somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবী মোহাম্মদের পবিত্র চরিত্র ১

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানব জাতির শ্রেষ্ট মানব মহানবী হযরত মোহাম্মদ এর চরিত্র ফুলের মত পবিত্র সেটাই আমরা জানি, প্রতিটি মুসলমান তাই জানে বা জন্মের পর থেকে জেনে এসেছে।প্রতিটি মুসলমান জন্মের পর জ্ঞান হওয়া থেকে শুরু করে শুনে এসেছে, মোহাম্মদ অতীব সৎ, অতীব দয়ালু, অতীব মহৎ, অতীব ন্যায় পরায়ন ইত্যাদি। এর বাইরে কখনই তারা শোনেনি যে মোহাম্মদ একজন লুটেরা/ডাকাত বা নারী লোলুপ বা কামার্ত বা খুনী বা ক্ষমতা লোভী হতে পারে।এসব হতে পারা তো দুরের কথা- এসব হওয়ার কল্পনাও কোন মুসলমান করতে পারে না, কারন যদি করে তাহলে তার জন্য জাহান্নামের কঠিন আগুন অপেক্ষা করবে। সুতরাং কার এমন বুকের পাটা যে সে আল্লাহর নবী মোহাম্মদের সম্পর্কে এমন ধারনা পোষণ করবে ? কারন কোরানের আল্লাহ আর মোহাম্মদ সে তো একই ব্যাক্তি। সুতরাং সঙ্গত কারনে এটা মনে হয় যে মোহাম্মদ সর্বপ্রথম যে বিষয়টির আশ্রয় নিয়েছেন তা হলো প্রতারনা ও মিথ্যার। অথচ ইসলামি বিশ্বে তিনি হলেন আল আমীন বা মহা সৎ লোক।তিনি সর্বপ্রথমেই যে অসত্যের আশ্রয় নিয়েছেন তা হলো নিজের বানীকে আল্লাহর বানী হিসাবে চালিয়ে দিয়ে আরবদেরকে প্রতারনা করেছেন ও তাদেরকে বোকা বানিয়েছেন।বিষয়টিকে এবার একে একে বিবৃত করা যাক।

মোহাম্মদ ও আল্লাহ যে একই ব্যাক্তি তা পরিস্কার হয় নিচের আয়াত সমূহে:

যে কেউ আল্লাহ ও তার রসুলের আদেশ মত চলে তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন যেগুলোর তলা দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। ০৪:১৩

যে কেউ আল্লাহ ও তার রসুলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন যেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। ০৪: ১৪

উপরোক্ত আয়াত থেকে পরিষ্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ ও তার রসুলের আদেশ সমার্থক। তার অর্থ আল্লাহ ও তার রসুল একই ব্যাক্তি।

কোরান যদিও বলছে আল্লাহ এর সাথে কাউকে শরিক করা যাবে না, কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ তো মোহাম্মদের রূপ নিয়ে দুনিয়াতে আসতে পারে,আর আল্লাহর জন্য তা খুবই সম্ভব,সেক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কারো শরিক করাও হয় না। কেন জানি মুসলমানরা সেটাকেও তেমন একটা আমল দেয় না, বোধ হয় তা হলে তা হিন্দুদের অবতার তত্ত্বের সাথে মিলে যাবে এই ভয়ে।কিন্তু যে কেউ একটু মন দিয়ে খোলা দৃষ্টি দিয়ে পড়লেই বুঝতে পারবে যে , কোরানের কথাগুলো স্রেফ মোহাম্মদের নিজের কথা। কোরানের কথা যে খোদ মোহাম্মদের নিজের কথা তা বুঝতে কোরানের নিচের আয়াতগুলো দেখা যেতে পারে:

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময় অতি দয়ালূ । ০১:০১

কথাগুলো আল্লার হলে, আল্লাহ নিজেই নিজের নামে শুরু করতেন না ।

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি ও তোমার সাহায্য কামনা করি। ০১:০৫

কথাগুলো আল্লাহর হলে আল্লাহ নিজেই নিজের ইবাদত করবেন না।

এখানে প্রশ্ন আসে , কে শুরু করছে? কারা ইবাদত করে ? যদি ধরা হয় এগুলো মানুষকে লক্ষ্য করে বলা হচ্ছে তাহলে সঠিক বাক্যগুলো এরকম হলেই তা বরং আল্লাহর কথা হতো-

শুরু কর আমার( আল্লাহর) নামে, আমি পরম করুনাময়, অতি দয়ালূ।
তোমরা একমাত্র আমারই ইবাদত কর ও আমার সাহায্য কামনা কর।

এ প্রসঙ্গে হিন্দুদের কাছে পবিত্র গীতার কথা উল্লেখ করা যায়। হিন্দুদের বিশ্বাস গীতার বানী হলো স্বয়ং তাদের ভগবান তথা কৃষ্ণের নিজের বানী। শ্রী কৃষ্ণকে তারা স্বয়ং ভগবান বলে বিশ্বাস করে যিনি মানুষ রূপে এ পৃথিবীতে অবতরন করেছিলেন পাপীদেরকে শাস্তি দিতে ও সাধুদেরকে রক্ষা করতে। গীতার দু একটি শ্লোক নিচে দেখা যাক:

হে ধনঞ্জয়, আমা অপেক্ষা শ্রেষ্ট পরম তত্ত্ব আর কিছু নেই।সূত্রে যেমন মনি সমূহ গাথা থাকে, ঠিক তেমনি ভাবে জগতের সবকিছু আমার মধ্যে বিরাজ করছে। ০৭:০৭

হে অর্জুন, আমি ভুত, ভবিষ্যৎ ও বর্তমানকে জানি। কিন্তু আমাকে কেহই জানে না। আমি সর্বজ্ঞ, আমি কোন মায়ার অধীন নহি, কারন আমি মায়াধীশ। কিন্তু জীব মায়ার অধীন তাই তারা অজ্ঞ। কেবল আমার অনুগৃহীত ভক্তগনই আমার মায়াকে অতিক্রম করিয়া আমাকে জানিতে পারে। ০৭:২৬

লক্ষ্যনীয় এখানে বক্তা যেহেতু স্বয়ং ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাই তিনি সর্বদা নিজেকে প্রথম পুরুষ অর্থাৎ আমি , আমাকে এ সর্বনাম পদ দিয়ে প্রকাশ করছেন। শ্রী কৃষ্ণ তার শিষ্য অর্জুনকে উপদেশ দিচ্ছেন আর সেই উপদেশ বানী সমূহের সমাহার হলো গীতা।অথচ কোরানের বানী খোদ আল্লাহর বানী হওয়া সত্ত্বেও তার সব বাক্য এরকম প্রথম পুরুষ তথা আমি, আমাকে এ সর্বনাম পদ দিয়ে প্রকাশ করেন নি।কোথাও কোথাও যদিও সেভাবে প্রকাশ করেছেন, যেমন-

সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরন রাখ, আমিও তোমাদেরকে স্মরন রাখব এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, অকৃতজ্ঞ হইও না। ০২: ১৫২

অবশ্যই আমি তোমাদেরকে কিছুটা পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, জান ও মালের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। ০২: ১৫৫

যা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, নিরক্ষর মোহাম্মদ আসলে নিজের বাক্যকে আল্লাহর বানী বলে চালাতে গিয়ে এ ভুলটি করে ফেলেছেন।বাক্য গঠন সম্পর্কে তার কোন সম্যক ধারনা ছিল না, যেমন খুশী তার নিজের বানানো কিচ্ছা বলে গেছেন, আর সাহাবীরা যারা একটু শিক্ষিত ছিল তারা শুনে তা তাদের মত লিখে রেখেছে বাক্যগুলোকে কিছুটা পরিমার্জন করে। কিন্তু মোহাম্মদের বর্ননা করা বাক্যগুলোর সংখ্যা ও ব্যকরনগত অসাম্যঞ্জস্যতা এত বেশী ছিল যে সাহাবীরা সব গুলোকে তাদের মত লিখতে পারে নি।।অনেকগুলোই তারা মোহাম্মদ হুবহু যেমন বলেছিল সেরকম ভাবেই লিখে রেখে গেছে আর পরবর্তীতে সেরকম ভাবেই আমাদের কাছে এসেছে।কিন্তু তখন এসব নিয়ে তেমন কেউ তখন চ্যলেঞ্জ করেনি, করার হিম্মতও কেউ দেখায়নি।দেখালে গর্দান যাওয়ার ভয় ছিল। নিচের আয়াতটি লক্ষ্য করা যাক-

যে কেউ আল্লাহ ও তার রসুলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন যেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। ০৪: ১৪

অথচ ঠিক এর পরের আয়াতটি হলো –

আর তোমরা তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যাভিচারিনী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চারজনকে সাক্ষী হিসাবে হাজির কর, অত:পর তারা যদি সাক্ষী প্রদান করে তাহলে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ যে পর্যন্ত তাদের মৃত্যু না হয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য ভিন্ন কোন পথ না প্রদর্শন করেন। ০৪:১৫

০৪:১৪ যদি ঠিক ০৪:১৫ আয়াতের ব্যকরনগত বাক্য রীতি অনুসরন করত তাহলে তা হতো নিম্নরূপ:

যে কেউ আমার(আল্লাহ) ও আমার রসুলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে, আমি তাকে আগুনে প্রবেশ করাব যেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।

কিন্তু তার পরেও ০৪: ১৫ আয়াতে কিছুটা গোলমাল করে ফেলেছে। বলছে- অথবা আল্লাহ তাদের জন্য ভিন্ন কোন পথ না প্রদর্শন করেন। এখানে আল্লাহ স্বয়ং বক্তা হওয়া সত্ত্বেও হঠাৎ করে নিজেকে তৃতীয় পুরুষ হিসাবে উল্লেখ করছেন যা ব্যকরনগত ভুল।আল্লাহর বক্তব্য হলে এটা হতো এরকম – অথবা আমি তাদের জন্য ভিন্ন কোন পথ না প্রদর্শন করি। অর্থাৎ আল্লাহ নিজেকে তৃতীয় পুরুষ রূপে উল্লেখ না করে প্রথম পুরুষ রূপে উল্লেখ করতেন।

আমি তাদের পেছনে মরিয়ম তনয় ইসাকে প্রেরন করিয়াছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। ০৫: ৪৬

আল্লাহ পরিস্কার ভাবে বলছেন- আমি, অর্থাৎ প্রথম পুরুষে নিজেকে বর্ননা করছেন। অথচ ঠিক এর পরের আয়াতটি হলো –

ইঞ্জিলের অধিকারীদের উচিৎ আল্লাহ তাতে যা অবতীর্ন করেছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা করা। যারা আল্লাহ যা অবতীর্ন করেছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারা পাপাচারী। ০৫: ৪৭

আল্লাহর বানী হলে আয়াতটি হতো এরকম-

ইঞ্জিলের অধিকারীদের উচিৎ আমি তাতে যা অবতীর্ন করেছি সে অনুযায়ী ফয়সালা করা। যারা আমি যা অবতীর্ন করেছি সে অনুযায়ী ফয়সালা করে না , তারা পাপাচারী।

আর একটি আয়াত-

হে মুমিন গন, তোমরা ইহুদি ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহন করো না। তারা একে অপরের বন্ধু।তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদের পথ প্রদর্শন করেন না।০৫:৫১

আয়াতের প্রথম অংশটি আল্লাহর বানী বলে মনে হলেও আল্লাহ জালেমদের পথ প্রদর্শন করেন না– এ অংশটুকুকে তা মনে হয় না।এটা যদি এরকম হতো- আমি জালেমদের পথ প্রদর্শন করি না-তাহলে তা আল্লাহর সরাসরি বানী মনে হতো।

গোটা কোরানে এরকম উদ্ভট ব্যকরনগত ভুলের ছড়াছড়ি। যে কেউ একটু দিল মন খোলা রেখে পড়লে তা পরিস্কার বুঝতে পারবে। তবে যাদের হৃদয়ে সীল মারা তারা বুঝতে পারবে না। এ বিষয়ে দু একজনের সাথে আলাপ করে দেখেছি তাদের যুক্তি হলো- আরবী ব্যকরনে নাকি এ ধরনের বাক্যরীতি সিদ্ধ। অর্থাৎ বক্তা নিজেকে প্রথম পুরুষ বা দ্বিতীয় পুরুষ বা তৃতীয় পুরুষ যে কোন ভাবেই প্রকাশ করতে পারে।আরও গভীর ভাবে আলাপ করতে গিয়ে শুনেছি আরও অদ্ভুত কথা। তা হলো- আরবী ব্যকরন তারা অনুসরন করে কোরানের ভিত্তিতে অর্থাৎ কোরানে যে রকমভাবে আরবী ব্যকরনকে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাই শুদ্ধ আরবী ব্যকরন রীতি। কোরানকে আল্লাহর বানী প্রমান করতে গিয়ে এক শ্রেনীর অন্ধ মানুষ নিরক্ষর মোহাম্মদের উদ্ভট কথা বার্তাকেই আদর্শ ব্যকরন রীতি ধরে একটা ভাষার আদি ও অকৃত্রিম ব্যকরনের রীতি নীতিকেই বিসর্জন দিয়ে ফেলেছে।

মুসলমানদের কাছে পৌত্তলিক হিসাবে আখ্যায়িত হিন্দুদের কিতাব গীতায়ও কিন্তু এ ধরনের অসামঞ্জস্যতা নেই অর্থাৎ বাক্য গঠনে ব্যকরনগত ভ্রান্তি নেই। এর কারনও সহজ বোধ্য। তা হলো- গীতার রচয়িতারা ছিল সেই প্রাচীনকালের ভারতের উচ্চ শ্রেনীর শিক্ষিত সম্প্রদায়।তারা ব্যকরণে ছিল বিশেষ পারদর্শী।যে কারনে তাদের রচনায় আর যাই হোক ব্যকরণগত ভুল ছিল না।পক্ষান্তরে,মোহাম্মদ নিজে ছিল অশিক্ষিত, নিরক্ষর , ব্যকরণ কি জিনিস তাই তার জানা ছিল না। ব্যকরণ না জানলেও কিচ্ছা কাহিনী বলতে তো কোন অসুবিধা ছিল না।তবে তা বলতে গেলে ব্যকরণ সঠিক না হওয়ার সম্ভাবনাই অধিক আর তারই প্রমান ভুরি ভুরি তথাকথিত আল্লাহর কিতাব কোরানে। যেটুকু সঠিক বাক্য বিন্যাস আমরা কোরানে দেখি তার কৃতিত্ব মোহাম্মদের নয়, বরং কিছুটা শিক্ষিত কতিপয় সাহাবীদের। তারাই যতটুকু পারা যায় শুদ্ধ ভাবে মোহাম্মদের বলা কাহিনী কিচ্ছা গুলোকে মুখস্থ করে রেখেছিল বা কাঠ চামড়াতে লিখে রেখেছিল।আর সবাই জানে যে কোরান সংকলিত হয়েছিল মোহাম্মদের কালে নয়, তৃতীয় খলিফা ওসমানের কালে। এটাও সবাই জানে যে , ওসমানের সময় কালে ইসলামী সাম্রাজ্য আরবের পুরো জায়গাতে ছড়িয়ে পড়েছিল কিন্তু সমস্যা হয়েছিল, বিভিন্ন যায়গাতে মানুষ বিভিন্নভাবে কোরান পাঠ করত।এক অঞ্চলের কোরানের সাথে অন্য অঞ্চলের কোরানের মিল ছিল না। যে কারনে কোরানে আল্লাহ নিজের কোরান নিজেই হেফাজত করবেন বলে হুংকার ছাড়ার ( আমি নিজে কোরান অবতারন করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।১৫:০৯) পরেও অবশেষে সে কাজটা ওসমানকেই করতে হয়।কারন ততদিনে যার যার মত কোরান পাঠ শুরু হয়ে গেছিল।তা করতে গিয়ে যে কাজটি তিনি করেন তা হলো- কতিপয় ব্যাক্তি নিয়ে গঠিত কমিটি তাদের পছন্দমত কোরানের আয়াতগুলো সংকলন করেন ও কোরানের বাকী কপি সমূহ পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলেন।আর সে সংকলনের সময় তারা হুবহু মোহাম্মদের কাছ থেকে পাওয়া কোরানের বানী সংরক্ষন করেছিল তা মনে করার কোন সংগত কারন নেই। তা করলে কোরানে আরও অসংখ্য গাজাখুরী তথ্য ও ব্যকরণগত ভ্রান্তি খুজে পাওয়া যেত।যারা কোরান সংকলন কমিটিতে ছিল তারা মোটামুটিভাবে সেখানকার সেকালের শিক্ষিত মানুষ ছিল। যার ফলে তারা অনেকটাই পরিমার্জিত আকারে কোরান সংকলন করেছে তা বোঝাই যায়।বিষয়টি যে এরকম তা বোঝা যায় নিচের হাদিসটিতে:

আবু আনাস বিন মালিক বর্নিত- যখন সিরিয়া ও ইরাকের লোকেরা আজারবাইজান ও আরমেনিয়া বিজয়ের জন্য যুদ্ধ করছিল তখন হুদায়ফিয়া বিন আল ইয়ামান উসমানের নিকট আসল। হুদায়ফিয়া একারনে ভীত ছিল যে সিরিয়া ও ইরাকের লোকেরা ভিন্ন ভাব ও উচ্চারনে কোরান পাঠ করত।তাই সে উসমানের নিকট বলল- হে বিশ্বাসীদের প্রধান,কিতাবকে বিভক্ত করার আগেই মুসলমান জাতিকে রক্ষা করুন, যেমনটা ইহুদি ও খৃষ্টানরা তাদের কিতাবকে পূর্বে বিভক্ত করেছিল।সুতরাং উসমান হাফসার নিকট কোরানের আসল কপি চেয়ে পাঠালেন যাতে করে তা থেকে বেশ কিছু কপি তৈরী করা যায়।হাফসা সেটা উসমানের কাছে পাঠালে উসমান যায়েদ বিন তাবিতকে প্রধান করে আব্দুল্লাহ বিন আয-যুবায়ের, সাইদ বিন আল আস এবং আব্দুর রহমান বিন হারিথ বিন হিসাম এ কয়জনের এক কমিটি করে দিয়ে কোরান সংকলন করতে আদেশ করলেন। তিনি আরও বললেন- যদি যায়েদ বিন তাবিত এর সাথে কোন বিষয়ে ঐকমত্য না হয়,তাহলে সেটা যেন কুরাইশ কথ্য রীতি অনুযায়ী লেখা হয় কারন কোরান কুরাইশ এ রীতিতেই প্রকাশ হয়েছিল।তারা সেভাবেই কোরান সংকলন করেছিল ও আসল কপি হাফসার নিকট পুনরায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। অত:পর এ সংকলিত কপির এক খন্ড করে প্রতিটি প্রদেশে পাঠান হয়েছিল এবং বাকী যেসব পান্ডুলিপি যা আংশিক বা সম্পুর্ন বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জিনিসে লিখিত ছিল তা সব পুড়িয়ে ফেলার আদেশ দেন উসমান।যায়েদ বিন তাবিত আরও বলেন- যখন তিনি কোরানের কপি তৈরী করছিলেন তখন সূরা আহযাবের একটা আয়াত হারিয়ে ফেলেছিলেন যা তিনি নবীকে বলতে শুনেছেন। তখন সেটার খোজ শুরু হয় এবং সেটা খুজাইমা বিন তাবিত বিন আল আনসারীর কাছে পাওয়া যায় ( আয়াতটি: মুমিনদের মধ্যে কতক তাদের ওয়াদা পূর্ন করেছে।তাদের কতক মারা গেছে,কতক এখনও অপেক্ষা করছে।তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।৩৩:২৩)।সহি বুখারী, বই-৬১, হাদিস-৫১০

উপরোক্ত হাদিস থেকে কতকগুলি বিষয় পরিস্কার। তা হলো-

১। আল্লাহ নিজে কোরানের রক্ষাকর্তা বলে ঘোষণা দিলেও তিনি তা পালনে ব্যর্থ।আল্লাহ নিজেই রক্ষা করবেন বলেই মোহাম্মদ নিজ জীবনে কোরান সংরক্ষন করেননি। কিন্তু আল্লাহ তো মোহাম্মদের নিজেরই কল্পিত চরিত্র যাকে তিনি অনুভব করতেন তার হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময়, সুতরাং বলাই বাহুল্য যে সে আল্লাহ কোরান সংরক্ষন করবেন না বা করতে পারার কথাও না। সেকারনেই কোরান খুব তাড়াতাড়ি সিরিয়া বা ইরাকে বিভিন্নভাবে পড়া হতে থাকে । বলা বাহুল্য, বিভিন্ন উচ্চারনে পড়ার অর্থ হলো কোরানের বিভিন্ন অর্থ হওয়া, অর্থাৎ কোরান বিকৃত হয়ে যায় খুব দ্রুতই।

২। কোরান যে উক্ত কমিটি বা মোদ্দা কথায় কমিটির নেতা যায়েদ বিন তাবিত কর্তৃকই অনেকাংশেই নিজের বা নিজেদের মত করে লেখা তা উসমানের নিজের কথায় প্রতিফলিত কারন তিনি বলছেন, কোন বিষয়ে যায়েদ বিন তাবিতের সাথে ঐকমত্য না হলে যেন কুরাইশ কথ্য রীতি অনুযায়ী কোরান লেখা হয়। আর পরে সেভাবেই কোরান লেখা হয়। উল্লেখ্য, যায়েদ বিন তাবিত হল মূল লেখক। সে যদি কমিটির অন্যের কোন বলা আয়াতের সাথে এক মত না হয় শুধু তখন মাত্র কুরাইশ কথ্য রীতি অনুসরন করতে হবে। কিন্তু তার নিজের বলা আয়াত সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। সে কোরান সংকলনের সর্বে সর্বা ক্ষমতার অধিকারী আর সে ক্ষমতা তাকে প্রদান করা করেছেন উসমান।

৩।পূর্ন একটি কোরানের কপি যদি মোহাম্মদের অন্যতম স্ত্রী হাফসার কাছে থেকেই থাকে তাহলে তো সোজা সেটা কপি করে নিলেই হতো। সেখানে উসমানের উপরোক্ত আদেশ দেয়ার কোন অর্থই হয় না। তার মানে হাফসার কাছে রক্ষিত কোরান পূর্নাংগ ছিল না বা থাকলেও উসমান ও তার কমিটি নিজেদের কিছু কথা নতুন কপি করা কোরানে জুড়ে দিয়েছেন। তবে পূর্নাঙ্গ যে ছিল না তা বোঝা যায় সূরা আহযাবের একটি আয়াত হারিয়ে যাওয়ার ব্যপারে। হারিয়ে যাওয়া সে আয়াত খোজার জন্য তখন খুজাইমার নিকট যাওয়ার দরকার পড়ত না।আর একটা আয়াত হারিয়ে যাওয়ার কথা যখন স্বীকার করা হয়েছে তখন আরও কত আয়াত যে হারিয়ে গেছে বা উক্ত কমিটি নিজেদের মত বানিয়ে কতকগুলো আয়াত কোরানে জুড়ে দিয়েছে তার হদিস কে দেবে?

৪।চামড়া, খেজুর পাতা বা হাড়ের ওপর যেসব সূরা লেখা ছিল, তার মধ্যে সংকলিত কোরানের সূরার সাথে যে গুলোর মিল ছিল সেসব পান্ডুলিপি কেন পুড়িয়ে ফেলতে উসমান আদেশ দিলেন? সেগুলো তো পুড়িয়ে ফেলার কোন সঙ্গত কারন দেখা যায় না।আর যদি আয়াত ভিন্ন ভাবে লেখা থাকে সেগুলোই বা কে লিখল? কেন লিখল?

৫। উপরোক্ত বিষয় গুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে- মোহাম্মদের কোরানের সাথে উসমানের কোরানের অনেক পার্থক্য বিদ্যমান।সে পার্থক্যের অন্যতম একটি হলো- মোহাম্মদের কোরানে অনেক বেশী ভূল ভ্রান্তি বা ব্যকরণগত ভূল ছিল কারন তিনি ছিলেন নিরক্ষর। উসমানের করা কমিটির লোকজন ছিল শিক্ষিত, তাই তারা যে কোরান সংকলন করেছে তা অনেকটাই নিজেদের সম্পাদিত, অনেকটাই শুদ্ধ করে লেখা।কিন্তু তারাও বেশী শুদ্ধ করতে পারেনি তার কারন তখনও কোরানের বহু আয়াত সাহাবীদের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল যাকে খুব বেশী সংস্কার করে পাল্টে ফেলা যায় নি। তা করলে সংকলিত কোরানের গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে ব্যপক প্রশ্ন উঠত। আর ঠিক সেকারনেই আমরা কোরানের যে ভার্সন আজকে পাই তাও ব্যপকভাবে ব্যকরণগত ভুলে ভরা।যখন একটা সংকলন তৈরী হয়েই গেল তখন থেকে তার অনুলিপিই শুধুমাত্র প্রকাশ হতে থাকে। এভাবেই গত ১৪০০ বছর ধরে কোরান অবিকৃত থেকেছে। অথচ কি অদ্ভুত ব্যাপার – এ বিষয়টিকেই কিছু তথাকথিত ইসলামী পন্ডিত বর্গ আল্লাহর অশেষ কুদরত হিসাবে বিবেচনা করে। তারা স্বাড়ম্বরে প্রচার করে- চৌদ্দ শ বছর ধরে একটি কিতাব অবিকৃত থেকেছে, এটা আল্লাহর কুদরত ছাড়া কিভাবে সম্ভব? উদ্ভট যুক্তিতে এসব তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদের জুড়ি মেলা ভার।

বিষয়টি নিয়ে আমি ভেবেছি, মোহাম্মদের মত অত বুদ্ধিমান ও সুচতুর ব্যাক্তি এমন ব্যকরণগত ভুল কিভাবে করলেন? ভাবতে ভাবতে এর একটা সমাধান সূত্রও আমি বের করেছি যার অভিজ্ঞতা খোদ আমার নিজ জীবনেই প্রত্যক্ষ করেছি। যেমন একবার যে কোন কারনে আমার এক বন্ধুকে আমি মিথ্যা বলেছিলাম। রংপুরে অবস্থান করেও আমি বন্ধুকে বলেছিলাম আমি ঢাকা আছি। বন্ধুটি আমার ছিল চট্টগ্রামে।তো হঠাৎ করে বন্ধুটি বলল সে একটা ব্যবসায়িক কারনে রংপুর যাবে। আমি তাকে বললাম- এখন এখানে আসাটা বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে না। কারন এখানে এখন বন্যা , চারদিকে শুধু পানি আর পানি। একটু খেয়াল করলেই কিন্তু আমার বক্তব্য থেকে বের হয়ে আসে যে আমি আসলে বন্ধুকে আমার অবস্থান সম্পর্কে মিথ্যা বলেছি।অর্থাৎ আমি যে ঢাকা অবস্থান না করে রংপুর অবস্থান করছি তা বোঝা যাবে সহজেই।আমি মনের অগোচরে বলে ফেলেছি- এখানে এ শব্দটা। এখানে এ শব্দটা একজন বক্তা সে যায়গা সম্পর্কেই বলে যে যায়গাতে বক্তা বক্তব্য প্রদানের সময় অবস্থান করে। কিন্তু কেন আমি এ ভুলটি করলাম? এর কারন হলো অবচেতন মন। আমি অনেক কথাই তার সাথে সুচতুর ভাবে বলেছি যা থেকে আমার বন্ধু বুঝতে পারবে না আসলে আমি কোথায় অবস্থান করছি। কিন্তু তার পরেও যেহেতু আমি অনেক কথাই বলেছি আর সে কারনে অবচেতন মনে বলে ফেলেছি আসল সত্যটা। মানুষের মন ঠিক এরকমভাবেই কাজ করে। কোরানের বিষয়টিও হুবহু তাই। মোহাম্মদ অবচেতন মনেই ভুলগুলো করে ফেলেছেন।আর সেকারনে গোটা কোরান পাঠ করে সহজেই বোঝা যায় যে তার নিজের বানীকে আল্লাহর বানী বলে চালাতে গিয়ে বার বার ঠিক সেই ভুলটি করেছেন। যে কারনে বার বার আল্লাহ নিজে তৃতীয় পুরুষ রূপে উল্লেখিত হয়েছে কোরানে যদিও কোরান হলো আল্লাহর নিজের মুখের বানী। এর সোজা অর্থ ইসলাম একটা মিথ্যা দিয়ে শুরু হয়েছিল যদিও মোহাম্মদকে সবাই আল আমীন বলে জানে ও বিশ্বাস করে।

তার ওহী পাওয়ার ঘটনা যে একটা কাল্পনিক কিচ্ছা বা হিস্টিরিয়া গ্রস্থ মানুষের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময়কার ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়, তা বোঝা যায় কতিপয় ঘটনায়।

আয়শা থেকে বর্নিত- আল্লাহর নবীর কাছে ওহী আসত স্বপ্নের মাধ্যমে অনেকটা দিনের আলোর মত।—-আল্লাহর নবী আল্লাহর ওহী নিয়ে ফিরে আসলেন তখন তার হৃৎপিন্ড প্রচন্ড রকম কাঁপছিল, -অত:পর তিনি বিবি খাদিজার কাছে ফিরে গেলেন ও বললেন, আমাকে আবৃত কর, আবৃত কর। তিনি তাকে কম্বল দিয়ে আবৃত করলেন যে পর্যন্ত না তার ভয় দুরীভুত হলো। তার পর আল্লাহর নবী হেরা পর্বতের গুহায় কি ঘটেছে সবিস্তারে খাদিজার নিকট বর্ননা করলেন ও বললেন- আমার ভয় হচ্ছে আমার ওপর কিছু একটা ভর করেছে।—— এর পরদিন খাদিজা তাকে নিয়ে তার চাচাত ভাই ওয়ারক্কা ইবনে নওফেলের কাছ নিয়ে গেলেন যিনি ইহুদী থেকে খৃষ্টান হয়েছিলেন ও হিব্রু ভাষায় গসপেল লিখতেন।তিনি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন ও তার দৃষ্টি শক্তি ক্ষীন হয়ে পড়েছিল।খাদিজা ওয়ারাক্কাকে বললেন- হে চাচাত ভাই, আপনার বোন জামাইয়ের কাছে শুনুন তার কি ঘটেছে। তখন ওয়ারাক্কা মোহাম্মদকে জিজ্ঞেস করলেন- তোমার কি ঘটেছে? আল্লাহর নবী সবিস্তারে তখন সব বর্ননা করলেন।সব কিছু শুনে ওয়ারক্কা বললেন- এই ব্যক্তি সেই ব্যাক্তি যিনি মূসা নবীর নিকট আল্লাহর বানী নিয়ে আসত ।—–এর কিছুদিন পর ওয়ারাক্কা ইবনে নওফেল মারা গেলেন এবং ওহী আসা কিছুদিনের জন্য বন্দ থাকল। জাবির বিন আব্দুল্লাহ আল আনসারি বর্নিত- একদা ওহী আসা বন্দ হওয়া নিয়ে কথা বলার সময় আল্লাহর নবী বললেন- যখন আমি হাটছিলাম হঠাৎ আকাশ থেকে একটা শব্দ শুনলাম। আমি আকাশের দিকে তাকালাম আর সেই ফেরেস্তাকে দেখলাম যাকে আমি হেরা গুহায় দেখেছিলাম। সে বসেছিল আকাশ আর পৃথিবীর মাঝখানে একটা চেয়ারে।আমি আবার ভীত হয়ে পড়লাম ও তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে গেলাম ও খাদিজাকে বললাম- আমাকে কম্বল দিয়ে আবৃত কর, আবৃত কর। আর তখন আল্লাহ সেই ওহী নাজিল করলেন- হে চাদরাবৃত, উঠুন সতর্ক করুন, আপন পালনকর্তার মাহাত্ম ঘোষণা করুন, আপন পোশাক পবিত্র করুন ( কোরান, ৭৪:১-৪) সহী বুখারী, বই-০১, হাদিস নং-০৩

উপরের হাদিস থেকে বোঝা যাচ্ছে, মোহাম্মদ নিজেই আসলে নিশ্চিত নন কিভাবে তার কাছে ওহী আসত।। একবার বলছেন স্বপ্নের মাধ্যমে, একবার বলছেন জিব্রাইল ফিরিস্তা সরাসরি তার কাছে বানী নিয়ে আসত।স্বপ্নে ওহী পাওয়া তো আমাদের দেশে প্রচলিত স্বপ্নে নানা রকম ওষুধ পাওয়ার ব্যবসার মত।এর সাথে মোহাম্মদের ওহী পাওয়ার কোন তফাৎ তো দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও ওহী আসার অন্য নানা পদ্ধতি আছে, যেমন, ঘন্টা বাজার ধ্বনির মত। তো এসব তো একজন মানুষ হিস্টিরিয়াতে আক্রান্ত হলেই এসব ঘন্টা ধ্বনি শুনতে পায় আরও কত কিছু শোনে ও দেখে দ্বীন দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ট ও শেষ নবী জিব্রাইল ফিরিস্তাকে দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছেন তিনি বুঝতেই পারলেন না যে তিনি আল্লাহ প্রেরিত নবী। শুধু তাই নয় তিনি এমনকি জিব্রাইল ফিরিস্তাকে চিনতেও পারলেন না।কি আজব কথা! তার পরে এমন ভয় পেয়ে গেছেন যে তার গায় জ্বর এসে গেছে আর তার মনে হচ্ছে কোন অশুভ আত্মা তার ওপর ভর করেছে যে কারনে তিনি বলছেন – আমার ভয় হচ্ছে আমার ওপর একটা কিছু ভর করেছে। শুভ আত্মা ভর করলে তো ভয়ের কোন কারন নেই।এসব তো একজন হিস্টিরিয়া রোগীর লক্ষন যা আমরা হর হামেশা দেখি।কেউ হিস্টিরিয়াতে আক্রান্ত হলে ঠিক এরকম লক্ষনই প্রকাশ পায়। সে মনে করে কি যেন অশরিরী তার ওপর ভর করেছে, তার সাথে কে যেন দেখা করেছে, তার ওপর আবোল তাবোল অনেক আধি ভৌতিক কথাবার্তা বলে যার কোন মাথা মুন্ডু নেই।অনেক সময় তার গায়ে প্রচন্ড জ্বর আসে ও পাগলের মত প্রলাপ বকতে থাকে। এভাবে কিছুক্ষন চলার পর সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসে। জিব্রাইল নিজে মোহাম্মদের কাছে পরিচয় দিল না সে কে।কেনই বা সে তার কাছে এসেছে তাও বলল না।আল্লাহর কি মহিমা! আল্লাহর মহিমা বোঝা বড় দায়! কে বুঝতে পারল মোহাম্মদ আল্লাহর নবী? অশিতি পর এক বৃদ্ধ ওয়ারাক্কা, তাও বোঝার কয়েক দিনের মধ্যেই পটল তুলল ও সে নিজেও আর কাউকে এ কিচ্ছা প্রচার করার সুযোগ পেল না যা যথেষ্ট রহস্যজনকও বটে। যে জিব্রাইল হেরা পর্বতের ছোট্ট একটা গুহার মধ্যে দিব্যি ঢুকে গেল, সেই জিব্রাইলকে মোহাম্মদ আবার দেখল আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে রাখা চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায়।তার মানে সে চেয়ার মোটেও ছোট খাট চেয়ার নয়, অতি বিশাল চেয়ার, তা না হলে আকাশ আর পৃথিবীর মাঝখানে রাখা চেয়ার– এভাবে চেয়ারের বর্ননা দেয়া হতো না। আর বিশাল চেয়ারে বসে থাকা জিব্রাইলের আকারও নিশ্চয়ই অতি বিশাল। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা বলে কথা, তাই অতি বিশাল জিব্রাইল অতি ছোট আকার ধারন করে ঢুকে পড়েছিল হেরা পর্বতের ছোট্ট গুহার মধ্যে। মজার কথার সেটাই শেষ নয়। ইতোপূর্বে তো মোহাম্মদ জেনে গেছেন তিনি আল্লাহর নবী, জিব্রাইল হলো ফেরেস্তা যে আল্লাহর বানী তার কাছে নিয়ে আসে। প্রথমবার তিনি তাকে চিনতে পারেননি বলে ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু পরের বার তো তার আর ভয় পাওয়ার কথা নয়। অথচ এবারও তিনি আকাশে তাকে দেখে ভয় পেয়ে গেলেন।তার গায়ে জ্বর চলে আসল। এটা কি প্রমান করে যে তিনি সত্যি সত্যি জিব্রাঈলকে দেখেছেন? নাকি হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আধি ভৌতিক জিনিস দেখেছেন? ভাবতেও অবাক লাগে এসব আধি ভৌতিক উদ্ভট কিচ্ছা কাহিনীর মাধ্যমে তিনি একদল মানুষকে স্রেফ বোকা বানিয়েছিলেন আর আজকেও কোটি কোটি মানুষ সেই বোকামীর শিকার জেনে , না জেনে।শুধু শিকার নয়, কিছু কিছু লোক তো সেই বোকামীর শিকার হয়ে রীতিমতো ফ্যানাটিক, জীবন দিতেও তাদের কোন দ্বিধা নেই।যা আমরা নানা সময়ে নানা রকম আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করছি।

এই জিব্রাইল একবার মোহাম্মদের সাথে কি অদ্ভুত ও গাজাখুরি কান্ডটি করেছে তা এবার দেখা যাক:

আবু দার বর্নিত- আল্লাহর নবী বলেছিলেন- আমি যখন মক্কার বাড়ীতে ছিলাম একদিন বাড়ীর ছাদ খুলে গেল ও সেখানে জিব্রাইল অবতরন করল এবং আমার বক্ষ বিদীর্ন করল।,জম জমের পানি দিয়ে আমার বক্ষ ধুয়ে সাফ করে দিল।তারপর সে একটা জ্ঞান ও বিশ্বাস ভর্তি সোনার পাত্র নিয়ে তা দিয়ে আমার বক্ষে প্রবিষ্ট করে অত:পর বক্ষ বন্দ করল ।তারপর সে আমার একটা হাত ধরে নিকটবর্তী বেহেস্তে নিয়ে গেল। আমরা বেহেস্তের দ্বারে গেলাম ও জিব্রাইল দ্বার রক্ষককে দ্বার খুলে দিতে বলল—-( এর পরের ঘটনা হলো মোহাম্মদ অত:পর সমস্ত বেহেস্ত ঘুরে ঘুরে দেখলেন ও অনেক পূর্ববর্তী নবীদের সাথে খোশ গল্প করলেন)– সহী বুখারী, বই-০৮, হাদিস নং-৩৪৫

মজার কান্ডটি হলো-জিব্রাইল ফিরিস্তা বক্ষ বিদীর্ন করল অর্থ হৃৎপিন্ড বিদীর্ন করেছিল আর তা জম জম কুপের পানি দ্বারা পরিস্কার করে দিল যেন তাতে কোন ময়লা বা অপবিত্রতা না থাকে। শুধু সেটা করেই ক্ষান্ত হয় নি।অত:পর জ্ঞান ও বিশ্বাস দিয়ে হৃৎপিন্ডটাকে ভর্তি করে তা আবার বন্দ করে দিল। বর্তমানে এমন কোন পাগল বা উন্মাদ আছে যে বিশ্বাস করবে হৃৎপিন্ড ধুয়ে দিলে শরীর ও মনের যাবতীয় ময়লা দুর হয়ে যায়।তার চাইতে বড় আজব ব্যপার হলো- মানুষের জ্ঞান ও বিশ্বাস কি হৃৎপিন্ডে থাকে ? আমরা সবাই আজকে জানি, জ্ঞান বা বিশ্বাস সেটা থাকে মানুষের মাথায় মগজ বা ব্রেইন নামক যে পদার্থ আছে তাতে, হৃৎপিন্ডে নয়।অথচ আল্লাহ প্রেরিত জিব্রাইল ফেরেস্তা তা জানে না, জানে না মানব জাতির তথাকথিত সর্বশ্রেষ্ট মানব, সর্বশ্রেষ্ট বিজ্ঞানী মোহাম্মদ। বাস্তবতা হলো , সেই ১৪০০ বছর আগে মানুষ বিশ্বাস করত মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক আবেগ ভালবাসা এসব হৃৎপিন্ডে থাকে। আমরা নিজেরা এখনও সেই হাজার হাজার বছরের সংস্কার অনুযায়ী বলে থাকি- তোমার হৃদয়ে ভালবাসা নেই।কিন্তু ভালবাসা কি হৃদয়ে থাকে ? হৃদয় বা হৃৎপিন্ড সে তো একটা রক্তের পাম্প মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়।ভালবাসা বলি আর জ্ঞান বলি তা তো থাকে আমাদের মস্তিষ্কে। মোহাম্মদও অকাতরে সেই সরল স্বীকারোক্তিটা করেছেন। কিন্তু নিজেকে সাহাবীদের কাছে অধিকতর গ্রহনযোগ্য ও ঐশি হিসাবে প্রমান করতে এই আজগুবি কিচ্ছা অত্যন্ত সুন্দর করে সাজিয়েছেন। আল্লাহর পেয়ারা নবী সর্বশ্রেষ্ট মানুষ, আল আমীন বলে কথিত মোহাম্মদের এ কিচ্ছা ও কাহিনী কি প্রমান করে তিনি সত্যি আল আমীন বা সত্যবাদী? ব্যক্তিগত ভাবে কেউ যদি অন্যের গচ্ছিত সম্পদ যত্ন করে রেখে আবার ফিরিয়ে দেয় অথচ আদর্শিক ভাবে মিথ্যা ধ্যান ধারনা পোষণ করে আর তা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, তাকে কি সৎ লোক বলা যায়? সততার সংজ্ঞা কি এত সহজ ও সরল? মোহাম্মদের যে ধরনের সততার কথা আমরা শুনি, বাস্তবে ও ধরনের সৎ লোক এই কঠিন দুনিয়াতে ভুরি ভুরি দেখতে পাওয়া যায়। নইলে এক রিক্সাওয়ালা কিভাবে যাত্রীর ফেলে যাওয়া টাকা ভর্তি মানি ব্যাগ পুলিশের কাছে জমা দিয়ে আসে?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৪৭
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×