somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি- দ্বাদশ পর্ব

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৪.
মানুষের মন বড় অদ্ভুত। ক্ষণে ক্ষণে সে রঙ পাল্টায়। জয়ীর জন্য আবার খারাপ লাগা শুরু হয়েছে। জয়ীর বিয়ে নিয়ে এতো কিছু পাগলামো করাটা আমার ঠিক হয় নি। গতকাল রিয়াদের বাসায় বসে যে পাগলামোটা করা হল তার জন্য যদি সত্যি সত্যি জয়ীর বিয়ে ভেঙে যায়, আর সে যদি বুঝে ফেলে আমার জন্য এটা হয়েছে তাহলে মেয়েটা খুব কষ্ট পাবে। আমিও কি আর কখনো জয়ীর সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারবো? জয়ী চলে যাচ্ছে, যাক না। কেউ যদি যেতে চায় তাহলে তাকে জোর করে আটকে রাখার মধ্যে তো কোন সার্থকতা নেই। আনন্দ তো তবেই পাওয়া যায় যদি খাঁচা থেকে ছেড়ে দিলেও পাখিটি না যায়। আমাকে ভালবেসে বিশাল মুক্ত আকাশ পেয়েও পাখিটি যদি উড়ে না যায়, আমাকেই যদি সে তার আকাশ মনে করে তখনই তো প্রকৃত আনন্দ। তাহলে...তাহলে জয়ীকে এ আটকে রাখা কেন? না। অবশ্যই আটকে রাখতে হবে। আমি কি আটকে নেই। কই? মুক্ত আকাশ পেয়েও তো বার বার জয়ীর কাছেই মুখ থুবড়ে গিয়ে পড়তে হচ্ছে। জয়ী যে আমাকে আটকে রেখেছে এতোকাল, তার হিসেব নিকেশ করতে হবে না? জয়ীকে সবকছিু কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিতে হবে না? সে যে তার মিষ্টি হাসি আর রহস্যময় চাহনি দিয়ে ভুলিয়ে বারবার আমাকে ব্যবহার করেছে, অথচ একটি বারও আমার মনের খবর নেয় নি সেটার কী হবে? একটি বারও কি সে বুঝতে চেয়েছে তাকে আমি ভালবাসি? তার কি তা বুঝার ক্ষমতা আছে? বুঝবে না যখন তাহলে অমন করে আমাকে ফাঁদে ফেললে কেন, জয়ী? কেন আমাকে ভালবাসার মায়ায় আটকে রাখলে? তাই যা করেছি, বেশ করেছি। ভাল করেছি। যে নিজে থেকে বুঝে না, তাকে বুঝিয়ে দিতে হয়। জয়ী, এবার তুমি বেশ ভাল করেই বুঝবে। আরো আগেই বুঝিয়ে দেয়া উচিত ছিল।
-হ্যালো। কী খবর নুসরাত? এতো রাতে?
-এতো রাত বুঝি? মাত্র তো ১ টা বাজল। ঘুমিয়ে পড়েছিলেন নাকি?
-না। শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম।
-কী ভাবছিলেন বলা যাবে?
-কতোকিছু। বাদ দেন এসব। আপনার কথা বলেন। ভাল আছেন?
-হুম। এই মুহুর্তে খুব ভাল আছি। এই যে আপনি আমার সাথে ভাল করে কথা বলছেন। তাই।
-ভাল করে কথা বলছি বুঝি?
-হুম। এমন করে আগে কখনো পাইনি আপনাকে।
-নুসরাত, আপনাকে একবার দেখার ইচ্ছে করছে। কবে দেখা করা যায় বলেন তো? আপনি কি আগামীকাল কুটুম বাড়ি রেস্তোরায় আসতে পারবেন?
-ওমা দেখতে হলে আগামী কালের অপেক্ষা করতে হবে কেন? আপনি তো এখনই আমাকে দেখতে পারেন।
-এখনই? কিভাবে?
-আপনার ইমো আছে না?
-আছে মনে হয়? খেয়াল করি নি।
-আছে। আমি দেখেছি। আমি আপানাকে ইমোতে কল করছি। ডাটা অন করেন।
-ওকে।
ইমোর কল রিসিভ করলাম। ধীরে ধীরে নুসরাতের অবয়ব ফুটে উঠছে। নুসরাত হাসল। নীচে ছোট্ট একটা বক্সে আমাকেও দেখা যাচ্ছে। নুসরাতের হাসির উত্তরে আমিও হাসলাম। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রেমকে এখন একেবারে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। এক মুঠোর ভেতরে দুই নারী পুুরুষের হাসিমাখা মুখ। নুসরাতের চোখ থেকে আনন্দ যেন ছিটকে বেরিয়ে পড়তে চাইছে। আমার চোখেও কি নুসরাত আনন্দের আভাস পাচ্ছে। মানুষ অন্যের চোখ দেখে তার মনের কথা বুঝে নিতে পারে, নিজের চোখ পড়তে পারে না। দরকার হয় না বোধ হয়। নিজের মনকে কি পড়তে জানে সে? কখন মন কী চায় তা কি আগেভাগে মানুষ জানতে পারে?
নুসরাত হাসছে। আমিও হাসছি। আমি চাইলেই আমাদের এ যুগলবন্দী জমা করে রাখতে পারি আমার মোবাইলে। রিয়াদের কাছ থেকে শেখা সেই স্ক্রীনশট কাজে লাগিয়ে এ দৃশ্য আমি সেভ করে রাখতে পারি ভবিষ্যতের জন্য। নুসরাত যদি আর কাউকে বিয়ে করতে চায় তখন সেই বিয়ে ভাঙতে এই তথ্য প্রমাণ খুব কাজে লাগবে। গতকালকের মতো অতো কষ্ট করতে হবে না। তুমিও জয়ীর মতো আটকা পড়ে গেলে, নুসরাত। আমি এখন তোমাকেও আটকে রাখবো। আমার সাথে কিছুদিন প্রেম প্রেম খেলে যদি আর কাউকে বিয়ে করতে চাও, সেই বিয়ে আমি ভেঙে দেবো, নুসরাত। আই সোয়্যার। (আগামী পর্ব শেষ পর্ব। যারা যারা কষ্ট করে প্রতিটি পর্ব পড়েছেন, তাদের সকলকে অশেষ ধন্যবাদ।)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৩১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×