somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তর আমাদের সত্ত্বা আমাদের পরিচয়....

০৯ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তর আমাদের সত্ত্বা আমাদের পরিচয়......

মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তর আমাদের সত্ত্বা আমাদের পরিচয়- "একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার"। সেই বাংলাদেশের জন্ম উনিশ’শ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। এই মুক্তিযুদ্ধ তো কারও ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিম্বা দলীয় বাণিজ্যের পণ্য হতে পারে না। রাজনৈতিক পণ্য হতে পারে না। এই মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সন্তান হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান- স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

সেই মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা সর্বোচ্চ সম্মান দিতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু, রাজনৈতিক কারণে আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা করতে পারি নাই। কেন পারি নাই?

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের দলিল, স্বাধীনতা যুদ্ধের থাকা দরকার ছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সৃজন নয়, লিপিবদ্ধ করা দরকার ছিল। মুক্তিযুদ্ধের দলিল, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও নির্ভেজাল ইতিহাস থাকলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন বিতর্ক থাকতো না। কেন হয় নাই? স্বাধীনতা প্রাপ্তীর পর পরই এটাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিৎ ছিল। যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে এই কাজটি শুরুতেই সম্পাদন করা উচিৎ ছিল। কিন্তু যাদের দায়িত্ব তারা সেই কাজটি করেনি।কারণ, তাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান তেমন ছিলো না।

জাতির সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ সবাই সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ খুবই সুশৃঙ্খলভাবে সেক্টর কমান্ডারদের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ, আনসার অন্যান্য বাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। সমগ্র জাতি তাদের সাথে ছিল। যে যেভাবে পেরেছে সমর্থন দিয়েছিল। এর মধ্যে অল্প কিছু বেঈমান মোনাফেক অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে। দরকার ছিল তাদেরও তালিকা করা। তারা সংখ্যায় অল্প ছিলো। তাদের তালিকা করা খুব সহজ ছিলো। তবুও হয় নাই। কেন হয় নাই? মুক্তিযুদ্ধের ধ্বজ্জাধারী যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা কি করেছিল? ইতিহাস তো ভাল কিছু বলে না। একটা সঠিক ইতিহাসই যারা লিখে যেতে চায় নাই। সেই থেকেই তো নানা বিতর্কের শুরু। ত্রিশ লক্ষ, নাকি অন্য কোন সংখ্যা আজও ঠিকভাবে জানি না। সাড়ে সাত কোটি মানুষের তালিকা যদি করা যায়, আঠারো কোটি মানুষের তালিকা যদি করা যায়, পাঁচ বছর পর পর কোটি কোটি ভোটারের তালিকা যদি করা যায়, তাহলে মাত্র কয়েক লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা, কয়েক হাজার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের তালিকা কেন করা হলো না? মুক্তিযুদ্ধে কারা ছিল রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত আর কারা ছিল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা- সেই সত্য উন্মোচন করা করা হলো না।

স্বাধীনতার পর পরই অনেক রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত মুক্তিযোদ্ধা সেজে যায়। হত্যা লুটপাট শুরু করে সারা দেশব্যাপী। হাজার হাজার বাটপার রাজনীতিতে আসে। হাজার হাজার রাজনীতিবিদও রাজনীতির সঠিক পথ খুঁজে না পেয়ে বাটপারিতে নিজেদেরকে সামিল করে ফেলে। এই সবই আমাদের লজ্জাজনক ইতিহাস। আমাদের জনগণের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে প্রতিটা বিজয়ের পর যেখানে রক্ত দিয়েছে মূলত: দেশের সাধারণ জনগণ। সব শেষ উদাহরণ- জুলাই বিপ্লব ২০২৪, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের উৎখাত।

উনিশ’শ একাত্তরের সেই পাকিস্তানী বাহিনী আর ফিরে আসতে পারেনি এই বাংলায়। একবারও আর চোখ তুলে চায়নি স্বাধীন বাংলাদেশের দিকে। কিন্তু, সেই হিন্দুস্তানী যারা সাহায্যের নামে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব দখল করে নিয়েছিল, তারাই তাদের লক্ষ লক্ষ সেবাদাস তৈরি করেছে এই দেশে। দেশের বেশীর ভাগ বাটপার হাত মিলিয়েছিল তাদের সাথে। বাটপারদের চরিত্র থাকে না। তারা দেশ বুঝে না। তারা বুঝে স্বার্থ।
এদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছে ছাত্র নেতৃত্বের হাত ধরে। আর সেই নেতৃত্বের সূতিকাগার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ একটি অগণতান্ত্রিক এবং হটকারী সিদ্ধান্ত।

আমাদের দুর্ভাগ্য, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা আমাদের মধ্যে যে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করে ব্যক্তি সামাজিক, রাজনৈতিক বিভাজনের বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলো, সেই বিষবৃক্ষ মহিরুহ হয়ে তাকেই শুধু বিতাড়িত করেনি, একাত্তরের পরাজিত রাজনৈতিক শত্রুদেরও ফিরিয়ে আসতে দিয়ে নিজে জ্ঞাতিগুষ্টি নিয়ে শরনার্থী জীবন বেছে নিয়েছে।

অন্যদিকে, একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে! তারা ভুলে গেছে, এ দেশ রক্তে কেনা, এ পতাকা শহীদের ত্যাগে রঙিন! যারা একদিন এই মাটিকে পাকিস্তানের প্রভুর কাছে বিকিয়ে দিতে চেয়েছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে রক্তে থামাতে চেয়েছিল, তারা আজ আবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, বাংলার মাটি এখনও গর্জে উঠতে জানে! স্বাধীনতার শত্রুরা যতই শক্তি জোগাড় করুক, দেশপ্রেমিক জনতা তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। শহীদের রক্তের শপথ আমরা ভুলিনি, রাজাকার-দালালদের স্থান কেবল ইতিহাসের আবর্জনার স্তূপে। বাংলাদেশের মানুষ আবারও রুখে দাঁড়াবে- দেশ বাঁচাবে, স্বাধীনতা রক্ষা করবে।

একাত্তরের পরাজিত শত্রু- বাংলার মাটিতে জায়গা নেই! দেশপ্রেমিক জনতা রুখে দেবে রাজাকার দালালদের!
শহীদের রক্তের শপথ,
রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব আমরা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ৯:৫০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×