somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিগারেট কথন (শুধু মাত্র ধুমপায়িদের জন্য, অন্য কোন পায়িরা অপ্রবেশ্য)

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে কথন কিভাবে শুরু করব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটা পরিবারের মত আমাদের পরিবারেও সিগারেট নিষিদ্ধ। আমি যে বিড়িখোর এইটা যদি আমার বাবা-মা জানতে পারে তাহলে আমার মা আমাকে কিছুই বলবেনা। কারন এই কথা শোনা অথবা ঘটনা দর্শনের পরে আমার শ্রদ্ধেয় বাপজান পূত্রের প্রতি অতিরিক্ত রাগে ষ্ট্রোক করে বসবে, এহেন বীপদজনক পরিস্থিতিতে কে কাকে কি বলবে!
আমার দাদাজান ছিলেন অতিরিক্ত এবং বিশিষ্ট রকমের ভদ্রলোক, তিনি তার বাপজানকে পর্জন্ত হুক্কা ছাড়িয়ে ছেড়েছেন। এবং তার পুত্ররা, আমার বাপজান সহ চাচাজানরাও কোনদিন কোনরকম ধোয়াকে পানীয় রুপে গ্রহন করেনাই। আর সেইখানে আমিজান যদি বিড়িখোর রুপে সনাক্ত হই তবে তা আসলে বড়ই ভয়াভহ রুপ ধারন করবে। এইসকল নিষিদ্ধতা এবং কড়া আঈনের কারনে হোক অথবা অন্যকোন কারনে হোক সিগারেটের প্রতি আমার আগ্রহটা একটু বেশি। যদিও আমার আসক্তি আগ্রহ অপেক্ষা অনেক কম। আমি সাধারণত দিনে ২-৩ টা সিগারেট পান করি, দিন বিশেষ একটাও পড়ে যায়। মুল কারন হিসেবে বলা যায় যেহেতু আমার পরানে সিগারেট নিয়ে অতিরিক্ত ভয় বিরাজমান সেহেতু মাইনকা চিপা ছাড়া সিগারেট খাওয়া হয়না অথবা যায়না।
এই চিপা-চাপায় যাইতে যাইয়া এবং খাইতে যাইয়া অনেক রকমের অভিজ্ঞতা কামাইছি। যার কিছু ছিল, উত্তেজনাকর কিছু লজ্জাস্কর কিছু অন্যান্য।
খুব শৈশবের কিছুটা সময় আমার গ্রামে কেটেছে, তখন দেখতাম আমার বয়েসি পোলাপাইন কদুর (লাউ) ডগা অথবা পাটখড়িতে আগুন দিয়ে টানা-টানি করত। আমি নিজেও দুইদিন দুই টান দিয়েছিলাম। একবার খুব কেঁশেছিলাম আরেকবার একটু জোরে পাটখড়িতে টান দিয়ে জিভ পুড়িয়ে ফেলেছিলাম। তার মানে সেই নার্সারি থেকে শুরু।
শুরুটা নার্সারি থেকে হলেও মাঝে অনেকদিনের বীরতি ছিল। বানিজ্যিক ভাবে সিগারেট খাওয়া শুরু করলাম ইউনিতে উঠে ফোর্থ সেমিতে। (এখানে বানিজ্যিক ভাবে বলতে টাকা খরচ করে সিগারেট কিনে খাওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।)
ভার্সিটি কোচিং এর সময়ে একটা বান্ধবী জুটিয়েছিলাম। ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পরে ও বলল খাওয়াবি না? আমি বললাম অবশ্যই, কি খাবি বল, পকেটে ১৮৫ টাকা আছে, এর মধ্যে যা খাবি খা। ও বলল এক প্যকেট ব্যানসন কিনে দে। অনেকেই তো অনেক কিছু খাওয়াইল তুই বিড়ি খাওয়া। আমি সত্যি সত্যিই তাকে এক প্যাকেট ব্যানসন বিড়ি কিনে দিয়েছিলাম। আমি বললাম এই জিনিষ খাবি কোথায়, ও বলল কালকে রূম্পা দাওয়াত দিছে, খাওয়ার পরে ওদের ছাদে যেয়ে খাবো। চরম লাগে।
বান্ধবিটার বিয়ে হয়ে গেছে, জানিনা তার জামাই তাকে খাওয়ার পরে খেতে দেয় কিনা।
প্রথম যখন সিগারেট ধরলাম তখন গোল্ডফ্লেক নামের, একটাকা দামের, হালকা পাতলা কামের সিগারেট খেতাম কারন অন্য কোন ব্র্যান্ড বেশি কড়া লাগত এমনকি ব্যানসনও। কিন্তু সমাজের অন্যন্য বিড়িখোরগণ ব্যপারটাকে ছোটলোকি মনে করত তাই বাধ্যহয়েই বেলাল এ্যান্ড হেলাল (B&H) বংশে যোগদান করলাম।
সিগারেটের এই গোত্র সম্পর্কে বন্ধু শাওন বলেছিল, আমার ঘর থেকে যদি জানে যে আমি সিগারেট খাই তাহলে তেমন কিছু বলবেনা কিন্তু যদি জানে যে আমি ব্যানসন খাই তাইলে…………
যাউকগা আমরা চিপায় ফিরা আসি। একদিন এক চিপায় টানতাছি, আমার বাপের এক দোস্ত ধাপ কইরা সেই চিপায় পড়ল ঢুইকা। আমার তখন মুখের ভেতর রাজ্যের ধোয়া।আমি হাতের জ্বলন্ত জিনিষটা হাতের ভেতরেই দারুন কৌশলে নিভিয়ে ফেললাম, কৌশলের গুতায় অবশ্য হাতে ঠোসকা পড়ে গিয়েছিল। এরপর কুশল বিনিময় সালাম-কালামের পর্ব।আমি কথা বলি আরা আমার মুখ দিয়ে ধোয়া বের হয় আস্তে আস্তে করে। শেষে উলটো দিকে মুখ নিয়ে কয়েকবার কাশিঁর অভিনয় করে ধোয়া মুক্ত হলাম। সে তো অবশ্যই বুঝেছিল কিন্তু বুদ্ধিজ্ঞান পূর্ন পন্ডিত বলিয়া আমার বাপজানরে কিছুই জানায়নাই। আহারে কত্ত ভালো!
মাঝে কিছু দিন জন্ডিসের মত হইল, তখন ভাতই খাইতে পারিনা, বিড়ি-বুড়ি তো তফাত। বেশকিছুদিন ছিল রোগটা। সুস্থ হওয়ার পরেও কিছুদিন বিড়ি খাইতে ইচ্ছা হইতনা। আমিতো মহা খুসি। কেউ যদি ফোন দিয়া জিজ্ঞেস করতো কেমন আছস? আমি উত্তরে বলতাম, ওই! কাহীনিতো ঘইটা গেছে আমি তো বিড়ি ছাইড়া দিছি। যদিও কিছু দিন পরে যেই ডিম্ব সেই লেম্বু।:|:|
বন্ধু মামুন একবার বিড়ি কে সম্পুর্ন রুপে পরিত্যাজ্য ঘোষনা করল। সপ্তাখানেক পরে আমার হাত থেকে অর্ধ পোড়া সিগারেটটা নিয়ে গর্বের সাথে বলল বিড়ি ছাড়া না ছাড়া একই কথা, খালি খালি না খাইয়া লাভটা কি!

আমাদের ভেতরে বন্ধু তুষার হচ্ছে কড়াকড়ি রকমের খোর। ক্যাম্পাসে নির্গত বিড়ির অর্ধেক ধোয়াই সে একা উতপাদন করে। তার সাথে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়া এক কচি মেয়ের চুড়ান্ত রকমের কড়া সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি সারাদিন ঘ্যান ঘ্যান করত, হয় বিড়ি ছাড়ো নয় আমাকে ছাড়ো। বন্ধুটি একদিন বলেই ফেলল যাও তোমারে ছাইড়া দিলাম। ছাড়া পেয়ে মেয়েটি আধা বোতল স্যাভলন খেয়ে ফেলল(মঝারি সাইজের বোতল)। তথ্য সূত্রে জানা গিয়েছিল ঘরে ওই আধা বোতলই ছিল। ভাগ্যিস…………

সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরনঃ (Loading…….)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৩:০৮
৩৩টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×