somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

পুজোয় মহাদেবকে অর্পণ করা ভোগের সারবত্তাঃ-

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুজোয় মহাদেবকে অর্পণ করা ভোগের সারবত্তাঃ-

মন্দিরে ভগবানকে ফুল, ফল ইত্যাদি নিবেদনের কারণঃ
বিভিন্ন উপচারসহ নানা ধরনের পুজো রয়েছে। সেগুলি চতুষষ্ঠী হোক, ষোদশী হোক, পঞ্চ উপচার কিছু বিষয় সাধারণ। এই উপচার বা ঈশ্বরের সেবার মধ্যে রয়েছে, ধোপা দীপা নৈবেদ্য পুষ্পম আরতি। ধর্মীয় উপাসনায় এই প্রতিটি আচারেরই রয়েছে গভীর অর্থ।

হিন্দুধর্ম পৃথ্বী (পৃথিবী), জল (জল), বায়ু (বায়ু), অগ্নি (আগুন) এবং আকাশ (ইথার) হিসাবে পাঁচটি উপাদানকে জানে। হিন্দুধর্ম পঞ্চমটিকে "আধ্যাত্মিক আকাশ" হিসাবেও সংজ্ঞায়িত করে।


হিন্দুদের জন্য উপাসনা এই উপাদানগুলো সমস্ত জীবন ফর্মের ভরণপোষণ নিশ্চিত করে। একটি পিতল, কাসা তামার জল (সিগনিফায়িং জল) দেই, প্রদীপ জ্বালাই (অগ্নির সংকেত), ধূপ জ্বালাই (বায়ু সংকেত), তাজা ফল এবং ফুল (পৃথ্বী নির্দেশক) নিবেদন করি এবং পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। ঈশ্বরের যে এই সব প্রয়োজন তা নয়। ঈশ্বর আমাদের সম্পূর্ণ ভক্তিতে সন্তুষ্ট। তাই এই অভ্যাস গড়ে তুলুন আমরা ধর্মীয়ভাবে এই আচারগুলো মেনে চলি।

ধুপ আমাদের ঘ্রাণ অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে। ঈশ্বর আমাদের এই বুদ্ধি দিয়েছেন, তাই ধুপ. ফুল একটি উপায়ে কান প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলো দেখতে কানের মতো। নৈবেদ্য বা ফল বা মিষ্টি বা খাদ্যদ্রব্য প্রদান করা আমাদের স্বাদের অনুভূতিকে নোট করে। ভগবানকে নিবেদনের পর সাধারণ খাবারটি প্রসাদে পরিণত হয়। ভগবদ্গীতায় ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন যে যে কেউ ভগবানকে নিবেদন না করে কোন খাদ্যদ্রব্য রান্না করে বা খায় সে কেবল তার বাবার কর্ম প্রস্তুত করছে খাবার নয়। তাই খাওয়ার আগে অন্তত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন এবং খাওয়ার পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ বলুন।


ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক শক্তি এবং আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আরতি করা হয়৷ ঐতিহ্যগতভাবে, অগ্নি দেবতাদের দূত এবং মুখ হিসাবে পরিচিত৷ তাই যখন আমরা আরতি করি, তখন অগ্নি ভগবানের কাছে পৌঁছে তার আশীর্বাদ নিয়ে আসে। অগ্নি যজ্ঞে দেবতাদের নিবেদিত হবিরভাগ গ্রহণ করেন।

আমরা যেখানে প্রার্থনা করছি তার উপর নির্ভর করে আমরা যে হিন্দু দেবদেবীদের পূজা করি তা পরিবর্তন করা হলেও, যে কোনও হিন্দু মন্দির বা এমনকি কোনও বাড়িতে উপাদানগুলি, পাঁচটি উপাদানকে সর্বদা একই পদ্ধতিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। হিন্দু সংস্কৃতি প্রকৃতির সাথে বেঁচে থাকার এবং আমাদের উপর এর শক্তির প্রশংসা করার উপর অনেক জোর দিয়েছে। কারণ কৃষ্ণ বলেছেন:

যদি কেউ আমাকে ভালবাসা ও ভক্তি সহকারে একটি পাতা, একটি ফুল, ফল বা জল দেয়, আমি তা গ্রহণ করব। এমনকি একটি পাতা বা সামান্য জল একটি ফুল বা ফল অকৃত্রিম ভালবাসায় পরমেশ্বর ভগবানকে নিবেদন করা যেতে পারে এবং ভগবান তা গ্রহণ করে খুশি হবেন। ফুলের গন্ধ সুন্দর, দেখতে সুন্দর এবং সুস্থ পরিবেশে সহজে এবং সস্তায় জন্মানো যায়। প্রাকৃতিক ফুল দিয়ে ভগবানকে সম্মান ও যত্ন দেখানো সর্বত্তম উপায়।

ধুতরোঃ- মহাদেবের চরণে নিবেদন করা হল পার্থিব বিষ। মহাদেব তুমি বিষধারী। তাই আমার হিংসা, দ্বন্দ্ব, দ্বেষের মতো বিষ তুমি নিয়ে আমায় শুদ্ধ, দয়ালু করো।

দুধঃ- দুধ অর্পণ করা হয় শুদ্ধ চরিত্র পেতে। মন ও আত্মা দুধের মতো শ্বেত ও পরিষ্কার হোক।

দইঃ- দুধ থেকে দই হয়। একবার দই হয়ে গেলে তাকে আগের অবস্থায় ফেরানো যায় না। এই সংসারের মায়া বা অবিদ্যায় যেন জড়িয়ে না যাই। মহাদেবের প্রতি ভক্তিবান থাকতে পারি, এই প্রার্থনা। শিবের প্রতি ভক্তি যেন মানুষের আধ্যাত্মিক বিকাশ ঘটায়।

ঘিঃ- ঘি অর্পণ করা হয় স্বাস্থ্য, জ্ঞান এবং সম্পদের শ্রীবৃদ্ধি যেন অন্যের উপকারে আসে এই আশায়।

মধুঃ- যাতে হৃদয় এবং জিহ্বা অন্যকে আঘাত না করে মিষ্টি ব্যবহার করে। মনযোগী হবার চেষ্টায় ও আত্মার ডাক অনুভব করার শক্তি পেতে অর্পণ করা হয় মধু।

চিনিঃ- শরীরের প্রতিটা কোষ যেন চিনির দানার মতো স্বচ্ছ হয়, তাতে যেন তিক্ততা না থাকে এই আশায় মহাদেবকে অর্পণ করা হয় চিনি।

(আমার বাল্যবন্ধু দেবু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের ২য় সর্বোচ্চ পদে জব করে অবসরে গিয়েছে। ধর্ম বিশ্বাসে দেবু আস্তিক-নাস্তিকের মাঝামাঝি, ওর স্ত্রী কঠিন ধর্মানুরাগী ব্রাম্মণ। একমাত্র ছেলে পুরাই নাস্তিক। দেবু এবং ওর স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। ওদের শিক্ষাগত বিষয়টা উল্লেখ করার কারণ, দুজনেই আস্তিক এবং নাস্তিকতা দর্শনের যুক্তি দিয়ে তুলে ধরেছে। দেবতার ভোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেবুর স্ত্রী)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×