গ্রীস্ম গিয়ে এখন বর্ষা চলছে,কিছুদিন আগে জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তি গেল।মানুষের জন্মদাগের মত ঋতুগুলারো কিছু দাগ থাকে,বর্ষার কদম আমার কাছে ঠিক ঐরকম একটা ঋতুদাগ!
গরম চিনি আমরা ফল দিয়ে,বর্ষায় কি সব ফল গাছ মরে যায়? তারপরো কোন ফলের মাস না হয়ে বর্ষা ফুলের মাস,কদমের মাস।কেন? কারণটা অতি প্রাচীন এবং আধুনিক,কাল থেকে কালান্তরে,জল-কাদায় কাপড় নষ্ট করে,হঠাৎ সিঞ্চনে কাক ভেজা হয়ে,অযাচিত জল-স্নানে নতুন বাড়ির কোণায় রঙের আস্তরণ ভেদ করে গজানো শ্যাওলা দেখে অথবা আপন ভেজা রমণীর লেপ্টে থাকা শড়ীর দিকে তাকিয়ে ফেরা অগনিত দর্শক দৃষ্টি কাউকে যতটাই ভ্রূ-কুঞ্চনের সুযোগ দিক না কেন,মনে গালাগালের টর্ণেডো তুলুক না কেন,বর্ষার রাতে একাকী বিছানায় পছন্দের মানুষটার মুখ কল্পনার ক্যানভাসে একবার না ভাসানো কিংবা ভালবাসার মানুষটাকে মুষ্ঠিবদ্ধ করে বর্ষার কাছে নিজেদের সপে দেয়ার আকাঙ্খা মনে পোষে না,এমন বাঙ্গালী বীর খুব কমই হবে।
বর্ষা মানেই নিতান্ত বেরসিক মানুষটিরো রোমান্টিসিসমের গ্যাড়াকলে আটকে পড়া,বর্ষা মানেই মনের মায়ায় আদ্র হওয়া,বর্ষা মানেই ভালবাসার মানুষটার ওমের মধ্যে সেদিয়ে যাওয়া,নিষিদ্ধ আকাঙ্খার কাছে আত্মসমর্পণ।
আর এই প্রেম,কাম,আসক্তি,অনুরাগ,অনুলেহের প্রতীক হয়ে, প্রতি বর্ষায় অসম্ভব আবেদন নিয়ে উচু উচু সব গাছগুলোর মাথায় কদমগুচ্ছ জানান দেয় যে আমি, বাদল দিনেরো প্রথম কদম ফুল....
প্রতি বছর এই আবেদনী গাছগুলি আমাকে ক্ষুব্ধ করে ,এমন একটা গাছ আমাদের ছোট্র বাড়ীটার কোন এক জাগায় স্থান দেবার অক্ষমতায়।তবুও ভাল,ফুল পাড়া যায়,ধরা যায়,ঘরে এনে রাখাও যায়।প্রতি বছর অন্তত একটা কদম হলেও আমার ঘরে জায়গা করে নেয়,এ বছরটা কেমন যেন হয়ে গেল,কেউ এই বর্ষায় অধম আমায় একটা কদম হাতে ধরায় দিল না আমার এবারের বর্ষা কাটতেছে কদমহীন অবস্থায়...অনেকটা ক্ষিদা পেটে অম্বুবাচী অবস্থা বলা চলে!!
অম্বুবাচীঃ জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তির পর অর্থাৎ আষাঢ মাসে কৃষ্ণপক্ষে মিথুন রাশিতে সূর্য যখন আর্দ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদ ভোগ করে সেই তিথি।এইসময় হিন্দু বিধবারা অগ্নিপক্ক অর্থাৎ আগুনে পাক-করা কোনো খাদ্য গ্রহন করতে পারেন না।
দৃশ্য কৃতজ্ঞতায়ঃ তারার হাসি Click This Link