somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আধার ও আধেয়_জ্ঞান / অজন ব্রহ্ম

৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আধার ও আধেয়_জ্ঞান

_____________
একবার স্থানীয় একজন সাংবাদিক আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, "অজন ব্রহ্ম, কেউ যদি বৌদ্ধধর্মের একটি পবিত্র গ্রন্থ নিয়ে টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করেন, তাহলে আপনি কি করবেন?"

বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করে আমি জবাব দিয়েছিলাম, "স্যার, কেউ যদি বৌদ্ধধর্মের একটি পবিত্র বই নিয়ে আমার টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করেন, তাহলে প্রথমে যে কাজটি আমি করবো তা হলো_একজন প্লাম্বার মিস্ত্রিকে ডেকে আনবো!"
সাংবাদিক তার হাসি থামানোর পর চুপিসারে আমাকে বলেছিলো যে, এই প্রথমবারের মতো তিনি একটি যুক্তিযুক্ত জবাব পেলেন।

এরপর তাকে আমি আরো কিছু বললাম। আমি ব্যাখ্যা করে বললাম যে, কেউ বুদ্ধের অনেক মূর্তি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিতে পারে, বৌদ্ধমন্দির পুড়িয়ে দিতে পারে অথবা বৌদ্ধ ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীদের হত্যা করতে পারে; তারা এগুলো ধ্বংস করতে পারবে কিন্তু আমি কিছুতেই তাদের বৌদ্ধধর্ম ধ্বংস করতে দেবো না। আপনি একটি ধর্মগ্রন্থ টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করতে পারেন, কিন্তু আমি আপনাকে কখনো ক্ষমা, শান্তি ও সহানুভূতি টয়লেটে ফ্লাশ করতে দেবো না।
ধর্মগ্রন্থ ধর্ম নয়, মূর্তিও ধর্ম নয়, ইমারত বা ধর্মযাজকও ধর্ম নয়।
এগুলো 'আধার' মাত্র।

বই আমাদের কী শিক্ষা দেয়? মূর্তি আমাদের কাছে কীসের প্রতীক? ধর্মযাজকদের কোন কোন গুণ থাকা উচিৎ? এগুলো হচ্ছে 'আধেয়'।
আমরা যখন আধার ও আধেয়র মধ্যকার পার্থক্য চিহ্নিত করতে পারবো, তখনই আমরা আধেয় সংরক্ষণ করতে পারবো, এমনকি আধার যদি ধ্বংসও করে ফেলা হতে থাকে।

আমরা আরো বেশি বই ছাপাতে পারি, আরো অনেক মন্দির ও মূর্তি তৈরি করতে পারি, এবং এমনকি আরো অনেক ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবো। কিন্তু যখন আমরা অন্যদের প্রতি ও আমাদের নিজেদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলবো এবং তার বদলে আমাদের মনে হিংসা ও বিদ্বেষের ভাব পোষণ করতে থাকবো, তখন সমস্ত ধর্মটাই টয়লেটের ভেতর তলিয়ে যায়।

(মূল : অজন ব্রহ্ম। বাংলা রূপান্তর: সুব্রত বড়ুয়া।। গ্রস্থ : ভালো? মন্দ? কে জানে?)

কৃতজ্ঞতা : বাংলাদেশ ভিক্ষুণী সংঘ​
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:২৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×