‘মুসলিম দেশ হয়েও পরমাণু শক্তি অর্জন করায় পাকিস্তানকে টার্গেট করা হয়েছে’
পাকিস্তানি জনগণ মার্কিন সেনা উপস্খিতির বিরোধী
পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্খা (আইএইএ) যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। সংস্খার মহাপরিচালক ড. আলবারাদির উদ্বেগ সম্পর্কে পাক পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, অন্যান্য পরমাণু শক্তিধর দেশের মতোই পাকিস্তানের পারমাণবিক সমরাস্ত্র ভাণ্ডার সম্পূর্ণ নিরাপদ। ডন/আইপিএস।
এদিকে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ইসলামি জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় যে সামরিক অভিযানের কথা ভাবছে বলে খবর বেরিয়েছে, তার বিরুদ্ধে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সোচ্চার হবে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে পাকিস্তানি জনগণের এমন মনোভাব উঠে এসেছে। সেই সাথে এও জানা গেছে, পাকিস্তানের জনগণ তাদের দেশে বা পার্শ্ববর্তী আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা উপস্খিতিকে আল কায়েদা বা তালেবানদের চেয়ে অনেক বেশি জটিল পরিস্খিতি বলে মনে করে।
ইসলামাবাদে গতকাল পররাষ্ট্র দফতরের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, পাকিস্তান পরমাণু ইস্যুতে আইএইএ’র সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলে। কাজেই আলবারাদির উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তিনি পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত খবরগুলোকে প্রোপাগান্ডা বলে উল্লেখ করেন। তিনি এটাকে পাকিস্তান ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করে বলেন, পাকিস্তানের পরিস্খিতিকে অস্খিতিশীল করে তোলাই এসবের উদ্দেশ্য।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাক মুখপাত্র বলেন, একটি মুসলিম এবং তৃতীয় বিশ্বের দেশ হয়েও পরমাণু শক্তি অর্জন করায় পাকিস্তানকে টার্গেট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ বিশ্বের কোনো সরকারই পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।
অন্য একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের মাত্র পাঁচ শতাংশ জনগণ জঙ্গিবাদ দমনের নামে মার্কিন বাহিনীর উপস্খিতিকে সহ্য করবে। ৮০ শতাংশ জনগণ পাকিস্তানে মার্কিন প্রশাসনের এ ধরনের কোনো উদ্যোগের একেবারে ঘোর বিরোধী। সম্প্রতি ইউএস ‘ইনস্টিটিউট অব পিস’-এর (ইউএসআইপি) অর্থায়নে এবং ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের প্রোগ্রাম অব ইন্টারন্যাশনাল পলিসি অ্যাটিচিউড্স (পিআইপিএ) পরিচালিত এক জরিপে পাকিস্তানি জনগণের এমন মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের ১৯টি শহরের অন্তত ৯০০ লোকের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
তবে গত সেপ্টেম্বরে পরিচালিত এ জরিপের পর পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। প্রেসিডেন্ট মোশাররফের জরুরি অবস্খা জারি, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের বরখাস্ত করা, সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও নওয়াজ শরিফের দীর্ঘ নির্বাসন শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন এবং সর্বশেষ বেনজির ভুট্টোর হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে কতটা প্রভাব ফেলেছে এবং তাতে জনমত প্রভাবিত হয়েছে কি না তার উল্লেখ নেই এই জরিপে। বিশেষ করে বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ডে তালেবান নেতা বায়তুল্লাহ মেহমুদ জড়িত বলে মোশাররফ সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করার পর তালেবান ও আল কায়েদার প্রতি সাধারণ মানুষের আগের মনোভাব পাল্টেও যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ব্যালট পেপার ছাপার কাজ শেষ : পাকিস্তানের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের জন্য মোট ১৮ কোটি ব্যালট পেপার ছাপার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন সারাদেশে ৬৪ হাজারের বেশি ভোট কেন্দ্র স্খাপনের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। নির্বাচনী কাজে ৫ লাখ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।
।।নয়া দিগন্ত ডেস্ক।।
লিংকঃ
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:১৭