ঈদ এর ছুটি শেষে ঢাকা ফেরার পালা। রাত সারে দশটায় একতা এক্সপ্রেস। একটি অটো রিকশায় বাসা থেকে রেল স্টেশন। স্টেশন এর ভিতরে সরু রাস্তায় একলোক ঠায় দাড়িয়ে। আমি তাকে ভদ্রভাবে সরে যেতে বললাম কিন্তু গোঁয়ার এর মত দাড়িয়ে রইল। এবার একটু রাগত স্বরে বললাম, রাস্তা কি আপনের বাপের যে লাট বাহাদুর এর মত দারিয়ে আছেন? কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকা আমার নাক বরাবর এক ঘুষি বসিয়ে দিল। দেরি না করে অটো থেকে নেমে আমিও মেরে দিলাম কয়েকটা। পুলিশ দাড়িয়ে ছিল পাশেই। আমাদের মারামারি দেখছিল। লোকটি কুলোতে না পেরে তার ছেলের ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে তেঁরে এল আমিও দাড়িয়ে ওর হাত থেকে ব্যাট নিয়ে ওকে মেরে দেয়ার অপেক্ষায়। লোকটির স্ত্রী তাকে শান্ত করার ব্যারথ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশেষে এল পুলিশ। এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করল, কি সমস্যা? আমি বল্লাম,কে আপনি? এতক্ষণ কি তামাশা দেখলেন? পুলিশ কনস্টেবল কথাটি ভালোভাবে নিলনা। নেয়ার কথাওনা। ইতিমধ্যে আমাদের দুজনকেই থানায় নিয়ে যাবে কিন্তু লোকটি পুলিশের পকেটে গুজে দিল একশ টাকা এর একটি নোট। তকে ছেরে দিয়ে আমাকে ভিতরে নিয়ে যাবে, এমন সময়ে সেখানে এলো আমার ছোট বোন ও বোন-জামাতা। ওরাও আমার সফর সঙ্গি। ততক্ষণে ওই লোককে ছেরে দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, থানায়। আমি পুলিশকে বললাম, আমার কলার ছেরে দিন, আমি আসামি নই। ছেরে দিল। আমি সুবোধ বালক এর মত থানায় গিয়ে বললাম, ওই লোকটি কই? কেন শুধু আমাকে একা আনা হল? যে কনস্টেবল আমাকে ধরে এনেছে, সে থানার ডিউটি অফিসারকে বলল, উনিফরম পরা পুলিশকে বলে, কে আপনি? বেয়াদব ছেলে, পুরো থানায় লোকজন তেঁরে এল, পারলে আমাকে মারে। আমি বার বার জানতে চাইলাম কেন আমাকে একা আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমার বাবাকে খবর দেয়া হয়েছে। আমি চাইনি তাকে খবরটা দিতে, কিন্তু কাজটা করল, আমার বোন জামাতা। আমি বললাম, আমাকে কি কিছু বলার সুযোগ দেয়া হবে, অফিসার বলল, বলেন। আমি বললাম, আমি জানতে চাই কেন তাকে ছেরে দেয়া হল? এবং বিস্তারিত বললাম।অফিশসবকিছু শুনে অফিসার আমাকে চলে যেতে বললেন। আমি কিছু কথা বলতে চাইলাম কিন্তু বাধ সাধল, বোন জামাতা। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে আসলে। অনেকটা জোড় করে তিনি আমাকে থানা থেকে বের করে নিয়ে গেলেন। থানা থেকে বের হতেই আমার বাবা এর সাথে দেখা। তিনি আমাকে নিয়ে থানায় গেলেন আবার। অফিশারকে তার পরিচয় দিয়ে জিজ্ঞ্যাশা করলেন, কি অপরাধ করেছে আমার ছেলে? অফিসার বললেন, না তেমন কিছুনা, বাবা জানতে চাইল কি অপরাধ করেছে তার ছেলে, এবং কেন তাকে ধরে আনা হয়েছে আর কেন ওই লোক কে ছেরে দেয়া হল? আমি বললাম, ছোট একতা একশ টাকার ডিল আর বললাম, আপনের অফিসার রাজ্জাক সাহেব এর পকেটের একশ টাকা এর উৎস। সেই অফিসার বল্লল, আমিত ওখানেই ছিলাম না। বাবা জিজ্ঞাসা করল, তাহলে কে ছিল? অফিসার আমতা আমতা করতে লাগল। বাবা বললেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আমাকে যেন জানান হয়। আর যদি আমার ছেলে অপরাধ করে থাকে, তাহলে ওর সাথেই আপনেরা কথা বলবেন। আর যদি চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে যাবার পরে যদি আমাকে না জানান হয়, তাহলে আমাকে কোন দোষারোপ করতে পারবেন না, কেন আপনাদের সাথে এমনটা হবে। বলে চলে এলেন থানা থেকে, দুজন কনস্টেবল বলল, স্যার চা খেয়ে যান। চা নে খেয়ে বের হয়ে আসলাম। অফিসার তার দুজন কনস্টেবলকে বললেন, এগিয়ে দিয়ে আসতে। সেই দু কনস্টবলও উঠল আমাদের সাথে। আজ তাদের দায়ত্ব একতা এক্সপ্রেস।
দাড়িয়ে আছি,প্লাটফরমে, এমন সময়ে দেখি অফিসার আসছে সদল বলে, এসে বাবা এর কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইল, যে তাদের ভুল হয়ে গেছে, বাবা, কথা না বড়িয়ে বলে দিলেন, আপনাদের ক্ষমা করে দিলাম।
কেবিনে উঠে শুরু করলাম ল্যাপটপ এ টুকি-টাকি কাজ। কনস্টেবল এসে বলল, স্যার চা দিয়ে যাব? আর স্যার, কোন সমস্যা হলেই বলবেন, আমরা এখানেই আছি। বাকি যাত্রা ভালই কাটল। তবে রাতের বে্লায় পুলিশের বাড়ি খেয়ে এখন হাতের আগুলে প্রচণ্ড ব্যাথা আর আমার ঘারে সজরে এক ঘুষি দিয়েছিল কনস্টেবল রাজ্জাক যখন আমাকে ধরে অথচ যে কিনা পরে বলেছিল তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না, তাহলে যুবাইর নামক বেয়াদবটা কি এমনি এমনি থানায় চলে এল। আমাকে যখন ধরে আনা হয়েছিল, আমাকে তারা বলেছিল, আমি নাকি পুলিশ চিনিনা। পরে যখন বাবা এর কাছে ক্ষমা ছেয়েছিল, তারপরে আমি আবার বলেছিলাম, এটাই হচ্ছে পুলিশ, একটু পর পর তারা বদলে যায়। আমার মত নিরিহ কিন্তু বেয়া্দব ছেলেদের ঘারে বেআইনিভবে আঘাত করতে একটুও বাধেনা, আর কোন পদস্থ কর্মকারতা দেখলেই হিশু করে দেয়। সত্যি বাংলাদেশের পুলিশ, এদের চেনা সত্যিই দায়।