somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চেয়েছিলাম বন্ধু হতে

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বন্ধু আমার

আজকের সূর্যটাকে তোমার কাছে নতুন মনে হয় কি? হয় না। যে চোখে তুমি বন্ধুর মুখ দেখতে পাও না, সে চোখে সূর্যের রূপ দেখবে কিভাবে? গতরাতে কি চাঁদ দেখেছিলে? দেখনি। কারণ তোমার চোখে ধরা পড়েনা একজন বন্ধুর মলিন মুখ।

আজ সবাই মেতে উঠেছে ভাবের আর আবেগের খেলায়। এই যে ভালোবাসার উচ্ছ্বাস একি শুধুই প্রেমিক-প্রেমিকার? না, এ উচ্ছ্বাসের উৎস বন্ধুত্বেরও।

আমার শিশুকাল থেকে আজ অব্দি কেটে গেছে অনেক সময়, দিন বদলের সাথে সাথে বদলে যাই আমিও, অনেক বড় হয়ে উঠি। আমার মধ্যে বন্ধুত্বের সাধ জন্মে। আমি হই কারো বন্ধু কেউ হয় আমার বন্ধু। এসবই শৈশবের বন্ধুত্ব। এক অণ্যরকম ভালোবাসা।

সময় বয়ে যায় আর আমি আরো পরিণত হই। আমার ভেতর নতুন এক ভালোবাসা বেড়ে উঠে, মনে হয় এই তো ভালোবাসা। কোথায় ছিল এই ভালোবাসা? নিজেকে প্রশ্ন করি এবং উত্তরও পেয়ে যাই। ভালোবাসা সেখানেই আছে যেখানে সে ছিল। শুধু এর রূপ বদলে গেছে, এর বিস্তৃতি বেড়েছে। এখন আমি চাই একান্ত এক ভালোবাসা। আমি চাই কেউ আমাকে ভালোবাসবে কিন্তু সেটা হবে গতানুগতিক ভেিলাবাসা থেকে ভিন্ন এক অন্যরকম ভালোবাসা - আবেগে পরিপূর্ণ এক একান্ত ভালোবাসা। কিন্তু কাকে ভালোবাসবো? আমি চাই একজন বন্ধু। তবে কি আমার ছেলেবেলার বন্ধুরা আমার বন্ধু নয়? ওরা আমার পরম বন্ধু। কিন্তু আমি খুঁজতে থাকি বন্ধুত্ব-ভালোবাসা-আবেগ এই তিনের মিশ্রণ। শুরু হতে থাকে আমার কষ্ট পাওয়া। কখনও বন্ধুত্বকে ভালোবাসা ভেবে, কখনও ভালোবাসাকে বন্ধুত্ব ভেবে কষ্ট পেতে থাকি আমি। পোড় খেতে থাকে আমার মন, আমার হদয়। নিজের সাথে বোঝাপোড়া করি। কি চাই আমি?

হঠাৎ আমার দৃষ্টি খুলে যায়এবং আমি বুঝতে পারি। আমি বুঝতে পারি ভালোবাসা আসলে আপেক্ষিক। আমি আসলে চাই একজন বন্ধু যে আমাকে বুঝবে, যার পাশে ঠায় বসে থেকেও আমি পার হব যোজন যোজন দূরত্ব। আমরা হব সবার চেয়ে আলাদা, হাজার বন্ধুর ভীড়ে থেকেও আমরা হব অন্যরকম বন্ধু। শুধু সুখ নয় আমরা একে অন্যের দুঃখকে ছোঁব। কোন কথা না বলেও আমরা বলবো অনেক না বলা কথা। দিনের আলোতে একসাথে মনের আকাশে চাঁদ দেখবো আর রাতের আকাশে দেখবো উজ্জ্বল সূর্য।

তোমাকে আমার বন্ধু ভাবলাম। মনে হলো তুমি-ই আমার সেই বন্ধু যাকে এতদিন খুঁজেছি। কিন্তু আমাকে ফিরিয়ে দিলে তুমি। আমার একসময়ের ভুলের মত তুমিও ভুল করলে। আমার বন্ধুত্বকে ভালোবাসা বলে দুরে ঠেলে দিলে। কারন তুমি আমাকে ভালোবাসনা। কিন্তু আমি তোমাকে বোঝাতে ব্যর্থ হলাম যে আমি তোমার ভালোবাসার কাঙাল নই। চেয়েছি নির্মল বন্ধুত্ব। যে বন্ধুর সাথে আকাশ দেখবো, যে বন্ধুর সাথে পথ চলবো। এই বন্ধুত্ব কোন পরিনতি চাইবে না সে এগিয়ে যাবে বন্ধুর হাত ধরে। কিন্তু তুমি তা বুঝলে না, বুঝতে চাইলে না।

যেই ভালোবাসার আবেগের দায়ে আমাকে দোষী করলে সেই ভালোবাসা তোমার মধ্যে নেই। তুমি ভালোবাসতে জানোনা। তোমার কাছে ভালোবাসা মানেই প্রেমিক-প্রেমিকা। কিন্তু আমার কাছে এর সংগা ভিন্ন। তবে হ্যাঁ, আমি তোমাকে ভালোবাসি, তা না হলে তোমাকে কষ্টে দেখলে আমার মন উতলা হয় কেন? হ্যাঁ, আমি তোমাকে ভালোবাসি, তা না হলে তোমার অবহেলা আমাকে কাঁদায় কেন? কিন্তু জেনে রেখ আমি তোমাকে ততটাই ভালোবাসি যতটা একজন বন্ধু বাসতে পারে তার বন্ধুকে। যেই তুমি বন্ধুত্ব-ই বোঝ না সেই তুমি ভালোবাসার বিভিন্ন রূপ বুঝবে কিভাবে?

তোমার সাথে আকাশ দেখতে চেয়েছি বলে আমার সাথে সকল সম্পর্ক করলে ছিন্ন। আমাকে অপবাদ দিলে, তোমার পৌরুষত্বের অহংবোধের কছে আমার মানবীয় অস্তিত্বকে করলে পদদলিত। একবারও নিজেকে প্রশ্ন করলে না। থাক্ প্রশ্ন করো না নিজেকে, আমি তা চাই না। কে জানে উত্তর খুঁজে পেয়ে যদি নিজেই কষ্ট পাও! সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার প্রার্থনা আমি যেন আকাশ হই। আমিরি সাথে নয়, তুমি নিজেই আকাশ দেখো আর আমি তোমার মাঝেই দেখবো আমার বন্ধুকে। নিজের মনে নিজের মত করে তোমাকে বন্ধু ভাববো, সেখানে তুমি বাধা দেবার কে? আমার মনের একান্ত ঘরে প্রবেশের অধিকার তোমাকে আমি দেইনি।

কষ্ট দিয়ে ভালোবাসা নয়। এসো ভালোবাসা দিয়ে আমরা একে অপরকে কষ্ট দেই। এখন তোমাকে বন্ধু ভাবা সম্ভব নয়, কিন্তু বন্ধুত্ব ছাড়া তোমাকে ভাবা অসম্ভব।

হতে পারতাম
আমি তোমার
বন্ধু
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×