ডিজিটাল যুগের Portable ভালোবাসা । পান্তা-ইলিশের বাংলা নবর্বষ । বিরোধী দলের হরতাল উদযাপন । সরকারী দলের শাক দিয়ে মাছ ঢাকার সাফল্য । ভুলেই গিয়েছিলাম আজকে বাংলা নবর্বষ, ক্লসে যাবো বলে সকালে ঘুম থেকে উঠলাম , হঠাৎ মনে পড়লো নববর্ষের কথা, ভাবলাম ক্লাসের টাইম আছে একটু টু মারি fb তে , ৩৭ ইনবাক্স, নিউজপেড ভরা সারি সারি সুভেচ্ছায় ।
আজকে জিন্স-টপ্স পরা বাঙ্গলী দোস্তগুলা শাড়ি পরে পান্তা-ইলিশ খাবে। ডুডগুলো গালে একতারার আল্পনা এঁকে সেলফি তুলবে। সারা বছর কেউ মনে রাখুক না রাখুক- এই দিনটাতে বাংলা সালের হিসাব সবাই মনে রাখবে। ডুড সারকেলের বাইরে থাকবে যারা ইনবক্স ভরে যাবে তাদের শৈল্পিক সব শুভেচ্ছা বার্তায়। যে শহরে এখনও ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে খাই শিশুরা সেখানে হাজার টাকা দামের ইলিশ কিনে একদিনের জন্য হলেও বাঙ্গালীয়ানার দায় মেটাবে।
কিন্তু.. প্রতিদিন যারা একমুঠো বাসী পান্তা খেয়ে দিন শুরু করে; তারা পয়লা বৈশাখেও খাটি বাঙালী হতে পারবেনা। তারা বৈশাখ উপলক্ষ্যে কেনা নতুন পোষাক পরে ইলিশ খেতে পারবেনা , রাস্তায় ফুল কিংবা ঠান্ডা পানি বিক্রি করতে হবে।হাসপাতলে দুরারোগ্য রোগীর রক্তের জন্য আত্ীয় স্বজনরা ছোটাছুটি করবে এদিক সেদিক, তালপাখা আর বাঁশী বিক্রি করতে থাকা কিশোর ছেলেটি অপার বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে একদিনের বাঙালীদের বর্ষবরণ উৎসব। বৃদ্ধ রিকশা চালকটি ঠিকই বের হবে অন্য ঝোগারের জন্য তাদের জন্য ২০১৫ যা, ১৪২২ও তাই...
স্বাগতম ১৪২২.. আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শুরু হল একটি স্বপ্নেরও,
ধনীর স্বপ্ন ,গরীবের স্বপ্ন ,মজুরের কিংবা শ্রমিকের স্বপ্ন , হাসপাতালের রোগীদেরও ,পান্তা আর ইলিশ খেয়ে যে বাঙালিপনা জাহির করে-
অথবা যে নিত্য কাচা লঙ্কা দিয়ে পান্তা খায় ,তাদের স্বপ্ন দ্যাখার গল্পটাও একই ,শুধু পার্থক্য হয়ত রঙে -স্বপ্ন দেখার নতুন বছরের নতুন সূর্যোদয়ের সাথে হোক নতুন বোধের উদয়। দীর্ঘজীবি হউ স্বপ্ন দেখা মানুষগুলো, ভালো থেকো বাংলাদেশ ।