somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের জটিলতায় আজ ভবঘুরে আমি !

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১২ই জানুয়ারি ২০১৭ প্রথমবার দেশের সীমানা ছেড়ে বিদেশে ভবঘুরে জীবন শুরু করেছিলাম । গত দের বছরে ঘুরলাম ৫টি দেশ , আমার রুট ছিল বাংলাদেশ-ভারত-বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড-ফিলিপাইন-বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভারত-মালেয়শিয়া-ফিলিপাইন।
আমার শুরুটা ছিল দুঃখে ভরা, আমি আমার শখের ডিএসএলআরটা বিক্রি করে ভারত ভ্রমন শুরু করেছিলাম। পকেট ভরা টাকা নিয়ে একবুক সপ্ন নিয়ে শুরু করেছিলাম পথ চলা।
স্রেফ আমি একলা একটা মানুষ ভীতমনে সাহসী ভাব নিয়ে চলতে শুরু করেছিলাম। আমার পরিবারের সাথে আমার একটা দূরত্ব থেকেই আমি কেন যেন ভবঘুরে হয়ে গেছি। পড়াশোনার পাশাপাশি দেশেই ঘুরে বেরিয়েছি ২০১১-২০১৬, প্রায় ৪০টি জেলা, ১৫০টি উপজেলা । একলা ঘুরেবেড়াতাম আর নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতাম, ঘুরে বেড়ানো নেশা হয়ে গিয়েছিল। এক জায়গায় একাধারে কয়েক মাসের বেশী থাকতে পারতাম না। একঘেয়ে লাগত নিজের জীবনটাকে। সবাই যখন তাদের গতানুগানিক জীবন নিয়ে ব্যাস্ত আমি তখন প্রকৃতির প্রেমে ঘুরে বেড়াই মাঠে-ঘাটে, বন-জঞ্জলে।


আমার লেখার হাত তেমন ভালো না, আমি তেমন ভাল পাঠকও না। তবে সামু ব্লগের সংস্পর্শে কিছুটা উন্নতি হয়েছে আমার পড়া-লেখার।

যাই হোক এবার আমার অপ্রকাশিত কিছু কথা শেয়ার করি। প্রায় দেড়লক্ষাধিক টাকা নিয়ে আমার ভারত ভ্রমন শুরু করেছিলাম। আমার উদ্দেশ্য শুধু ভ্রমনই নয় , জীবনে কিছু করবো , কি করবো? সেটা আবিষ্কার করাই ছিল আমার যাত্রার উদ্দেশ্য । প্রায় ৩ মাস ভারত ঘুরে যখন বাধ্য হয়েই দেশে ফিরলাম ততদিনে আমার পকেট শূন্য । ৩মাসে আমি কলকাতা-বর্ধমান-ঝারখান্দ-বিহার-পাটনা-কাশি-ভেনারাশী-কানপুর-লখনৌ-উত্তরপ্রদেশ-আগ্রা-দিল্লী ঘুরে বেড়াই। তবে বেশীরভাগ সময় দিল্লীতে কাটাই একটা দেশের ভিসা সংক্রান্ত কাজে।
পুরোটা সময়জুড়ে আমার সাথে ছিল একমাত্র ব্যাবহৃত মোবাইল এবং আমার ব্যাগপ্যাক।
যখন দেশে ফিরলাম ততদিনে আমি নিশ্চিত ছিলাম আমাকে প্রবাসী হতেই হবে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাবার বাজে অভিজ্ঞতা আমাকে প্রবাসী হতে উৎসাহী করেছিল। আমার পরিবারও চাচ্ছিলো আমি যেন কিছু একটা করি, সেটা প্রবাসে হলেও। আমি ভবঘুরে ততদিনে আমার পরিবারও বুঝে ফেলেছিল তাই টাকাপয়সার ব্যাপারে আমাকে সতর্ক করে বললো এবার বাড়ি থেকে যে টাকা নিবি এটাই শেষ। চাইলেও আর টাকা পাবি না, নিজে ইনকাম করে যেন খরচ করি। অনেকটা আশাহত হয়েই আবার চলতে শুরু করলাম। এবার যাত্রা থাইল্যান্ড , সংক্ষিপ্ত সময় থাইল্যান্ডে ঘুরে চলে আসলাম ফিলিপাইন। ফিলিপাইন আসার পেছনের গল্পটা অন্য কোনদিন লিখব, তবে এখানে এসে আমি হতাশ ও আশাবাদী ছিলাম। মাত্র ২ লক্ষ টাকা নিয়ে ফিলিপাইন এসে কয়েক মাস নিজেকে এ দেশের সাথে পরিচিত করতেই চলে গেল। পকেট খালি হতেই এবার একটা কাজ জুটে নিলাম। শুরু হল আমার নতুন জীবন, কর্মজীবন । মাত্র আড়াইমাস কাজ করে কাজ করা বাদ দিলাম। ঠিক করলাম ছোট্ট একটা ব্যাবসা শুরু করবো। শুরুটা কঠিন হলেও শুরু করেছিলাম অক্টোবর ২০১৭তে । ব্যাবসা শুরু করার পর ব্যাস্ত জীবন কাটলেও ঘুরাফেরা চলছিল ফিলিপাইনেই। সামুতে আমার অনিয়মিত উপস্থিতি ছিল আজঅবধি, তবে আশা করি নিয়মিত হব শিগ্রই।

গত ৩০শে এপ্রিল ২০১৮ দেশে ফিরি মাত্র কয়েকদিনের জন্য। তবে এ যাত্রায় পরিবারের সাথে আমার দূরত্ব আরও বেশী হয়। পরিবার থেকে নানান সময়ে নেওয়া ৪ লক্ষাধিক টাকা পরিবারে আমারকে ফেরত দিতে হয়। পাঠকের সুবিধায় বলে নেই, আমার নিম্নবিত্ত পরিবারের আমি ছোট ছেলে, বড় ভাই সেনাবাহিনীতে কামলা দেয় সম্ভবত এখন র‍্যাবে কামলা দেয় (বিবাহিত ২ সন্তানের জনক)। বাবা বুড়ো হবার আগেই অবসর নিয়েছে, পেশায় ড্রাইভার ছিল। বোন দুটো বিবাহিত তারা সংসারী। আমাকে সংসারী হতে তারা জোড়াজুরি করে, আর আমি আমার ভবঘুরে জীবনেই সুখ খুঁজে ফিরি। এবার ভবঘুরে মনে কিছুটা ব্যাবসায়ী মনভাবে আবার ভারত ভ্রমন করি। সেই সাথে নেপাল ঘুরে হিমালয়ের সাথে নিজেকে পরিচিত করি ।মোট ২ মাসের অবকাশে নানান অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিলিপাইনে নিজ কুটিরে ফিরে আসি, আসার পথে ই-ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া ঘুরে ফিলিপাইন আসি নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে।

তবে এ যাত্রায় আমার পরিচয় হয় ইউরোপের ইস্তোনিয়ার এক বাসিন্দার সাথে, আমাকে আমন্ত্রন জানায় ইস্তোনিয়ার ই-রেসিডেন্ট হতে। অনলাইনে আবেদন করি কিছুটা কৌতুহলী হয়ে। গতকাল ইমেইল পেলাম আমার ই-রেসিডেন্ট আমার জন্য অপেক্ষায় আছে নিউ দিল্লী, ইস্তোনিয়ান এম্বাসিতে।


ইউরোপে থিতু হতে কিছুটা সাহায্য করতে পারে আমার এই পরিচয়।



আবার আমাকে দিল্লী যেতে হবে!

এলোমেলো জীবনের এলোমেলো গল্প শেয়ার করা হয় না কারও সাথে তাই , সামুতেই শেয়ার করা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৩০
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×