somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'কয়েদি ৬৫০' (বাগরামের ভূত)

১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড. আফিয়া সিদ্দিকা যিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিখ্যাত একজন মুসলিম স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং একজন আলোচিত মহিলা। তিনি করাচীর সম্ভ্রান্ত ও উচ্চ শিক্ষিত পরিবারে ১৯৭২ সালের ২ মার্চ জন্ম গ্রহন করেন। পিএইচডি ডিগ্রি ধারী এই মহিলাকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ২০০৩ সালে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আল কায়েদার সাথে যোগাযোগ থাকার অভিযোগে পাকিস্তানের করাচির রাস্তা থেকে তার তিন সন্তানসহ গ্রেফতার করে। পরে প্রচলিত আইনের আওতায় না এনে পাকিস্তানের কারাগারে গ্রেফতার না রেখেই তাকে আফগানিস্তানের সামরিক ঘাটিতে তাকে ৫ বছর বন্দি করে রাখা হয়। মার্কিন আদালত তাকে ৮৬ বছর কারাদন্ড দেয়। বন্দি অবস্তায় তার ওপর ব্যাপক অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ আছে।



জন্ম সূত্রে এই উচ্চ শিক্ষিত মহিলা পাকিস্তানের নাগরিক। শিক্ষা জীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ডিগ্রী ধারী (পিএইচডি)। স্বনামধন্য এই স্নায়ুবিজ্ঞানী শিক্ষা জীবনে অসামান্য মেধার পরিচয় দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রন্ডেইস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে “নিউরোলজি” বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে। এছাড়াও সম্মান সূচক ও অন্যান্য ডিগ্রীর ১৪০ টিরও বেশি সার্টিফিকেট তিনি অর্জন করেন। তিনি “হাফিযে কোর’আন” ও “আলিমা”। শিক্ষা লাভের পর তিনি ২০০২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই বসবাস করেন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। সহকর্মীরা তাকে অত্যন্ত ভদ্র, নম্র ও বিনয়ী হিসেবে পরিচয় দেন।

গ্রেফতার ও অপহরণ:

পাকিস্তানি এই নাগরিককে করাচির রাস্তা থেকে গ্রফতার করা হয়। পরে পাকিস্তানে কোনো বিচার কার্য না করেই সরাসরি আফগানিস্তানে নিয়ে গেলে পাকিস্তান সরকার ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়। এবং তাকে অপহরনের অভিযোগ ওঠে।

গ্রেফতারের অভিযোগ ও বন্দী জীবন:
আল-কায়দার সাথে যোগাযোগ থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয় তিন সন্তান আহমদ, সুলাইমান ও মারিয়মকে সহ। আফগানিস্তানে বন্দি রাখা কালে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। তাকে মানসিক, যৌন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হত এবং তাকে দিনের মধ্য কয়েকবার করে ধর্ষন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। বাগরাম কারাগার থেকে মুক্তি প্রাপ্ত বন্দিরা অভিযোগ করেছে “নির্যাতনের সময়ে আফিয়ার আত্ন-চিৎকার অন্য বন্দির পক্ষে সহ্য করাও কঠিন ছিলো।” ওই নারীর ওপর নির্যাতন বন্ধ করার জন্য অন্য বন্দীরা অনশন পর্যন্ত করেছিলো।

২০০৮ সালে তাকে স্থানান্তর করা হয় নিউইয়র্কের এক গোপন কারাগারে। বর্তমানে তিনি পুরুষদের সাথে ওই কারাগারে বন্দি। কারাবন্দি নম্বর ৬৫০। চলমান নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হরিয়ে ফেলেন। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের চেয়ারম্যান ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান দাবি করে বলেন “তার দু সন্তান ইতোমধ্যেই মার্কিন নিয়ন্ত্রিত আফগান কারাগারে মারা গেছে।” তিনি আরো বলেন, “পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের মধ্যে যারা ড. আফিয়া সিদ্দিকাকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।”

৩৮ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানীকে ৮৬ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়, আদালতে মার্কিন গোয়েন্দা ও সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে। অভিযোগ আছে যে তাকে ২০০৮ সালে আফগানিস্তানে অজানা রাসায়নিক পদার্থ ও হামলার পরিকল্পনার নোট সহ গ্রেফতার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে ৭টা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন যে গ্রেফতারের সময় তার কাছে গুরুত্বপূর্ন স্থানের মানচিত্রর পাওয়া যায়।

ড. আফিয়াকে ৮৬ বছর কারাদন্ডের রায় ঘোষনা করার পর পাকিস্তানের রাস্তায় বিক্ষোভ হয়। অনেকেই মনে করেন তিন সন্তানের জননী হার্ভার্ড পিএইচডিধারী আফিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সন্তাসবিরোধী যুদ্ধের আর একটি নির্দোষ শিকার। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে, “বিশ্ব জুড়ে সব জায়গায়তেই অভিযুক্তরা “বেনেফিট অব ডাউট” বা সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমানিত হওয়ার আগে পর্যন্ত নির্দোষ বলে বিবেচিত হয়। ফলে সকল সুবিধা পায়। কিন্তু ড. আফিয়া তা পাননি বরং নির্যাতনের শিকার হন।”

তার ওপর অমানবিক নির্যাতনের বিষয়টি আলোচিত হয় কারাগার থেকে তার বহুল আলোচিত চিঠিটি লেখার পর। চিঠিটিতে আফিয়া দাবি করেন তার ওপর শারীরিক, পাশবিক নির্যাতনের পাশাপাশি একের পর এক ধর্ষন করা হয়। তার একটি কিডনিও বের করে ফেলা হয়েছিলো ফলে তিনি হাঁটতে পারতেন না। তিনি আরো দাবি করেন যে তাকে গুলি করা হয় এবং তার বুকে গুলির আঘাত ছিলো।




“হে আমার মৃত জাতি!”

আমার নাম ড. আফিয়া সিদ্দিকা। আমি Massachusetts Institute of Technology (USA) থেকে লেখাপড়া শেষ করেছি এবং আমার তিনটি বাচ্চা আছে। আমার উদ্দেশ্য ছিল আপনাদের সহায়তায় অর্জিত আমার উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে আমার জাতিকে সাহায্য করা। আমাকে অপহরন করা হয় আমার নিজের দেশ (পাকিস্তান) থেকে আমার দেশের তথাকথিত মুসলিম নামধারি মুরতাদ সেনাবাহিনীর দ্বারা এবং আমায় বিক্রি করে দেয়া হয় আমেরিকার কাছে। এরপর তারা আমার উপর চালায় পাশবিক অত্যাচার। আমাকে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করা হয়, আঘাত করা হয় এবং ধর্ষন করা হয়, একের পর এক। আমার কয়েদী নম্বর দেয়া হয়েছে ৬৫০। ,আমি এখন মুসলিম দেশ আফগানিস্তান এর কারাগার থেকে আমার বন্দী জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে দুআ করি আমার ভাই সেই মুহাম্মদ বিন কাশিমের জন্য। আমি সারা বিশ্বের জনসংখার এক পঞ্চমাংশ জনসংখার মুসলিমদের বোন। ইসলামের শুরু থেকেই আমার জাতি ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত তাদের ভাইদেরকে হেফাযত করার জন্য এবং শত্রুর কবল থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য। হযরত উমার (রা) বলেছিলেন যে, “যদি কোন কুকুর ফোরাত নদীর ধারে মরে থাকে, তাহলে শেষ বিচারের দিন উমর সেই কুকুরের মৃত্যুর জন্য আল্লাহর নিকট দায়ী থাকবে।।” এই মুহূর্তে আমি নিজে নিজে হাটতে পারি না। আমার একটি কিডনি বের করে ফেলা হয়েছে, আমার বুকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে এবং আমার বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। আমার জন্য সব ধরনের মেডিক্যাল এবং বৈধ ও সাধারন সুযোগ- সুবিধা প্রত্যাখান করা হয়েছে এবং এটা নিশ্চিত নয় যে আমি বেঁচে থাকব না মরে যাবো।


আমি তোমাদের জন্য বোন হতে চাই না। আমি একজন গর্বিত মুসলিমাহ, হযরত মুহাম্মাদ (স) এর অনুসারি, হযরত আবু বক্কর (রা), উমার (রা), উসমান (রা), আলি (রা) এবং তার সকল সাহাবী ও তার সকল সঠিক ও সত্যপন্থী অনুসারীদের কন্যা। আমি তোমাদের বোন হতে চাই না। আমার নবী (স) এবং হযরত আবু বক্কর (রা), উমার (রা), উসমান (রা), আলি (রা) এবং তার সকল সাহাবী ও তার সকল সঠিক ও সত্যপন্থী অনুসারীরাই আমার উদ্ধারকারী এবং আমি আল্লাহর কাছে করুণা ও সাহায্য চাই, তোমাদের কাছে নয়।


আমি কোনো পাকিস্তানি হতে চাই না যাদের রয়েছে ৬ লক্ষ সৈন্যবাহিনী, বিশেষ ফোর্স এস.এস.জি কিন্তু তারা আমাকে রক্ষা করতে ব্যার্থ হয়েছে। তারা আমাকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু যখন আমি সাহায্যের জন্য তাদের দিকে তাকিয়ে থাকলাম তখন তারা আমাকে প্রত্যাখান করল। আমার সেই মুসলিম উম্মাহ বলে ডাকা লোকদের রয়েছে লক্ষ লক্ষ সৈন্যবাহিনী সব ধরনের টাঙ্ক, বন্দুক, জঙ্গি বিমান, সাবমেরিন। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত আমাকে উদ্ধার করতে এবং বাঁচাতে পারে নি। কিয়ামাতের দিন আল্লাহর কাছে জবাব দেয়ার ব্যাপারে তোমাদের চিন্তার কিছু নেই কারন তোমাদেরকে এ বিষয়ে কোনো প্রশ্নও করা হবে না এবং তোমাদেরকে কোনো উত্তরও দেয়া লাগবে না এজন্য যে তোমরা কেউ মুসলিম হিসাবে আমার ভাই নও, এবং ইসলাম ধর্মের জন্য ও ইসলামের অন্তর্ভুক্তির জন্য আমার ভাই নও। তোমরা কেউ আরব, কেউ পারসিয়ান, কেউ ফিলিস্তীনি, কেউ আম্রিকান, কেউ অ্যারাবিয়ান, কেউ আফ্রিকান, কেউ মালোয়শিয়ান আর কেউ ইন্দোনেশিয়ান, কেউ দক্ষিন এশীয়ান হতে পারো, তবে তোমরা কেউ মুসলিম নও। আমার কথায় যদি তোমরা আঘাত পেয়ে থাক তাহলে আমি খুবই দুঃখিত কিন্তু তোমরা কেউ এটা চিন্তাও করতে পারবে না যে, আমি কী ধরনের অবস্থায় আছি এবং কেমন আঘাতপ্রাপ্ত।



__ড.আফিয়া সিদ্দিকা



ড. আফিয়া সিদ্দিকাকে মার্কিন আদালতে ৮৬ বছর কারাদার হাজার মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ইতোমধ্যে লাহোর হাইকোর্ট স্নায়ু বিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকার মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানী বলেন, তার মুক্তি নিশ্চিত করা এবং তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে পাকিস্তান।

অভিযোগে বলা হয়, আফগানিস্তানে আফিয়া তার সহকর্মীদের সঙ্গে এক মার্কিন সৈন্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। এরপর তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আটক হওয়ার সময় আফিয়ার কাছে বোমা ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গার মানচিত্র ছিল। এ ছাড়া তার কাছে সোডিয়াম সায়ানাইট ক্যাপসুলও পাওয়া যায়। এ থেকে প্রমাণ হয় তিনি একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী।

অন্যদিকে আফিয়ার আইনজীবীদের দাবি, তিনি সন্ত্রাসী নন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী; বর্তমানে মানসিক রোগী। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে ড. আফিয়া সিদ্দিকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চআদালতে আপিল করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর আদালতে আপিল করেছি।’ রায় ঘোষণার পর আফিয়া আদালতে বলেন, আমেরিকা নয়, ইসরাইল থেকে এসেছে এ রায়। আমি এ আদালত বয়কট করি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ থেকে আমি যে নির্দোষ তা প্রমাণ করতে সক্ষম কিন্তু বিচারকের প্রতি আমার আস্থা নেই।

ড. আফিয়া সিদ্দিকার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ সাজানো হয়। অভিযোগ পর্যালোচনা করলে বোঝা যাবে এটি পাতানো গল্প। বলা হচ্ছে ২০০৮ সালের জুলাইয়ে আফগানিস্তানের গজনী প্রদেশে আফিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তিনি দু’মার্কিন গোয়েন্দাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন।

মার্কিন গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ৩৮ বছর বয়সী আফিয়া একজন ওয়ারেন্ট অফিসারের এম-৪ অ্যাসল্ট রাইফেল কেড়ে নিয়ে এফবিআই এজেন্ট ও সৈন্যদের গুলি করার চেষ্টা করেন। এ সময় মার্কিন সেনারা তাকে মেঝেতে ফেলে দিলে ধস্তাধস্তি হয় এবং ৯ এম.এম পিস্তলের গুলি তার পায়ে লাগে। এতে মার্কিন এজেন্ট বা গোয়েন্দারা কেউ হতাহত না হলেও আফিয়া গুলিবিদ্ধ হন।

ড. আফিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর বক্তব্য হলো, তাকে গ্রেফতারের সময় তার সঙ্গে থাকা হাতব্যাগ তল্লাশি করে মার্কিন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা সম্বলিত কাগজপত্র, গজনীর মানচিত্র, রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির নিয়মাবলী ও রেডিওলজিক্যাল এজেন্ট সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। ব্রিটেনের দি ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকার সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্রন্ডেইস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রিধারী একজন পাকিস্তানি-আমেরিকান তার হাতব্যাগে করে মার্কিন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা নিয়ে ঘুরছেন—এটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য?
ইসলামি আদর্শ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি রয়েছে তার স্ট্রং কমিটমেন্ট। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথিত অভিযোগে ২০০৩ সালে ড. আফিয়াকে তার তিন সন্তান আহমদ, সুলায়মান ও মরিয়মসহ করাচির রাস্তা থেকে অপহরণ করে। পাকিস্তানের কোনো কারাগারে না রেখে এবং পাকিস্তানি আদালতে উপস্থাপন না করে পাঁচ বছর ধরে তাকে আফগানিস্তানের বাগরাম সামরিক ঘাঁটিতে বন্দি করে রাখা হয়। এরপর চলে তার উপর অমানসিক শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন। বাগরামে কুখ্যাত মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন, ‘নির্যাতনের সময় একজন নারী বন্দির আর্তচিত্কার অন্য বন্দিদের সহ্য করাও কষ্টকর ছিল। ওই নারীর ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে অন্য বন্দিরা অনশন পর্যন্ত করেছিল। পাকিস্তানের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সম্মতিক্রমে এফবিআই এ বিজ্ঞানীকে অপহরণ করার সুযোগ পায়।

ড. আফিয়ার বিরুদ্ধে প্রহসনের বিচারিক রায় ঘোষণার সময় তাকে কিছু বলতে বলা হলে বিচারকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন :

আপনি তাদের ক্ষমতা দিয়েছেন আমাকে রেফ করার, উলঙ্গ করে সার্চ করার! আপনার কাছে কিছুই বলবার নেই আমার। আমি আমার আল্লাহর কাছে যেয়েই যা বলার বলবো। আমি তো সেদিনই মরে গেছি, যেদিন আমাকে প্রথম ধর্ষণকরা হয়েছিলো। আমাকে ছেড়ে দিন। আমাকে আমার দেশে যেতে দিন।
.
বিশ্বের একমাত্র স্নায়ূ বিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকা’র মূল অপরাধ ছিল তিনি এতো উচ্চ শিক্ষিত হয়েও কুরআনের প্রতি ঝুকে ছিলেন কেনো? কুরআন থেকে কেন রেফারেন্স টানতেন?





“এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম যে সংবাদই আসুক না কেন, বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার যে ড: আফিয়া বিরুদ্ধে কখনো সন্ত্রাসবাদের কোন অভিযোগ করা হয়নি। তার বদলে ২০০৮ সালে মাঝামাঝি সময়ে তার বিরুদ্ধে রাইফেল দ্বারা যুক্তরাষ্ট্রের এক ওয়ারেন্ট অফিসারকে অপহরণ অভিযোগ করা হয়। সে সময় আফিয়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আফগানিস্তানের গজনী প্রদেশে বন্দি করে রাখা হয়েছিল একই সাথে তারা বিরুদ্ধে এফবিআই-এর এজেন্ট এবং সামরিক বাহিনীর কর্মীর উপর গুলি করার অভিযোগ আনা হয়। তবে কর্মীদের কেউ তাতে গুলিবিদ্ধ হয়নি। এরপর থেকে আমেরিকার প্রচার মাধ্যম তার নাম দেয় “লেডি আল কায়েদা” (মহিলা আল কায়েদা), যে নামের সে মোটেও যোগ্য নয় এবং যা অবশ্যই বিচারককে প্রভাবিত করেছে। এখানে যে বিষয়টি বেদনাদায়ক যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এক সহযোগী হওয়া সত্ত্বেও এ ব্যাপারে আমাদের সরকার কোনকিছু করতে সমর্থ হয়নি এবং পাকিস্তানের এক নাগরিকের উপর এ রকম এক ঘটনায় তারা কেবল আবেদন জানিয়েছে”।এক্সপ্রেস ব্লগে শওকত হামদানি লিখেছেন:

কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে বাগরামে তার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা খুবই বাজে, কিন্তু পাকিস্তানী সরকার কি এমন একজনের মুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে পারে যে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতের প্রচেষ্টায় এবং বিচারে আসামিতে পরিণত হয়, এক্ষেত্রে তারা হাস্যস্পদে পরিণত হয়েছে, বিশেষ করে যদি ব্যক্তিটির কথা বিবেচনা করা হয়, যে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক। (ফয়সাল কাপাডিয়া লিখেছেন)
“আফিয়ার ঘটনা আমেরিকার বিচারকার্যের অন্যতম এক বাজে উদাহরণ, আদালতের বীভৎস অপব্যবহার এবং এক অন্যায়, এতে চূড়ান্ত উত্তেজনা প্রদান করা হয়, তাকে ভার্চুয়াল বা মাত্রাতিরিক্ত জেল প্রদান করার মধ্যে দিয়ে, তাকে এমন এক অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা হল, যা সে কখনোই করেনি”
স্টিফেন লেন্ডমেনস-এর সংবাদ অনুসারে

““বিচারক বারম্যান তাকে যে ৮৬ বছরের জেল দিয়েছে তার প্রয়োগ প্রায় অনিশ্চিত এবং ক্রমাগত চালিয়ে যাওয়া অত্যাচারের মত নিষ্ঠুরতা… বিষয়টি লজ্জাজনক। এবং তার মামলা, আমাদের অপরাধ বিচার পদ্ধতির ক্ষেত্রে এক ক্ষত হয়ে থাকবে এবং যতক্ষণ না সে ছাড়া পাবে ততক্ষণ সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সুনাম কলঙ্কিত হয়ে থাকবে”। (হিউস্টন ক্রিমিনাল লইইয়ার-এর জন ফ্লয়েড এবং বিলি সিনক্লিয়ার বলছেন, শাস্তি হিসেবে এত দীর্ঘ সময় জেল, প্রয়োজনের চেয়ে বেশী, নিষ্ঠুর এবং অর্থহীন)
পাকিস্তান সরকারের উচিত অতি দ্রুত আফিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং দ্রুত তা কার্যকর করার দাবী করা। পাকিস্তানের কন্যাকে তার হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্রের মুখ বন্ধ করা, পিছিয়ে যাওয়া এবং অপমানিত হবার প্রয়োজনা রয়েছে।

খানিকটা সৌভাগ্যের মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপরাধ নাগরিকরা বিদেশে ভ্রমণ করে, তারা এই রকম আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হবে না।
ইভোন্নো রিডল তার সম্প্রতি কাউন্টারকারেন্টস.অর্গে “আজ আফিয়া, কাল আমেরিকার যে কোন নাগরিক” শিরোনামে একটি পোস্ট লিখেছেন”:



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইহূদী রাষ্ট্র ইসরাঈল ‘মোসাদ’সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের বিজ্ঞানী ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হত্যার এক জঘন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে। পৃথিবীর কোন মুসলিম রাষ্ট্র যাতে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে না পারে- ইসরাঈল তার মিত্র দেশসমূহকে নিয়ে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। মুসলিম বিশ্বের কোন দেশে যদি বিস্ময়কর মেধার অধিকারী কোন বিজ্ঞানীর জন্ম হয় এবং তাঁর মেধা যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয় তাহলে নির্ঘাত ইহূদী হিটলিস্টে তাঁর নাম অন্তর্ভূক্ত হবে। ঘাতক স্কোয়াড তাঁর পেছনে লেগে থাকবে এবং সুযোগ পেলে গুলি করে দেবে। ইহূদীরা মুসলমানদের পরমাণু অস্ত্র শুন্য করতে চায় অথচ ইসরাঈলের রয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের বহর। বিবিসি পরিচালিত এক পরিসংখ্যানে জানা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে ২২০০টি পারমাণবিক বোমা, যুক্তরাজ্যের আছে ১৬০টি, ফ্রান্সের আছে ৩০০টি, রাশিয়ার আছে ২৮০০টি আর চীনের আছে ১৮০টি (কালের কন্ঠ, ৭.০৩.২০১০, পৃ. ০৩)। উপর্যুক্ত দেশগুলো ছাড়াও পৃথিবীতে আরো বহু দেশ আছে যাদের কাছে মজুদ রয়েছে বিপুল পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র কিন্তু ইরানের থাকতে পারবে না। এটা কোন যুক্তি ? ইহূদী-খ্রিষ্টান রাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক বোমা থাকলে নিরাপদ অপর দিকে মুসলিম দেশের থাকলে তা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। এ ধরনের প্রচারণা গোয়েবলসীয় শয়তানী ছাড়া আর কী?

মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক ছিল এক শক্তিশালী দেশ। ইরাকের সেনা সদস্যরা চৌকস। ইঙ্গ-মার্কিন-ইহুদি শক্তি টার্গেট করলো ইরাককে। দুর্ভাগ্য সাদ্দাম হোসেনের, যাদের প্ররোচণায় তিনি কুয়েতে অভিযান চালালেন, তাদের হাতেই কুরবানীর ঈদের দিন সকালে ফাঁসিতে ঝুলতে হলো তাঁকে। ইরান-ইরাক ভ্রাতৃঘাতি যুদ্ধের নেপথ্য নায়কও তারা। ১০ বছরের এ যুদ্ধে কত লক্ষ মানুষের প্রাণ গেল, কত কোটি টাকার সম্পত্তি বিনষ্ট হলো তার ইয়াত্তা নেই। কত মেধাবী ও প্রতিভাবান মানুষ অকালে ঝরে গেল তার হিসাব রাখে কে ? সব ষড়যন্ত্র। সব সাম্রাজ্যবাদী খেলা। মুসলমান রাজা-বাদশাহ ও স্বৈরশাসকগণ তাদের হাতের ক্রীড়নক। ক্ষমতার মসনদই তাদের শেষ কথা।

ইরাকের বিশাল সেনাবাহিনী যাতে ইসরাঈলের জন্য হুমকী সৃষ্টি না করে সে জন্য মিথ্যা অজুহাতে ইহূদী মিত্র মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র ২০০৩ সালে ১ লাখ ৭১ হাজার সৈন্য নিয়ে ইরাক দখল করে নেয়। বিদ্যুৎ তৈরীর উদ্দেশ্যে প্রস্তুত পরমাণু সংক্রান্ত নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, বৈজ্ঞানিক গবেষণার তথ্য-উপাত্ত আগ্রাসী সেনাবাহিনী তাদের নিজ দেশে পাচার করে। পারমাণবিক সব গবেষণা ও স্থাপনা বন্ধ ঘোষণা করে। সম্প্রতি মার্কিন বাহিনী ইরাক থেকে বিদায় নিয়েছে ঠিক কিন্তু রেখে গেছে পৈশাচিকতার উন্মত্ত তান্ডব, বাতাসে রাসায়নিক মারণাস্ত্রের বিষক্রিয়া ও আগ্রাসনের দুঃসহ স্মৃতি। মার্কিন সশস্ত্র অভিযানে দেড় লাখ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। বিধবা হয়েছেন ৭ লাখ ৪০ হাজার মা। মার্কিন হামলার পর ২০ লাখ ইরাকি যাদের মধ্যে রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যসেবী সিরিয়া, জর্দানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে আশ্রয় নিয়েছে উদ্বাস্তু হিসেবে। শত্রুর নখর থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি ইরাক। লড়াই চলাকালীন দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনা রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অস্ত্রের মুখে লুট করে নিয়ে গেছে নগদ অর্থ, সোনা-দানা, বৈদেশিক মুদ্রা, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় রেকর্ড ফাইল, প্রত্মতাত্বিক সম্পদ ও পেট্রোল। ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ বিশ্লেষণ অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় ইরাকের অবস্থান পঞ্চম। ‘অপারেশন ইরাকি ফ্রিডম’-কে কেন্দ্র করে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা করেছে এবং নতুন আবিস্কৃত গোলা ও অস্ত্রের পরীক্ষাও করেছে ইরাকের মাটিতে। মার্কিন বাহিনীর নিক্ষিপ্ত বোমা ও ব্যবহৃত অস্ত্রের বিষক্রিয়ায় বাতাস হয়ে গেছে বিষাক্ত। ইরাকে প্রতি এক হাজার প্রসবের ঘটনায় শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ৮০। দেশটিতে ২০০৪ সালের তুলনায় লিউকেমিয়া বেড়েছে ৩৮ আর স্তন ক্যান্সার ১০ গুণ। মার্কিন বাহিনীর যুদ্ধ শেষ হলেও সহিংসতা বন্ধ হয়নি।

ইরাক পরমাণু প্রকল্পের প্রধান ড. ইয়াহয়া আমীন আল মুশহিদ ১৯৮০ সালে প্যারিসে মোসাদ এজেন্টদের হাতে নিহত হন। ইরাকী পরমাণু রিয়েক্টর উন্নয়নের জন্য তিনি তখন ফ্রান্স কর্তৃপক্ষের সাথে প্যারিসে আলোচনা চালাচ্ছিলেন। তাঁর মৃত্যু ইরাকের জন্য অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

লিবিয়ার পারমাণবিক স্থাপনার সব বৈজ্ঞানিক ম্যাটেরিয়াল মার্কিন সেনা সদস্যরা কার্গো জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে যায়। বিনিময়ে স্বৈরশাসক গাদ্দাফী কিছু কাল (২০০৩-২০১১) ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা পায়। দালালি করেও ক্ষমতায় ঠিকে থাকা বেশী দিন সম্ভব হলো না গাদ্দাফীর। ৪২ বছরের দুঃসহ স্মৃতি লিবিয়ানদের বহন করতে হবে বহু কাল। এখন লিবিয়ার অয়েল ফিল্ডের নতুন মুরব্বি ন্যাটো। ২০০৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর গাদ্দাফী আমেরিকা ও ব্রিটেনের ইহুদি লবির চাপে পারমাণবিক গবেষণা প্রকল্প পরিত্যাগ করার পরপরই আকাশ ও নৌপথে ক্যামিকাল, নিউক্লিয়ার ও বায়োলজিক্যাল অস্ত্র উপাদান আমেরিকায় পৌঁছতে থাকে। ২০০৩ সালে ২০০ ব্যালাস্টিক স্কাড-বি ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহার উপযোগী ২ হাজার টন ইউরেনিয়াম ও রেডিওলজিক্যাল ম্যাটেরিয়াল আমেরিকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ঞবহহবংংবব স্টেট বিমান বন্দরে নিয়মিত ত্রিপোলি হতে রাসায়নিক অস্ত্র সামগ্রীবহনকারী কার্গো বিমান অবতরণ করতে থাকে। সর্বশেষ খবর হচ্ছে লিবিয়ার অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের যোগসাজশে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র লিবিয়ার খ্যাতনামা বিজ্ঞানীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজনে গ্রেপ্তার এবং বিজ্ঞান গবেষণাগার খুঁজে বের করার জন্য ৩০ লাখ ডলার ব্যয় করছে (এপি, ১৫.০৯.২০১১)। কেবল ত্রিপোলির বাইরে তাজুরা নামক স্থানে স্থাপিত পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে ৭৫০জন বিজ্ঞানী কাজ করতেন। তাদের বর্তমান অবস্থান অনেকটা অজ্ঞাত।

সোয়াত উপত্যকায় শরী‘য়া চালুকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্র পাকিস্তানের কাহুটা পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের পাঁয়তারা করছে। তালিবান গেরিলারা যে কোন সময় পারমাণবিক স্থাপনা দখল করে নিতে পারে, আমেরিকা প্রতিনিয়ত এ আশংকা প্রকাশ করে একটি অজুহাত খাড়া করতে চাচ্ছে। তালেবান যোদ্ধাদের নাগালের বাইরে রয়েছে তাদের পরমাণু অস্ত্র। পাকিস্তান বারবার আশ্বস্ত করলেও ওয়াশিংটন বলছে ‘পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা এখনো সমূহ বিপদের মুখোমুখি’। যুক্তরাষ্ট্র্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল জেমস জোনস বিবিসি-এর সাথে সাক্ষাতকারে বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী যতই বলুক, তাদের পরমাণু অস্ত্র নিরাপদে আছে। এতদসত্ত্বেও ওয়াশিংটন আরো নিশ্চয়তার প্রয়োজন আছে বলে মনে করে’। এ ভাবে তালেবান হুমকির প্রসঙ্গ তুলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক স্থাপনা পাহারাদারী করার জন্য পাকিস্তানকে বাধ্য করবে। ফলে মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। জেনারেল মোশাররফের শাসনামলে আমেরিকর নির্দেশে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের জনক ড. আব্দুল কদীর খানকে গৃহবন্দী রাখা হয়। তাঁকে সি.আই.এ-এর কাছে হস্তান্তরের জন্য আমেরিকা জোর দাবী জানায়। জনরোষের ভয়ে মোশাররফ সরকার এ দাবী মানতে পারেনি।

রহস্যজনক “US Contingency Plan” অনুসারে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাত আল কায়দা বা তালেবান জঙ্গিরা যদি পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্প দখলে নেয়ার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি হলে পেন্টাগন পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পাকিস্তানের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক পরিকল্পনা করেছে। পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার সাইট বিশেষ করে বৃহত্তর ‘খুনাব রিঅ্যাক্টর এবং নিউ ল্যাব প্রসেসিং প্লান্ট’ বোমা মেরে ধ্বংসকরণের ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিনিদের (আমার দেশ ০১.১০.২০১১, পৃ. ০৭)।

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত হোক- এটা ইসরাঈল কোন দিন চায়নি। ইহুদী লবি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করে ইরানে হামলা পরিচালনার জন্য কিন্তু আফগানিস্তান ও ইরাক সংকটের পাশপাশি আরেকটি সংকট তৈরী হোক বুশ সে ঝুঁকি নিতে চাননি। আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে আমেরিকার বিপুল পরিমাণ সৈন্য ও অর্থহানি হয়েছে। মার্কিন সরকারের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় খোদ ইসরাঈল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাহস করে নি। তবে যে কোন মুহূর্তে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহ ইসরাঈলের টার্গেট হতে পারে।

সরাসরি হামলা করতে না পেরে ইসরাঈল গুপ্ত হত্যার আশ্রয় নিয়ে মুসলিম বিশ্বকে মেধাশূণ্য করার ষড়যন্ত্রে নেমেছে। ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে ইরানের শীর্ষস্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানী আরদাশীর হাসান বাউর মোসাদ এজেন্টদের হাতে প্রাণ হারান। আরদাশীর হাসান ইস্পাহানে অবস্থিত পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পরমাণু গবেষণার অন্যতম পাদপীঠ সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ষ্টাডিজের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ইরানের শীর্ষস্থানীয় আরো বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী ইসরাঈলীদের হত্যার তালিকায় রয়েছে।

‘হামাস’ এ প্রতিষ্ঠাতা ফিলিস্তিনের আধ্যাত্মিক গুরু অশীতিপর বৃদ্ধ শেখ আহমদ ইয়াছিন(৭৫)ফজরের নামায আদায় করে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় ইসরাঈলী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে শাহাদত বরণ করেন ২০০৪ সালের ২২ মার্চ। বহু দিন ইসরাঈলী কারাগারে বন্দি শেখ আহমদ ইয়াছিন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতেন। ১২ বছর বয়সে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেলে তিনি হুইল চেয়ার ব্যবহার করতেন। নানা জটিল রোগের কারণে তিনি প্রায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এমন অসুস্থ মানুষটিকে হত্যা করা যে কত বর্বরোচিত ও পৈশাচিক, সচেতন মানুষ মাত্রই তা বুঝেন। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পেছনেও মোসাদ-এর হাত ছিল বলে অনেকের সন্দেহ। সাইপ্রাসে নিযুক্ত জর্দানী বংশোদ্ভুত আল-ফাতাহ প্রতিনিধি হোসাইন আল বশির ১৯৭৩ সালের ২৪ জানুয়ারী মোসাদ এজেন্টদের হাতে মৃত্যুবরণ করেন। নিকোশিয়ায় তাঁর হোটেল কক্ষে রক্ষিত বোমার বিস্ফোরণে তাঁর মৃত্যু ঘটে। ১৯৭২ সালের ২ ডিসেম্বর প্যারিসে নিযুক্ত পিএলও প্রতিনিধি ড. মুহাম্মদ হামশারী’কে মোসাদ হত্যা করে তাঁর অফিসের টেলিফোন টেবিলে টাইম বোমা পুঁতে।

আরব বিশ্বের খ্যাতনামা সব বিজ্ঞানীর কর্মপ্রয়াসের উপর রয়েছে ইসরাঈলের কড়া গোয়েন্দা নজরদারী। মিশরীয় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. সামীরা মূসা ১৯৫২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। অজ্ঞাত পরিচয় এক ড্রাইভার তাঁর গাড়ী চালাচ্ছিল। ইসরাঈল কর্তৃক পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার মজুদ করার কারণে যে কোন সময় মধ্য প্রাচ্যে জুড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে, ড. সামীরা এমন আশংকা প্রকাশ করতেন বলে ইসরাঈল তাঁকে অপছন্দ করতো। এ ছাড়া তিনি পরমাণু প্রকল্পের জন্য ইউরেনিয়ামের তুলনায় ধাতব পদার্থ হতে আরো সাশ্রয়ী জ্বালানী উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। ১৯৬৭ সালে মিশরের শীর্ষস্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. আমীর নাজীব গুপ্তঘাতকের হাতে ডেট্রয়টে নিহত হন। সামরিক অভিযানে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারে তিনি বেশ কয়েকটি সফল পরীক্ষা পরিচালনা করেন।

১৯৮৯ সালের জুলাই মাসে অজ্ঞাতামা আততায়ী মিশরীয় বিজ্ঞানী সাঈদ আল বুদায়েরকে তাঁর আলেকজান্দ্রিয়াস্থ বাসভবনে গুলি করে হত্যা করে। মাইক্রোওয়েভ ফিল্ডে তিনি বেশ কয়েকটি অগ্রবর্তী থিউরী উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। এসব হত্যাকান্ড মুসলমানদের পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত রাখার যায়নবাদী কৌশলের অংশ বিশেষ মাত্র। ইসরাঈল ছাড়া যেন আর কারও হাতে পরমাণু অস্ত্র না থাকে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যেন ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরী না হয়, এটাই ইহূদীদের টার্গেট। সামরিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে ইসরাঈলের হাতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৩০০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) ১৮৯টি রাস্ট্র স্বাক্ষর করলেও আজ পর্যন্ত ইসরাঈল এ চুক্তি মেনে নেয়নি। ইসরাঈলকে এনপিটি’তে যোগ দেয়ার জন্য কিংবা তার কাছে থাকা পরমাণু অস্ত্রের ধ্বংসের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কোনরূপ কার্যকর চাপ প্রয়োগ করেনি। মার্কিন নেতাদের এ ‘ডাবল স্টান্ডার্ড’ পলিসি বিশ্বে তাদের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

আরব গোয়েন্দাদের হাতে মধ্যপ্রাচ্যে কোন ইহূদী বিজ্ঞানী মারা গেলে গোটা দুনিয়া জুড়ে কী তুলকালাম কান্ড ঘটতো আমরা কী তা কল্পনা করতে পারি? খোদ আরবদেশের রাজা-বাদশাহগণও এটাকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলে চিৎকার দিয়ে উঠতেন। পশ্চিমা বিশ্ব এ ভাবে ইহূদীদের মাধ্যমে মুসলমানদের সৃজনশীল মেধাকে নিঃশেষিত করার ঘৃণ্য বর্ণবাদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। মার্কিন-ইসরাঈলী গুপ্তঘাতক স্কোয়াডের হাত থেকে মুসলিম বিজ্ঞানীদের রক্ষার দায়িত্ব কে নেবে? এ মুহূর্তে এটাই বড় প্রশ্ন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সহিষ্ণুতা, শান্তিপুর্ণ সহাবস্থানের কথা বললেও বাস্তবে তার প্রমাণ নেই। আফগানিস্তান ও ইরাক দখল তাদের আগ্রাসী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। গোয়ান্তানামো ঘাঁটিতে বীভৎস কায়দায় বন্দী নির্যাতন ও পবিত্র কুর‘আনের অবমাননা মার্কিনীদের চরম অসহিষ্ণু মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে। পাকিস্তান ও ইরানের সার্বভৌমত্ব যখন মার্কিন হুমকীর মুখে ঠিক এ মুহূর্তে ও.আই.সি এগিয়ে আসতে পারছে না আগ্রাসন প্রতিরোধের সংগ্রামে মুসলিম বিশ্বের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে। এ কথা মনে রাখা দরকার সন্ত্রাসের মূল উৎস খুঁজে বের করে তা সমাধানের পথে অগ্রসর হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হতে বাধ্য। হামলা ও আগ্রাসন সন্ত্রাসকে বহুমাত্রিকতায় বৃদ্ধি করবে। বুকে বোমা বেঁধে যারা প্রাণ দেয়, তাদের মনের দুঃখের খবর রাখে কে?

ইহূদীদের সর্বশেষ ষড়যন্ত্রের শিকার ড. আফিয়া সিদ্দিকা। আরেক বোন ফাতেমার কাহিনী বলে দীর্ঘায়িত না করে তাঁর চিঠিটা শেষে শেয়ার করছি:

ফাতেমার চিঠি


“পরম করুনাময় আল্লাহতা’য়ালার নামে

(হে মুহাম্মদ) তুমি বলো, তিনিই আল্লাহ তিনি এক একক। তিনি কারোর মুখাপেক্ষী নন, তার থেকে কেউ জন্ম নেয়নি, আর তিনিও কারো থেকে জন্ম গ্রহন করেননি। আর তার সমতুল্য দ্বিতীয় কেউ নেয়।(সূরা আল-এখলাস)

আমি আল্লাহর গ্রন্থ আল-কোরআন থেকে হতে এই পবিত্র সূরাটি পছন্দ করেছি কারন এর দারুন প্রভাব পড়েছে আমার উপর এবং আপনাদের সবার উপরে ও বিশ্বাসীদের হদয়ের এক প্রকার ভয় ও শ্রদ্ধা মিশ্রিত বোধের জন্ম দেবে। আমার ভাই মুজাহীদিন আল্লাহর পথে আছে।আপনাদের আমি কি বলবো?

আমি আপনাদের বলছি : আমাদের গর্ভ বানর ও শূকুর জাতীয় লম্পটদের সন্তানে ভর্তি হয়ে আছে। যারা আমাদের ধর্ষণ করেছে। অথবা (আমি) আপনাদের বলতে পারি যে, তারা আমাদের দেহকে বিকৃত করেছে। আমাদের মুখমন্ডল জলসে দিয়েছে এবং আমাদের ঘাড়ে ঝোলানো কোরআনের ছোট কপিটি অযথা ছিড়ে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলেছে। আল্লাহু আকবার, আপনারা কি পরিস্থিতি অনুদাবন করতে পারছেন না? এটা সত্য আপনারা জানেন না আমাদের সাথে কি ঘটেছে। আমরা আপনাদের বোন। আল্লাহ হিসাব নিকাসের সময় ভবিষ্যতে এ সম্পর্কে আপনাদের জিজ্ঞাসা করবে। আল্লাহর কসম কারাগারে আসা পর্যন্ত আমাদের এমন কোন রাত কাটেনি যে রাতে বানর ও শুকুর জাতীয় অমানুষরা আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েনি। তারা তাদের পূর্ণ স্বাদ মিটিয়ে নিস্তেজ হওয়া অবধি আমাদের দেহকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করতে থাকে। আমরাই তারা যারা আল্লাহর ভয়ে সব সময় সতীত্বকে কে রক্ষা করে এসেছি। আল্লাহকে ভয় করুন। আমাদের মেরে ফেলুন। আমাদের ধংস করে দিন। তাদের আনন্দ উপকরন হিসাবে আমাদের রেখে যাবেন না। এভাবে সর্বশক্তিমান আল্লাহর মহাকৃতিত্ব মর্যাদা সম্পন্ন করা হবে। আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। তাদের কামান ও উড়োজাহাজ গুলো বাইরে রেখে আসুন। আবু গারীব কারাগারে আমাদের কাছে আসুন। আমি আপনাদের ধর্ম বোন। তারা আমায় একদিন নয়বারেরও বেশী ধর্ষন করেছে। আপনারা কি অনুধাবন করতে পারছেন? চিন্তা করুন আপনাদের এজন বোন ধর্ষিত হচ্ছে। আপনারা কেন ভাবতে পারছেন না আমি আপনাদের বোন? আমার সাথে আরো ১৩ জন মেয়ে আছে। সবাই অবিবাহিত। সবাই সবার সামনে প্রকাশ্য ধর্ষিত হচ্ছে। তারা আমাদের নামায পড়তে দেয় না। তারা আমাদের পোশাকগুলো নিয়ে নিয়েছে। আমাদের কাপড় পরতে দেয়না। আমাদের মধ্যে একজন মেয়ে আত্নহত্যার প্রতিজ্ঞা করেছে। তাই আমি এই চিঠিটি লিখছি। সে নৃশংসভাবে ধর্ষিত হয়েছে। একজন সৈনিক তাকে ধর্ষনের পর তার বুক ও উরুতে আঘাত করেছে। সে অবিশ্বাস্য অত্যাচারের দ্বারা তাকে ভোগ করেছে। মেয়েটি তার মাথা জেলের দেয়ালে সাথে আঘাত করতে লাগল যতক্ষন না তার মৃত্যু হয়, মেয়েটি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। যদিও ইসলামে আত্নহত্যা নিষিদ্ধ। কিন্তু আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আশা করছি আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। কারন তিনি(আল্লাহ) সবার প্রতি অসীম দয়ালু। ভাই আপনাদের আবারও বলছি আল্লাহকে ভয় করুন। আমাদের মেরে ফেলুন। তাহলেই আমরা হয়ত শান্তি পাব। সাহায্য করুন। সাহায্য করুন। সাহায্য করুন।



আজ চরম দঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, বোন আফিয়া বেঁচে আছেন কি না নাই সে নিয়েও সন্দেহের অবকাশ নেই। অনেক হয়েছে চুপ থাকা আমরা কি সাধারণ পিটিসন সাইন করে আমাদের বোন আফিয়ার কারাভোগ লাগব করতে চেস্টা করতে পারি না?
আফিয়া বোনকে চিটি লিখে সাহায্য করতে





আফিয়া বোনের সম্পর্কে জানতে বা তার অফিসিয়াল সাহায্যে সাইটে যেতে, এখানে ক্লিক করুন!







উইকিসূত্র:
চিটি সূত্র:
ছবিসূত্র২:
তথ্যসূত্র২:
তথ্যসূত্র৩।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:৫৫
১৫টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×