somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্যা গার্ল উইথ দ্যা ড্রাগন ট্যাটু

১৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'দ্যা গার্ল উইথ দ্যা ড্রাগন ট্যাটু' হল ২০০৫ সালে প্রকাশিত স্টিগ লারসন রচিত 'মিলেনিয়াম' ট্রিলজির প্রথম পর্ব, যেটি বিবেচিত হয় একবিংশ শতাব্দিতে প্রকাশিত ক্রাইম থ্রিলারগুলোর মধ্যে অবিসংবাদিত সেরা হিসেবে।

ব্লমকভিস্ক এক অনুসন্ধানি ফিনান্সিয়াল সাংবাদিক যে এক বিতর্কিত স্টোরি প্রকাশ করে মানহানির মামলায় পড়ে আর সেই মামলায় হেরে যার ক্যারিয়ার ও অর্থনৈতিক জীবন দুই-ই হুমকির মুখে পড়ে। তারচেয়ে বড় কথা, মিলেনিয়াম নামের যে ম্যাগাজিনে তার বিতর্কিত স্টোরিটি প্রকাশ হয়, সেটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক সে-ই। ফলশ্রুতিতে ঐ ম্যাগাজিনের ভবিষ্যতের সামনেও এসে দাঁড়ায় এক বিরাট জিজ্ঞাসাচিহ্ন। এমনই এক সময়ে ব্লমকভিস্ককে এক ফৃল্যান্সিং মিশনে নিয়োগ দিতে চায় এক সময়ের সফল শিল্পপতি হেনরিক ভ্যাঙ্গার। বিনিময়ে সে প্রতিশ্রুতি দেয় ব্লমকভিস্ককে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করার এবং একইসাথে তার ম্যাগাজিনকে ফের বাঁচিয়ে তুলতে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকক্ষেত্রে সহযোগিতার।

ব্লমকভিস্ককে দেয়া কাজটা খুব একটা সহজ না। হেনরিকের ভাতিজি, হ্যারিয়েট ভ্যাঙ্গারের মৃত্যু(?) রহস্যের জট ছাড়াতে হবে। এ এমনই এক কেস, যেখানে ভিক্টিম আসলেই খুন হয়েছে কিনা বা তার অন্যকিছু হয়েছিল কিনা, তার কোন প্রমাণ নাই। তারচেয়েও বড় কথা, ঘটনাটি ঘটেছে ৩৬ বছর আগে! ৩৬ বছর আগে অন্তর্ধান হওয়া তরুণীর মৃত্যু বা নিখোঁজ হবার রহস্য কি আদৌ সলভ করা সম্ভব? আপাত দৃষ্টিতে সম্ভব না। কিন্তু সেই আপাত অসম্ভব কাজে নেমে পড়ল ব্লমকভিস্ক, কেননা ডুবতে থাকা অসহায় ব্যক্তি যে খড়কুটোকেও আঁকড়ে ধরে!

সমান্তরাল প্লটে দেখা মেলে সমাজচ্যুত এক তরুণীর। যেই তরুণীর পিঠে আছে একটা ড্রাগন ট্যাটু। কাহিনীর প্রবাহে একসময় ব্লমকভিস্ক আর ঐ তরুণী, স্যালান্ডারের দেখা হয়। এক পর্যায়ে তারা একসাথে কাজ শুরু করে। তাদের লক্ষ্য একই। হ্যারিয়েট রহস্যের শেষ দেখা। যে রহস্যের সমাধান আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হচ্ছিল, একসময় তা আরও বেশি জটিল হয়ে পড়ে ঐতিহাসিক কিছু ঘটনাপ্রবাহের সাথে বর্তমানের নানা ঘটনার জগাখিচুড়িতে। বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক ভয়ংকর সত্য। আভাস পাওয়া যায় এক মানসিকভাবে অসুস্থ সিরিয়াল কিলারের (কিংবা মর্ষকামি সিরিয়াল রেপিস্টের), যে কিনা কয়েকযুগ ধরে একের পর এক নারীকে হত্যা করে চলেছে বিদ্ঘুটে রকমের যৌন অত্যাচারের মাধ্যমে। কিন্তু কে সে? কেন সে এমনটা করছে? এর পেছনে কি কাজ করছে কেবলই ধর্মান্ধতা? এমন এক ব্যক্তির সাথে হ্যারিয়েট কিভাবে জড়িয়ে পড়ল যার কারণে তাকেও প্রাণ হারাতে হল বা গুম হতে হল?

এইসব প্রশ্নের উত্তর তখনই মিলবে, যদি যাওয়া সম্ভব হয় হ্যারিয়েট অন্তর্ধান রহস্যের শেষ সীমানায়। কিন্তু সে অব্দি কি যাওয়া হবে? হদিস কি মিলবে জীবিত অথবা মৃত হ্যারিয়েটের? পাশাপাশি কাহিনীর শেষে কি হবে? ব্লমকভিস্ক কি সক্ষম হবে শেষ পর্যন্ত তার ম্যাগাজিন মিলেনিয়ামকে রক্ষা করতে? মিলেনিয়ামকে রক্ষা করতে সে আর দশটা অপরাধীর মতই বেপরোয়া হয়ে উঠবে?

সবমিলিয়ে দারুণ এক যৌনতা আর ভায়োলেন্সে ঠাসা ক্রাইম থ্রিলার 'দ্যা গার্ল উইথ দ্যা ড্রাগন ট্যাটু' যার পরতে পরতে রয়েছে সাসপেন্স আর টুইস্টের ছড়াছড়ি। একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে ওঠা কষ্টকর। তবে মহাকাব্যিক এই ক্রাইম থ্রিলারের পরিধি এতটাই বিস্তৃত যে একবারে পড়ে শেষ করা অসম্ভব। তাই এক পর্যায়ে এসে আপনাকে থামতেই হবে। উঠে যেতে হবে নিজের অন্য কাজের জন্য। কিন্তু উপন্যাসটি পাঠকালীন আপনি যেমন হারিয়ে যাবেন অন্য এক দুনিয়ায়, অন্যান্য সময়ও সেখান থেকে বাস্তবে ফিরতে কষ্টই হবে। রাতের ঘুমও হারাম হয়ে যাবে! আর তাছাড়া এই একটা উপন্যাস শেষ করতে পারলেও রক্ষে নেই! পাগল হয়ে যাবেন পরের দুই পর্ব পড়তে।

তো, সত্যিই যদি পাগল হতে চান তো পড়া শুরু করে দিন, 'দ্যা গার্ল উইথ দ্যা ড্রাগন ট্যাটু!'
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×