somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বান্দার প্রতি মহান আল্লাহ তায়ালার কি অপার কৃপা ও অপূর্ব সমন্বয়

২০ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আল্লাহ তায়ালা হালাল রুজি দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতে বলেছেন। হালাল রুজির মহাত্ম বুঝা যায় এই বিধানে যে, অল্প আমলও নাজাতের জন্য যথেষ্ট যদি ব্যক্তিটি হালাল রুজি দ্বারা নিজ/পরিবার পরিজনের জীবিকা নির্বাহ করে।


যে হালাল রুজির উপর এতো জোর দেয়া হয়েছে, সেই হালাল রুজির পথ যদি আল্লাহ তায়ালা কঠিন করে রাখতো, তাহলে কি হতো বলুন তো? সেদিকে না গিয়ে আমার যা বলাই তাই বলি। মুচির কাজ থেকে শুরু করে, যেকোন দিনমুজুরী, যেকোন চাকুরী, ব্যবসা, কৃষি কাজ অর্থাৎ বৈধ উপায়ে সব কাজকেই মহান আল্লাহ তায়ালা সমান ভাবে দেখেছে ও গুরুত্ব দিয়েছে। মুচির ইনকাম নিম্নমানের হালাল কিংবা ব্যবসায়ীর ইনকাম উচ্চমানের হালাল, এমন কোন বিধান আল্লাহ রাখেনি।



যেহেতু ধর্মমতে পরিবার পরিজনের জীবিকা নির্বাহের দায়িত্ব প্রথমত পুরুষের উপর এবং হালাল রুজি দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতে হবে, তাই মহান আল্লাহ সব হালাল রুজির মাধ্যমকেই সমান রেখেছেন, শ্রেণী বৈষম্য করেননি। এটা হলো মহান আল্লাহ তায়ালার সমতা বিধান।


তাহলে এই যে পৃথিবীতে এতো শ্রেণী বৈষম্য, এটা তৈরী করেছে কে? অবশ্যই মানুষ, মানুষ এবং মানুষ। মানুষই শ্রৈণী বৈষম্য তৈরী করার মাধ্যমে মানুষ এবং কাজের বৈষম্য তৈরী করেছে। তাই আজ আমরা সবাই ধর্মপ্রাণ এবং মৃত্যুর পর জান্নাত পেতে আগ্রহী হলেও আমরাই রিক্সা চালানো, সিএনজি চালানো, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমুজুর, শ্রমিক, মুচি, গার্মেন্টস শ্রমিক, বড় ব্যবসায়ী, বেসরকারী নিম্নপদস্থ, উচ্চ পদস্থ, সরকারী নিম্ন পদস্থ, উচ্চ পদস্থ, ১ম থেকে ৪র্থ শ্রেণী এভাবে ভিন্ন ভিন্ন পেশাজীবি, যাদের সকলের স্বাভাবিক আয়টা হালাল হলেও শ্রৈণী বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে।


এর সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর দিক হলো, রিক্সা চালানো, সিএনজি চালানো, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমুজুর, শ্রমিক, মুচি, গার্মেন্টস শ্রমিক হবে একজন অশিক্ষিত ও অল্পশিক্ষিত এবং সরকারী বেসরকারী নিম্নপদস্থ, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা হবে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পাশ, সরকারী বেসরকারী উচ্চপদস্থরা হবে উচ্চ শিক্ষিত, এইভাবে বৈষম্য তৈরী করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়ায় একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি ধর্মের মূল স্পিরিট হালাল রুজি, সেটা যে উপায়েই হোক, তাতে মনোনিবেশ করতে পারে না। সে বেশি পড়ালেখা করেছে বিধায় তার বড় চাকুরী লাগবে, এই মানসিকতা রক্তের সাথে মিশে যাওয়ায় এর বাহিরে সে কল্পনাও করতে পারে না।


একমাত্র ব্যবসাটা থাকে উম্মুক্ত, তার মধ্যে আবার ক্ষুদ্র ব্যবসায় উচ্চ শিক্ষিতরা মনোনিবেশ করতে পারে না, সমাজ টিটাকারি দেয়, ছোট কাজ বলে, এতো পড়ালেখা করে কেনো সে হকারি করবে, ফুটপাতে সবজি বেঁচবে, এই বলে খোঁটা দেয়। তাই কেউ কেউ চাইলেও পারে না, যেকোন হালাল রুজির কাজে মনোনিবেশ করতে। অবশ্য উচ্চ শিক্ষিতদেরও হার মানায় ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়া অশিক্ষিত কিংবা স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তিরা। এক্ষেত্রে আর্থিক অবস্থানই শেষ কথা।


রোজগার বিষয়ে ধর্মের মূল স্পিরিট থেকে আমরা সরে গেছি বলেই দেশে আজ এতো বেকার, চাকুরীজীবীদের মাঝে এতো ঘুষ খাবার প্রবণতা এবং সুদের এতো বেশি প্রভাব।


কি আশ্চর্য, আমরা অধিকাংশই মুসলিম, জান্নাতে যেতে চাই, কিন্তু রুজি রোজগারের বিষয়ে ইসলামের মূল স্পিরিট থেকে আমরা দূরে সরে জাহান্নামের স্তুপ বানিয়ে ফেলেছি। হালাল রুজির জন্য কাজে লাগার মানসিকতাকে আমরা গলা টিপে হত্যা করে ফেলেছি। আমরা নষ্ট করে ফেলেছি ধর্মীয় মূল্যবোধ।


শেষ করতে চাই শুরুর কথা দিয়েই, ধর্মে বৈধ উপায়ে সব রোজগারই সমান। এই সমতার একমাত্র কারন যে, বান্দা যেন যেকোন হালাল উপায়ে রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে এবং হালাল রোজগারে জীবিকা নির্বাহ করে। সংসারের অর্থনৈতিক অভাব যেন দূর করতে পারে। উচ্চ শিক্ষিত হয়ে নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না থাকার অজুহাতে যেন, পরিবার পরিজনের জীবিকা নির্বাহ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে না পারে। সর্বোপরি হালাল রুজিতে জীবিকা নির্বাহ করে স্বল্প আমলেও যেন নিজেকে জাহান্নামের আগুণ থেকে রক্ষা করতে পারে।


জুবায়ের আহমেদ
২০ মে ২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৮
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×