somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শার্লক হোমস!!

০২ রা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


'if you are batman than you are just living next door from us' - children.
অবাক হয়ে আবার চিঠিটা পড়ে দেখলেন শার্লক হোমস। এই নিয়ে কয়েকবার তার চিঠিটা পড়া হয়েছে। যতবার বোঝার
চেষ্টা করছেন ততবারই ঘুলিয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের অদ্ভুত ব্যাপারের মুখোমুখি তিনি আগে কখনও পড়েন নি। সাহায্যের আশায় ওয়াটসনকে ব্যাপারটা অবগত করলেন। এই ব্যাপারটাতে ওয়াটসনকে চিন্তিত মনে হচ্ছে না বরং সে কিছুটা তাচ্ছিল্যেই জবাব দিল, এটা নির্বোধ শিশুমনের অঙ্কিত একটি কল্পনার চিত্র মাত্র, যা বাস্তবে অসম্ভব। তুমি শুধু শুধুই ব্যাারটাতে মাথা ঘামাচ্ছ। চিবুকে মৃদু চিমটি কেটে শার্লক হোমসও মনে মনে সায় দেওয়ার অঙ্গিতে তার চিরায়িত হুমম শব্দটা করলে ওয়াটসনের বোঝতে বাকি রইল না, ব্যাপারটা বন্ধুর মনে অনেকদিন গেঁথে থাকবে। হয়ত অন্য কোন কেসে এই সাধারণ ভাবনা থেকেই সে নিয়ে আসবে অসাধারণ কোন বিশ্লেষণাত্মক ফলাফল। ব্যাপারটি তাচ্ছিল্যের হলেও বিষয়টি তাকেও ভাবায়। ব্যাটমেন-বলে যদি সত্যি কেউ থেকে থাকেন তাহলে তাকে তারা কোথায় খোজতে যাবে, অবস্থানগত সেটা দূর্গ-কে নির্দেশ করছে। যেটা বর্তমান সময়ে ভাবনারই অতীত, তার মানে অতীতে এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষ গুহাতে বাস করত আর সেটা কোন এক শিশু মনে ঠিকই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বেকার স্ট্রিটের সেই পুরানো বাসার বৈঠক রুমে ফায়ার প্লেসের আলোয় তাদের সন্ধ্যাকালীন আড্ডা চলছিল। শার্লক নতুন করে আবার চুরুটে আগুন দড়ালে ওয়াটসনের বোঝতে কষ্ঠ হল না, বন্ধুবর কোন বিষয় নিয়ে গভীর চিন্তায় আছেন। সে লক্ষ্য করে দেখেছে যে শার্লক যখন কোন কিছু চিন্তা করেন তাখন খুব বেশী ধূমপান করেন আর নয়ত কিছুক্ষণের জন্য ব্যাপারটা সম্পূর্ন ভুলে যায়। আচ্ছা কয়েকদিন আগে তুমি একটি অদ্ভুত বিজ্ঞাপণের আইডিয়া দিয়েছিলে, সেটা মনে আছে? ওয়াটসনের মনে করতে সময় লাগলো না। সেটা. যেখানটাতে একজন কয়েদিকে হাতকঁড়া পড়িয়ে পুলিশ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে আর সে উচু সূরে বব মার্লের 'No Woman No Cry' গাইছে! ? কথার জবাবে হোমসও সায় দিয়ে বলে উঠল আর শেষটায় ব্যাকগ্রাউন্ডে বনিয়ামের 'What! A World of fun for everyone. . it's Holy Holy Day' এই মিউজিক বাজার সাথে সাথেই অফিসার তার হাতের বেড়ি খুলে দিল! এসব কিছুর অন্তরালে যেন অদ্ভুত একটি মিল আছে যেটা আমরা প্রায়ই অবজ্ঞার ছলে উড়িয়ে দিচ্ছি। কে জানে হলিউডের জম্বি প্রদর্শনের পিছনে হয়ত এসব কিছুর যথেষ্ঠ অবদান রয়েছে। তার প্রিয় ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে শার্লক স্বভাবসূলভ চিরায়িত অভ্যাসের মতন তামুকের ধোয়া টানছে। হোমসের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ওয়াটসনের প্রখর আত্ন-বিশ্বাস। শার্লকের মতন মানুষ কখনও মাদক সেবন করবে সেটা সে কল্পনাই করতে পারত না। যদি না সেদিন পাশের বাড়ির আন্টির স্বামী রাতে ঘড়ে ফিরতে বিলম্ভ করতেন, আর সেজন্য তাকে উনাকে খোজতে বের হতে হয়। বাসস্টেন্ড, মেডিকেল, এয়ারপোর্ট, থানা সবশেষে তাকে খোজতে ওয়াটসন পাশের পাবে যায়। সোভাগ্যবশত মাতাল অবস্থায় আন্টির স্বামীকে পেলেও ধোয়ার কুন্ডলি পাকিয়ে একটু দূরের টেবিলে বসে থাকা পরিচিত মুখ দেখে তার চিনতে মুহূর্ত সময় লাগলো না যে তিনি শার্লক। তৎক্ষণাৎ তাকে সেটা বোঝতে না দিয়ে আন্টির স্বমীকে ঘড়ে পৌঁছে দিয়ে সে আবার সেখানে ফিরে আসে। এবার বন্ধুবরের টেবিলে বসে সরাসরি তাকে সে প্রশ্ন করে, বন্ধু তুমি কুকেন সেবন কর সেটাত আমারও জানা নেই। তখন হোমস হেসে তাকে বলেন, আসলে হাতে কোন কেস না থাকায় সেই উত্তেজনা প্রমসন করতে তার এটা নিতে হচ্ছে। আর এমনটি তার তখনই করতে হয় যখন হাতে কোন কাজ থাকে না, মন্তিস্কের চিন্তাদ্বারায় ব্যাঘাত আসলে! আজকের সন্ধ্যাটাও যেন সেই অলস সময়ের ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তখনই দড়জাতে কড়াগাত হবার শব্দ হল। এ সময়টাতে কে আসতে পারে, আজকে শিডিউলে কার আসার কথা লেখা নেই, ভাবতে ভাবতে দড়জা খোলতে উঠে পড়ে ওয়াটসন। না অথিতি যথেষ্ট সম্ভ্রম সেটা তার একবার নক করে ধৈহ্য দরে অপেক্ষা করা দেখেই বোঝা যায়। সিভিল পোশাক পরিহিত অথিতি যে সরকারের উচু পদস্থ লোক সেটা তার গাড়ীবহর দেখেই বোঝে নিল আর তার আচরণও যথেস্ট পরিপাটি ও স্মার্ট। আর্মি পোশাকের সুটাম দেহের অথিতিকে দেখে সে সহজেই আন্দাজ করে নেয় আজকে হোমসের হাতে ভাল কোন কেস এসেছে।

অথিতিকে আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে হোমস তার স্বভাব সূলভ ভঙ্গিতে উঠে দাড়াল। গুড ইভিনিং মি. রবার্টসন। আমার গরীবখানায় আপনাকে স্বাগতম। সৌজন্য রক্ষার্তে রবার্টও হাত বাড়িয়ে হেন্ড শেক করে বলল, আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সাদরে গ্রহণ করে ঘড়ে ঢুকাবার জন্য। আমি ব্রিটিস নৌবাহিনীর সিভিল সার্জন আর আজকে একটি অফিসিয়াল পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত স্বার্থও ব্যাপারটার সাথে জড়িত বলতে পারেন, এমন একটি সমস্যা নিয়ে আপনার কাছে এসেছি। কেসটা কনফিডেনশিয়াল কারণ দেশ, রাস্ট্র তথা আইনও এর সাথে জড়িত বলে আমার বিশ্বাস আর যেহেতু এসব ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস-ঘাতকতারও সম্পর্ক থাকতে পারে তাই কেসের সারমর্ম আমার পেশাকে ব্যক্তিগতভাবে চ্যালেন্জ করতে পারে। শার্লক কথাতে সায় দিয়ে সিটিংরুমে নতুন করা তার ছোট বারের দিকে এগিয়ে গেল, আসলে নাজনৈতিক ব্যাপারে আমি কখনও নাক গলাতে চাই না। আপনি ড্রিঙ্ক করতে কি পছন্দ করবেন? ওয়াইন না হুইস্কি! সাথে ব্রান্ডি হলেও মন্দ হয় না, কি বলেন শীতের এই সন্ধ্যায়? আমাকে ব্রান্ডি দিতে পারেন। (চলবে)

(লেখাটি আগাম দিয়ে দেওয়া লক্ষীভাইয়ার জন্য) বাকিটা সে বোঝে নেবে :)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×