somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণতহ্যার রাজসাক্ষী

০৭ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মতিঝিলে যে গণহত্যা ঘটেছে, সেটা নিয়ে কারো দ্বিমত থাকা উচিত নয়। কতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, কতোজনের লাশ গুম করা হয়েছে- সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকতে পারে, তবে সেখানে অবস্থানরত হেফাজতকর্মীদের যে গণহারে হত্যা করা হয়েছে, এটা নেটকেন্দ্রিক সবাই বুঝেছেন। যদিও আমাদের মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলো কাল থেকে যে নিদারুণ মিথ্যাচার চালাচ্ছে- আমি এককথায় অভিভূত। বিস্ময়াভিভূত! এতোদিন কেবল নানা ঘটনায় শুনতাম যে মিডিয়া মিথ্যাচার করে। কিন্তু কাল আমি নিজের চোখে দেখলাম আমাদের মিডিয়ার মিথ্যার কারসাজি কতোটা নগ্ন হয়।
৬ মে রাত পরবর্তী কাচপুর-মাতুয়াইলে যে সংঘর্ষ হয়, সেখানে যে দুজন বিজিবি আর একজন পুলিশ মারা গেছে- এই সংবাদ বার বার তারা দেখাচ্ছে। হেডলাইনে, স্ক্রলে, নিউজে... সবখানে। কিন্তু একবারের জন্যও উচ্চারণ করছে না, মতিঝিলে ওইদিন রাতে ঠিক কতোজন নিহত হয়েছে। বরং মিডিয়া খুব রগরগে ভাষায় প্রচার করছে- কীভাবে হেফাজতের নেতারা শাপলা চত্বর ছেড়ে গেলো, কীভাবে তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেলো, মাত্র ১০ মিনিটে অবস্থান ছেড়ে দিলো... এইসব। বাস্তবতা কি আসলে তাই? রাত পৌনে তিনটায় শুরু হয়ে সাড়ে চারটা পর্যন্ত যে হত্যাকাণ্ড চললো, তাকে ১০ মিনিটের উচ্ছেদ অভিযান কীভাবে বলবেন আপনি? যারা ওইরাতে এলাকার বাসিন্দা ছিলেন, তাদের কাছে জানুন যে, এই হত্যাকাণ্ড কতোক্ষণ ধরে চলেছে! মাত্র ১০ মিনিটে কি সারা মতিঝিল এলাকাজুড়ে এতো কিছু ভাংচুর হওয়া সম্ভব? ১০ মিনিটের জন্য কি দশ হাজারী বাহিনীর প্রয়োজন হয়েছিলো?
আমার এক পরিচিতজনের চারজন আত্মীয় ছিলেন ওইরাতে মতিঝিলে। তাদের তিনজন আহত অবস্থায় ফিরে এসেছেন, কিন্তু একজনের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। যারা আহত হয়ে ফিরে এসেছেন সবাই মোটামুটি আহত । একজনের চেহারা ঝলসে গেছে বারুদে । একজনের
হাতে ছড়ড়া লেগেছে । আরেকজন হাটতে গেলেই পায়ের নিচের ক্ষত থেকে রক্ত বেরোয়।
এই তথ্য আমাকে ওই পরিচিতজনই জানালেন। তার নিখোঁজ খালাতো ভাই মাদানী নগর মাদরাসার ছাত্র ছিলেন। যেখানে কাল সকালে ছাত্রলীগ এবং র‌্যাব-পুলিশ একযোগে আক্রমণ চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাকে ওই রাতের পর থেকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। সম্পূর্ণ নিখোঁজ।
কী বলবেন একে আপনি? কোন একটা পোস্টে যেনো একজনকে মন্তব্য করতে দেখলাম, ... তারা শহিদ হওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছিলো। এখন তারা শহিদ হয়েছে, তাদের জন্য এতো কান্নাকাটি আর চিৎকার কেনো?
জনাবকে বলছি, আপনি যদি নিশ্চয়তা দেন যে, আমার পরিচিতজনের আত্মীয়টি শহিদ হয়েছে, তার লাশ পড়ে আছে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে, তাহলে তার পরিবার কোনোদিনই চিৎকার করে কাঁদবে না। কিন্তু আপনি যদি তার লাশটি না দেখাতে পারেন, তার খোঁজ না দিতে পারেন তাহলে তারা কিসের সান্ত্বনা নেবেন? কিসের নিশ্চয়তা পাবেন? শহিদ নাকি নিখোঁজ?
এমন আরো অনেক মানুষ নিখোঁজ হয়ে গেছেন ওই রাতে। কোথায় তারা কেউ জানে না। বেঁচে আছে না মরে গেছে, সেই খবরও কেউ দিতে পারছে ন। প্রত্যক্ষদর্শী যারা বেঁচে ফিরতে পেরেছেন তারা শুধু বলছেন, চারদিকে কেবল লাশ আর লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। কিন্তু এতো লাশ কই গেলো? দিগন্ত টিভি আর ইসলামিক টিভি কি জানে, কোথায় আছে লাশগুলো?



সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×