NCP'র গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ পদ যাত্রা....
সার্বিক অর্থে NCP তাদের পূর্ব ঘোষিত জেলায় জেলায় পদযাত্রা সফর হিসেবে (NCP নেতা সার্জিসের ভাষায় রোড মার্চ টু গোপালগঞ্জ) গোপালগঞ্জে সফল হতে পারেনি স্থানীয় আওয়ামী নেতা-কর্মীদের বাঁধার মুখে। তবে তাদের এই সফরকে আমি ব্যার্থও বলি না আবার সফলও বলি না। প্রশাসনের ১০০% নিরাপত্তা নিয়েও তারা ১০ মিনিট জনসভা করতে পারেনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রতিরোধের মুখে নাহিদেরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় দৌড়ে এপিসিতে ঢুকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। তারা হয়তো চিন্তাও করতে পারেনি গোপালীরা কি ভয়ংকর রুপে ক্ষেপে আছে।
গত ৫/৭ দিন ধরে জা-শি ও NCP দেশে বিএনপিকে কুপোকাত করার নিমিত্তে (যেখানে বিএনপি ও তার সব অঙ্গ-সংগঠন নিরব ভুমিকা পালন করছে) বিরাজমান অস্থিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাদের ধারণা জন্মেছিলো তাদেরকে রুখে দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। তাদের বড়ো ভাই জা-শির সহযোগীতা ও ন্যাংটা পীরের গুজব পরামর্শে সব কিছুতে পার পেয়ে যাবে, কিন্তু হয়েছে হিতে বিপরীত।
এমন কোন অশ্লীল ভাষা নেই যেটা জাশি NCP ব্যবহার করেনি গত এক সপ্তাহ BNP ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। এমনকি, কিছু কুলাঙ্গার বেগম খালেদা জিয়ার শাড়ী নিয়ে পর্যন্ত অশ্লিলতা করেছে। বগুড়া এবং ফেনী নিয়ে ট্রল করেছে। তারা তাদের সব কূটকৌশল ব্যবহার করেছে বিএনপিকে মাঠে নামিয়ে এনে দেশে একটা কঠিন দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করতে, কিন্তু তারা ব্যার্থ হয়েছে।
গতকাল গোপালীতে NCP ব্যার্থ হওয়ায় জা-শি এখন উঠেপড়ে লেগেছে কিভাবে NCP'র সভাকে প্রতিষ্টিত করা যায় যে- তাদের পূর্বে আর কোন রাজনৈতিক দল বা সরকার প্রধান গোপালীতে জনসভা করতে পারে নি। NCPই প্রথম। সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত যতো গভীর হয়েছে জা-শির নেতা-কর্মীরা তাদের কারো একজনের পোস্ট কপি করে সবাই দেদারছে ফেবুতে বিলিয়েছে যে- এটা প্রমাণ করতে এই প্রথম আওয়ামী লীগ ব্যতিত অন্য কোন দল গোপালীর মাটিতে জনসভা করেছে। অথচ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গোপালগঞ্জে চারটি জনসভা করেছেন। তারেক রহমান বংগ বন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেছেন। মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগে শেখ মুজিবের জন্মস্থান টুঙ্গী পাড়ায় বিএনপি কোন প্রশাসনিক সহযোগিতা ছাড়াই দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল ও জনসভা করেছে। এগুলো জা-শির চোখে পড়ে না।
আপনারা মনে করবেন কি না জানিনা, জুলাই যোদ্ধাদের পাশে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি সবরকম সহযোগিতা করেছিলো। ম্যাডাম জিয়া থেকে শুরু করে বিএনপির সর্বস্তরের নেতা কর্মী সমর্থকেরা তাদের সম্মান জানিয়ে তাদের কাজের স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই ছেলেরাই জা-শি র সাথে মিলে বিএনপির বিরুদ্ধে এহেন নোংরামি নাই যা না করতেছে। গত তিন দিনের তাদের কিছু বয়ান তুলে ধরছি-
গতকাল এনসিপির নেতা নাহিদ গোপালগঞ্জ গিয়ে ম্যাডাম জিয়ার উক্তিকে ট্রল করে বলেছে - "আমরা গোপালগঞ্জের নাম বদলাতে আসিনি।" নাহিদ খুব ভালো করেই জানে, ২০১৪ সালে কোন্ প্রসঙ্গে বেগম জিয়া চরম ক্ষুন্ন হয়ে বলেছিলেন - "গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলে দেয়া হবে।"
দুইদিন আগে এই এনসিপির নেতাকর্মীরাই খালেদা জিয়ার শাড়ী ভাগ করেছে, তারেক রহমানের বিড়ালকে ভাগাভাগি করে নিয়েছে । ১-২-৩-৪ বলে, জঘণ্য কুৎসিত স্লোগান দিয়েছে।
তারপরও তাদের উপর যখন হামলার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বিএনপি এবং তৃণমূল উদ্বিগ্ন হয়েছে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে , বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল আলমগীর বিবৃতি দিয়েছেন।
অথচ নাহিদরা পালিয়ে আসার কিছু সময় পরেই তাদের গুজব বাবা ন্যাংটা পীর বাণী প্রসব করেছেন, "এখনই সময়, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা বাস্তবায়নের।"
সদা উত্তেজিত নাপা নেতা সারজিস আলম এবং সদ্য চর্বিজমা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন- "জুলাই আন্দোলনের সময়ের মতো সকল ভেদাভেদ ভুলে ছাত্রদল, বিএনপিকে আমরা পাসে চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে চাই।"
ধন্যবাদ ন্যাংটা পীর, ধন্যবাদ সদা উত্তেজিত ভাইদের- আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ায়। তাদের বোধদয় হোক- জা-শি স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করে অজস্র স্বাধীনতাকামীদের হত্যা করেছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। বিএনপির কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বিএনপি বিরোধী হয়ে বিএনপির চরম ক্ষতি করেছে। আওয়ামী লীগের সাথে মিশে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। এখন এনসিপি'র তরুনদের ধ্বংস করতে তাদেরকে বিভ্রান্ত করছে।
আমরা এখনো স্বীকার করি- জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের অবিশ্বাস্য সাহসী ভূমিকার কথা। কিন্তু সব ক্রেডিট একারা নিতে বিএনপি ব্যাশিং করতে যেয়ে হারিয়ে যাওয়াটা হবে সবচেয়ে বড় বেকুবী। হাসিনার মতো কালপ্রিট ১৮ বছর ভারতের পুরো ইন্টিলিজেন্স মাঠে নামিয়েও, সব বাহিনীর সাথে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এবং প্রশাসন বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করেও বিএনপির একটা খুঁটিও ভাঙ্গতে পারেনি। পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর লাশের উপর দাঁড়িয়ে এই দল। সেই বিএনপিকে আপনারা নোংরামি করে, গালাগালি করে কিছুই করতে পারবেন না। বিএনপি কোনো ইউটিউবার কিম্বা ফেসবুকের কয়েকজন যারা কখনও কোনো দিন বিএনপির হয়ে রাস্তায় নামেনি, তাদের উপর ভরসা করে না, তাদের নোংরামিতে বিরক্ত হলেও তাদের স্রেফ করুনা করে। বিএনপির ভরসা কোনো বাহিনী নয়, কোনো এনজিও উপদেষ্টারা নয়, বিএনপি দেশের জনগণ এর উপর ভরসা করে।
মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাসি, এনসিপি ও প্রশাসন মিলে যে নাটকের স্ক্রিপ্ট বানিয়েছিলো তা সম্পূর্ণ ভেস্তে গেছে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কারণে। দেশের কয়েকটি জেলা সদর, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিএনপির বিরুদ্ধে তারেক রহমানের নামে খিস্তি খেউড় করে তারা ভেবেছিলো হাসিনার মতো বিএনপিকেও তারা ফেলে দিবে। এমনকি তাদের ন্যাংটা পীর স্পেশাল একটি ভিডিও বানিয়ে বিএনপিকে উপহাস ও তাচ্ছিল্য করে বলেছিলো তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে, মাত্র দু'সপ্তাহের মধ্যে সব কিছু ঠিক করে দেবে। এই ন্যাংটা পীর বুলডোজার দিয়ে বংগ বন্ধুর মাজার ভেংগে দিতে বলেছে। গতকাল আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিতে বলেছে!
আলহামদুলিল্লাহ আমরা ভালো আছি আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা, বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের সু-পরামর্শের ভিত্তিতে। পীর সাহেব জাশি ও এন্সিপিকে যা যা দিয়েছেন তার থেকে আরো বেশী পরামর্শ দিতে পারেন রাজনীতির মাঠে কিভাবে পরিপক্ব সৎ হওয়া যায়।
বিএনপিকে নিয়ে এতো বেশী নোংরামি করার পরও এনসিপি কে বলি, "আপনারা জুলাই যোদ্ধা, আমাদের সন্তান, আমাদের সম্পদ। আমাদের এই সম্পদকে আমাদেরই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাঁদের উপর হায়েনার পাল আক্রমণের চেষ্টা করলে কেউ আসুক বা না আসুক- ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বিএনপি যুবদল ছাত্রদল আসবেই ইন শা আল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





