somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গভর্নমেন্ট দ্য সরকার

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকার মনে হয় ব্লগার গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে। আজকে (২.৪.২০১৩) তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। সাধুবাদ জানাবো নাকি নিন্দাবাদ জানাবো- এখনো বুঝতে পারছি না। চলুন একটু কথা বলি...

ইন্টারনেট জিনিসটা আবিস্কারের মূলমন্ত্রই ছিলো অবাধ তথ্যের ভাণ্ডার মানুষকে জানানো। এই মূলমন্ত্রের হাত ধরেই পর্যায়ক্রমে জন্ম নিয়েছে ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মতো ফ্রি সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলো। যেহেতু এসব সামাজিক সাইটগুলো পুরোটাই মুফতে ব্যবহার করা যায়, সে কারণে পত্রিকা, পোস্টার, লিফলেটের চেয়ে এগুলোতে প্রচারনা চালানো অনেক সহজসাধ্য। আরেকটি বড় অনুঘটক হচ্ছে, এসব ইন্টারনেটকেন্দ্রিক সাইটগুলোর ব্যবহারকারী অধিকাংশই তরুণ এবং নবীনরা। যাদেরকে সহজেই আবেগ দিয়ে, সস্তা শ্লোগান দিয়ে, মিথ্যাযুক্তি দিয়ে উত্তেজিত করা যায়, মোটিভেট করা যায়। আবার নাস্তিক সেজে অনেকেই নিজেকে উল্টোস্রোতের একজন হিসেবে জাহির করে। কার্ল মার্ক্স, ট্রটস্কি, চে, মাও, ক্যাস্ত্রোর মতো একটা ভাবসাব ধারণ করে ইন্টারনেট দাপিয়ে বেড়ায়। মাঝে মাঝে ভাববাদী বা সাম্যবাদী বাণী বা লেখা পোস্ট করে অপেক্ষাকৃত তরুণদের কাছ থেকে বিস্ময়বোধক বাহবা কুড়ায়। দেখা যায় এভাবেই নাস্তিক, ভণ্ড, প্রতারকরা সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তরুণদের মগজ ধোলাই করছে। যেহেতু আমরা বাকস্বাধীনতার স্বর্গরাজ্যে (!) বাস করছি, সুতরাং যে কেউ যেকোনো মতবাদ, মতাদর্শ প্রচার করতে পারে।

একজন নাস্তিক মানে ঈশ্বরকে অবিশ্বাস করা। ঈশ্বর বলতে কিছু নেই- এই অপ্তবাক্যকে নিজের বিশ্বাসে ধারণ করা। মূলত এটাও একটা মতবাদ বা ধর্মের মতোই, নাস্তিক ধর্ম। যেখানে কোনো ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা যাবে না। সবকিছু প্রকৃতির খেয়ালে হচ্ছে। হোক, সবকিছু প্রকৃতি থেকেই হলে আমাদের কী করার আছে? তবে আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, নাস্তিক হলেই যে আমাকে অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে কটাক্ষ করতে হবে এটা কিন্তু একজন সাচ্চা নাস্তিকের ব্যকরণে পড়ে না। মুসলিম হলেই যেমন হিন্দুদের দেব-দেবী নিয়ে কটাক্ষ করা যাবে না তেমনি খ্রিস্টান হলেই কিন্তু মসজিদ ভাঙ্গা যাবে না। এটা যার যার ধর্ম যেমন নিষেধ করেছে তেমনি মানবপ্রজাতির স্বাভাবিক ভব্যতাও।
আপনার সঙ্গে, আপনার লালিত বিশ্বাসের সঙ্গে ইসলামের বা অন্য যে কোনো ধর্মের আদর্শিক বা বিশ্বাসিক মতপার্থক্য থাকতে পারে। তাদের ধর্মীয় উপাসনা, আচার-সংস্কৃতি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, আপনার কাছে সেগুলো নিপাট অর্থহীন এবং পাগলামি আচরণ মনে হতে পারে; তাই বলে সেসব উপাসনা, আচারকে তো আপনি গালাগাল করতে পারেন না। সেগুলো লিখে জনতার মাঝে বিতরণ করাটাও তো আপনার উচিত নয়। বাকস্বাধীনতা মানেই তো এই নয় যে, আপনি এমন কোনো কথা বলবেন যা শুনে অন্যান্য মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে যাবে। যে বাক (কথা) মানুষকে বাকস্বাধীনতার বদলে বাকরুদ্ধ করে ফেলে সেটা আসলে কোন ধরনের বাক-বাকুম সেটা ভাববার বিষয়।

এখন সরকার যে তাদের পিছনে লেগেছে এটা নিতান্তই অজ্ঞতাপ্রসূতে এবং অবিবেচনাসুলভ একটি কাজ। এর দ্বারা কী লাভ হচ্ছে? যে সরকার নাস্তিক ব্লগারদের আন্দোলনে প্রথম থেকেই আহ্লাদিত, সেই সরকার আবার নাস্তিকদের ধরে জেলে পুড়ছে। একেই বলে- ‘সাপ হইয়া দংশন ওঝা হয়ে ঝাড়া’।

এর ভেতরে রাজনীতির ভেলকিও আছে। সরকার জামায়াত-শিবির নিয়া এমনিতেই লেজে গোবরে অবস্থায় আছে। এর মধ্যে আবার আল্লামা শফী সাহেবের লংমার্চ। সরকার এই সতঃস্ফূর্ত লংমার্চ থামানোর জন্য নানন দেন-দরবার শুরু করেছে। কিন্তু হেফজতের নেতারা সিদ্ধান্তে অনড়। তাদের ১৩ দফা দাবি মানা হলেই কেবল তারা লংমার্চ প্রত্যাহার করবে। সরকার সম্ভবত সেই ১৩ দফার পোশাকি বাস্তবায়ন শুরু করছে। হেফাজতে ইসলামকে থামানোর একটা কৌশলি অভিযান। এটাকে সরকারের বোধোদয় ভাববার মতো কোনো ঘটনা ভাবাটা নিতান্ত বোকামিই হবে। এরকম আরো কিছু গ্রেফতার নাটক হয়তো হবে। শুধু শুধু গ্রেফতার হবে তারা। তারপর জামাই আদরে থাকবে। যেমন থেকেছে শাহবাগে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×