সাম্প্রতিক উত্তাল পরিস্থিতিতিতে অনেকেই অনেক কথা বলছেন । তাদের কথা শুনলাম । ভাবলাম নিজেরও কিছু কথা বলা দরকার । তাই লিখছি । যথাসম্ভব নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বলার চেষ্টা করছি । ভুল ত্রুটি হলে আশা করি ধরিয়ে দেবেন । এখানে আমি ছয়টি পয়েন্ট নিয়ে কথা বলব । পয়েন্টগুলো আগে তুলে দিচ্ছি ।
১ রাজাকারের ফাঁসি
২ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি
৩ ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ড
৪ নাস্তিক ব্লগার প্রসঙ্গ
৫ শিবির ও লীগের হামলা
৬ শিবির প্রসঙ্গ
এবার বিস্তারিত আলোচনায় আসি ।
প্রথম প্রসঙ্গটি ছিল “রাজাকারের ফাঁসি চাই” । এব্যাপারে আমার মনে হয় কারও কোন দ্বিমত থাকা সম্ভব নয় । যারা এদেশের মানুষের সাথে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করল তাদের ফাঁসি ছাড়া আর কিছুই কাম্য নয় । একটা কথা বলি রাজাকার বলতে শুধু শিবির নয় , সকল দলের , সকল ধর্মের , সকল মতাদর্শের উধে গিয়ে সকল রাজাকারের ফাঁসি অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করাটা জরুরী । প্রায় ৪২ বছর ধরে যে কলঙ্ক জাতি বয়ে বেড়াচ্ছে সে কলঙ্কমোচনের সময় আরও আগেই হয়ে গিয়েছিল । দেরি হয়েছে সত্য , সময় যেতে দিলে আরও দেরি হয়ে যাবে , আজ জনতা সোচ্চার , একই শ্লোগানে মুখর সবাই , “রাজাকারের ফাঁসি চাই , ফাঁসি চাই” । সরকারের উচিত তাদের নির্বাচনী শপথ পূর্ণ করা , অনতিবিলম্বে সকল রাজাকারকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলান । রাজাকার যদি নিজের পরিবারের কেউও হয় তবুও তাকে ছাড় দেয়া চলবে না । রাজাকার কোন বাঙালীর আত্মীয় হতে পারে না ।
এবার ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রসঙ্গে আসি । এখন দেখতে পাচ্ছি রাজাকারদের ফাঁসির চেয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ এবং জামায়াত শিবির নিষিদ্ধের দাবি জোরালোভাবে উথাপিত হচ্ছে । এই অংশে আমি শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বিষয়ে কথা বলব । শিবির প্রসঙ্গে পরে আসছি । আমাদের দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বলতে ইসলাম ধর্মের নিয়মকানুন মেনে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বোঝায় । কারণ দেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলিম । বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হওয়া সত্ত্বেও ২০১০-১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের শতকরা ৯০.৪ ভাগ মানুষ মুসলমান । ধর্মভিত্তিক রাজনীতি যারা করে তাদের উদ্দেশ্য কি ? তারা চায় এদেশ ইসলামিক শাসনব্যবস্থা অনুসারে পরিচালিত হোক । ইসলামিক শাসনব্যবস্থা ভালই , তবে একটু কড়া । অনেকেই এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে না । তাছাড়া ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বর্তমান সাধারন নিয়মকানুন জারী রাখতে হবে । ফলে সমাজে বৈষম্য দেখা দিবে । একই অপরাধের তো আর একই দেশে দুই রকম সাজা হতে পারে না ? আর যদি সবার জন্য ইসলামিক নিয়ম চালু রাখা হয় তাহলে সমস্যা আরও বাড়বে । তারমানে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা চালু করা বর্তমানে সম্ভব নয় । তাহলে ইসলামিক দলগুলো কেন রাজনীতি করছে ? অধিকাংশ ইসলামিক দল ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করছে । তাই বলে সব দল নয় । আর সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র ইসলামের প্রতি ভালবাসার কারণে এদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছে । মনে করুণ এখন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হল । তখন এই সাধারণ মুসলমানদের কি হবে ? তারা কোথায় তাদের ইসলামিক প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজবে ? তারা কোথায় একত্রিত হবে ? তারমানে সাধারণ মুসলমানদের জন্য ইসলামিক রাষ্ট্র না থাকলেও অন্তত ইসলাম চর্চা করার জন্য একটা শক্ত প্ল্যাটফর্ম দরকার । প্রায়ই মুসলমানরা নাস্তিকদের নানা প্রশ্ন ও কটূক্তির শিকার হয় । এগুলো শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবেলার জন্য মুসলমানদের সঙ্ঘবদ্ধতা ও প্রকৃত ইসলাম চর্চা করা প্রয়োজন । মুসলমানদের একটি শক্ত প্ল্যাটফর্ম হতে পারত তবলীগ জামায়াত । কিন্তু তারা ইসলাম চর্চা ও নিজেদের ভেতর দাওয়াত কার্যক্রম চালিয়ে থাকে । গঠনমূলক সমালোচনা কিংবা যুক্তিতর্কে এরা খুব কমই অংশগ্রহণ করে থাকে । এদের জনসংখ্যা অনেক কিন্তু অনেক দিক থেকেই অকার্যকর । আরেকটা প্ল্যাটফর্ম হতে পারত বিভিন্ন পীর ও তাদের মুরিদসমাজ । কিন্তু অধিকাংশ পীর-মুরিদ শুধু নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে মগ্ন । তাদের কথা ও কাজ ভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ । তাই তারাও ইসলামের জন্য যোগ্য প্ল্যাটফর্ম হতে পারে না । বাকি রইল ইসলামিক দলগুলো । তাদের মধ্যে কিছু দল জঙ্গিবাদের প্রসুতির ভুমিকায় অবতীর্ণ । ভ্রান্ত কথা আর জাল হাদিসের সমন্বয়ে নিয়ত প্রলাপের উপহাস তারা বানিয়ে ছাড়ছে ইসলামকে । তবে তাদের কথা বলার মত শক্তি ও সাহস আছে । যুক্তি প্রয়োগের মত বুদ্ধিও আছে । যা প্রথমোক্ত দুই দলের মানুষের মাঝে নেই । তাদের প্রকৃত সংশোধন প্রয়োজন । জাল হাদিস ও খোঁড়া যুক্তির বাতিলিকরণের মাধ্যমে তাদের শুদ্ধায়ন হলে মুসলমানরা একটা প্রকৃত প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে পারবে বলে আমি মনে করি । এখন প্রশ্ন হল , এই পরিশুদ্ধ দল যদি সত্যি সত্যি গঠন করা যায় তাহলে তারা রাজনীতিতে গিয়ে কি করবে ? রাজনীতিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যই হল সরকার গঠন করা । তারা নির্বাচিত হলে সরকার গঠন করবে । সব দুর্নীতি, অনিয়ম , সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করবে এবং ইসলাম ও তার পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মকেও একটা সত্যিকার শ্রদ্ধার আসনে উপবিষ্ট করবে । অবশ্যই এই দল হতে হবে রাজাকার , দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীমুক্ত । তাই বলে ভাববেন না যে আমি নিজেই একটা নতুন ইসলামিক দল খোলার পায়তারি করছি । আমি শুধু একটা দাবির সপক্ষে নিজের যুক্তিকে তুলে ধরতে উপরিউক্ত আলোচনার অবতারণা করেছি যে , “ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ নয় , এর প্রকৃত সংশোধন চাই” ।
এবার ব্লগার রাজীব ওরফে থাবা বাবা হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে আসি । উনি যা করে গেছেন তা কোন সুস্থ বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষ করতে পারে না । মৃত মানুষের সমালোচনা করা উচিত নয় জানি তবুও এই লোকটির সমালোচনা করতে বাধ্য হচ্ছি । তার ব্লগ পড়তে গিয়ে আমার এক অজ্ঞেয়বাদী বন্ধু পর্যন্ত তার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন । যাই হোক শত হলেও তিনি মানুষ ছিলেন । তাই অবশ্যই তার হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হওয়া প্রয়োজন । তার খুনি এখনো অজ্ঞাত । তাই এই মুহূর্তে কাউকেই তার খুনি হিসেবে উপস্থাপন করা মূর্খতার শামিল । এখানে আমি আরেকটা বিষয়ের সমালোচনা করতে চাই তা হল ব্লগার রাজীবকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং তার জানাজার নামাজ পড়ানো । জানাজা শুধুমাত্র মুসলমানেরই হতে পারে অন্য কারো নয় । তাছাড়া তার নামাজে জানাজার নামাজের নিয়ম কানুনও মানা হয়নি । আর তাকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করায় আমি মনে করি তাতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষাশহিদদের অপমান করা হয় । শহীদ উপাধি অনেক সম্মানের একটা ব্যাপার । দেশের স্বার্থে যার তেমন কোন অবদান নেই তাকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করা হলে শহীদদের অপমান করা হয় । যাই হোক “ব্লগার রাজীবের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই” ।
এবার সকল নাস্তিক ব্লগারদের নিয়ে কিছু কথা বলি । আশা করি তারা এটাকে একটু গুরুত্বের সাথে নিবেন । আমি জানি সব নাস্তিক ব্লগার ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেন না । এগুলো করে থাবা বাবা , আসিফ মহিউদ্দিনের মত ব্লগাররা । অভিজিৎ রায়ের লিখার আমি প্রশংসা করি । আপনারা অনেকেই জানেন যে আমি ব্লগে আত্নপ্রকাশ করি বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ লিখার জন্য । আমার আগ্রহ বিজ্ঞানেই , অন্য কিছুতে খুব একটা নেই । রাজনীতি আমার অতি অপ্রিয় একটা জিনিস । তো বিজ্ঞান বিষয়ক পোস্ট লিখার জন্য আমার প্রথম পছন্দ ছিল মুক্তমনা ব্লগ । কিন্তু পোস্টগুলো পড়ে যা বুঝলাম এখানে লিখা আমার পক্ষে অসম্ভব । কারণ এখানে বিজ্ঞান বিষয়ক লিখার চেয়ে বিজ্ঞানের যে ব্যাপারটা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষীক তা প্রকাশ করাটাই মুখ্য বলে আমার মনে হয়েছে । ভাল লিখা খুব কমই আসে । তার চেয়ে বড় কথা এখানে ইসলাম এবং অন্যান্য ধর্মের বিরোধিতার ভাষা এতটাই অমার্জিত যে কোন আস্তিকের পক্ষে এখানে অবস্থান করাটা ভীষণ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় । ঠিক আছে আপনি নাস্তিকতার পক্ষে যুক্তি প্রদান করুণ আমিও মুক্তমনা হয়ে সে যুক্তিখন্ডন করুন তাতে আমার কোন আপত্তি নেই । একটা কথা মাথায় রাখবেন যে নাস্তিক না হয়েও মুক্তমনা(free thinker) হওয়া যায় এবং আমি সে দলেই । আমি আপনাকে এমন উদাহরণ দিতে পারব যে কিনা মুক্তমনা হবার পর তার ধর্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে । আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ যে , কোন ধর্মকে অপমান করবেন না । আমাদের কাছে ধর্ম অনেক পবিত্র একটা ব্যাপার । ধর্ম যদি আপনার গাত্রদাহের কারন হয় তো সহনশীলতার সলিল দিয়ে সে জ্বলনকে নিভিয়ে ফেলুন । আর যদি তাতেও জ্বলন নির্বাপিত না হয় তাহলে আপনার নাস্তিক বন্ধুটির সাথেই তাপ সঞ্চালনে অংশ নিন । কোন ধার্মিকের কিংবা কোন মিডিয়ার সাথে এগুলো প্রকাশ করবেন না । আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন , কোন যুক্তি থাকলে দেখাতে পারেন কিন্তু সবই হতে হবে শালিনভাবে । এদেশে কোন অশালীনতার সুযোগ নেই । আমরা অসভ্য নই , একটা সভ্য জাতি , এই জিনিসটা মাথায় রাখবেন । যা করেছেন ইতোমধ্যে সব মুছে ফেলুন , সুস্থ যুক্তি ও সুন্দর বিজ্ঞানের চর্চা হোক ঘরে বাইরে । নাস্তিক , হিন্দু , মুসলিম সবার মাঝেই । মত প্রকাশের অধিকার আছে সবার , কিন্তু তা হতে হবে শালীনভাবে । তাই বলতে পারি , “মত প্রকাশে শালীনতা চাই” ।
এবার পঞ্চম প্রসঙ্গটির অবতারণা করতে চাই । শিবির ও লীগের হামলা নিয়ে কি আর বলব । রাজনৈতিক কাদা ছোঁড়াছুড়ি ছাড়া আর কিছুই নয় । লীগের একটা সুবিধা হল আন্দোলনের ফলে তাদের পাপের বোঝা কিছু কমল । শিবিরের উপর নৃশংস হামলার পড়েও জনগণের কাছে তারা বাহবা পাচ্ছে । শিবির কর্মীরা অনেক খারাপ । ওরা মানুষের রগ কাটে , ইসলামের নামে সাধারন মানুষের উপর নির্যাতন চালায় । এখন দেখছি ছাত্রলীগের রাস্তাও একই দিকে । শিবিরের নামে যেসব প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটতরাজ চালানো হচ্ছে তা কি আইনসম্মত ? তা কি মানবতাবিরোধি নয় ? ওখানে এমন অনেকেই পেটের দায়ে কাজ করছেন যারা শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত নন । আর শিবিররা নির্বিচারে পুলিশদের উপর হামলা চালাচ্ছে । পুলিশ কি দোষ করল ? তারা তো সরকারের হাতের পুতুল । সরকার যা বলে তাই তাদের করতে হয় । আর পুলিশের সামনে লীগের লোকজন মারপিট করে আর পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করে । যেন ফুটবল খেলা হচ্ছে আর পুলিশ সাইড বেঞ্চে বসে আছে । সিলেট , চট্টগ্রাম , রাজশাহীসহ দেশের যেসব স্থানে শিবিরকর্মীরা গণজাগরণ মঞ্চ ভাংচুর করেছে তার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি । সিলেটে শহীদ মিনারের প্রাচীর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি যে অবমাননা করা হয়েছে তার সুতিব্র প্রতিবাদ জানাই । এসব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের বিচার কামনা করছি ।
এবার ষষ্ঠ ও সর্বশেষ প্রসঙ্গে আসি । শিবির প্রসঙ্গে অনেক কিছুই বলা সম্ভব । ভাল দিক খুব কমই আছে । একটি হল তারা নিজেদের মধ্যে খুব সুশৃঙ্খল । শিবিরের সাথে রয়েছে অনেক মেধাবী মুখ । তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সুশৃঙ্খল উপায়ে পরিচালনা করা হয় । প্রথমত শিবিররা মওদুদীপন্থী । সাইয়েদ আবু আলা মওদুদী প্রথমদিকে খুব ভাল একজন আলেম ছিলেন । তার তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা ছিল । কিন্তু তার রচিত একটি বইয়ে তিনি কয়েকজন সাহাবী বিশেষ করে হযরত মুয়াবিয়া (রা) কে নিয়ে সমালোচনা করেন । কোন সাহাবীর দোষচর্চা ও সমালোচনা করা ইসলামে হারাম । এছাড়াও তার তাফহীমুল কোরআন গ্রন্থে তিনি সুক্ষভাবে কিছু অপব্যাখ্যা প্রদান করেছেন যা ভুল বলে প্রমাণিত । তাছাড়া ইসলামী দল হবার পড়েও তারা বিএনপির নেতৃত্বে তাদের সাথে জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশ নেয় । কিন্তু ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম । তারা বহু হাদিস ও কোরআনের আয়াত জাল করে প্রচার করে যা ইসলামের জন্য হুমকিস্বরূপ । তারা ধর্মযুদ্ধকে অন্তরের জিহাদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে যা ভুল । মুসলমানের সাথে মুসলমানদের কখনো জিহাদ হয় না । আর কাফেররা যদি কোন মুসলিম রাষ্ট্র আক্রমণ করে তখনি কেবল জিহাদ করা কর্তব্য হয়ে পড়ে । আবার বলবেন না যেন তাহলে তো মুক্তিযুদ্ধই হারাম হয়ে যায় ? মুক্তিযুদ্ধ হারাম নয় এজন্য যে ইসলামে বলা হয়েছে অন্যায় কাজ দেখলে তার প্রতিবাদ করার জন্য । নিঃসন্দেহে পাকিস্তানীরা আমাদের উপর নির্যাতন করেছে । এর প্রতিবাদ অবশ্যই প্রত্যেকের জন্য করণীয় ছিল । সুইসাইড হামলা ইসলামে নিষিদ্ধ । কারণ আত্নহত্যা মহাপাপ । কোন সাহাবীই কোন সুইসাইড মিশনে অংশ নেন নি । আরেকটি বাজে ব্যাপার হল শিবিরের নির্লজ্জ মিথ্যাচার । তারা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে মিথ্যাচার চালাচ্ছে । সংবাদ যেখান থেকেই গ্রহণ করেন না কেন একটু যাচাই করে দেখবেন । যাই হোক শিবিরকে নিয়ে অনেক কিছুই বললাম । বিস্তারিত জানতে ভাল কোন আলেমের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন । কিংবা তকী উসমানীর লিখা “ ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মুয়াবিয়া (রা)” এবং “ভুল সংশোধন” নামক বই দুটি পড়ে দেখতে পারেন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে শিবির কি নিষিদ্ধ করা উচিত কিনা ? আমার মনে হয় এই মুহূর্তে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিই জানানো উচিত । অন্য কোন দাবি এখন জানানো উচিত নয় । কেননা সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি নিশ্চিত করতে পারলে এমনিতেই শিবিরের শক্তি কমে যাবে । তখন তাদের সংশোধনের জন্য কিছুদিন সময় দেয়া যেতে পারে । এরপরও তাদের কোন পরিবর্তন না হলে জামায়াত শিবিরকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত । তাছাড়া এই দাবির মাঝে অন্য কোন দাবি পেশ করলে সরকার যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি নিয়ে টালবাহানা শুরু করে দিবে । ফলে দেখা যাবে আন্দোলনটাই মাঠে মারা যাবে ।
চেষ্টা করেছি যথাসম্ভব নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়ে এ কয়দিনের ঘটনা বিচার করতে । ব্লগটাতে কোন অস্পষ্টতা থাকলে প্রশ্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি । ধন্যবাদ সবাইকে ।