somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেহদী ও অভ্র’র দল কি একুশে পদক পেতে পারে না?

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
তিন তোলা সোনার একটি মেডেল আর মাত্র এক লক্ষ নগদ টাকার ‘একুশে পদক’ অর্থমূল্যের বিচারে খুবই সামান্য। কিন্তু বাংলাদেশিদের জন্য এটা সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি পুরষ্কার। ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা, গবেষণা, ইত্যাদি নানা বিষয়ে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সাল থেকে এই পুরষ্কার দেয়া হচ্ছে ভাষা শহীদদের স্বরণে। এই পুরষ্কার রাষ্ট্রের জন্য যে কোনো গুরত্বপূর্ণ অবদানের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।

তিন লক্ষ আইসল্যান্ডবাসীর আইসল্যান্ডিক ভাষার জন্য গুগুলের ভাষান্তর ব্যবস্থা আছে অথচ তাঁর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি প্রবাসী বাঙালী আছে দুই বাংলার বাইরেই, হাজার গুন বেশি আছে দুই বাংলায়, কিন্তু আমাদের নেই ভাষান্তর ব্যবস্থা। এই লজ্জার পাশাপাশি ভাষা নিয়ে আমাদের আছে গৌরব করার মতো কিছু ব্যাপারও! পৃথিবীর বুকে আমরাই এক মাত্র জাতি যারা মায়ের মুখের ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি, মিলেছে স্বীকৃতিও, আমাদের মহান একুশে ফ্রেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবষ। দেশে বিদেশে লক্ষ কোটি মানুষ এখন মাথা নুয়ে, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আমাদের।

তিন বছর ধরে আবারও বাংলা লিখছি। স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে ইংরেজী মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার পর থেকে বাংলা হয়ে পড়েছিল অপ্রয়োজনীয়। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে টুকটাক বাংলা লেখা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল গল্প আর কবিতা লেখার জন্য। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এক সময় খাতা কলমের সামান্য জায়গাটাও দখল করে নিয়েছিল। অভ্যাস ধরে রাখতে মাঝে মাঝে কম্পিউটারে ইংরেজী বর্ণমালায় লিখতাম বাংলা, বাংলা টাইপিং শেখার সময় কিম্বা প্রয়োজনীয়তা একেবারেই ছিল না! প্রায় ভুলেই যেতে বসেছিলাম কিছু কিছু বাংলা বর্ণমালা! এখনো অনেক বানান ভুল হয়ে যায়! দায়টা আমাদের প্রজন্মের নয়, দায়টা সময়ের আর আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া যুগোপযোগী হওয়ার তাড়নার। এমন সময় ডাক্তারী পড়তে যাওয়া বাচ্চা একটা ছেলে তাঁর কিছু বন্ধু বান্ধব মিলে কোটি বাঙালীর জন্য নিয়ে এলো ‘অভ্র’- কম্পিউটারে ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য সহজতম একটি সফটওয়ার। ছেলেটির নাম মেহদী, মেহদী হাসান খান।

এই আনন্দে নতুন করে অনেকে বাংলা লিখতে শুরু করলো, ব্লগে, ফেসবুকে, ফোরামে এখন নতুন করে বাংলার জয়জয়কার। লক্ষ কোটি বাঙালী এখন আবার বাংলা লিখছে অভ্র’র কল্যাণে। বাংলা বর্ণমালায় ভরে উঠছে ইন্টারনেটের জগত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, অন্যান্যরা যখন ভাষাকে পুঁজি করে ব্যবসার ফাঁদ পেতে বসে আছেন তখন মেহদী হাসান খান সফটওয়ারটি দিচ্ছেন সম্পূর্ণ বিনামুল্যে! অভ্র সহজ করে বাংলা লেখার মাধ্যম হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা লিখছি আমাদের মায়ের ভাষায়। মেহদী’র সাথে রিফাত-উন-নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম, রাইয়ান কামাল, শাবাব মুস্তফা এবং নিপুন হক এর মতো এক ঝাঁক তরুণ এখন যোগ দিয়েছে অভ্র'র দলে। অভ্র’র কর্মীরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে বাংলা ভাষা লেখার প্রকৃয়াকে আমাদের জন্য আরো সহজ ও সাবলীল করে তুলতে।

মেহদী’র এই অবদান শুধু যে ভাষার জন্য অবদান তা নয়! মেহদী এখন আগামীর তরুণদের জন্য অনুসরনীয় এক চরিত্র। শুধুমাত্র ইচ্ছা আর একাগ্রতা থাকলেই মানুষ যে, যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারে মেহদী তা প্রমাণ করেছে। ডাক্তারী পড়াশোনা করেও গড়ে তুলেছে অভ্র’র অমিক্রন ল্যাব। মেহদী ও অভ্র’র দল কি বাংলা ভাষার জন্য অতীব গুরত্বপূর্ণ এই অবদানের জন্য একুশে পদক পেতে পারে না?

[লেখাটি একই সাথে নতুন দেশ এ প্রকাশিত-http://www.notundesh.com/motmotantor.html]
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:৫৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×