কবর সম্পর্কে আমরা আলেমদের নিকট থেকে যেসমস্ত কথা শুনে থাকিঃ
লাশকে কবর দেওয়ার পর মুনকার নাকীর নামক দুজন ফেরেশতা কবরে গিয়ে লাশকে জীবিত করবে । এরপর মৃত ব্যাক্তিকে তারা নিম্নের ৩টি প্রশ্ন করবেঃ
১। তোমার রব কে?
২। তোমার দ্বীন/ধর্ম কি ছিল ?
৩। ( রাসূল স. এর ছবি দেখিয়ে বলবে ) এই ব্যাক্তি কে ?
যে ব্যাক্তি এ ৩টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে সেই ব্যাক্তির জন্য জান্নাত এবং যে উত্তর দিতে পারবে না তার জন্য কবরে জাহান্নামের ব্যবস্থা করা হবে । কবরের আযাব সম্পর্কিত ২টি হাদীসঃ
-একদা নবি (সা) বিকাল বেলা ভ্রমণে বের হলেন। পথিমধ্যে এক প্রকার শব্দ শুনে বললেন, এক ইহুদিকে কবরে শাস্তি দেয়া হচ্ছে (ইহা উহারই শব্দ)। [ দ্র: বোখারী, ১ম খন্ড, ১২ প্রকাশ, শায়খ আজিজুল হক; পৃ: ৩৫২]
-একদা নবি (সা) একটি বাগানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তথায় তিনি ২টি কবরের মধ্য থেকে কবরবাসীদের বিকট চীতকার শুনতে পান। তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। তিনি বললেন, কবরবাসীদের আজাব দেয়া হচ্ছে; তা যদিও কোন কঠিন কাজের জন্য নহে, তবে গোনাহ অতি বড় (কবিরা) ছিল। এক ব্যক্তি প্রস্রাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতো না। ২য় ব্যক্তি চোগলখুরী করতো এই বলে তিনি একটি খেজুরের ডালা দুই খন্ড করে দুই কবরে গেড়ে দিলেন। এক ব্যক্তি বল্লো: এরূপ কেন করলেন? হযরত (সা) উত্তর দিলেন, আমি আশা করি ডালা ২টি শুক্না না হওয়া পর্যন্ত তাদের আজাব আল্লাহর তরফ থেকে লাঘব করা হবে। [দ্র: বোখারী, ১ম খ. ১২ প্রকাশ, শায়খ আজিজুল হক; পৃ: ১৩৭]
হাদীস দুটি দ্বারা বুঝা যাচ্ছে লাশকে যেখানে কবর দেওয়া হয় সেখানেই মৃত ব্যক্তির আযাব হয় ।
আমার প্রশ্নসমূহঃ
১। কেয়ামতের পর হাশরের মাঠে আল্লাহ মানুষের বিচার করে কারা জান্নাতে যাবে আর কারা জাহান্নামে যাবে তা ঠিক করবেন । বিচারের আগেই জান্নাত জাহান্নামের ব্যবস্থা, এটি কি ঠিক ?
২। যারা কবর থেকে লাশ উঠিয়েছেন / উঠাতে দেখেছেন তারা কি কখনো জান্নাত জাহান্নামের অস্তিত্ব পেয়েছেন ?
৩। লাশ কবর দেওয়ার কয়েক মাস পর কঙ্কাল ছাড়া আর কিছু থাকে ? সেখানে জান্নাত জাহান্নাম পাবেন ?
৪। যাদের লাশ পোড়ানো হয় কিংবা যাদের লাশ মেডিকেলে দান করা হয়, তাদেরকে কবরে কিভাবে জীবিত করবে মুনকার নাকীর ফেরেশতারা ? (একদিন রাছুল (সা) বক্তৃতা করতে দাঁড়িয়ে কবরের মানুষকে যে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে, সে সম্পর্কে বর্ণনা দেন। যখন তিনি বর্ণনা দিলেন তখন কবরের আজাবের ভয়াবহতা শুনে মুসলমানগণ চীতকার করে উঠলেন।-অতঃপর তাকে (কবরের মধ্যে লোহার গুর্জ দ্বারা ভীষণ আঘাত করা হবে; ঐ গুর্জ দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করলে উহা বালুকা স্তুপে পরিণত হতো) আঘাতের চোটে সে এতবড় চীতকার করবে, যা তার আশ-পাশের সকলে (বরং দুনিয়ার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সকলেই) শুনতে পাওয়ার যোগ্য। অবশ্য মানুষ ও জ্বীন জাতি তা শুণে না-। [বোখারী, ১ম খ. ১২ প্রকাশ, শায়খ আজিজুল হক; পৃ: ৩৫০-৩৫২])
৫। হাদীস অনুযায়ি মানুষ ও জ্বীন ছাড়া অন্যান্য প্রাণিরা কবরের আযাব টের পায় । আপনি কয়েকটি গরু ছাগলকে অনেকগুলো কবরের কাছে নিয়ে যান আর দেখুন কিছু টের পায় কিনা ?
যারা বলবেন লাশ নয় মৃত্যুর পর কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত আত্মার জন্য জান্নাত জাহান্নাম, তাদের প্রতি আমার প্রশ্নঃ
১। হাশরের বিচারের পূর্বে জান্নাত জাহান্নামের ব্যবস্থা করা হলে আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা থাকল কোথায় ? নাকি একই কাজের দুই বার বিচার হবে ?
২।আপনি কি কবরে মুনকার নাকীর কর্তৃক লাশ জীবিত করার কাহীনি বিশ্বাস করেন ? করলে কিভাবে করেন ? না করলে, মৃত্যুর পর কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত আত্মার জান্নাত জাহান্নামের ব্যবস্থা কিভাবে হবে বলে আপনার বিশ্বাস ?
৩। এক্ষেত্রে যেসব হাদীসে কবরে লাশ জীবিত করার কথা বলা হয়েছে সেসকল হাদীসকে আপনি অস্বীকার করলেন না ?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:০৭