কেয়ামতের সময় মানুষের অনুভূতি কেমন হবে আমি জানিনা,,, আমি সকাল থেকে অনেক ব্যস্ততার মাঝেও কয়েকবার নিউজ দেখেছিলাম, মনে এক অজানা শংকা কাজ করছিলো, না জানি আজ কি হবে?? হঠৎ করে মোবাইল বেজে উঠলো, নাম না দেখেই রিসিব করলাম, ঐ পাশ থেকে বলে উঠলো " হ্যলো যোবায়ের তোমার রায়হান ভাই তো শেষ তার মাথায় ও চোখে গুলি লাগছে " আমি আৎকে উঠে বল্লাম কি হয়ছে? "তুমি একখুনি ইসলামি ব্যাংক হসপিটাল আসো,কিছু না ভেবে বাইক নিয়ে ভৌঁ দৌড়,,রায়হান ভাই হলো ঢাবির শহিদুল্লাহ হলের.৫মে ২০১৩.আমি বাইক নিয়ে এদিক ঐ দিক আনেক কাজ করার ফাঁকে কখোন যে সন্ধা হলো টেরও পেলাম না।ঐদিন সকাল ১০ টায় হিমেল ভাই বল্ল একখুনি প্রেসক্লাবের সামনে যাও, সাথে সাথে গেলাম, হিমেল ভাই হলো আমার দেখা এক আজব প্রানি,যার মধ্যে নিজের দায়িত্ব পালনে ক্লান্তি নেই।প্রেসক্লাবের সামনে অনেক পুলিশ, তার পরও আমরা সেখানে বেড়ালের মতো দাড়িয়ে।হঠাৎ করে গুলি টিয়ারশেলের আওয়াজ!! সবাই নারেতাকবির স্লোগান দিয়ে এদিক ওদিক, আমি কোন দিকে যাবো বুঝে উঠার আগেই একটা পুলিশ আমাকে ধরলো এমন ভাবে ধরলো মনে হয় আমি কুকখ্যত ঝানু চোর, আমি কিছু না বুজেই আমার সামনের বিল্ডিংটা দেখিয়ে বল্লাম স্যর এই যে আমার বাসা, সে তখন আমার পাচায় কসে এক লাথি মেরে বল্ল যা এখান থেকে, লাথি খেয়ে রাস্তার মধ্যে,ঠিক তখন আমার সামনে একটা বাস, লাপ দিয়ে আমি বাসে,তখন পুলিশটা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সন্ধা ৭-৮ হবে আমি মতিঝিল যাচ্চি পথে একজন বল্ল ভাই বাইক নিয়ে ই দিকে যাবেন্না পুলিশ ধরবে,তখন আমি বাইক রেখে আমার সাইকেল নিয়ে গেলাম,পথে কয়েক হাজার র্যব পুলিশ ছিলো,মতিঝিল পৌছলাম, লাখ লাখ মানুষ বসে আছে কিছু পরিছিতো মানুষ ও দেখলাম হেফাজতে ইসলামের কর্মিরা ক্লান্ত প্রায় সবাই বিশ্রাম নিচ্চে। সাইকেল নিয়ে হাঁটতে অনেক কষ্ট হলো, তার থেকে বেশীমাত্রা কষ্ট হল বিশ্রামরত লোকদের দেখে,,,রাত ১.০০ টা, আমি শাপলাচত্বর , কি করবো বুঝতে পারছি না, মনে মনে ভাবলাম একটা মসজিদে বিশ্রাম নেওয়া যাক, অবশেষে মতিঝিল ইডেন মসজিদ এ গেলাম,,, গিয়ে দেখি সেখানে আরো অনেক মানুষ,, সেখানে blood kinship এমন একজনের সাথে দেখা, রাত প্রায় ১.৪৫। গল্প করতে করতো ঘুম এসে গেলো,,,,,,হঠাৎ করে বিকট আওয়াজ, ঘুম থেকে উঠে দেখি সবাই আল্লাহ আল্লাহ করছে আর এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ী করছে, আমি আমার ছোট্ট জিবনে এমন আওয়াজ আর পাইনি,কোন মতে মসজিদ থেকে বের হলাম, মেইন রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখি বিশ্রামাবস্থায় থাকা লোক গুলো হামাগুড়ি খেয়ে দৌড়াচ্চে, তাদের পিছ দিয়ে র্যব পুলিশের পোশাকে হাজার হাজার লোক সব ধরনের অশ্র ব্যবহার করছে। এই অবস্তায় মসজিদের পিছ দিয়ে পালানোর সময় বুজলাম আমার বিরত্ব কতোটুকু, অনেক পথ ঘুরে গুলিস্তান মাজার আসলাম,হাজার হাজার মানুষের জিবন বাঁচানোর ঢল, এবং এম্বুলেন্স এর প্রকট আওয়াজ।হঠাৎ পিছন দিয়ে১৪-১৬ বৎসর বয়সের একটা ছেলে, পায়জামা পান্জাবী পরা পায়ে জুতো নেই, ক্লান্ত ভিতু কন্ঠে বল্ল ভাই বাড্ডা বসুন্ধরার রাস্তা কোনটা? আমি বলে দিলাম এই এই পথে যাও, সাথে সাথে সে হাঁটা দিলো আমি ডাক দিয়ে বল্লাম সকাল হোক বাসে যেও। সে লজ্জিত কন্ঠে বল্ল টাকা নেই, আমি হেঁটেই যাবো, তখন আমি পকেটে থাকা শুধু ১১০ টাকা বের করে ১০০টাকা দিলাম। নিতে চাচ্চিলোনা জোর করে দিলাম,ছেলেটার চোখে পানি চলে আসলো,আমি না দেখার বান করে চলে আসলাম। সারি সারি এম্বুলেন্স যাচ্চে আসছে, ফোন বেজে উঠলো, হ্যলো আপনি কি জুবায়ের? জি। কে? ভাই আমাকে ছিনবেন্না, হিমেল নামে একজন আহত, গায়ে গুলি লাগছে, এখন পল্টন মসজিদে, এর পর লাইন কেটে গেলো!!!! ফজরের আজান হলো, নামাজ পড়ে অন্ধকারের মদ্দেই বাইক নিয়ে চলে গেলাম, কিছু আহত লোক নিয়ে আসলাম সকালের আলোতে কিছু মানুষ কি যেন কুড়াচ্চে, একজন বল্ল বুলেট। সাথে সাথে আমিও নেমে ৪টা বুলেট পেলাম, বুলেট গুলো খুব সুন্দর।!!!!!!!!!