somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সড়ক দূর্ঘটনার কারন ও কিছু প্রতিকার

৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগত তিন দশকে রাজধানী ঢাকার লোকসংখ্যা বেড়েছে অভাবিত হারে ৷ এই জন বৃদ্ধির সাথে সংগতি রেখে যান বাহনের সংখ্যাও বেড়েছে কয়েক গুন ৷ প্রতিদিন খবরে শুনা যায় বাস, ট্রাক বা গাড়ীর দূর্ঘটনার খবর ৷ আর তার সাথে থাকে প্রানহানির সংবাদটিও ৷ বাংলাদেশে দূর্ঘটনায় নিহত মানুষের জীবনের কোন মূল্যায়ন করা হয় না ৷ অন্যদিকে জাতীয় জীবনে এই দূর্ঘটনা কোন গুরুত্বও বহন করে না ৷ প্রায়ই দেখা যায় দোষী ব্যক্তি দ্রুত পালিয়ে গিয়ে শাস্তি পাওয়া থেকে রেহাই পেয়ে যায় ৷
সংশ্লিষ্ট কর্ত্তৃপক্ষ দূর্ঘটনায় নিহতদের কোন পরিসংখ্যান রক্ষা করেন কি না জানি না ৷ তবে এরকম দূর্ঘটনা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে কোন প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহন করছেন এবং ফলশ্রুতিতে এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে এসেছে - সেরকম কিছু নজরে পরে না৷ যানবাহন ভেদে দূর্ঘটনার কারন গুলোও ভিন্নতর ৷ উংসব প্রাক্কালে ঘরমুখো মানুষের অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রি বোঝাই করার জন্য জল ও স্থল উভয় ক্ষেত্রেই দূর্ঘটনা ঘটে থাকে ৷ এসব দূর্ঘটনায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও হয় প্রচুর ৷ আমাদের দেশে সাধারন লোকেরা যাত্রাপথে জীবনের ঝুকি ও নিরাপত্তার কথা ভাবেন কম ৷ তাই তারা প্রায় সময়ই জোর করে যানবাহনে অধিকমাত্রায় আরোহন করেন ৷
রাস্তায় চলাচলের সময়ে সামনের গাড়ীকে অতিক্রম করার (overtake) সময় ট্রাফিক সংকেত-এর কোন তোয়াক্কা করেন না এরা ৷ অগ্রগামী গাড়ী পিছনের দ্রুতগামী গাড়ীকে পাস (pass) না দেওয়ার কারনে পরস্পরের মাঝে প্রায়ই ক্রোধ ও বচসার সৃষ্টি হয় ৷ শীত কালে ঘন কুয়াশার মাঝে অনেক চালকেরা ঝুকি নিয়ে গাড়ী চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনায় পড়েন ৷ রাজনৈতিক হরতালের সময় যাত্রীগনের জীবনের কথা না ভেবে যানবাহনের উপর আক্রমন ও অগ্নিসংযোগ একটি নিতান্তই নারকীয় কাজ ৷
আমাদের দেশে বহু গাড়ীচালক ট্রাফিক নিয়ম কানুন জানেন না বা ইচ্ছাকৃত ভাবে অবহেলা করেন ৷ বহু গাড়ীচালক ঘুষ দিয়ে গাড়ীচালাবার সনদপত্র পেয়ে যান ৷ এ ভাবে তারা রাস্তায় গাড়ী চালাবার মত উপযুক্ত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করেছেন কি না তা দেখার নিমিত্ত পরিক্ষাটি (test) এড়িয়ে জান ৷
অধিকাংশ বাস ও ট্রাক ড্রাইভারদের শিক্ষার মান নিম্ন স্তরের ৷ এজন্য তাদের চিন্তার পরিধিও সীমিত থাকে ৷ গাড়ী চালানোর সময়ে তাই পথচারীদের জীবনের নিরাপত্তার প্রতি তারা গুরুত্ব দেন কম ৷ ফলে ছাত্র ছাত্রী ও পথচারীরা এই দূর্ঘটনার শিকার হন ৷
নানাবিধ কারনে সংঘটিত এসব দূর্ঘটনার সংখা নিয়ন্ত্রনও হ্রাস করার উদ্দেশ্যে নিম্নে প্রদত্ত পদক্ষেপগুলো সহায়ক হতে পারে ৷ সংশ্লিষ্ট কর্ত্তৃপক্ষকে অনির্ধারিত ভাবে (randomly) এসব গাড়ীচালকদের সনদপত্রের বৈধতা, সময়সীমা ও সত্যতা যাচাই করে দেখা প্রয়োজন ৷ নিয়ম অমান্যকারী চালককে প্রথমবারের জন্য সতর্কতা মূলক চালনা (defensive driving) শেখার নির্দেশ দেওয়া জরুরী ৷ দ্বিতীয়বার অমান্যকরার জন্য জরিমানা বা লাইসেন্স জব্দ করে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে ৷ এ দেশে একটা ব্যাপার সচরাচর দেখা যায় যে গাড়ীর আকার, প্রকার, আকৃতি ও প্রকৃতির কথা মনে রেখেই চালকরা হয়ে ওঠে বেপরোয়া ও বেগবান ৷ তাই বিভিন্ন রাস্তায় চালকরা নির্ধারিত গতিসীমা মেনে যানবাহন চালায় কিনা তা পরিদর্শন করা প্রয়োজন ৷ গতিসীমা অমান্যকারীকে অর্থ জরিমানা করার সাথে সতর্কতামূলক পত্র (warning letter) দেওয়া দরকার ৷
পথচারীদেরকেও নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে রাস্তা পারাপারের অভ্যাস করাতে হবে ৷ যথা তথা দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করার মাঝে জীবনের ঝুকি থাকে অনেক ৷ এছাড়া রাস্তা দিয়ে হাটার সময় যতদূর সম্ভব পায়ে হাটার পথ দিয়ে চলার মানিসকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে ৷ বিশৃঙ্খল চলাফেরা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌছার পথে অসহনীয় অন্তরায় ৷ রাস্তার উপর গৃহ নির্মানের সামগ্রী স্তুপ করা, রিক্সা বা গাড়ী মেরামত করা, ওয়েল্ডিং করা, অনির্ধারিত স্থানে যানবাহন পার্ক করা - প্রভৃতি নিয়ন্ত্রন করে যানবাহন চলাচলের পথ সুগম করা যেতে পারে ৷
যানবাহনে নির্ধারিত সংখ্যার অধিক যাত্রী বহন নিষিদ্ধ করতে হবে ৷ রাস্তায় লক্কর মার্কা যানবাহনের চলাচল বন্ধ করতে হবে ৷ এগুলো অধিকাংশ সময়ে রাস্তায় দূর্ভোগের কারন হয় ৷ দূর পাল্লার যানবাহনের চালকের শারীরিক সুস্থতা ও উপযুক্ততা নিশ্চিত করা প্রয়োজন ৷ সম্ভব হলে চালকদের জন্য নির্দিষ্ট রঙের পোশাক ও ক্যাপ ব্যবহারের বিধান বাধ্যতামূলক করতে পারলে দূর্ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সহজ হবে না ৷
ট্রাফিক সংকেত অমান্যকারীকে তাৎখানিক ভাবে অর্থ জরিমানা করে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন ৷
যতদিন পর্যন্ত চালকরা ট্রাফিক নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয় ততদিন এই ধরনের প্রক্রিয়া চালু রাখলে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি লক্ষ্য করা যাবে ৷
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×