শুনলাম ১২ই জানুয়ারি আবার ও ফেসবুক কতৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসতে তারানা হালিম সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন।
ভাল তো, কি যে খুশী লাগছে আমার্! ফেসবুক কতৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসতে তাদের কত কি প্রস্তুতি তা দেখে নিশ্চয়ই আমি বাঙালি হিসেবে মহা খুশী!
আমরা এমন একটা বাল জাতি, যে জাতি পৃথিবীর মধ্যে আছে কি না আমার সন্দেহ আছে। আমরা খুবই লাজুক,দুষ্ট, সহজ-সরল, অতিথিপরায়ণতা, সন্ত্রাসী, রাজাকার, ঘুষখোর, সুদখোর, ভালা-খারাপ, ধর্ষন-ধর্ষিতা, হাসি খুশী গুরু জাতি। আমাদের সরকারের এত আবেগ কেন? পাবলিক মরে যাক, পচে পরিবেশ দূর্গন্ধ হয়ে যাক। তারপরও আমাদের সরকার নাকে হাত দিবেন না, আপসুসের সুরে শুধু মুখে বলবে আহা।
কত কাহিনী দেখলাম এই ছোট্ট জীবনে, দেশের সুশীল সমজরা টকশোগুলোতে চাপাবাজিতে ব্যাস্ত থাকে, ধনীরা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ বিলাসিতাই ব্যাস্ত থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘুষ খেতে ব্যাস্ত থাকে। সরকারী বাহিনী বিরোধী দলকে ধোলাই দিতে ব্যাস্ত থাকে, বিরোধী দল আন্দোলনে ব্যাস্ত থাকে। তরুণ সমাজ রাজাকারদের ফাসিঁ দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে, গরিবরা রুটি রুজিতে ব্যাস্ত থাকে।
কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন নেতা, সুশীল,তরুণ, ব্যাবসায়ী, মন্ত্রী-এমপি, রাজনীতিবিদ, বিরোধী দল কাউকে দেখলাম না রাস্তায় দাড়িয়ে একবার আন্দোলন করতে কেন সৌদি, আমিরাত, কুয়েতের ভিসা বন্ধ????
সৌদি আরব ৮-৯ বছর যাবত পুরুষ শ্রমিকদের জন্য ভিসা বন্ধ করে রেখেছে, অথচ সৌদি হতে পারতো বাংলাদেশী বেকারদের জন্য স্বপ্নের দেশ। লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বঞ্ছিত হল কর্মসংস্থানের, কোন সরকারকেই দেখলাম না মন থেকে কিছু করতে। সব লোক দেখানো কাজ করে গেল। ২০১৫ সালে এই বাঙালির জন্য ওমরাহ ভিসা পর্যন্ত করে দেই। আর কত লজ্জা দিলে আমরা লজ্জা পাব?? ২০১৫ তে সৌদি সরকার বাংলাদেশী ৫০ হাজার নারী শ্রমিক চেয়েছিল, সরকার দিয়েছে মাত্র ৫ হাজার্। কারণ সৌদিতে নারীরা যেতে ভয় পাই, যে হারে গৃহনির্যাতন শুরু করছে তাতে কিভাবে নারী শ্রমিক যাবে?? আজকে
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেছেন সৌদিতে পুরুষ শ্রমিক নিবে যদি একজন নারী শ্রমিক দিতে পারি।
শুনে হাসলাম খুব। আরবীরা সবসময় বলে( বাঙালি মাফি মুখ) অথাৎ বাঙালির বুদ্ধি জ্ঞান কিছুই নাই। এই জন্যই তো স্বত্ব দিয়ে দিলেন। ২০১৩ তে ইন্দোনেশিয়া জাকার্তায় বড়সর একটা আন্দোলন হয়, কারণ ছিল সৌদিতে ইন্দোনেশিয়ান নারী শ্রমিকদের গৃহ নির্যাতনের শিকার্। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ান নারী শ্রমিক সৌদিতে দিচ্ছে না। ফিলিপাইন, শ্রিলংঙ্কা, ভারতীয় নারী শ্রমিকের জন্য মোটা অংকের বেতন চাচ্ছে, পাকিস্তান নারী শ্রমিক অনেক আগেই পাকিস্তান সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। এখন হাতে বাঙালি নারী, যাদের লোভ দেখিয়ে অনেক কিছুই করা যাবে।
আরব আমিরাত ভিসা ২০১২ সালের আগস্টে বন্ধ করে দিয়েছে সেই দেশের সরকার্। কারণ অবৈধ শ্রমিক এবং বহু বাঙালি ক্রাইম জগতে জড়িয়ে পড়ায়।
২০১২ সালে আরব আমিরাতে বাঙালির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ লাখের ও বেশি। ২০১৬ তে বাঙালির সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। এই ৪ বছরে আমিরাত থেকে ১০ লাখেরও বেশি বাঙালিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এমনিতেই বাংলাদেশে বেকারদের সংখ্যা হুরহুর করে বাড়ছে তার উপর বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা, ভাবতেই অবাক লাগে। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী আমিরাত সফর করে গেলেন। লাখো লাখো বাঙালি মনে করলো এবার একটা বিহিত হবে। প্রধানমন্ত্রী সফর ঠিকই করলেন তবে সেটা শেখ জায়েদ মসজিদ, ডুবাই প্যালেস, খলিফা বিল্ডিং আর শেখদের সাথে নৈশভোজ! অনন্ত ট্রানজিটের ব্যাবস্থা ও যদি করতে পারতেন তাহলে লাখো শ্রমিকের দোয়া পেতেন। বাংলাদেশীরা শ্রমিকের অভাবে ব্যাবসা বানিজ্য বন্ধ করে অন্যত্রে পাড়ি দিচ্ছে, বাংলাদেশে গিয়ে বেকার জীবন যাপন করছে। খুবই কষ্ট লাগে আমার, যখন একজন বাঙালি কাদতে কাদতে বলে ৫ বছর যাবত বিদেশে আছি, সব টাকা পরিবারকে দিয়ে দিছি। একটা টাকা ও জমা করি নাই। আর এখন না কি ভিসার তারিখ শেষ হলে কোম্পানি ভিসা নবায়ন করবে না। এখন আমি কি করবো? কোথায় যাব? পরিবারেরকে কি খাওয়াবো??
এত গুলো দুঃখ শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে।
এইসব ফেসবুক, টুইটার, গুগল নিয়ে বারবার বৈঠক না করে একবার তাদের সাথে বৈঠক করুন যাদের হাতে আমাদের ভাগ্য।
সরকার দয়া করে কিছু একটা করেন, হাজার হাজার মানুষগুলোর কি হবে? যাদের উপর নির্ভর করে একটা পরিবার একটা দেশ। প্লিজ সরকার প্লিজ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২