্ধবী।ছুটিতে বাসায় আসলেই ওদের বাসায় যাওয়া হয়।এবারও ওরা যেতে বলেছিল।ভাবলাম ওদের বাসাতেই যাই।আঙ্কেলকেও দেখে আসা হবে।
ওদের বাসাতেই গেলাম ১২টার দিকে।আঙ্কেলের ব্রেইন টিউমার ধরা পড়েছিল মাসছয়েক আগে।আন্টি চেয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে।ওদের চাচাতো বোন পিজি(বিএসএমএমইউ)তে কলোরেক্টাল সার্জারীতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।তার পরামর্শে আঙ্কেলকে পিজিতেই ভর্তি করা হয়।ওদিকে ভিসা পেতেও দেরী হচ্ছিল।তাই পিজিতেই অপারেশন হল।ওর চাচাতো বোনের পরামর্শে আঙ্কেলকে ওনার বাসাতেই নিয়ে রাখা হল।সপ্তাহখানেক পরই আঙ্কেলের অবস্থার অবনতি হলে আবার অপারেশন করা হল।এভাবে পরপর তিনবার।এরপর ডাক্তারের কথা অনুযায়ী কেমোথেরাপী দেওয়া হল।ডাক্তার আঙ্কেলকে রিলিজ করে দিলেন।বাসায় ফিরে আসার কিছুদিন পর আবার আঙ্কেল অসুস্থ হয়ে পড়লেন।এদিকে ভারতে যাবার ভিসাও হয়ে গিয়েছিল।ভারতে গেলে ওখানকার ডাক্তার বললেন টিউমারটি অপসারণ করা হয়নি।আবার অপারেশন করতে হবে।ঢাকাতে করানো একই টেস্টের জন্য করানো দুটি রিপোর্ট ভিন্ন এসেছিল।একটিতে স্টেজ ৩,একটিতে ৪।ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় দেশে ফিরে আসতে হল।আন্টি পিজিতে কর্মরত আপুকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন তিনি রিপোর্ট দেখেননি।দুটি রিপোর্ট ভিন্ন আসার কারণ খতিয়ে দেখে জানা গেল টেস্টে ব্যবহৃত রিএজেন্টটি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল।
এই ভুলের দায়ভার কে নেবে?আর আমাদের ভবিষ্যৎই বা কি?আমি নিজেও মেডিকেলের ছাত্রী।কিনতু ঘটনা শুনে আমারও মাথা নত হয়ে আসে।আমারও প্রশ্ন দুটির উত্তর জানা নেই।