somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরের রসবোধ!

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩। ভ্রাতার বিবাহকার্য সম্পন্ন করাইয়া স্বীয় বাটিতে ভ্রাতৃবধূসহ পদার্পণ করিয়াছি। বাসর ঘর খানা কীরূপ সাজাইয়াছে উহা দেখিতে ভ্রাতার ঘরে ঢুকিলাম। ছোটদের ছোটাছুটিতে চরম বিরক্ত হইলাম এবং আমি ছাড়া এইসকল ঝামেলা ফেস করিবার কেহই নাই এইরূপ একটা ভাব আনিয়া উহাদিগকে শাঁসাইলাম, “ এই সব কডা বের হ তো এই ঘর থেকে!” উহাদিগকে বিতাড়িত করিয়াই ক্ষান্ত হইলাম না। কি মনে করিয়া বাসর ঘরের দরজা খানিও ভ্রাতা-ভ্রাতৃবধূ দখল বুঝিয়া নিবার পূর্ব পর্যন্ত বন্ধ করিতে উদ্যত হইয়াছি, যাহাতে কেহই রুমে আর প্রবেশ করিতে না পারে উনাদের আগে। এমন সময় দয়াময়ের বড় রসিকতার সাধ জাগিলো আমার সাথে। দরজা বন্ধ করিতে টান দিবার কালে দরজার টিপ বাটনখানা যে টেপাই ছিলো উহা লক্ষ্য করিতে ব্যর্থ হইলাম এবং যেই মুহুর্তে উহা পুরাপুরি বন্ধ হইতেছে সেই মুহুর্তে আমার আক্কেলখানা জাগিয়া উঠিলো। দড়াম করিয়া উহা বন্ধ হইবার পরেই আমার মাঝে শোকের ঝড় উঠিলো এবং বাপজানের হাতে এই বোকামির দরুন ঝাড়ির খাওয়ার ভাবীচিত্রখানা আমার মানসপটে ব্লু রে ১০২০ রিপ প্রিন্টে ফুটীয়া উঠিলো। প্রিয় পাঠক সম্প্রদায় আপনারা নিশ্চয়ই ভাবিতেছেন সামান্য একখানি দরজা ভিতর থেকে আটকাইয়াছে তাহাতে এত বাগ আড়ম্বরের হেতু কী? হেতু ইহাই যে বিবাহ হইতেছে আমার ভ্রাতার। আর বাটির সব চাবির গোছা কেবল তাহার ই নখদর্পনে, আমি যেহেতু বাটিতে থাকি না (থাকিলেও বিশেষ কিছু যে জানিতাম তাহাও নহে), ইহার কিছুই আমি জানি না। আমি ভাবিতে লাগিলাম কেমন করিয়া ভ্রাতাকে তাহার নবপরিণীতা হইতে সরাইয়া বলিবো, “ইয়ে...মানে...ভাইয়া তোর (বাসর) ঘরের দরজা আটকাইয়ালছি, চাবি খুঁজে দে দরজা খুলবো।“ ইহা তাও একটা পসিবিলিটির ব্যপার। লাচার হইলে ইহাই করিতে হইবে। যাহাই হউক চিন্তাভাবনা শিকায় তুলিয়া সবার আগে আমার চাচাকে বলিলাম। কাছেই থাকা চাবির গোছা দিয়ে চেষ্টা করিলাম হইলো না। চাচাও করিলো হইলো না। ওদিকে সালাম পর্ব নাকি শেষ হইয়া গিয়াছে। আমি বড় ভগিনী কে বলিলাম বর আর কনেকে ছলে বলে কৌশলে বৈঠকখানায় বসাইয়া রাখিতে। ইতোমধ্যে মা জননীর কাছে গিয়া বলিলাম,
-আম্মা, বাড়ির আর চাবি আছে?
-হ্যাঁ, বেডরুমের বারান্দায় ঝুড়ির ভিতরে
-ঝুড়ি ক্যানো?
-নতুন পুরানো সব চাবি ওখানে, তোর ভাইয়া আলাদা করবে বলছিলো।
যাহাই হউক, প্রমাদ গুনিলাম বারান্দায় গিয়া। এত এত চাবী আমি একজীবনে খালি চাবীওয়ালার কাছে দেখেছি। এইরূপ খড়ের গাদায় সূচ খুজিবার মানেই হয় না।
ঘটনা ইতোমধ্যে পিতার কর্ণকূহরে প্রবেশ করিয়াছে। উনি বেশ চটিয়াছেন। মোড়ের চাবিওয়ালাকে আনতে লোক পাঠানো হইয়াছে। আমি পিতাকে এড়িয়ে চলিতে লাগিলাম।
মানবজাতির সকল বিপদাপদে একজন বা কতিপয় করিয়া অবতার আসিয়াছেন। আমার এই ঘোর বিপদে এমন কেহই কি নাই? এইসব আতিপাতি ভাবিতেছি এমন সময় ভগিনী উম্মুল খয়ের ফাতেমা আসিয়া হাতের কাছের সেই চাবীর গোছা দেখাইয়া বলিলোঃ
-ভাইয়া এই চাবিগুলা দিয়ে ট্রাই করেছো?
-করছি, লাভ হয়নাই
-আমি আর একবার দেখি
-দ্যাখ, লাভ হবে না অবশ্য
ভগিনী বিড়বিড় করিয়া কিছু আওড়াইয়া প্রথম চাবিটি দিয়া মোচড়াইতেই খুলিয়া গেলো দরজা। আমাদের আনন্দ আর দেখে কে! :D
রসময় দয়াময়ের অশেষ কৃপা!
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×