somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে আমাদের দেশী চ্যানেলগুলো

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশে একটা জিনিস কমন। কেউ একজন নতুন একটা ব্যবসা নিয়ে আসলো। ব্যবসা যদি ফেল করে, তাহলে কোন কথা নাই। কিন্তু কোনভাবে সেটা যদি লাভের মুখ দেখে, তাহলেই সর্বনাশ! যে যেভাবে পারবে হুবহু একই আইডিয়া নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এটা চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত না সেই ধরণের ব্যবসার বারোটা বাজে।
এধরণের হাজার হাজার উদাহরণের মধ্যে একটি হলো বেসরকারী টিভি চ্যানেল।
সেদিন একটা জায়গায় পড়লাম, দেশের বেশিরভাগ টিভি চ্যানেলগুলো তাদের কর্মীদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছেনা। উন্নয়নশীল দেশের ছোট আকারের বিজ্ঞাপনের বাজার নিয়ে যদি শতাধিক মিডিয়া (প্রিন্ট, ভিজ্যুয়াল) কাড়াকাড়ি করে তাহলে প্রত্যেকের ভাগে যা জুটবে তা দিয়ে নিজেদের টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাওয়ার কথা। তারওপর এই বিজ্ঞাপনের বাজারের একটা অংশে আবার ভাগ বসিয়েছে আমাদের প্রতিবেশী দেশের টিভি চ্যানেলগুলো, আমাদের দেশের দর্শকদের একটা বড় অংশ তাদের নিয়মিত ভোক্তা কিনা, তাই!
আমি নিজে একাধিকবার দেখার চেষ্টা করেছি ভারতীয় সিরিয়ালগুলোর কিছু অংশ। ধৈর্য্যের ব্যাপারে আমার যৎকিঞ্চিৎ সুনাম থাকলেও এক্ষেত্রে তেমন সুবিধা করতে পারিনি। যারা নিয়মিত দেখেন তাদের জিজ্ঞেস করলে বললেন, ভারতীয় সিরিয়ালগুলো তাদেরও তেমন একটা ভালো লাগে না, কিন্তু এর চাইতেও ভালো কিছু না থাকাতেই এটাই তাদের দিনান্তের বিনোদন।
এমুহূর্তে সবমিলিয়ে কতগুলো দেশী টিভি চ্যানেল আছে, সেটা হাতে গুনে শেষ করা মনে হয় কষ্ট হবে। এর যেকোন একটিতে গেলেই অবধারিতভাবে পড়তে হবে বিজ্ঞাপনের উৎপাতে। অনুষ্ঠান যদি চলে পাঁচমিনিট, বিজ্ঞাপন চলবে পঁচিশ মিনিট। প্রচন্ড ধৈর্য্যশক্তির পরীক্ষা দিয়ে যদি সেই অনুষ্ঠানটি দেখার চেষ্টা করেন দর্শক ভদ্রলোক (বেচারী বলা ভালো), এবং সেই অনুষ্ঠানটি যদি হয় নাটক, তাহলে সহ্য করতে হবে স্থূল ভাড়ামি। যদি হয় টকশো তাহলে শুনতে হবে দেশ ও জাতি উদ্ধার করা গালাগালি।
ভালো অনুষ্ঠানের জন্যে দরকার ভালো বাজেটের। ছোট আকারের বিজ্ঞাপনের বাজারের হাজার ভাগের অংশীদার টিভি চ্যানেলগুলো একেকটি অনুষ্ঠানের জন্যে যে বাজেট থাকবে এটা দিয়ে মানসম্পন্ন কিছু করা আসলেই কঠিন।
আমি ব্যবসা-প্রশাসনের লোক নই, কিন্তু পেশাগত কারণে ব্যবসা-সংক্রান্ত কিছু কিছু বিষয় জানতে হয়। সেই সীমিত ধারণায় বলতে পারি আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোর ব্যবসায়িক স্ট্রাটেজিগুলোতে বড় ধরণের সমস্যা আছে।
সে সমস্যাটি হলো আমাদের দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অবমূল্যায়ন করা। প্রতি বছরই এই ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে আমাদের। বিনোদনের জন্যে, যোগাযোগের ভালো সুবিধা পাওয়ার জন্যে খুব সাধারণ আয়ের একজন মানুষও মাসে শাতাধিক টাকার বাজেট রাখতে পারে। মোবাইল প্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার কোটি টাকার মুনাফা করে দিয়েছে আমাদের দেশের মানুষই। তাতে দোষেরও কিছু নেই। কারণ ক্রেতাও খুশী। বিক্রেতাও খুশী!
এছাড়াও সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে প্রায় কোটি বাংলাদেশী, যাদের ক্রয়ক্ষমতা দেশের তুলনায় অনেক বেশী। দিনশেষে নিজ দেশের সংস্কৃতির, ভাষার ভালো মানের অনুষ্ঠানের জন্যে প্রবাসী প্রতি বছরে গড়ে হাজার টাকা বাজেট থাকা তেমন কঠিন হওয়ার কথা নয়। সে হিসেবে শুধু প্রবাসীরাই বছরে হাজার কোটি টাকার ব্যবসার ক্রেতা হতে পারে আমাদের দেশী মিডিয়া ও চ্যানেলগুলোর।
দর্শকদের পরোক্ষ ক্রেতা (অন্য প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে) না ধরে প্রত্যক্ষ ক্রেতা হিসেবে চিন্তা করলে সম্পূর্ণ নতুনভাবে এই শিল্পটি জেগে উঠবে আমার ধারণা। এই কাজটি যারা যতো ভালোভাবে করতে পারবে তারাই দাপট নিয়ে টিকে থাকবে ভালো মানের অনুষ্ঠানসেবা নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×