কে জানত জীবনটা ডাল হয়ে যাবে । অন্ধকারে হাড়িয়ে যাবে বাস্তবতা । তবে আমি বুঝতে পারছিলাম , এবারের ব্যপারটা অত সহজ হবে না। তবু আমি নির্বেকার । কেননা আমি তখনও ছোট । ব্যাক্তিগত স্বাধিনতা ও মত প্রকাশের সাহস সে সময় অৎটা ছিল না । বাবা মানসিক ভাবে হয়তো ডিসিশন নিয়েই ফেলিয়েছিল । তার সন্তানকে তুকতাক , ঝারফুক ও কবিরাজি টিটমেন্ট করাবে ।
সে এক বিভৎস অভিজ্ঞতা । বাংলাদেশের এ এক সামাজিক কদোর্জ কাহিনী । ঝারফুক আর তাবিজ কবজে কঠিণ বিশ্বাসি । কেন জানি আগাগোড়াই আমার এসব ভণ্ডামির প্রতি বিশ্বাস আর আত্মতৃপ্তি ছিল না ।
হঠাৎ একদিন দেখি এক চরকের সন্ন্যাসি বাড়িতে নিয়ে এসে হাজির । তাকে সবাই ডাকত নিমাই সন্ন্যাসি বলে । নামডাক ছিল । তিনি নাকি তাবিজ কবজে মানুষকে বড়লোক বানিয়ে দেয় । তাই আবার হয় নাকি ? আমার বিশ্বাসের কি যায় আসে । আমার কথা কে শুনে ? নির্মম সে সব দিন । ভুলতে পারিনা । জানি না ভুললে যে সামনের দিকে এগোতে পারব না ।
রাত ন'টা । বাবা আর মা পাজাকোলা করে চেয়ারে নিয়ে এসে বসাল । আমার সামনে আগুনের মধ্যে কোদাল ,দা ,কুড়োল গরম হচ্ছে । লাল টকটকে যখন হয়ে গেল সন্ন্যাসিমহাশয় থালার মধ্যে জল আর তেল মিশ্রিত পাত্রে হাতটা চুবিয়ে নিয়ে ।ঔ লাল টকটকে কোদালে হাতদিয়ে চাপাটি মেরে সেই হাত দিয়ে সন্ন্যাসি আমার পায়ে ঝাড়তে লাগলেন । কি অপূর্ব ভণ্ডামী ছিল । তবু কিন্তু সেদিন ভীষণ অবাগ হয়েছিলাম । মনে বিশ্বাসও এসেছিল , ওৎ গরম লোহায় হাত দেবার পরও ফোসকা বা হাত পুড়ছে না । নিশ্চয় কিছু একটা মোহিমা আছে । আমি বুঝতে পারিনি এরা আমার বিশ্বাসে সাথে প্রতারিত করছে । এখন মাঝেমাঝে কথাগুলো মনে হলে খুব খুউব রাগ হয় । কেননা যত কবিরাজ ,সন্ন্যাসি দেখিয়েছে ,তারা যদি বলত আমরা পারব না ।তবে বাবা হয় তো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন ।