বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর হার দিন দিন কমছে। গত কয়েক বছরের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে,বিজ্ঞান বিভাগের তুলনায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানা সংকটের কারণে দেশের মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষার পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। এসব মৌলিক বিষয়ে যথাযথ জ্ঞান লাভ করতে না পেরে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবিষয় মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু শিক্ষার সব স্তরে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, মাধ্যমিক পর্যায়েও এই হ্রাসের হার উদ্বেগজনক। অথচ কে না জানে একটি জ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ বিনির্মাণে বিজ্ঞানে দক্ষ জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই। সাতটি জেলার ১৪০টি স্কুলে পরিচালিত গবেষণায় মাঠপর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার এক করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। সাত বিভাগের সাত জেলার ১৪০টি স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী, নবম ও দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান শিক্ষার্থী, নবম ও দশম শ্রেণীর অন্যান্যবিভাগের শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। গত ১৬ আগস্ট ঢাকার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এক ক্ষুদ্র অংশ মাত্র নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান পড়তে যাচ্ছে।
জিপিএ-৫ বেড়েছে, শিক্ষার্থী কমেছে
বর্তমানে বোর্ড পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়ার হার বাড়লেও বিজ্ঞান শিক্ষার মান বাড়েনি। উল্টো বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) প্রকাশিত বাংলাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা নামের গবেষণায় প্রকাশ, গত আট বছরে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী কমার হার ৩১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ১৯৮৮ সালে এসএসসি পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থীর ৪১ দশমিক ৩৫ শতাংশ ছিল বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, ১৯৯৫ সালে এই হার ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ২০০৮ সালে ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ ছিল।
এসএসসি পরীক্ষায় ১৩ লাখ ১৫ হাজার ২০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩ দশমিক ৩১ শতাংশ হারে পাস করে নয় লাখ ৬০ হাজার ৪৯২ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছিল দুই লাখ ১৬ হাজার ১৬৪ জন এবং পাসের হার ৯০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫০ হাজার ১০৯ জন। এইচএসসি পরীক্ষায় ২০১১ সালে ৭৯ হাজার ৪৪১ জনের মধ্যে পাস করেছেন ৭৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিজ্ঞানে মেয়েদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ছেলেদের পাসের হার ৭২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট ফ্রান্সিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারওয়ার জাহান ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান কমে যাওয়ার পর ফলাফলের প্রাচুর্যকে শিক্ষার জন্য হুমকি বলে মনে করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০১ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল বিজ্ঞান বিভাগের। সাম্প্রতিক ফলাফলে দেখা যায়, মাধ্যমিক পরীক্ষার মোট পরীক্ষার্থীর মাত্র ২২ দশমিক ৩৫ শতাংশ ছিল বিজ্ঞান বিভাগের। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত আট বছরে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী কমার হার ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০০৭ সালে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছিল ২২ দশমিক ৬৯ এবং ২০০৮ সালে ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০০৯ সালে মোট শিক্ষার্থীর ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ ছিল বিজ্ঞানের।
গ্রাম ও শহরে পার্থক্য
হ্যান্ডবুক অব রিসার্চ ইন সায়েন্স এডুকেশন, রিচার্স ইন এশিয়া, ভলিউম-৪-এ বাংলাদেশে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমে যাওয়াকে আশঙ্কাজনক বলা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ২৬ শতাংশ। আর গ্রামে এ হার ১৫ শতাংশ। উচ্চমাধ্যমিকে শহরে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ২০ শতাংশের মতো। গ্রামে এ হার ১০ শতাংশেরও কম।
অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার পাশাপাশি সামাজিক প্রতিকূলতা, বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞান শিক্ষকের অপ্রতুলতা, ত্রুটিযুক্ত অসামঞ্জস্য শিক্ষাদান পদ্ধতি, ভারসাম্যহীন সিলেবাস, অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বইয়ের অভাব ইত্যাদিকে এই সংকটের মূল কারণ বলা যায়।
অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা
শিক্ষা খাতে যে বাজেট বরাদ্দ থাকে, তা বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষার উন্নয়নের জন্য অনেক কম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বুয়েটের অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, অন্যান্য দেশের বিজ্ঞান ও শিক্ষা খাতের ব্যয়ের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা খুবই খারাপ। এখানে জনপ্রতি মাত্র পাঁচ ডলার ব্যয় করা হয়, যেখানে ভারতে ১৪ ডলার ও মালয়েশিয়ায় ১৫৫ ডলার ব্যয় করে থাকে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পেছনে পরিবারকে কোচিং ও গৃহশিক্ষকের পেছনে বাড়তি ব্যয় করতে হয়। ফলে অনেকে ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞান শাখায় পড়াতে আগ্রহী হন না।
বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞান শিক্ষকের অপ্রতুলতা
দেশে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষকের মধ্যে অতি ক্ষুদ্রাংশই প্রকৃত অর্থে বিজ্ঞানমনস্ক। অধিকাংশ স্কুলে একজন শিক্ষক কয়েকটি শ্রেণীর বিজ্ঞান ও গণিতের ক্লাস নেন। সুনামগঞ্জের কৃষ্ণনগর হোসেনি উচ্চবিদ্যালয়ে ৬১৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন ১০ জন, যেখানে একজন বিএসসি শিক্ষক নবম ও দশম শ্রেণীতে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান পড়ান। সিলেটের পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় ও চট্টগ্রামের রায়পুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ে একই চিত্র দেখা যায়। বিজ্ঞান ও গণিতে শিক্ষক-সংকট প্রকট। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞান শাখায় শিক্ষক আছেন মাত্র একজন (প্রথম আলো, ০৩-১১-২০০৯)।
ত্রুটিযুক্ত শিক্ষাদান পদ্ধতি
অধিকাংশ শিক্ষক বিজ্ঞানের তত্ত্বীয় ক্লাস নেন চক-ডাস্টার আর ব্ল্যাকবোর্ড দিয়ে, যেখানে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে ক্লাসে বিভিন্ন আধুনিক উপকরণ ব্যবহার করা হয়। বিজ্ঞানশিক্ষার অপরিহার্য অংশ ব্যবহারিক ক্লাস। কিন্তু গবেষণা এলাকার ৭৯% স্কুলে বিজ্ঞানাগারই নেই। যেগুলোতে আছে সেখানে রয়েছে যন্ত্রপাতি ও প্রদর্শকের অভাব এবং অবকাঠামোগত অসুবিধা। তবে তাতে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় পূর্ণ নম্বর পেতে কোনো সমস্যা হয় না!
ভারসাম্যহীন সিলেবাস
সব শ্রেণীতে বিজ্ঞান ও গণিতের সিলেবাস প্রায় ভারসাম্যহীন। স্বল্প সময়ে বর্তমান সিলেবাসকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বিশাল সিলেবাসের ধাক্কায় শিক্ষার্থীরা মুখস্থবিদ্যা, গৃহশিক্ষক ও কোচিংয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে।
পাঠ্যপুস্তকে ভুল ও পুরোনো তথ্য উপস্থাপন
পাঠ্যপুস্তকে ভুল ও পুরোনো তথ্যের উপস্থাপনার প্রবণতা রয়েছে। পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানে রয়েছে তথ্যের নানা অসংগতি। সৌরজগতে গ্রহের সংখ্যা নিয়ে গরমিল রয়েছে অনেক বইতে। তৃতীয় শ্রেণীর পরিবেশ পরিচিতি বিজ্ঞানে ‘আমাদের বিশ্ব’ অধ্যায়ে গ্রহের সংখ্যা আটটি বলা হয়েছে। আবার মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ‘আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান’ অধ্যায়ে গ্রহের সংখ্যা নয়টি উল্লেখ আছে। বর্তমানে প্লুটোকে পূর্ণ গ্রহের স্বীকৃতি না দিয়ে বামনগ্রহ বলা হয়। তৃতীয় শ্রেণীতে এ তথ্য সঠিক থাকলেও নবম-দশম শ্রেণীতে পুরোনো তথ্য দেখা যায়। মৌলিক পদার্থের সংখ্যার হিসাব একেক বইতে একেক রকম। কোথাও ১০৯টি, আবার কোথাও ১১১টি। জনসংখ্যার বিষয়েও আছে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য। তথ্য সরলীকরণের নামে হচ্ছে তথ্যবিভ্রাট। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পৌনে দুই কোটির বেশি শিক্ষার্থী এসব বই পড়ে ভুল শিখছে।
শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের দেশের পাঠ্যক্রম পুরোনো। পাঠ্যবইগুলো আকর্ষণীয় নয়। বিশেষ করে, বিজ্ঞানের বইগুলোর ভাষা এমন সহজবোধ্য হওয়া চাই, যাতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে না হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘নাজুক এই শিক্ষা-পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন জরুরি। প্রায়োগিক বিজ্ঞানশিক্ষার ব্যাপকতা সর্বক্ষেত্রে বাড়াতে হবে। বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞ শিক্ষকসংখ্যা বৃদ্ধিসহ গ্রামের স্কুলগুলোর দিকে মনোযোগ বাড়ানো দরকার।’
যা করা যায়
গবেষণা প্রতিবেদনে সংকট উত্তরণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
***শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো, বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠা ও মান উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষকদের জন্য কার্যকর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষকতায় আগ্রহী করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ,
***গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার,
***বিজ্ঞান শিক্ষাকে ঘিরে উদ্দীপনা সৃষ্টির লক্ষ্যে গণিত অলিম্পিয়াডের মতো বিজ্ঞান মেলার আয়োজন দেশব্যাপী ছড়াতে হবে।
***শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিজ্ঞানসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্ক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
***মাধ্যমিক পর্যায়ে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ২৬ শতাংশ। গ্রামে এই হার ১৫ শতাংশ। উচ্চমাধ্যমিকে শহরে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ২০ শতাংশের মতো। গ্রামে এই হার ১০ শতাংশের কম।
***আট বছরে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী কমার হার ৩১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
**** অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, সামাজিক প্রতিকূলতা, বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞান শিক্ষকের অপ্রতুলতা, ত্রুটিযুক্ত অসামঞ্জস্য শিক্ষাদান পদ্ধতি, ভারসাম্যহীন সিলেবাস, অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা, ***বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বইয়ের অভাব এই সংকটের মূল কারণ।
***গবেষণাধীন স্কুলে শতকরা ৭৯টি স্কুলে কোনো বিজ্ঞানাগার নেই।
***বিজ্ঞানবিমুখ শিক্ষার্থীরা মনে করে, ‘বিজ্ঞান কঠিন, দুর্বোধ্য এবং পাস করা কষ্টকর।
***বিজ্ঞানবিষয়ক পাঠ্যপুস্তকগুলো আকর্ষণীয়ও নির্ভুল নয়।
মন্তব্য:
আমাদের সমাজে শিক্ষা বর্তমানে একটি পণ্য মাত্র। এখানে বিষয়কে ভালোবেসে ছাত্ররা ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা করে না। তাঁর ওপরে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য গভীর কমিটমেন্ট দরকার, যা এই যুগের শিক্ষার্থীগণ দিতে প্রস্তুত নন। বিজ্ঞানে বিষয়ভিত্তিক চাকুরী বা কাজের সুযোগ আমাদের দেশে কতটা আমরা দিতে পারছি? কেন একজন বিবিএ, এম বি এ, বাদ দিয়ে গনিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীব বিদ্যা পড়বেন? তাও প্রকৌশল বা চিকিৎসাবিদ্যা অনেকে পড়েন অর্থ এবং প্রতিপত্তির জন্য। আগেও অনেকেই বিজ্ঞান পড়তে আসতেন বিষয়ের প্রতি অনুরাগের কারণে নয়, বরং তখন এই বিষয়ে পড়ে উপার্জনের আগ্রহে এবং প্রেস্টিজের জন্য। সত্যিকার অর্থে আমাদের সমাজ বিজ্ঞানভিত্তিক নয় এবং বিজ্ঞান চর্চা বা বিজ্ঞানের প্রতি অনুরাগ দিন দিন কমে আসছে। আগে জাতীয় বিজ্ঞান সপ্তাহ হত যা বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনার মাঝে পালিত হত। এখন মৌলিকত্বের তেমন দাম নেই, নেই সৃষ্টিশীলতা। দেশ গড়ার চিন্তাও নেই কর্তা ব্যক্তিদের তাই বর্তমান হার্ডকোর ক্যাপিটালিজমের যুগে আমাদের মত দেশের লোকেরা ধনী দেশ গুলোর উপর আরও বেশী নির্ভরশীল থাকবে, নিজেরা কিছু করবে না, নিজের ছোট ব্যবসা চালাবে, ওদের, বড় ব্যবসায় সহযোগিতা করবে (অর্থাৎ দালালী) এরকম শিক্ষাই বেশী দরকার হয়ে পড়েছে!!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৩০