somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহান মে দিবস: শ্রমিক আমি তবু কেন শ্রমিক নই

০১ লা মে, ২০১২ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৮৮৬ সাল থেকে ২০১২ সাল, মাঝখানে কেটে গেছে শত বছরের বেশি সময়। শিকাগো শহরের হে মার্কেট থেকে যে আগুনের শিখা জ্বলেছে তা দিনে দিনে শহরে শহরে ছড়িয়েছে। আন্তরিকতা আর অধিকার আদায়ের সংগ্রাম থেকে ক্রমে রূপ নিয়েছে দিবসি আলংকারিক আয়োজনে। ঘটা করে দেশে দেশে, শহরে শহরে পালন হচ্ছে। মালিক হয়ে আসছে প্রধান অতিথি! মঞ্চে উঠে বলে যায় শ্রমিকের অধিকারের কথা বাস্তবতায় ভুলে চলে যা বলেছিল আর যা করার দরকার ছিল তার সবকিছুই একেবারে না ভুলে। এ এক অদ্ভুত নিয়তি!

দাবি ছিল আট ঘন্টা শ্রমের। মালিকেরা তা মানবে কেন! তাই চললো গুলি! মারা পড়লো কয়েকজন যাদের নাম জানা অথবা অজানা। অতঃপর শ্রমের মূল্যায়নসহ আটঘন্টা শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠা পেল! তারপর ধীরে ধীরে সময়ের বিবর্তনে আদায়কৃত দাবি আড়ালে পড়ে যেতে পোষাকী আধুনিকতার! যার রেশ এখনো চলছে; চলবে হয়ত!

সে শিকাগো শহরের হে মার্কেট আদায় করে দিয়েছে অনেক কিছু তবু তার ব্যাপ্তি কতটুকু তা নিয়ে মাঝে মাঝে সন্দিহান হয়ে যাই আমি নিজে নিজেকে দেখে। শ্রমিক বলতে চেয়েছি নিজেকে অনেকের কাছেই কিন্তু প্রতিবারই শ্রোতা করুণ চোখে তাকিয়েছে আমার পানে। হয়ত বিশ্বাস হয়নি মোটেও তবু নিজেকে শ্রমিক ভাবি। কারণ আমাকেও রোজ রোজ কাজে যেতে হয় নিয়ম করে। যাওয়ার অথবা শুরুর সময় নির্ধারিত থাকলেও আমার ফেরার নির্দিষ্ট সময় থাকেনা।

মাঝে মাঝে আমার ভাবনাগুলো পাখা মেলে। আমি ওড়ে দূর থেকে দূরে। ভেবে চলি- যদিও আমি এক কর্পোরেট চাকর! আমার মুখ আজ বন্ধ তবু আমার মন খোলা রয়ে যায়। যে তোমরা আমার বছরের পর বছর খেয়েছো বিনা দোষে। সে তোমাদের একদিন কাঠগড়ায় দাড় হতেই হবে,হে দৃশ্যমান বিচারক!

এ আমার অনন্ত আক্ষেপ! আমি তোমাদের ছেড়ে যাবোই। এ আমার অদ্যকার চিরায়ত আকাক্ষখা। আমি আমাকে ভুলে যেতে পারি ঠিক ঠিক কিন্তু আমার মনের মাঝে যে ঝড় বইছে নিয়ত তার সমাপ্তি হবেই তোমাদের ছেড়ে যাবার মধ্য দিয়ে। আমার এ প্রস্থানকালে তোমাদের কিছুই হবে না জানি তবু তোমাদের ছেড়ে যাওয়াটা আমার অশেষ সন্তুষ্টি।

গত ৪/৪টি বছরের আমার মনের মাঝ দিয়ে যে না পাওয়ার হতাশাটা বইছিল তার চুড়ান্ত রূপ দেখেছি আমি এই ক'দিনে। তোমরা আমাকে কর্পোরেট ধন্দে বন্দী রেখেছো। আমি এ খাঁচা ভাঙবোই একদিন এবং তা এই নিকট ভবিষ্যতেই! আমাকে তোমরা মনের দিক থেকে সংকীর্ণ করে রাখতে চাইছো। আমি বুঝে গেছি তোমাদের ছলাকলা।

আমাকে আর কতভাবে কোনঠাসা করে রাখবে তোমরা। মনে রেখো আমি আমার মনের মতো বড়। তোমরা হতে পারো ক্ষমতাধর কোনো এক কিন্তু আমার মন থেকে বলছি তোমাদের কোন মূল্য নেই আমার কাছে। পথচলতি কত কুকুরকে দেখি আমি জিভ বের করে তাকিয়ে থাকে আমাদের পানে। কিন্তু কদাচ আমরা তাকে মূল্য দেই? আমি আজ তোমাদের সে রকমই জ্ঞান করছি। জানি তোমাদের ক্ষমতা অনেক আজ তবু আমার কাছে তোমরা মূল্যহীন কোনো এক। বিশ্বেস করো,আমি তোমাদের মন থেকে মনের কাছে নিতে পারিনা। আমি মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখি কিন্তু আমার কাছে মনে হয় তোমরা মানুষ হতে পারোনি আজো। জেনে রেখো মানুষ হওয়াটা বড় কঠিন! আমার প্রতিটি সন্ধ্যা শেষ হয় মোটামোটি আধখানা মাঝরাতে! আমাকে সর্বশেষ যেদিন তোমরা আঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করেছিলে সেদিন থেকেই আমার নিজেকে খুব অবাঞ্চিত মনে হচ্ছে। তারপর ভেবে দেখলাম এখানে আমার কোন হাত নেই তাই মিছেমিছি মন খারাপ করছি কেনো!

হয়তো আমি সংজ্ঞায়িত শ্রমিক নই তবু আমিও ত শ্রম বিক্রি করে চলেছি সেই শুরুকায় থেকে। তোমরা আমাকে শ্রমিক না ভাবলেও আমি সে সব শ্রমিকদের কাতারে নিজের নাম লিখিয়ে নিয়েছি যারা রোজ রোজ কাজ করে বিকেলে অথবা একটা নির্দিষ্ট সময় অথবা দিন শেষে পথ চেয়ে থাকে শ্রমমূল্যের। আমিও তেমনই এক তবে আমাকে শ্রমিক বলতে আপত্তি কোথায় তোমাদের! শ্রম বেঁচে যারা খেয়ে পরে থাকে তাদের শ্রমিক ভাবতে গেলে উচু আর নিচুতলার বিভাজনে আমি বিশ্বাসী নই মোটেও। যেখানে শ্রম বিক্রি অতঃপর শ্রমমূল্য সেখানে শ্রমিক না বলে যদি বলা হয় কর্পোরেট চাকর তবে আমার খানিক বিদ্রুপ হাসি ছাড়া আর উপায় থাকেনা!

আমার মগজ ধোলাই করে শুষে নিচ্ছো তোমরা আমার সব। বিনিময়ে কী দিলে; হতাশা,শুধু হতাশা! আমি আজ কায়মনোবাক্যে আমার প্রস্থানপথ দেখছি। আমার মন বলছে এ পথ আমার জন্যে অপেক্ষা করে বসে আছে। জেনে রেখো, আমি জীবনে ব্যর্থ হইনি। এখানে ব্যর্থ হতেও চাইনা আমি। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বেস করি, আমার অলক্ষ্যে হাত থেকে কিছু ফসকে গেলে আমি পরম মমতায় তাকে তুলে বসাই স্বস্থানে। কিন্তু ইচ্ছে করে ফেলে দিলে তা তুলে নেয়ার কোন ভাবনাই ভাবি না একবিন্দুও। আমি তোমাদের আমার হাত থেকে ফেলে দেয়া কোন একটা কিছুই ভাবছি আজকাল!

সাহস থাকলে আমার পথ আটকাও! চ্যালেঞ্জ করছি আমি এই ভরা মজলিসে

http://kabiraahmed.com/
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫১
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×