বিশ্বে গেঁটেবাত বা গাউট প্রকোপ বাড়ছে এবং ১৯৭০-এর দশকের পর গেঁটেবাতের রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। একটি চিকিৎসা-জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, চিনি দিয়ে প্রস্তুত তথাকথিত কোমল পানীয় গেঁটেবাতের প্রকোপ বাড়ার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. পিটার সিমকিন এ জরিপের নেতৃত্ব দিয়েছে। সে বলেছে, বিশ্বে ফ্রুকটজ গ্রহণ বৃদ্ধি এবং ওবেসিটি বা স্থূলতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে গেঁটেবাতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া নিম্নমাত্রায় অ্যাসপিরিন গ্রহণ এবং উচ্চ রক্ত চাপের কোনো কোনো ওষুধ গেঁটেবাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়।
খাবারের সঙ্গে আমরা যে ফ্রুকটজ গ্রহণ করি তা একজাতের প্রাকৃতিক চিনি। ফলে প্রাকৃতিক অবস্থায় এ চিনি সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়। কিন্তু কথিত কোমল পানীয়সহ অনেক খাবারকে মিষ্টি করে তোলার জন্য এটি মেশানো হয়।
রক্তে অধিকমাত্রায় ইউরিক এসিড তৈরি হলে বা শরীর থেকে অল্প মাত্রায় ইউরিক এসিড পেশাবের মাধ্যমে নির্গত হলে বিপত্তি দেখা দেয়। সে সময় দেহ-সন্ধিগুলোতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্ফটিক তৈরি হয়। শক্ত এবং সুঁইয়ের মতো সুচালো স্ফটিক দেহ-সন্ধিতে প্রদাহ ও ব্যথা তৈরি করে। কেউ কেউ গেঁটেবাতে আক্রান্ত হয়ে থাকে আবার কেউ কেউ হয় না। কেন এমনটি ঘটে, সে রহস্য আজও জানতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তবে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশেই বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে গেঁটেবাতের প্রকোপ বাড়ছে।
গেঁটেবাতের রোগীদের খাবার-দাবারের বিষয়ে পরামর্শ দিতে যেয়ে ড. পিটার সিমকিন বলেছে, লাল গোশত খাওয়া সীমিত করতে হবে। মদ খাওয়া যাবে না এবং ফ্রুকটজ আছে এমন খাবার-দাবার যতো সম্ভব বর্জন করতে হবে। এছাড়া দেখা গেছে, চেরি জাতীয় ফল খেলে গেঁটেবাতে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা ৩৫ শতাংশ কমে।