somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলাকার বিল্ডার ভাই !!

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এলাকায় এক বড় ভাই ছিল, বয়সে আমাদের বড়। পড়াশোনা তেমন একটা করে নাই। অবশ্য তাঁর যে পড়াশোনা খুব বেশি দূর আগাবে না তা আমি ছোটবেলাতে বুঝতে পেরে ছিলাম। কারন ভাই আমার স্যার এর সামনে খুব একটা সোজা হয়ে বসতেন না। প্রায় দেখতাম সোফার হাতলে ভাই আমার পা দুখানা তুলে আধ শোয়া হয়ে পড়াশোনা করার নিদারুণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন! তো এক পর্যায়ে এসে চেষ্টা থামালেন, গেলেন বাবার দোকান দেখাশোনা করেতে। সেখানেও তাঁর খুব একটা মন বসতো না। খুব ক্রিকেট পাগল ছিলেন। বোলিং খুব একটা খারাপ করতেন না। তবে ব্যাটিং ছিল যেন তেন। ব্যাটিং করতে গেলে পা দুখানা তাঁর ভারী হয়ে আসতো, জায়গা থেকে সরা বন্ধ হয়ে যেত। তবে বল মিস করার পর একটা ছায়া শট খেলত। খুবই ভাবের সাথে, পা বাড়িয়ে প্রোফেসনাল প্লেয়ার এর মত! নন স্ট্রাইকিং এ দাড়িয়ে ভাবতাম আহারে শট খানা যদি আসল সময় খেলত! বলিউড এর সালমান খান সাহেব এর শক্ত মৃত( Die Hard) ফ্যান এর লিস্ট করা হয় তবে প্রথম ১০ জনের মধ্যে না থাকলেও ৫০ এর মধ্যে থেকে তিনি থাকবেনই। খান সাহেব যা করতো কোন কিছু বাদ পড়তো না। ব্রেসলেট থেকে শুরু করে শার্ট, জিন্স, জুতা, কি নেই তাঁর সংগ্রহে! এমনকি চুল ব্যাক ব্রাশ করতে যে অবস্থা দাঁড়াল তাতে তাঁর কপাল ২ ইঞ্চি না বেড়ে কোন উপায় ছিল না! কিন্তু শুধু কি কাপড় চোপড় থাকলে হবে, সেসব গায়ে দিয়ে খান সাহেব লাগা লাগবে না! খান সাহেব এর তো সেই শরীর!! ভাই শুরু করলেন জিম এ যাওয়া। শরীর এর কোন পরিবর্তন আসুক আর নাই আসুক কেনা শুরু করলেন নিজের চেয়ে দুই সাইজ ছোট কাপড় চোপড়। বডি যে বানাচ্ছে সেটা দেখানোর ও তো একটা ব্যাপার আছে। একদিন এসে বলল, জিম এ গিয়ে খান এর মত বডি হতে তো অনেক সময় লেগে যাবে তাঁর চেয়ে বরং নিজেরা একটা খুলে নিলে কেমন হয়? সকলে সমস্বরে সমর্থন জানালো। শুরু হল নিজেদের জিম। ভাই আমাদের ওস্তাদ (instructor) আমরা তাঁর সাগরেদ। সাবেক পড়ার ঘর হল আমাদের জিম। পুরু দমে শুরু হল ব্যায়াম। আমরা কোন মতে কিছুক্ষণ কসরত করার চেষ্টা করতে থাকি। তাও টেনেটুনে এক ঘণ্টা। কিন্তু ভাই বলে, “হবে না, তোদের দিয়ে কিছু হবে না, কম করে হলেও তিনটা ঘণ্টাতো চাই” ! ভাই কে দেখতাম দোকানে যাওয়ার আগে এক পর্ব করে যেত আর রাতে এসে আর এক পর্ব। তাঁর ধ্যান গ্যান হয়ে পরল জিম। কি রোদ কি বৃষ্টি, কি গরম কি শীত, ভাই আমার শরীর বানানোর সাধনায় লিপ্ত। কোন হলুদ কিংবা বিয়ের দাওয়াত থাকলে তো কথাই নেই, দোকানদারি ছেড়ে চুড়ে সন্ধায় এসে পড়তো। আর শুরু করতো শরীর ফোলানোর কসরত। আমরা তৈরি হয়ে বসে আছি, ভাই জিম এ কসরত এ ব্যস্ত। জিজ্ঞেস করতাম, ভাই এখন না করলে কি হয়? ভাই এর কথা হল জিম করে গেলে শরীর অন্তত ২ ঘণ্টা সুন্দর দেখাবে! অকাট্য যুক্তি! কসরত শেষ করে খান সাহেব এর ব্রেসলেট লাগিয়ে আর চাপা শার্ট হাকিয়ে কোন মতে যেত বিয়ে বাড়ি। এইবার শুরু হতো ভাইয়ার দম আটকে রাখার কসরত, তাতে যে বুক (chest) টা কম করে হলেও ২ ইঞ্চি বেশি ফুলে থাকে! সব সময় না, শুধু কোন তরুণী সামনে আসলে তখন আর আমরা যারা তাঁর সাগরেদ ছিলাম তাদের সামনে। আমরা সবাই ভাইয়ের কসরত দেখে আড়ালে বেশ হাসাহাসি করতাম। মজা হতো কোন মেয়ে যদি একটু বেশি সময় সামনে থাকতো তখন, ভাইকে দেখতাম বুক ফুলিয়ে রাখার কি কসরতই না করতে হতো। আর বিয়েতে বর কনের সাথে তোলা ভাইয়ার ছবি গুলু দেখে বেচারা বরের জন্য মায়া লাগতো। দেখতাম ছবিতে ভাইয়া এমন পোজ দিয়েছে যে, বেশিরভাগ সময়ই বর বেচারাকে ভাইয়ার কসরত করা ফোলানো হাতের পেছনে থাকত!

২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×