“চৌচিলা সেমেট্রি” এমন একটি সমাধিস্থল, যেখানে কোন রকম রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই অসংখ্য মানুষের দেহাবশেষ মমির মতো হয়ে আছে। একে সাধারন সমাধিস্থল না ভেবে উন্মুক্ত সমাধিস্থল ভাবাই ভালো।


(রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই শত শত বছরের পুরনো অবিকৃত মমি।)
খোলা আকাসের নিচে উন্মুক্ত এই সমাধিস্থলটি খ্রিষ্টাব্দ ১০০০ সালে বানানো হয়। যেখানে দাফন হওয়া মানুষ গুলো এতোটাই অবিকৃত যে, লাশের গায়ে জড়িয়ে থাকা কাপড়গুলো দেখলে মনে হবে এগুলো কিছুদিন আগে পরিধান করানো হয়েছে(১ ও ২নং ছবি)। আর লাশগুলো হঠাৎ দেখলে যে কারোই মনে হবে মানুষগুলো সম্ভবত এখনই উঠে কথা বলা শুরু করবে তার সাথে। অত্যান্ত ভয়ংকর হলেও এটি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এরিয়াও বটে। পেরুর দক্ষিণের শহর নাজাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থানটি।


(কাঁদার ইট দিয়ে সমাধিগুলো এভাবেই নির্মিত।)
১৯২০ সালে এই সমাধিস্থলটি আবিষ্কৃত হলেও ধারনা করা হয় নবম শতাব্দী থেকে সমাধিস্থলটি ব্যবহৃত হয় নি আর। এখানে ৬০০/৭০০ বছর এমনকি এর থেকেও অনেক পুরনো কবরও রয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে নাজাকা কালচারের অন্যতম উৎস মনে করা হয় এই স্থানটিকে।

(শত শত বছরের পুরনো কোন একটি পরিবার হয়তো, মৃত্যুর পরেও বন্ধন ত্যাগ করতে পারেনি।)
বর্তমানে এই সমাধিস্থলের বিশাল এরিয়ার এদিকে সেদিকে অসংখ্য মানুষের হাড়, খুলি, মাটির মাত্র ইত্যাদি ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে(৬নং ছবি)। ধারনা করা হয়, লাশ চোরেরা চুরি করতে গিয়ে এগুলোকে নষ্ট করে রেখে গেছে। যে কারনে উন্মুক্ত কবরস্থানগুলো ছাড়াও সেখানকার স্থানীয় কবরস্থান গুলাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ১৯৯৭ সাল থেকেই পেরু সরকার এখানে পড়ে থাকা বিক্ষিপ্ত হাড় এবং অপহৃত লাশ গুলোকে খুঁজে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

(লাশ চোরদের কারবার)

(শত বছরের পুরনো মানুষের হাত, আজও যেমন)
এখানে লাশ অবিকৃত থাকার কারন অনুসন্ধান করে জানা যায়,
পেরুর মরুভুমির জলবায়ু শুষ্ক এবং এতে অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া নামক সংযোজন কারী একটি পদার্থ থাকার ফলে সেখানের লাশ গুলো আজও অবদি অবিকৃত। এছারাও সংরক্ষন করার সময় লাশগুলোকে তুলো দিয়ে নির্মিত করে কাপরে রজন দিয়ে ডিজাইন করে সেটা পড়ানো হতো মৃত ব্যাক্তির শরীরে, অতঃপর কাঁদার ইট দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি ঘরে এদের দাফন করা হতো(৩, ৪,৫নং ছবি)।

(পেরু সরকার সমাধিগুলোকে এভাবেই ছাউনি দিয়ে ঢেকে সংরক্ষিত করে রেখেছে।)

(চৌচিলাতে ঘুরতে যাওয়া একদল পর্যটক)
চৌচিলা সেমেট্রি নামক এই জায়গাটাটি ১৯৯৭ সাল থেকে পর্যটকদের জন্য সুরক্ষিত করে রেখেছে পেরু সরকার। যেখানে দু-ঘন্টা ঘুরার জন্য পর্যটকদের প্রায় ৭ মার্কিন ডলার দিতে হয় পেরু সরকারকে।
তথ্যসূত্রঃ উইকি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




