somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময় কিংবা বছরান্তের সাক্ষাৎ

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গরমের দিনে পথ চলায় যতটা ক্লান্তি আসে, রৌদ্রতাপে দেহের ঘর্মগ্রন্থি থেকে যতটা ঘাম বের হয় তাতে ভিজে যায় পরিধেয় বস্ত্রের কোনো কোনো অংশও। সেই সঙ্গে হাওয়ার সঙ্গে উড়ে আসা ধুলোবালিও মিশে যায় দেহের সিক্ত অংশে। তার ওপর পথ দীর্ঘ হলে কমবেশি তৃষ্ণায় আক্রান্ত হয় সবাই। আশ্রাবুদ্দিনকেও এ সমস্যাটির মুখোমুখি হতে হয় প্রায়ই।

সকালের দিকে দু মুঠ মুড়ি মুখে দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল আশ্রাবুদ্দিন। গ্রামের উপান্তে খালের ওপর দিয়ে সরু সাঁকোটি পার হয়ে বাউটিহারা বাজারে খানিকটা থেমে সাত্তারের চা-দোকান থেকে প্লাস্টিকের গ্লাসে আধা গ্লাস পরিমাণ পানি খেয়েছিল। এখানকার বিস্বাদ পানি মোটেও ভালো লাগে না তার। মূলী-বাঁশের ভেজা-ভেজা গন্ধটা নাকে এসে ঝাপটা দিলেই যত গাঢ় তিয়াস বা পিপাসা থাকুক নিমেষেই যেন তা বিরক্তিতে পরিণত হয়। তারপর সামান্য পানি পেটে পড়লেও শুরু হয় অস্বস্তি। পথ চলতে তেমন একটা উৎসাহ পায় না। পেটের ভেতরটা থেমে থেমে তখন মোচড়াতে আরম্ভ করে। সে অবস্থায় বেশিক্ষণ চলতে পারে না। কোনো রকমে বশিরুদ্দিন বয়াতির দিঘীটা অতিক্রম করতে পারলেও প্রবল অস্থিরতা নিয়ে তড়িঘড়ি লুঙ্গিটা কোমর অবধি উঁচিয়ে বসে পড়তে হয় মোরতা ঝোপের আড়ালে।

প্রায় সময়ই সে চেষ্টা করে যাতে এখানকার পানি খেতে না হয়। কিন্তু কোনো কোনোদিন এমন হয় যে ঘরে এক রত্তি পানি থাকে না। বড়ভাই মেরাজুলের বউ রুকিয়া প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে দিয়ে এক কলস পানি আনে গ্রামের শেষ প্রান্তের ব্যাপারী বাড়ির চাপকল থেকে। তাদের গ্রামে অনেক চাপকল থাকলেও বেশিরভাগ কলের মুখেই লাল রঙ লাগিয়ে দিয়ে গেছে থানার স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেরা। যে সব কলের পানি দিয়ে সব কাজই করা যায় কেবল খাওয়া আর খাবার রান্না করা নিষিদ্ধ।

রুকিয়া প্রায়ই কলসি ভরে পানি নিয়ে আসবার পর নাকি নাকি আর বিরক্তি পূর্ণ কণ্ঠে বলে, আর যাইতে পারমু না পানি আনতে! তোমরা দুই ভাইয়ে মিল্যা দুইবেলা পানি আইন্যা দিবা দুইটা কলস দিয়া! কিন্তু পরদিন ঠিকই সে কলস কাঁখে পানি আনতে যায়।

সকালের দিকে কোনো কোনো দিন পানি ফুরিয়ে গেলে আশ্রাবুদ্দিন নিজেই ছোট অ্যালুমিনিয়ামের কলসটা নিয়ে ব্যাপারীর বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু আজ কিছুতেই মন থেকে সায় পাচ্ছিল না সেদিকে যেতে। যদিও শতভাগ ইচ্ছে তার ছিল তবু ব্যাপারীর রক্তচক্ষুর কথা ভাবলে মোটেও ভাল লাগে না। যদিও সে অনেকবার বলেছে যে, সে পানি নিতে এলে কারো দিকেই দৃষ্টিপাত করে না। তবু ব্যাপারীর একই কথা, পানি নিতে হইলে বাড়ির বউ-মাইয়াগো পাঠাইবা। বেগানা পুরুষ মানুষ বাড়ির ভিতরে আইবা এইটা কেমন কথা। আমার বাড়ির মাইয়া বউগো ইজ্জত আব্রুর কথাডা ভাইব্যা দেখবা না?

আশ্রাবুদ্দিন একদিনই মাত্র চোখ তুলে তাকিয়েছিল ব্যাপারীর ছোট মেয়ে সখিনার দিকে। কী চমৎকার দুটি চোখ। যেন বশিরুদ্দিন বয়াতির ভর ভরন্ত দিঘী। আর সেই থেকেই সে চোখ দুটির গভীর মায়া গেঁথে আছে বুকের কোথাও। খুব একাকী অথবা নিদ্রাছুট মধ্যরাতে আচমকা সে কথা মনে পড়লে মাঝে মাঝেই তার প্রবল ইচ্ছে হয় সে চোখের গহিন কালোতে হারিয়ে যেতে। কিন্তু মানুষ বলেই হয়তো তার ইচ্ছেগুলোর সামনে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা এসে হাজির হয় । আর সে কারণেও হয়তো সব ইচ্ছেরা পাখা মেলতে পারে না। পরিস্থিতি শিক্ষা দেয় যে, সব ইচ্ছের কথা সব সময় প্রকাশ করা উচিতও নয়। নয়তো ভোরের শিশিরে ভিজে থাকা দূর্বাঘাসগুলোর মতোই স্নিগ্ধ আর কোমলতার আবরণে ছাওয়া মুখ যার, মাথার একরাশ খোলা চুল দেখে মনে হয়েছিল উত্তর-পশ্চিমাকাশে জমে থাকা বৈশাখের ঘন কালো মেঘ বুঝি। অথচ রুকিয়ার ছোট বোন মিনোরার চোখে চোখ পড়লে চৈত্রের খরায় পোড়া মধ্য মাঠের জমির মতোই যেন শুকিয়ে যায় তার বুকের জমিনও। মাঝে মধ্যে ভুলক্রমে বা অসচেতন ভাবনার ফলে কখনো কোনো স্বপ্ন উঁকি দিয়ে থাকলেও যেন তা মৃত প্রজাপতির খসে যাওয়া পাখার মতোই আড়াল হয়ে যায় ঝাড়-জঙ্গলের বিচিত্র আকৃতির শুকনো লতা-পাতার ভিড়ে।

সময় মতো বিয়ে করলে তার সম বয়সীদের ছেলে-মেয়েগুলোর মতো তার সন্তানরাও হয়তো ছুটোছুটি করতো গ্রামের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। কিন্তু বিয়ে করলে বউ নিয়ে আলাদা ঘুমাবে তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকাতে তার বিয়ে করা হয়ে ওঠে না। কনে পক্ষ বলে যায়, আগে ঘর-দুয়ার ঠিক কর, তার বাদে বিয়ার নাম লইও।

সব কিছুই মুখের কথার সঙ্গে সঙ্গে করে ফেলা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যদিও তাদের পৈত্রিক ভিটা ছিল। তাতে মাথা গোঁজবার মতো একটি ঘরও ছিল। কিন্তু মেরাজুল বিয়ের আগে সে ঘর নতুন করে মেরামত করা এবং পুরোনো টিন আর খুঁটি বদলের সময় টাকা-পয়সা দিতে পারে নি বলে, সে ঘরের ওপর কোনো অধিকার তৈরি হয় নি আশ্রাবুদ্দিনের। পৈত্রিক সূত্রে যে সামান্য অধিকারটুকু ছিল, টিন আর খুঁটি লাগিয়ে নিজের করে নিয়েছে মেরাজুল। নতুন বউ রুকিয়া বাড়িতে উঠে আসবার পর তার ঠাঁই হয়েছিল বদর মিয়ার কাচারি ঘরে। সকাল আর রাতের বেলা কেবল খাওয়ার জন্যেই সে যায় মেরাজুলের ঘরে। অন্য সময়টা নানা কাজে বাইরে বাইরেই কেটে যায় তার। এমন অবস্থা দেখে কথায় কথায় একবার রুকিয়া বলেছিল যে, মিনোরাকে কেন সে বিয়ে করে ফেলে না? তাহলেই তারা বাপের বাড়ি থেকে নতুন ঘর-দোরের ব্যবস্থা করে দিতে পারতো।

অন্য কেউ হলে কী করতো জানা নেই আশ্রাবুলের। কিন্তু এক কথায় সম্মত হতে পারে নি রুকিয়ার প্রস্তাবে। অন্যের কাছ থেকে দান গ্রহণ করলে তা যত মূল্যবান বা যৎসামান্যই হোক না কেন গ্রহীতার মর্যাদা কম বেশি প্রশ্নের মুখে পড়েই। তা ছাড়া যাকে কেন্দ্র করে এমন প্রস্তাব সেই মিনোরার চোখের দিকে তাকালে মনে কোনো ভরসা জাগে না, উলটো বুকের ভেতরটা শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যায়, তেমন মানুষের সঙ্গে জীবন যাপন দূরের কথা আশপাশে থাকাটাও যে নিতান্ত অশান্তির সে কথা বিবেচনা করেই আশ্রাবুল মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল যে, এ জীবনে বিয়ে করতে না পারলে করবে না। এমন কি কাউকে অনুরোধ করবে না তার জন্যে কারো কন্যা দেখতে। মোরতা ঝোপ থেকে প্রায় উবুড় হয়ে বের হয়ে মাথা নিচু করে দিঘীর ঢালের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে তার মনে হয় বিয়ে নামের আশাটা তার জন্যে দুরাশা হয়েই হয়তো থাকে যাবে বাকিটা জীবন।

কাজ সেরে শ্লথ পায়ে দিঘীর পাড়ে উঠে সে দু পা ছড়িয়ে ঘাসের ওপর বসে থাকে কিছুক্ষণ। পেটের চাপ থেকে মুক্ত হবার পর হঠাৎ করেই কেমন ক্লান্তি লাগছিল তার। মুখের ঘাম মুছে গামছাটা দিয়ে মাথায় পাগড়ির মতো বাঁধতে বাঁধতে তার মনে পড়ে দুদিন আগে রুকিয়া বলেছিল তার বাবার শরীর নাকি তেমন একটা ভালো যাচ্ছে না। আশ্রাবুল যদি দুটো দিন বাড়ি থাকে তাহলে সে বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারতো। কিন্তু এর মাঝে আর অবসর হয়নি তার। মন্তাজুদ্দিনের বরফ কলে প্রায় পুরো দিনই কেটে যায় তার। সপ্তাহের সাতদিনই কাজ থাকে বলে ছুটির কথা বলা হয়ে ওঠে না তার। কিন্তু যে করে হোক আজ ছুটির কথাটা সে বলবে বলেই ঠিক করেছে। কারণ জানতে চাইলে রুকিয়ার কথাটাই আবার বলে দেবে না হয়।

প্রতিদিনই আসতে আসতে সে শুনতে পায় বরফকলের বিচিত্র শব্দ। কিন্তু সে তুলনায় আজ কেমন যেন সুনসান মনে হয় চারদিক। কল চলছে না বলেই হয়তো কলঘরের ছাতা হয়ে থাকা পুরোনো আমলের বর্ষীয়ান গাছের ডালে নানা জাতের পাখির বিচিত্র ধ্বনি শুনতে পায় সে। বেশ কিছুটা অবাক হলেও একবার মুখ তুলে তাকায় গাছটির দিকে। তখনই পাশ থেকে কেউ তার উদ্দেশ্যে বলে, আশ্রাবুল তুই মন্তাজের বাড়িত যাইয়া জানাইয়া আয় যে, মন্তাজ টাউনো গেছে।

দৃষ্টি ফিরিয়ে সে তাকায় মুদি দোকানের টুলে বসে থাকা নুরালমের দিকে। তাকে মুখ ফেরাতে দেখতে পেয়েই সে আবার জানায়, মিস্তিরি না পাইলে দুই একদিন দেরি হইবো।

বরফ-কল খারাপ হয়ে যাওয়াতে মনে মনে খুশিই হয় আশ্রাবুল। কিন্তু আজই যদি মন্তাজ মিয়া মিস্ত্রি পেয়ে যায় তাহলে আজ রাতেই হয়তো কল ঠিক হয়ে যাবে। তবু আজকের পুরোটা দিনই বলা যায় তার ছুটির দিন। যে ছুটির জন্যে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। মন্তাজ মিয়ার খিস্তি-খেউরও শুনতে হবে না।

মন্তাজুদ্দিনের বাড়িতে যাওয়ার পথে পশের কাশেম ঘরামীর বাড়ির উঠোনে লাল কিছু পরিদৃষ্ট হতেই সে আগ্রহী না হয়ে পারে না। আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই চোখে চোখ পড়ে মেয়েটির। লাল একটি শাড়িতে আবৃত দেহে মেয়েটিকে আগে কখনো দেখেছে বলে মনে করতে পারে না আশ্রাবুদ্দিন। এমন কি এ বাড়ির কেউ নতুন বিয়ে করেছে তেমন কোনো কথাও শুনতে পায়নি কয়েকদিনের ভেতর। তাই সে বুঝতে না পারলেও অচেনা চোখের ওপর থেকে নিজের চোখও সরাতে পারে না। হয়তো পারে না মেয়েটিও। ফলে কিছুক্ষণ পরস্পরের দৃষ্টি সেঁটে থাকে পরস্পরের চোখের ওপর। হঠাৎ করেই ভেতর বাড়ি থেকে আরেকটি নারী কণ্ঠের ডাক ভেসে এলে হয়তো মেয়েটির চমক ভাঙে বা বাস্তবতায় ফিরে যেতেই অদৃশ্য হয় বাড়ির একটি খোলা দরজার ভেতর। আর তখনই আশ্রাবুলের মনটাও কেমন কেমন করে ওঠে। আর কিছুক্ষণ কেন সে থাকলো না। ভালোমতো তো মুখটিও দেখা হলো না। ফেরার পথে কি আর একটিবার দেখতে পাবে না?

একটি আক্ষেপ নিয়েই যেন সে পা বাড়ায় মন্তাজুদ্দিনের বাড়ির দিকে। উঠোনের প্রান্তে দাঁড়িয়ে সে ডাকে, ভাউজ, ভাউজ গো!

কিন্তু মন্তাজুদ্দিনের স্ত্রীর বদলে তার মা ঘর থেকে সাড়া দিয়ে বের হয়ে জিজ্ঞেস করে, কিরে আশ্রাবুল?

তখনই সে আরো খানিকটা এগিয়ে গিয়ে বলে, চাচি, মন্তাজ ভাই টাউনে গেছে হুনলাম। আপনে হুনছেন? আইজগা ফিরবো না।

উঠানের মাঝামাঝি শুকোতে দেয়া কলাই দু পায়ে নেড়ে দিতে দিতে মন্তাজের মা বলল, পোলায় টাউনে গেছে কী কামে?

-মিস্তিরির খোঁজে। নুরালম কইলো, বরফের কল খারাপ হইয়া গেছে।

মন্তাজের মা হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে বলল আবার, কল খারাপ হইলো কেমনে?

-হেইডা তো কইলো না।

-আইচ্ছা। আর কোনো কথা আছে?

-না গো চাচি। আমি তাইলে যাই!

-আইচ্ছা! বলে, ফের উঠনের ছড়িয়ে রাখা কলাইয়ের ওপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে সেগুলো নেড়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে মন্তাজের মা।

আশ্রাবুল ফিরতি পথে এসে কাশেম ঘরামীর বাড়ির কাছাকাছি হতেই চলার গতি কমিয়ে দেয়। তারপর সে বাড়ির উঠোন এবং ঘরের খোলা দরজার দিকে দৃষ্টি রেখে খানিকটা ইতস্তত করে খানিকটা উচ্চৈঃস্বরে ডাকে, কাশেম কাকু বাইত্যে আছ? কাশেম কাকু!

কিন্তু কারো সাড়া-শব্দ না পেয়ে কিছুক্ষণ সেদিকে দৃষ্টি রেখেই পথ চলে সে। কিন্তু লাল শাড়ি পরিহিত মেয়েটিকে কোথাও দেখতে পায় না। হতে পারে তাদেরই কোনো স্বজন বা আত্মীয়। তার ব্যাপারে জানার এক অদম্য কৌতূহল তাকে কিছুটা চঞ্চল করে তুললেও সে সেদিকে বেশি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে না, পাছে কারো চোখে না তার গতিবিধি সন্দেহজনক বলে প্রতীয়মান হয়।

বাড়ি ফিরে আশ্রাবুল সরাসরি মেরাজুলের ঘরের দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলে, ভাউজ, ও ভাউজ! হুনলা?

রুকিয়া মেঝেতে পাটি বিছিয়ে মাথার নিচে একটি হাত রেখে কাত হয়ে শুয়েছিল। দেখতে পেয়ে সে আবার বলে, ভাউজের কি শইল ভালা না? বলতে বলতে সে আরো খানিকটা এগিয়ে গিয়ে মুখোমুখি হয়।

-শইল ভালাই আছে।

বলতে বলতে রুকিয়ার দু চোখ বেয়ে দু ফোঁটা পানির বিন্দু গড়িয়ে পড়ে মাথার নিচে দিয়ে রাখা হাতের বাহুতে।

দৃশ্যটা ভালো লাগে না আশ্রাবুলের। তা ছাড়া রুকিয়াকে এ পর্যন্ত কোনো কারণে কাঁদতে দেখেনি বলে আজ তার আরো বেশি খারাপ লাগে। হঠাৎ রুকিয়ার মুখের দিকে ঝুঁকে পড়ে সে ফের বলে, তাইলে কান্দ ক্যান?

তখনই রুকিয়া নাক টেনে চোখে আঁচল চাপা দিয়ে নাকি কণ্ঠে বলে ওঠে, বাবারে বুঝি আর দেখতে পামু না!

-ও। তাইলে যাও না। দেইখ্যা আইও গিয়া!

বলতে বলতে আশ্রাবুল সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ফিরতে উদ্যত হলে শুনতে পায় রুকিয়া বলছে, তোমার ভাই তো কাজ ফালাইয়া যাইতে পারতাছে না, তুমিও কাজ বন্ধ দিয়া আমারে নিয়া যাইতে পারবা না!

-আমার সময় আছে। বিয়ানে গিয়া দেখি কাজ নাই। কল খারাপ হইয়া গেছে দেইখ্যা ফিরা আইছি।

-হাচা?

বলেই কেমন অস্থির হয়ে উঠে বসে পড়ে রুকিয়া আবার বলে, তাইলে তোমার ভাইয়েরে একটা খবর দিতে পারবা? দক্ষিণের চকে গেছে।

রুকিয়া উঠে পড়ে পাটিটা তুলে বেড়ার গায়ে বাঁধা বাঁশের কঞ্চির দুটো আংটার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। তারপর ভীত কবুতরের মতো তৎপরতার সঙ্গে ঘরের কোণে ঝুলতে থাকা মাচা থেকে পুরোনো একটি সুটকেস নামিয়ে মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে। তারপর আশ্রাবুলের দিকে একবার তাকিয়ে সুটকেসের ডালা খুলতে খুলতে বলে, কিছু কইলাম হুনলা? সেইসঙ্গে আরো কিছু কাপড়ের ভাঁজের নিচ থেকে হলুদ রঙের একটি ভাঁজ করা কাপড় বের করে আনে। তা পাশের চৌকির ওপর রেখে সুটকেসটা বন্ধ করে ফের মাচার ওপর প্রায় ছুঁড়ে দিয়ে আশ্রাবুলের উদ্দেশ্যে বলে, চালাইয়া যাও না ভাই!

আশ্রাবুল মেরাজকে সংবাদটা জানাতে ঘর থেকে বের হয়ে চকের দিকে হেঁটে যায়। কিন্তু তাকে দেখতে পেয়েই যেন মেরাজুল কিছুটা অস্থিরতা নিয়ে প্রায় ছুটে আসতে আসতে বলে, কী হইছেরে আশ্রাবুল, তুই কোন খারাপ খবর হুনাইতে আইলি?

বলতে বলতে বিকৃত হয়ে যায় মেরাজের মুখ।

মেরাজের অবস্থা দেখে হেসে ফেলে আশ্রাবুল। বলে, না বেশি খারাপ খবর না।

-তাইলে কী?

মেরাজুলকে বেশ খানিকটা বিভ্রান্ত দেখায়।

-তুমি বাইত্যে যাও। ভাউজরে নিয়া দুইদিন বেড়াইয়া আইও গিয়া।

-আমার খাইয়া আর কাম নাই!

বিরক্ত কণ্ঠে বলতে বলতে ফেরে মেরাজুল।

পেছন থেকে আশ্রাবুল বলল, তাওইর শইল বেশি খারাপ হুনলাম।

-তর কাজ-কাম না থাকলে তুই নিয়া যা তর ভাউজরে!

-তুমি যাও। ক্ষেতের কাজ আমি সামলাইয়া নিমু!

-আমি গেলে এত খরচ করনের ট্যাকা-পয়সা নাই। সার ওষুধ কিনন লাগবো কাইল পশশু! তুই গেলে আমার বেইজ্জত হইতে হইবো না।

মেরাজুল আর দাড়ায় না। ক্ষেতের দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায়।

খানিকটা দাঁড়িয়ে থেকে আশ্রাবুল মেরাজের কথাগুলো ভাবতে গিয়ে আবার টের পায় যে, সে সত্যিই সত্যিই চালাক। সেই সঙ্গে বেশ কিছুটা অসৎও। নিজের মনে হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরে এসে দেখতে পায় মেরাজের ঘরের দরজার মাঝ বরাবর হলুদ হয়ে আছে। রুকিয়ার পরনে হলুদ জামা পাজামা এমন কি বুকের ওপর মেলে রাখা ওড়নাটাও একই রঙের। এমন পোশাকে রুকিয়াকে কখনো দেখেনি সে। হতে পারে নতুন বানিয়েছে। আর তা দেখানোর জন্যেও বাপের বাড়িতে যাওয়ার একটা কারণ খুঁজে বের করেছে। এমনিতে মেরাজের শ্বশুর বছর কাবারি হাঁপানির রুগী। মাঝে মাঝেই রুকিয়ার বাপের বাড়ি থেকে খবর আসে তার বাবার হাঁপানি বেড়ে গেছে, বাঁচে কিনা সন্দেহ। এবারও একই সংবাদ পেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছে সে। যা নিয়ে আগের বার কখনো এতটা অস্থিরতা দেখায়নি সে।

তাকে দেখতে পেয়েই রুকিয়া বলে উঠলো, তোমার ভাই আইবো না আমি জানি। খবিসের খরচের ডরে যাওনের ইচ্ছা নাই। তুমি কয়ডা ভাত খাইয়া লও। একজনের মতনই হইবো আছে।

-তুমি খাইয়া লও। আমার পেট ভালা না। রাস্তায় গিয়া বিপদে পড়তে চাই না।

বলতে বলতে আশ্রাবুল ঘরের ভেতর চৌকিতে পাতা বিছানার দিকে এগিয়ে যায়।

রুকিয়া দ্বিরুক্তি না করেই খেতে বসে যায়। আশ্রাবুল তার দেবর হলেও তেমন একটা ইয়ার্কি ফাজলামি বা মিথ্যাচার করার মানুষ না তা তার জানা হয়ে গেছে এই দু বছরের ভেতর। তাই তার কথার ভিন্ন অর্থ অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হতে হয় না তাকে।

বিছানার ওপর বসে আশ্রাবুল ফের তাকায় রুকিয়ার দিকে। হালকা পাতলা গড়নের এ মেয়েটি তুলনামূলক ভাবে মন্দ নয়। যতটা মন্দ তার ভাই মেরাজুল। খানিকটা বেশি স্বার্থপর বলেই মানুষ তাকে আড়ালে কখনো কখনো খবিস মেরাজ বলেও ডাকে। নয়তো রুকিয়া তার বিয়ে আর সংসার-ঘর-দোর নিয়ে যতটা ভেবেছে, উপায় হিসেবে নিজের বোনের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে সরাসরি। লোভ দেখিয়েছে ভালো যৌতুকেরও। কিন্তু মেরাজুল সে বিষয়ে টু শব্দটিও করেনি এ পর্যন্ত।

খাওয়া হয়ে গেলে রুকিয়া শূন্য হাড়ি-বাসন নিয়ে বাইরে বের হয়ে দরজার কাছে রাখা একটি মাটির কলস থেকে পানি নিয়ে সেগুলোকে কোনো রকম ধুয়ে ঘরে রাখতে বলে, আমার হইছে। তুমি মেলা কর!

আশ্রাবুল ঘর থেকে বের হতে হতে বলে, আমার কাছে কিন্তু বেশি ট্যাকা-টুকা নাই। তুমি কিছু না লইলে গাড়ি ভাড়া টান পড়তে পারে।

রুকিয়া ঘর থেকে বের হয়ে দরজাটা টেনে বাইরে দিয়ে আটকে দিতে দিতে কারো উদ্দেশ্যে প্রায় চেঁচিয়ে বলে, ঘরডা দেইখ্যেন গো চাচি! আমি সিদ্ধেশ্বরী যাইতাছি!

তারপর আশ্রাবুলের দিকে তাকিয়ে বলে, গাড়ি ভাড়া নিয়া তোমার মাথা নষ্ট করনের কাজ নাই। আমার কাছে আছে।

বেশ কিছু হাঁটা পথ। তারপর ফের মুড়ির টিন কথিত ছোট আর ধীর গতির বাসে চড়ে প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের একঘেয়ে যাত্রার পর আবারো গাঁয়ের পথ ধরে সিদ্ধেশ্বরী রুকিয়ার বাপের বাড়ি। এক বছরেরও কিছুটা বেশি সময় হয়ে গেছে সে এ গ্রামে আসবার প্রয়োজন পড়েনি। এরই মাঝে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। যেখানে আগে ধান ক্ষেত বা অন্যান্য ফসলের জমি ছিল তার অনেকটা জায়গা জুড়েই নতুন ঘরবাড়ি উঠেছে। সেগুলোর মাঝে পাকা বাড়িও দেখা যায় দুটো।

আশ্রাবুল পথ চলতে চলতে ভাবে যে, কত মানুষের হাতেই কত ভাবে অজস্র টাকা পয়সা চলে আসে। এমন কি মেরাজুলের মতো এক সময়ের অলস লোকও ঘরের পুরোনো টিন খুঁটি বদলের মতো সামর্থ্য অর্জন করে ফেলে অথচ দিনভর প্রাণান্ত শ্রমেও নিজের ভাগ্যের কোনো উন্নতি ঘটাতে পারলো না সে। একবার তার ইচ্ছে হয় কাঁচা পয়সার মালিকদের ঘরে ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করে যে, কী এমন ভাগ্য নিয়ে জন্ম নিয়েছে তারা অথবা কী এমন কাজ তারা করে, যে কারণে এক বছরের ভেতর ফসলের জমি ভরাট করে নতুন বাড়ি করে ফেলবার মতো অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে যায়? কিন্তু তার মনের জিজ্ঞাসা মনেই ঘুরপাক খায়, কাউকে আর জিজ্ঞেস করা হয়ে ওঠে না।

বাপের বাড়ি যতটাই এগিয়ে আসছিলো রুকিয়ার হাঁটবার গতির সঙ্গে তাল রাখতে না পেরে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিলো আশ্রাবুল। কিছুটা দূর এগিয়ে গিয়েও পিছিয়ে পড়া দেবরের জন্য বিরক্ত মুখে দাঁড়িয়ে থাকে সে। আশ্রাবুল তার সমান হলে ফের হাঁটতে আরম্ভ করে সে। কিন্তু আশ্রাবুলের ইচ্ছে হয় না শুধু শুধু হাঁটার গতি বাড়িয়ে দেহের ঘাম ঝরিয়ে অস্বস্তি নিয়ে পথ চলতে। তাই সে বলে, তোমার বাপের বাড়ি চিন্যা আইতে পারমু, যাও তুমি।

হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে রুকিয়া কোঁচকানো দৃষ্টিতে বলে, পরে তো কইবা বাপের বাইত্যে ব্যাঙের মতন ফাল পাড়তে পাড়তে গেছি, তোমার দিক ফিরাও চাই নাই!

-কিছুই কমু না। তুমি যাও। জোরে হাঁটতে আমার ভালা লাগে না।

আশ্রাবুলের কথা শুনে কেমন একটা মুখ ভঙ্গি করে রুকিয়া দেখতে দেখতে সত্যিই তার বাপের বাড়ির সীমানায় চলে যায়। কিছুক্ষণের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যায় বাড়ির ভেতর। কিন্তু তার ইচ্ছে হয় না রুকিয়ার বাপের বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে। তার চলার গতি যেমন ছিল তার চেয়ে আরো কম হয়ে যায় যেন পদক্ষেপের মাত্রা। তার দারিদ্র্য ক্লিষ্ট অবস্থা দেখেই একদিন রুকিয়া প্রস্তাব দিয়েছিল অদ্ভুত দর্শন চোখের বোন মিনোরাকে বিয়ে করে অবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্যে। কিন্তু তাই যদি করতে হবে তাহলে মিনোরাকেই কেন বিয়ে করতে হবে? আশপাশের গ্রামে কি আরো কুদর্শনা কেউ নেই যার বাপ আরো বেশি আর্থিক মূল্য পরিশোধ করবে তার উদ্দেশ্যে? রুকিয়ার প্রস্তাবের কথা নিশ্চয় মিনোরার কানেও গিয়ে থাকবে। আর তা ভেবেই যেন তার যাবতীয় অনিচ্ছাগুলো আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরে তার দু পা। কিন্তু ভাবতে ভাবতে অনেকখানি পথও সে এগিয়ে এসেছে। আর একটু এগিয়ে গেলেই তাদের বাড়ির উঠোন দেখতে পাবে। সেদিকে তাকিয়ে সে কিছু দেখে বা দেখে না। বা একবার এক পলকের জন্যে রুকিয়ার হলুদ ঝলকই যেন দেখতে পেয়েছিল বলে মনে হয়। তার পরপরই বিচিত্র রঙের শাড়ি পরনে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখে সে। চিনতে পারে না বলে, তার দিকে ভালো মতো দৃষ্টিও দেয় না। কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই শুনতে পায়, বেয়াই কি আমাগো বাড়ির পথ ভুইল্যা গেছেন?

চমকে উঠে আশ্রাবুল মুখ তুললে দেখতে পায় কাজল টানা দুটি কৌতূহলী দৃষ্টি যেন তাকে ব্যাঙ্গ করছে। তখনই তার মনে পড়ে যায় সকালের দিকে মন্তাজের বাড়ি থেকে ফিরে আসবার পথে কাশেম ঘরামীর বাড়ির উঠোনে লাল শাড়ি আবৃত মেয়েটিকে আরেকবার দেখার ব্যাকুলতার কথা। কিন্তু এ কি তার সেই বুভুক্ষা মিটিয়ে দিতেই দৃষ্টিতে ব্যাঙ্গ ঝরিয়ে তাকে উপহাস করছে? সঙ্গে সঙ্গেই যেন তার ধ্যান ভঙ্গ ঘটে হাসির তরঙ্গে। আরে এ যে মিনোরা। এক বছরে কতটা বদল হয়ে গেছে তার। ঠিক যেন ফসলের জমি ভরাট করে নতুন বাড়ি তুলে ফেলবার মতোই আরেক অদ্ভুত ঘটনা। আশ্রাবুল সত্যি সত্যিই অবাক না হয়ে পারে না।

মিনোরা তার হাসি থামিয়ে বলে, বেয়াইরে কি হাত ধইরা বাইত্যে নেওন লাগবো?

-না না।

নিজের অজান্তেই যেন আঁতকে ওঠে আশ্রাবুল। মিনোরার পেছন পেছন এগিয়ে যেতে যেতে তার মনে হয় এক বছর কি খুব বেশি সময়? বার মাসের হিসেবে বা তিনশ পঁয়ষট্টি দিনের হিসেবে কতটা দীর্ঘ সে সময়? নাকি মেয়েরাই অতটা দ্রুত বদলে যায়? নিজের ভেতরে উথলে ওঠা জিজ্ঞাসাগুলোর কোনো জবাব হয়তো তার প্রত্যাশায় থাকে না। যে কারণে হঠাৎ করেই বলে ওঠে, মিনোরা ভালা আছস? কত্ত বদলাইয়া গেছস তুই!

আশ্রাবুলের কথা শুনে মিনোরা এক হাতে নিজের মুখ ঢাকে কেবল। হাতের আড়ালে সে হাসে কি না তা বুঝতে পারে না আশ্রাবুল।
(সমাপ্ত)

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:২৫
২৮টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×