somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাহাবাদের কিছু কষ্ট নির্যাতনের ঘটনা তূলে ধরলাম্

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাহাবাদের কিছু নির্যাতনের ঘটনা তূলে ধরলাম্ -- আর রাহীকুল মাখতুম সীরাত গ্রন্ত থেকে ।
তারাও ছিলেন মুসলমান আর আমরাও হয়েছে মুসলিম – কত কষ্টের পাহাড়কে ডিঙ্গিয়ে তারা হয়েছে মুসলমান।এত কষ্টের পরও নিজের ইসলামকে ত্যগ করেন নাই। আর আমরা হলে এক টাকার বিনিময়ে নিজের ইসলামকে ত্যগ করতাম ।
যখন উসমান রাঃ ইসলাম গ্রহন করলেন তখন তাঁর চাচা তাকে খেজুর পাতার চাটাইয়ের ভেতর পেঁচিয়ে ধরে নীচের দিক দিয়ে তাঁর চোখে মুখ ধোঁয়া দিত ।
যখন মুসআব ইবনে উমাইরের ইসলাম গ্রহনের সংবাদ তার মায়ের কানে গিয়ে পৌছল তখন তিনি তার খাবার-দাবারের দুয়ার বন্ধ করে দিলেন। এক পর্যায়ে তাকে ঘর হতে বাহির করে দিলেন।
সুহাইব বিন সিনান রুমী রাঃ কে এতটা শাস্তি দেওয়া হত যে,প্রায় সময়ই তিনি হুশ হারিয়ে ফেলতেন এবং মুখে কি বলতেন তা তিনি নিজেও জানতেন না ।
বেলাল রাঃ ছিলেন উমাইয়্যা বিন খলফ জুমাহীর গোলাম। উমাইয়্যা তাঁর গলায় রশি লাগিয়ে এলাকার ইতর ছেলেদের হাতে তুলে দিতেন।তারা তাঁর রশি ধরে টেণে মক্কার চারপাশে পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরাত।এভাবে তাঁর গলায় রাশির দাগ পড়ে যেত ।কিন্তু তা স্বত্বেও তাঁর মুখ হতে বাহির হত কেবল আহাদ আহাদ ।এছাড়াও তাকে অনাহারে রাখত,দুপরের প্রচন্ড দাহ আর কাঠফাটা রোদে তাকে মরুভূমিতে বসিয়ে রাখত। এছাড়াও তপ্ত বালুরাশির মাঝে তাকে চিত করে শুইয়ে রাখত ,এবং বিশাল পাথর তাঁর বুকের উপর রেখে চাপা দেওয়া হত ।
আম্মার বিন ইয়াসির রাঃ ছিলেন বনু মাখযুমের গোলাম। তিনি ও তাঁর পিতা-মাতা গোড়াতেই ইসলাম গ্রহন করে নিয়েছিলেন।সুতরাং দুপুরের প্রচন্ড রোদের তাপে মরুর বালুরাশি যখন খই হয়ে ফুটত তখন মুশরিকরা বিশেষ করে আবু জাহল প্রস্তরময় জমিনের দিকে চলে যেত এবং তাদেরকে যেভাবে পারত শাস্তি দিত। একদিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন ।তিনি যখন তাঁদের এই শাস্তি আর দুরবস্থা প্রত্যক্ষ করলেন তখন বললেন,হে ইয়াসিরের পরিবার ! তোমরা ধৈর্য করো অ কেননা তোমাদেরকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।ইয়াসিরা এভাবে শাস্তি পেয়ে পেয়ে মারাই গেলেন ।আর আম্মারের মাতা সুমাইয়্যার লজ্জাস্থানে আবু জাহল বর্শা দিয়ে আগাত করে তাকে শহীদ করে দেন ।তিনিই ছিলেন ইসলামে প্রথমে শহীদ রমনী।
আবু ফুকাইহা ছিলেন বনু আবদ্দুদ্দার এর গোলাম। তার নাম ছিল আফলাহ। মূলত তিনিই ছিলেন আযদ কাবিলার লোক । দিনের মধ্যভাগে সম্পূর্ন উলঙ্গ করে পয়ে লৌহ শিকল পরিয়ে মরুভূমির বালুর মধ্য নিয়ে তাকে ফেলে রাখা হতো। এরপর তাঁর পিঠের ওপর রেখে দেওয়া হতো এক বিশাল জগদ্দল পাথর,যাতে তিনি এতটুকু নড়াচড়া করতে না পারেন।এতে তিনি বার বার হুশ হারিয়ে পেলেন,এইভাকে কঠোর ভাবে তার উপর নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চালানো হয়।
গভর্নর সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী রাদীয়াল্লাহু তাআলা আনহু বললোঃ "হে আমীরুল মু'মিনীন ! মুশরিক থাকা অবস্থায় আমি মক্কার এক জনসমুদ্রের মাঝে খুবাইব ইবনে আদি রাদীআল্লাহু তাআল আনহুর শাহাদাতের নির্মম দৃশ্য স্বচক্ষে দেখেছি । কুরাইশরা জীবিত অবস্থায় তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তরবারির আঘাতে টুকরো টুকরো করছিলো আর বলছিলোঃ তুমি কি রাজি আছো / যদি তোমাকে ছেড়ে দিয়ে তোমারই উপস্থিতিতে তোমার পরিবর্তে মুহাম্মদকে হত্যা করি ? উত্তরে খুবাইব রাদীয়াল্লাহু তাআলা আনহু বলছিলেনঃ "আল্লাহর শপথ ! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যার বিনিময়ে আমি মুক্তি পেয়ে আমার পরিবার-পরিজনের নিকট নিরাপদে ফিরে যাওয়া তো দুরের কথা, পথে হেটে যেতে তার পায়ে একটি কাঁটার আচড় লাগুক তাও আমি সহ্য করতে পারবো না । মুনাফিক জীবন থেকে শহীদি মৃত্যু আমার কাছে অনেক উত্তম" ।
সাঈদ পুনরায় বললোঃ এ করুন দৃশ্যের কথা স্বরন হলেই আমার মনে প্রশ্ন জাগে, কেন আমি সেদিন খুবাইব রাদীয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে সাহায্য করিনি ? আল্লাহ ও রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার এই অপরাধকে ক্ষমা করবেন না । এই ভয়ে আমি মাঝে মাঝে আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ি এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলি ।
তারা ছিলেন মুসলমান আর আমরা ও হয়েছি মুসলমান,
তাদের এই কষ্ট মুজাহেদার কারনে আমরা আজ গর্ব করি মুসলিম হিসেবে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×