somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচন সমাচার

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত পোহালেই নির্বাচন, এমন একটা সময় এখন বাংলাদেশে। যেহেতু আমি কখনই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না তাই বলেই যে এ নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই এমন নয়। আমার প্রায়োরিটির লিস্টে রাজনীতি কখনই প্রথম সারিতে ছিলনা। কিন্তু এ বিষয়ের যথেষ্ট গুরুত্ব আমার কাছে আছে।
বিগত বেশ কদিন থেকে নির্বাচনী প্রচারণার কারনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মুখ দেখতে পাচ্ছি। সদ্য ভোটার হওয়া নওজোয়ান থেকে শুরু করে প্রবীন বৃদ্ধ পর্যন্ত কে নেই এখানে? তারা সবাই যে একই দলের তা নয়। তবে আমার অনেক কাছের পরিচিত মুখও আছে তাদের ভীরে। যাদেরকে আমি কখনও কোন দলকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে দেখিনি। সবাই চাইছে যেন তাদের দল জয়লাভ করুক। এমনটা চাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। আমার চেনা-অচেনা, দূরে-কাছের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ভাই বোনেরা, আমার কিছু প্রশ্ন আছে আপনাদের কাছে। বুকে হাত দিয়ে বলুনতো, আপনার রাজনীতি করার পেছনের উদ্দেশ্য কি ১০০ ভাগ খাটি? নাকি এর পেছনে আছে ক্ষমতার লোভ, অনৈতিক উপায়ে অঢেল সম্পদের মালিকত্বের লালসা? আপনার কাঙ্খিত দলটি যদি দুর্ভাগ্যবশত নির্বাচনে জয়লাভ না করে, তবে কি তাতে আপনার খুব খারাপ লাগবে? আপনার খারাপ লাগা কি হিংসায় রুপ নিবে? তারপর হিংসা থেকে আক্রমনে?
এবার আমার কিছু মনের কথা বলি। আমার মতে সরকারী বা বিরোধী যে দলের কথাই বলিনা কেন সবার উদ্দেশ্য কিন্তু একই। আর তা হচ্ছে দেশ ও জনগনের সেবা করা। কথাগুলো শুনতে মোবাইল অপারেটরের বিজ্ঞাপনের মত লাগলেও এতটা সহজ কথা নয়। 'সেবা' দু'অক্ষরের সমষ্টি হলেও এর ব্যপকতা বিশাল। অত গভীরভাবে বিশ্লেষণ করবনা আজ। শুধু সহজ বাংলায় বলতে গেলে এটা বুঝায় যে আপনি বা আপনার দল সমগ্রচিত্তে প্রয়োজনে নিজের মাথা নত করে জনগনকে সেবা করবেন। কিন্তু বাস্তবে কি তার বিন্দুমাত্র প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই? আপনারা আজ এক একটি ভোটের জন্য মাঠ-ঘাট, পথে প্রান্তরে চষে বেড়াচ্ছেন। নানা লোভ দেখাচ্ছেন জনগনকে। কিন্তু একটি বার নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুনতো, যেসব বিষয়ে আজ আমাদের লোভ দেখাচ্ছেন আপনারা তার সিংহভাগই কি আমাদের ন্যায্য প্রাপ্যের মধ্যে পরেনা? তাহলে কেন সেসব পাবার জন্যে আমাদের দিনের পর দিন মিথ্যে আশ্বাসে থাকতে হয়। কোন প্রার্থী কি প্রথমে নিজের অপারগতার জন্যে প্রথমে ক্ষমা চেয়ে এবং লজ্জিত হয়ে ভোট চাইতে আসছেন? অথচ এমনটাই কি হওয়া উচিত ছিলনা!
আম, জাম, কাঠাল লিচু যে দলের কথাই আনিনা কেন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত খুব একটা তফাৎ চোখে পড়েনি আমার চোখে। আপনি হয়ত বলবেন আম খারাপ, জাম বলবে কাঠাল খারাপ, কাঠাল বলবে লিচু... সাদা চুলের শিক্ষিত বয়োজ্যেষ্ঠরা যখন একে অপরের নিন্দায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকে তখন লজ্জায় আমার চোখ কান চেপে ধরতে ইচ্ছা করে। এমনটা তো আমরা সেই ছোটবেলায় করতাম। তুই ভালনা, তুই পচা, তোর সাথে আর খেলব না। কিন্তু সেই ছোটবেলাতেও এগুলো বলার পরেও আবার সবাই একসাথে ঠিকই খেলতাম। অথচ এখানে দেশের মাথারা ছোটদের চাইতেও কত ছোট হয়ে আছেন।
কিছু একটার প্রতি তখনই প্রবল আকাঙ্ক্ষা, কিংবা অর্জনের ইচ্ছা কাজ করবে যদি সেই কিছু একটার মাধ্যমে নিজের কোন স্বার্থসিদ্ধি হয়। আপনাদের স্বার্থসিদ্ধির পেছনের রহস্যটা কি? সেটা কি নিতান্তই দেশ ও জনগের সেবা করা? যদি তাই হয় তাহলে তো এত উদগ্রীব হওয়ার কিছু দেখিনা। কেননা সেবা করাটা কিছুটা হলে কষ্টেরও বটে। আর তার বিনিময়ে তো আপনাদের খুব মূল্যবান কিছু পাবারও কথা নয়। আমার সত্যিই এখন গর্ব করতে ইচ্ছে হচ্ছে জানেন! এরকম লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের দেশে আছে যারা নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগনের সেবা করার জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছে। কিন্তু তার পরও নানা ক্ষেত্রে নানা সময় আমরা হীনমন্যই থেকে যাচ্ছি। সবাই যে একই রকম তা বলছিনা। এর মাঝে সত্যিই খাটি মনের মানুষও আছেন। এবং তাদের কল্যানেই দেশ একটু একটু করে হলেও সামনে এগুচ্ছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এই এগুনোর গতিটা আরও অনেক দ্রুত হতে পারত। যদি সবাই মিলে আমরা দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। এই বাচ্চাদের চেয়েও লজ্জাজনক হিংসা প্রতিহংসার রাজনীতি বর্জন করে সবাই হাতে হাত মিলিয়ে চেষ্টা করতাম। হেরে যাওয়া দলের মনে একটাই আফসোস কাজ করে, তারা দলে থাকলে হত প্রবল ক্ষমতাশীল, পেত অঢেল অর্থ লুটেপুটে খাবার সুযোগ। কিন্তু দেশ ও জনগনের সেবা করা থেকে বঞ্চিত হবার আফসোস  কজনের মনে থাকে কে জানে। সকল দলের প্রতি আমার সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে বলছি। যে দলই জিতুক আর যে দলই হারুক না কেন, জয়ী দল যেন বেশি প্রাপ্যের অধিকারী, আর পরাজিত দলগুলো যেন বেশি বঞ্চিত হয়ে না যায়। বরং সবার ভাগটা সমান থাকুক। কেননা সবার উদ্দেশ্য তো একই। দেশ ও জনগনের সেবা করা। জিতলে দেশ জিতুক, ঠকলেও দেশ ঠকুক। কিন্তু মাঝ থেকে এসে কেউ কেউ যেন দুধের মাছি না হয়ে যায় এটাই আমার চাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×