somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চলেপথিক
আমি মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, কারণ মুক্তচিন্তা হলো এমন এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি যা বলে যে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ , মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধবিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় ।

মুক্তচিন্তাঃ আমার ধর্মভাবনা

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তচিন্তা; আমার ধর্ম ভাবনা


অন্য সব সাধারণ বাঙালি মুসলমান পরিবারের মতই আমারও শৈশবে হাতেখড়ি হয় আল-কুরআন এর প্রথম সূরা আল-ফাতেহা আবৃতির মধ্যমে রীতিমত পাড়ার সব বাসায় মিষ্টি বিতরন করে । সে সময় আমাদের পারিবারিক ভাবে প্রতিদিন মক্তবে যাওয়ার একধরনের বাধ্যবাদগতা ছিল। তেমনি আবার আমাদের সকল সম-বয়সীদের মধ্যেও প্রায় প্রতিযোগিতা মূলক ভাবে কুরআন শিক্ষা গ্রহণের এক ধরণের প্রবণতাও ছিল । আমরা কয়েক জন ব্যতিত আর সবাইকে দেখেছি বেশ ভক্তি ও মনোযোগ সহকারেই হুজুরের কাছ থেকে পাঠ নিতে । তবে আমাদের আবার পাঠের চেয়ে বেশী আগ্রহ ছিল মক্তবে পড়তে আসা পাড়ার কিশোরী মেয়েদের সাথে খুনশুটি করায় । তাও অল্প কিছু দিনের মধ্যে সে আগ্রহেও ভাটা পড়ে, ফলে সেই কৈশোরেই আমার মোটামোটি ধর্মীয় শিক্ষার ইতি ঘটে যায় ।

মাঝের সময় গুলোতে ধর্ম চর্চার সীমা হয়ে পড়ে শুধু মাত্র প্রতি সপ্তায় একদিন ও বছরের দুই ঈদের নামাজ এবং সামাজিক ভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মিলাদ মহফিল কূলখানিজাতিয় ধর্মীয় অনুষ্টানে অংশগ্রহণ করার মধ্যে । একটা সময়ে এই জাতীয় কর্ম গুলিও আর করা হয়ে উঠেনি । বয়সের একটা পর্যায়ে এসে দেখি বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই বেশ ধর্মানুরাগী হয়ে পড়েছে । লম্বা দাঁড়ি রেখে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী, আবার অনেকেই হাজী সাহেব যাদের প্রায় সকলেই মিথ্যা কথা বলা থেকে শুরু করে অনৈতিক অর্থ উপার্জন কোনটাই এখনও ছাড়েনি । এদিকে আমিও নিজের মধ্যে পারিবারিক ও সামাজিক কারণে ধর্ম পালনের জন্য এক ধরনের চাপ অনুভব করছিলাম । তাই ভাবলাম ধর্ম যদি পালন করতেই হয় তবে তা ভালভাবে যেনে বুঝে করাটাই সঠিক হবে । মুলত এমন ভাবনা থেকেই আমার আবার ধর্ম নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহের শুরু । আগ্রহের কারণে ধর্ম সম্পর্কে আমি নতুন ভাবে কি জানলাম ও বুঝলাম, কেন জানি মনে হলো তা অন্যদের সাথে একটু ভাগাভাগি করি । মূলত সে উদ্দেশ্যেই আমার এই লেখা ।

আমরা জানি কোন বস্তুর ধর্ম হচ্ছে তার স্বভাব ও প্রকৃতি সে ক্ষেত্রে অবশ্যই যে কোন প্রানেরও ধর্ম হবে তার স্বভাব ও প্রকৃতি। তাই প্রাণের প্রধান ধর্ম বেঁচে থাকার জন্য খওয়া ও টিকে থাকার জন্য বংশ বিস্তার করা । তবে মানুষ যেহেতু প্রাণী জগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী তাই তার কিছুটা ভিন্ন বৈশিষ্ঠ থাকতেই পারে, কিন্তু তাই বলে শাস্ত্রনিদিষ্ট বিধিবিধান কেন তার ধর্ম হবে ? যে খানে শাস্ত্রনিদিষ্ট বিধিবিধান বলতে বোঝায় যুক্তিহীন কিছু বিশ্বাসের সাথে সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনা ও কিছু অদ্ভুত নিয়মাবলী অনুসরণ করা মাত্র ।
মানব জাতির প্রধানতম কাজ বিধাতার প্রার্থনা করা ? যদি তাই হয় তাহলে এ প্রার্থনার কারণে মানবের অন্য সব কাজকর্ম বিধাতা নিজেই সম্পাদন করে দেন না কেন ? কিন্তু বিধাতা এমন করেন না কারণ আসলে বিধাতা কারও প্রার্থনার প্রত্যাশী নন । প্রার্থনা হচ্ছে এক ধরনের ভাবাবেগ এইটি মানুষের একটি প্রতিক্রিয়া । এমন প্রতিক্রিয়া বিধাতার মধ্যে কোনভাবেই থাকার কথা নয় , যেহেতু বিধাতা মানুষের মত নন । প্রাণীকুলের পার্থিব সকল বস্তুই বিধাতা সৃষ্টির সূচনা লগ্নেই এ পৃথিবীতে প্রথিত করেছেন তার পর প্রাণের সঞ্চার করেছেন, এটি প্রমানিত । তাই তাঁর কাছে মানুষ আবেদন নিবেদন করলেই তিনি তা পুরন করবেন এমন বিশ্বাসের পেছনে আসলেই কোন যুক্তি নেই । কেনই বা বিধাতা তার সিন্ধান্তের পরিবর্তন ঘটাবেন ? আর যদি পরিবর্তন করতেই হয় তা হলে এমন সিদ্ধান্ত বিধাতা নেবেনই বা কেন যা তাকে পরে মানুষেরই অনুরোধে ফিরিয়ে নিতে হবে ! আর কেনই বা তিনি এ বিষয় নিয়ে সময় ব্যয় করবেন যা তিনি একবারেই করে দিয়েছেন ?
রইলো ঈশ্বর এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন। যেখানে মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নেওয়ার জন্য বিধাতার কাছে কোন আবেদনই করেনি, এই বিপদ সংকুল পৃথিবীতে যেখানে মানুষের বেঁচে থাকাটাই দায় ! সেখানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রয়োজন কেন এটি আমার বোধগম্য নয় । এটি তো স্রষ্টার দায় পৃথিবীতে প্রাণীকুল টিকে থাকবে কি থাকবে না ? সে দায় তিনি মিটিয়েও যাচ্ছেন পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণীকুলের খাদ্যের যোগান দিয়ে । অথচ দেখা যায় প্রাণীকুলের মধ্যে এক মাত্র সদা প্রার্থনারত মানুষই শুধু ক্ষুধা তৃষায় মারা যায় । তাহলে মানুষ বিধাতাকে নিয়ে এত ভাবিত কেন ?
যেখানে মানব জাতির পক্ষে এই বিশ্বের বেশীর ভাগ রহস্যেরই কিনারা করা সম্ভব হয়নি, সেখানে সব রহস্যের স্রষ্টা অসীম বিধাতাকে এত সহজ উপায়ে আবিস্কার করার এমন ব্যকুলতা কেন ? বাংলা ভাষায় একটি বাগধারা আছে ‘ যত মত তত পথ’ তাই দেখা যায় ধর্মবাদীরা নানা মতে বিভক্ত । নানা পথে ঈশ্বর এর সেবায় নিয়জিত এবং সংঘাতে লিপ্ত । তারপরও মহান ঈশ্বর তাদেরকে একমতে ও একপথে হাঁঠতে সহযোগিতা করেন না । তবে কি মানুষে মানুষে সংঘাতই বিধাতার অন্যতম পছন্দ ? যদি তা না হয় তাহলে অসীম ক্ষমতাবান বিধাতা মানব কে এক কাতারে দাঁড় করান না কেন ? তিনি ইচ্ছা করলে যা অনায়সে পারেন তা তিনি কেন করছেন না ?
কারণ তিনি তা পারে না বলেই মনে হয় বিধাতার বিধান নিয়ে এত মত এত পথ এর সূচনা । তাই মানুষ বিধাতাকে তার নিজের মত প্রতিষ্টা করার জন্য এত ব্যাকুল । এর পিছনে কতিপয় মানুষের এই মরিয়া প্রচেষ্টার কারণ কি ? কেন মানুষ ধর্মের নামে একে অপরের জীবন নিতেও প্রস্তুত যে খানে মানুষ বেশ ভালভাবেই জানে এই পৃথিবীতে তার অবস্হান খুবই অল্প সময়ের ?এই পরম সত্যিটা জানার পরও কেন মানব জাতির ভাবনায় ধর্ম এমন গুরুত্বপূর্ণ অবস্হান নিয়ে রেখেছে , কেনই বা সে বিধাতার ভয়ে আচ্ছন্ন ? সেটি মৃত্যুর পর যে জীবন সে জীবনে আরাম আয়েশে থাকার যে স্বপ্ন ধর্ম মানবকে দেখিয়েছে সে লোভ নয় কি ? লোভ-লালসা হচ্ছে মানুষের এমন এক প্রবৃত্তি যাকে ব্যবহার করে মানুষকে দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করিয়ে নেওয়া যায় এইটি আমরা আমাদের আশে-পার্শ্বে অহরহ দেখতে পাই । ধর্ম মূলত মানুষের এই প্রবৃত্তিকেই কাজে লাগিয়ে মানুষের উপর এমন কর্তৃত্ত প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে । কাজ নগদ, ফল বাকি এমন বোকামি শুধুমাত্র লোভী মানুষরাই সাধারণত করে থাকে ।
আমরা যদি মানব জাতির ইতিহাসের দিকে তাকাই তা হলে দেখতে পাই আজকের আধুনিক মানবে পরিণত হতে মানব জাতিকে প্রায় ১৫ হাজার বছর অতিক্রম করতে হয়েছে । শুধু মাত্র বেঁচে থাকার জন্য তাকে ক্রমাগত লড়তে হয়েছে ক্ষুদা আর বৈরি প্রকৃতির বিরুদ্ধে । প্রকৃতির সাথে এই অসম লড়াইয়ে মানুষ জয়ী হয়েছে ঠিক, তবে মানুষের এই বিজয় এর সাথে মিশে আছে তার বেঁচে থাকার প্রবল আকুতি আর সে সঙ্গে প্রচন্ড বুদ্ধিমত্তা । পৃথিবীতে যত সচল প্রাণী রয়েছে তাদের মধ্যে সাধারণ যে বিষয়টির মিল রয়েছে তা হলো মৃত্যু ভয় । সকল প্রাণীর মধ্যেই এই ভয়টি ক্রিয়াশীল এবং মানুষের মধ্যে এটি আরো অধিক মাত্রায় সক্রিয় আর এই মৃত্যুভয়ই মানুষকে বেঁচে থাকার বুদ্ধি যোগায় । বিরূপ প্রকৃতি আর জন্ম-মৃত্যুর এই নিয়মই মূলত মানবের মনে ঈশ্বর ভাবনার কারণ হিসাবে দেখা দেয় । প্রকৃতির এতসব কান্ডকৃতী কে নিয়ন্ত্রণ করে এ-প্রশ্নের জবাব খুজতে যেয়েই মানুষ বিভিন্ন ভাবে এই মহাশক্তি কে নিজেদের মত বিশ্লেষণ করতে থাকে । মানুষের এই বিশ্লেষণ ক্ষমতাই মানব সমাজে ধর্মের আগমন ঘটায় যা আমরা গ্রীক, ঈজিপ্সিয়ান, চায়নিজ ও ভারতীয় পুরাণ গুলোতে দেখতে পাই । এই পৌরাণিক কাহিনী গুলিরই কয়েকটি বর্তমানে সনাতন ধর্ম হিসাবে আজও বেশ দাপটের সাথে আমাদের সমাজে প্রতিষ্টিত। যদিও এ সময়ে পৃথিবীতে মানব সভ্যতার চরম উৎকর্ষতা বিরাজমান।
সভ্যতা যত এগিয়েছে মানুষের চিন্তার পরিধি তত বিস্তৃত হয়েছে ,উন্নতি ঘটেছে মানুষের ভাষা শৈলির। ভাষার উৎকর্ষতা ধর্মীয় ভাবনায়ও এনেছে পরিবর্তন যার পরিপ্রেক্ষিতে উৎপত্তি ঘটেছে আধুনিক অনেক ধর্মমতের যেমন, কর্ণফুসিয়, বৌদ্ধ, শিখ, ইহুদী, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্ম ইত্যাদি ।
এই আধুনিক ধর্ম গুলোতে দেখা যায় তারা দেবতা তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে এসে ঈশ্বরের প্রতিনিধি তত্ত্বে আর্বিভুত হয়েছে । ধর্মের এই নতুন তত্ত্বের অন্যতম কারণ হছে মানুষের মধ্যে দার্শনিক জ্ঞান এর সূত্রপাত । এই জ্ঞান দ্রুতই দেবতা তত্ত্বের অসাড়তা প্রমাণ করে দেয় ফলে সৃষ্টি হয় প্রতিনিধি তত্ত্ব । আধুনিক ধর্মগুলোর মধ্যে কেবল মাত্র খ্রিস্টান ধর্মের ত্রিত্ব ধারণা ব্যতীত অন্য সব ধর্মের মধ্যে একশ্বরবাদী বিশ্বাসের প্রতি এক ধরনের ঐক্যমত থাকলেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধও রয়েছে প্রচুর । সৌভাগ্যবসত মানুষ তার খাড়া মেরুদণ্ড, দুটি হাত ও ভাব প্রকাশে ভাষা ব্যবহারের পারদর্শিতার কারনে খুব দ্রুতই বেঁচে থাকার প্রতিবন্ধকতা গুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে সফল হতে থাকে । এই সফলতাই মানুষের চিন্তার জগতে বিপ্লব ঘটায়, বুদ্ধিবৃত্তির এই উৎকর্ষতা মানুষকে পৌছে দেয় সভ্যতার চরম শিখরে ।
প্রকৃতির নিয়মেই সময়ে সময়ে পৃথিবীতে জন্ম নেয় কিছু জ্ঞানী মানুষ । তাদের মধ্যে কিছু বুদ্ধিমান লোক মানুষ কে নিজের মতো নিয়ন্ত্রন করার আভিপ্রায়ে সৃষ্টি করে কিছু নিয়ম ও কাল্পনিক বিশ্বাস যা পরবির্তীতে ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্টিত হয় । এই সকল ধর্মে ঈশ্বর, ঈশ্বরের কর্ম-কান্ড ও সৃষ্টি সম্পকৃত বিশ্বাস গুলো বরাবরই কাল্পনিক। সে ক্ষেত্রে বরং কিছুটা ব্যতিক্রম হচ্ছে কর্ণফুসিয় ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম ও ইসলাম ধর্ম। এই ধর্ম গুলোর মধ্যে যদিও ধর্মবিশ্বাস গুলোর সাথে সমন্বয় ঘটেছে নৈতিকতা, সমাজ, রাষ্ট্রনীতি ও দার্শনিক ভাবনার কিন্তু, ঈশ্বর সম্পর্কিত বিষয় গুলো বরাবরের মতই পৌরাণিক কাহিনী নির্ভর, শুধু নাম সমূহের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে মাত্র ।
আজকের পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত ধর্ম গুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সব ধর্মেরই রয়েছে একটি করে প্রধান ও আঞ্চলিক প্রার্থনা কেন্দ্র, রয়েছে প্রার্থনা করার একটি নিদৃষ্ট ভঙ্গী এবং নির্ধারিত দিক । একটি করে ধর্মগ্রন্হ ও একজন করে ধর্মপ্রবক্তা, রয়েছে বিশেষ বিশেষ দিন ও উৎসব, নিদৃষ্ট ডিজাইন এর পোশাক, যাজক, পুণ্য প্রাপ্তির জন্য যাজক কে উপটৌকন ও নগদ অর্থ প্রদান। মৃত্যুর পর বিচারের ব্যবস্হা, রয়েছে পাপ পুণ্যের জন্য শাস্তি ও
পুরুস্কার স্বরূপ স্বর্গ-নরক প্রাপ্তির বিধান । মৃত দেহের সৎকার সহ পরবর্তীতে নানান ধরণের আচার অনুষ্ঠান ইত্যাদি বিষয় গুলি সব ধর্মেই একই রকম যেটুকু পার্থক্য তা শুধু নামে, ভঙ্গিতে ও আচারে । মানবের সৃষ্টি, বিশ্ব সৃষ্টি , মহাপ্রলয়, বিচার ও স্বর্গ-নরক সম্পর্কে সবগুলো ধর্মে মিল থাকা শর্তেও তারা কেন একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছে এটি অবাক করা ব্যাপার । সব চেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো এই বিশ্বের আনুমানিক ২১০ কোটি ক্রিষ্টান, ১৪০ কোটি মুসলমান, ৯০ কোটি হিন্দু, ৩৯ কোটি ৪০ লক্ষ চিনা লোকধর্ম ও ৩৭ কোটি ৬০ লক্ষ বৌদ্ধ সহ প্রায় ৬০০ কোটি মানুষকে মাত্র কয়েক কোটি ধর্ম যাজক বোকা বানিয়ে রেখেছে । আধুনিক সভ্যাতার দাবীদার বর্তমান সময়ের মানবকুলের এর চেয়ে লজ্জার কারণ আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না ।
আপনারা যারা ধর্মে বিশ্বাস রাখেন তাদের কাছে আমার বিনিত প্রার্থনা, অনুগ্রহ করে একবার নিজ ধর্মগ্রন্হটি
মাতৃভাষায় পড়ুন । আমার ধারণা বিষয়টি আমার মত আপনারাও অনুধাবন করতে সমর্থ হবেন । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মহান স্রষ্টা , যিনি এই পৃথিবী ও বিশাল সৌরজগৎ সৃষ্টি করেছেন । সেই তিনি আতি সাধারণ কিছু নীতি কথা ব্যক্ত করার জন্যই কি এই গ্রন্হ গুলো রচনা করেছেন ? তিনি মানুষকে আতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি , ঝড়-ঝঞ্জা , ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার কলা কৌশল শিক্ষা না দিয়ে কয়টা বিয়ে করা যাবে , সম্পদ কিভাবে ভাগ বাঁটোরা করতে হবে , ধর্মের বিরুদ্ধকারিদের কি ভাবে হত্যা করতে হবে এ সব আদেশ নির্দেশ প্রদান করেছেন । এমন বিশ্বাস করার অদৌ কোন কারণ থাকতে পারে কি ?
মুসলমানদের প্রবিত্র ধর্মীয় প্রন্হ ‘ আল-কুরআন ‘ এ যে বিষয় গুলো উল্লেখ রয়েছে তার মধ্যে কিছু কথা রয়েছে যে গুলোর বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা দেওয়া যায় । আবার এমন কিছু উন্নত নৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় রয়েছে যে গুলোর প্রশংসাও করা চলে । কিন্তু বিষয় গুলি একেবারেই আনকোরা নয় যে তা এর আগে কেউ কখনও বলেননি । যাদের বিভিন্ন ধরনের বই পুস্তক পড়ার অভ্যেস আছে তাদের এ বিষয়টি বেশ ভাল ভাবেই জানা আছে বলে আমার বিশ্বাস ।
ধর্মগ্রন্হ গুলোতে শ্লোক আকারে যা লিখা আছে তা যেমন, ভগবৎ গীতার কুরুক্ষেত্রের যুধের বর্ণনা , বাইবেলের লুক লিখিত সুস্মাচার ও কুরআনের সূরা এই গুলিতে যা আছে সে গুলি আবৃত্তি করে প্রার্থনায় একাগ্রতা আনা কি করে সম্ভব এটি কোন ভাবেই আমার বোধগম্য নয় । এর একটি উদাহরণ আল-কুরআনের একটি সূরা থেকেই দেওয়া যায় যেমন , সুরা লাহাব –
“ ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজে ।
তার ধন-সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন উপকারে আসবেনা,
এবং তার স্ত্রীও যে ইন্ধন বহন করে ,
তার গলদেশে শক্ত পাকানো রশি রয়েছে । “

-----------





















































































সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৪
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×