somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চলেপথিক
আমি মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, কারণ মুক্তচিন্তা হলো এমন এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি যা বলে যে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ , মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধবিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় ।

ইসলাম একটি রাজনৈতিক মতবাদ

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪র্থ কিস্তিঃ-
মঙ্গল নেতা হুলাগু খানের বাগদাদ দখলের মধ্য দিয়ে মুলত ১২৮৫ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাসীয় খিলাফতের বিলুপ্তি ঘটে । তবে মামলুক শাসিত মিশরে অবস্থান করে আব্বাসীয়রা ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কর্তৃত্ব দাবী করতে থাকে । কিন্তু ধীরে ধীরে ক্ষমতা উসমানীয়দের হাতে চলে যায় ।
১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দেই আব্বাসীয়দের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে উসমানীয়রা খিলাফতে অধিষ্টিত হয় এবং কনস্টান্টিনোপলে রাজধানী স্হাপন করে । উসমানীয় সাম্রাজ্য ঐতিহাসিক ভাবে তুর্কি সাম্রাজ্য বা তুরস্ক বলে পরিচিত । ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তুর্কীয় জাতিসমূহ সামানিয়দের বিভিন্ন ধর্ম চর্চা করতো । মধ্য এশিয়ায় আব্বাসিয়দের ইসলাম প্রচারে এই বিষয়টি সহায়ক হয় । সেজলুক ও উসমানীয়দের পূর্বপুরুষ অঘুজ তুর্কীরা অন্যান্য অনেক তুর্কী গোত্রের মত ইসলাম গ্রহণ করে । তারা ১১শ শতাব্দীর শুরুর দিকে আনাতোলিয়ায় ইসলাম নিয়ে আসে । ১৫১৪ সালে সুলতান প্রথম সেলিম মধ্যপ্রাচ্যে নজিরবিহীন ভাবে ও দ্রুততার সাথে সাম্রাজ্য সম্রসারণ করেন এবং মিশরের মামলুক সালতানাতের সমগ্র অঞ্চল জয় করে নেন ।
সালতানাতের প্রতিষ্টাতা প্রথম উসমানের নাম থেকে উসমানীয় বা অটোমান নামটি এসেছে । উসমানীয় সাম্রাজ্য তিন মহাদেশ এশিয়া , ইউরোপ ও আফ্রিকা ব্যাপি বিস্তৃত ছিল । এই সময় উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বৃহৎ অংশ হয়ে উঠে । সাম্রাজ্য সর্বউচ্চ সীমায় পৌছার সময় উসমানীয়রা কনস্টান্টিনোপল থকে আনাতোলিয়া, অধিকাংশ মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ককেশাস এবং পূর্ব ইউরোপের অনেক গভীর পর্যন্ত শাসন করতো । ভূমধ্য সাগরের অধিকাংশ এলাকা উসমানীয়রা নিয়ন্ত্রন করতো এই সময় উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক শ্রেষ্টত্ব রোমান সাম্রাজ্যের সাথে তুলনা করা হতো ।
কিন্তু ক্রমানয়ে অযোগ্য শাসক এবং সামরিক প্রযুক্তির দিক থেকে ইউরোপীয়দের কাছ থেকে পিছিয়ে পড়া ও কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্হার দুর্বলতা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এর ফলে প্রাদেশিক অভিজাত ব্যক্তিবর্গ ধীরে ধীরে কনস্টান্টিনোপলের শাসনকে উপেক্ষা করতে থাকে । এই সময় শিল্পবিপ্লবের ফলে ইউরোপীয়দের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় । উসমানীয়রা দুর্বল নেতৃত্ব, প্রাচীন ধ্যনধারণা এবং ইউরোপীয়দের সাথে প্রযুক্তিগত বিষয়ে তাল মিলিয়ে চলতে না পারায় তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে ব্যর্থ হয় এবং বৃহৎ শক্তির অবস্হান থেকে স্হানচুত হয় ।

উন্নিশ শতাব্দীর শেষের দিকে উসমানীয় খিলাফতের সমস্যাগুলো যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় । ইউরোপীয় আগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিও কিছুকাল ধারণ করা হয় । এই সময় পাশ্চাত্য দণ্ডবিধি গ্রহণ করা হয় এবং ঐতিহ্যবাহী আইনগুলি ইউরোপীয় আইন দ্বারা প্রতিস্হাপিতও করা হয় তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি ।

বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম এই সাম্র্যজ্যটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে উপনীত হওয়ার কারণ, যদিও মুসলমানদের প্রাচীন ধ্যনধারনা ও ইউরোপীয়দের সাথে প্রযুক্তিগত বিষয়য়ে তাল মিলিয়ে চলতে না পারাকে চিহ্নিত করা হয় । কিন্তু এর আসল দায় মূলত ইসলামের শরিয়ত পন্থী মোল্লাদের । তারা আব্বাসীয় আমলে সূচিত জ্ঞান বিজ্ঞানকে ইসলামী বিশ্বাস এর পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে সে যুগের শ্রেষ্ঠ জ্ঞাণী ব্যক্তিদের নিপীড়ন আর বায়তুল হিকমার মত গবেষণা কেন্দ্রটি ধ্বংসের মাধ্যমে এর সুচনা করেন ।

৯ম শতাব্দীতে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে মক্তব নামক প্রতিষ্ঠা গড়ে উঠতে থাকে এবং ১১ শতকে নিজামুল মুলক নামক প্রভাবশালী রাজকর্মকর্তা ‘ নিজামিয়া মাদ্রাসা ‘ নামক মাদ্রাসা গড়ে তুলে ইসলামী শিক্ষাকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করেন । ফলে মুসলিম জগত এক প্রাচিন অকার্যকর শিক্ষাব্যবস্তার মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে স্বাভাবিক চিন্তাভাবনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে । আর ইউরোপ ও আমেরিকারর মিলিত শক্তি মুসলিম জগতের গবেষণালব্ধ এই জ্ঞান ব্যবহার এর মাধ্যমে অরজিত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহাজ্যে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে আজ শাসন এবং শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ নগাদ উসমানীয়রা দৃশ্যত তাদের সমগ্র সাম্রাজ্য হারান । সিংহাসন এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য খলীফা মিত্রশক্তির সাথে সহযোগিতা করতে সম্মত হন । এই সময় বৃটিশ ভারতের মুসলিমরা উসমানীয় খিলাফতের পক্ষে খিলাফত আন্দোলন শুরু করে । এর উদ্দেশ্য ছিলো যুদ্ধের পর বৃটিশ সরকার খিলাফতকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে ।
অচিরেই উসমানীয়দের পরাজয় ও মিত্রশক্তির কনস্টান্টিনোপল দখলের ফলে উসমানীয় সাম্রাজ্য তাদের সকল স্হান হারায় ফলে তুরস্কে জাতীয় আন্দোলনের সূচনা ঘটে । এই আন্দোলনের ফলে তুরস্কে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি গঠিত হয় । ন্যাশনাল এসেম্বলি ১৯২৩ সালের ২৯শে অক্টোবর তুরস্ককে প্রজাতন্ত্র এবং আঙ্কারা কে এর রাজধানী ঘোষণা করে । এই সময় দ্বিতীয় আবদুল মজিদ কে খলিফা হিসাবে বসানো হয় , কিন্তু তখন এই পদে আর কোন কর্তৃত্ব অবশিষ্ট ছিলনা । মুল ক্ষমতা ছিল তুর্কি জাতীয়তাবাদী নেতা মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক এর হাতে ।

এই পর্যন্ত লাভ করা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য কামাল এ সময় খিলাফত উচ্ছেদে আগ্রহী ছিলেন না । তুরস্কের সাধারণ জনতারও খিলাফতের প্রতি সমর্থন ছিল । কিন্তু ভারতের খিলাফত আন্দোলনের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ আলী এবং মাওলানা শওকত আলী উসমানীয় খিলাফত রক্ষার জন্য তুরস্কের জনগণকে আহব্বান জানিয়ে লিফলেট বিলি করেন । তুরস্কের নতুন জাতীয়তাবাদী সরকার একে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করে । এটিকে তুরস্কের সার্বভূমত্বের প্রতি অপমান ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসাবে দেখা হয়। ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ ন্যাশনাল এসেম্বলি খিলাফত বিলুপ্ত করে এবং উসমানীয় পরিবারের সকল সদস্যসহ খলিফা আবদুল মজিদকে ফ্রান্সে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয় । এর ফলে অবসান ঘটে পৃথিবীর ইতিহাসের সর্ব শেষ খিলাফত, উসমানীয় খিলাফতের ।

উসমানীয় সাম্রাজ্যে জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে ১৮২১ সালের দিকে মুলত আরব মুসলিমদের মাধ্যমে । আরবিয় মুসলমানরা মনে করেন যেহেতু নবীর সাথে তাদের আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে তাই তারা মুসলিমদের মধ্যে আলাদা মর্যাদার আধিকারি । সেকারনেই তারা অনারব উসমানীয়দের খিলাফত প্রতিষ্টাকে মানসিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি । আরব জাতীয়তাবাদীদের ভিত্তি ভূমি ছিল মিশরের পূর্বদিকের আরব ভূমি শামে । আরব জাতিয়তাবাদের রাজনৈতিক ঝোঁক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে সহনীয় পর্যায়ে ছিল । তাদের দাবীগুলো ছিল সংস্কারবাদী ধরণের । যেমন সাধারণ স্বাত্বশাসন , শিক্ষায় আরবির ব্যবহার বাড়ানো ও শান্তিকালীন সামরিক বাহিনীতে যোগদানের পরিবর্তন এই জাতিয় । এ পর্যায়ে আরব জাতীয়তাবাদীদের কোন গণআন্দোলন ছিল না । অধিকাংশ আরবই তাদের ধর্ম, গোত্র ও নিজেদের সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতো । তবে প্যান-ইসলামিক ধারণা আরব জাতীয়তাবাদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ।

১৯১৬ সালের ৮ই জুন পবিত্র শহর মক্কার অভিবাবক হুসাইন বিন আলীর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এর পক্ষে যোগদানের মধ্য দিয়ে আরবদের আনুষ্ঠানিক বিদ্রহের সুচনা হয় । হুসাইনের পক্ষে ৫০,০০০ এর মত অস্ত্রধারী লোক ছিল । কিন্তু এর মধ্যে রাইফেলধারীর সংখ্যা ছিল ১০,০০০ এরও কম । উসমানীয় সরকার যুদ্ধের পর তাকে পদচ্যুত করবে এই খবর পেয়ে তিনি বৃটিশ হাই কমিশনার হেনরি ম্যাকমোহনের সাথে চিঠি বিনিময় করেন । মিত্রশক্তির পক্ষ অবলম্বন করলে মিশর থেকে পারস্য পর্যন্ত বিস্তৃত আরব সাম্রাজ্য দেওয়া হবে বলে তাকে আশ্বাস দেয়া হয় । এই সময় হসাইন বিন আলী কাগজে কলমে উসমানীয়দের পক্ষের হলেও মিত্র শক্তির সাথে গোপনে সম্পর্ক স্হাপন করেন ।

১৯১৬ সালের ১০ই জুন হুসাইন তার সমর্থকদের মক্কায় উসমানীয় ঘাঁটি আক্রমণের আদেশ দিলে বিদ্রহ প্রকৃত ভাবে শুরু হয় । সুসজ্জিত উসমানীয় সেনাদের সাথে হুসাইনের সমর্থকদের মধ্যে এক মাসের মত রক্তাত্ত লড়াই হয় । বৃটিশদের পাঠানো মিশরীয় সৈনিকরা মক্কার হাসমিদের সাথে যোগ দেয় ও অস্ত্রের সরবরাহ প্রদান করে । ৯ই জুলাই নাগাদ আরব তাদের দখলে চলে আসে ।
উসমানীয়দের এলোপাথাড়ি গোলাবর্ষণ মক্কার ক্ষতির কারণ হলে তা “ পবিত্র শহর মক্কার অমর্যাদা করেছে “ এমন অপপ্রচারের সুযোগ করে দেয় । এদিকে জুলাইয়ের ১০ তারিখে হুসাইনের পুত্র আমির আবদুল্লাহ তাইফ আক্রমণ করে এবং মিশরীয় বাহিনীর সহায়তায় ২২শে সেপ্টেম্বর তাইফ দখল করে নেয় । ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের দিকে উসমানীয় সৈনিকরা পিছু হটতে থাকে এবং বৃটিশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে থাকে । বৃটিশ সেনা অফিসার লরেন্স এর নেতৃত্বে অনিয়মিত আরব বাহিনী ও বৃটিশ নিয়মিত বাহিনীর সাথে যুদ্ধে উসমানীয় বাহিনী ১০দিনের মধ্যেই পরাজিত হয় ।

উসমানীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্রহ করলে আরবদের স্বাধীনতাকে সমর্থন করা হবে, এই মর্মে যুক্তরাজ্য হুসাইন ও ম্যাকমহোন চুক্তিতে রাজি হয়েছিল । চুক্তির বিষয়ে উভয়পক্ষের নিজস্ব অভিমতও ছিল । কিন্তু যুদ্ধের পর যুক্ত্যরাজ্য ও ফ্রান্স মুল চুক্তি পরিত্যাগ করে এবং অধিকৃত এলাকাকে ১৯১৬ সালের পিকট চুক্তি মোতাবেক বিভক্ত করার পরিকল্পনা করে ।
আরবদের কাছে এটি সন্তোষজনক ছিল না, আবার ১৯১৭ সালে বেলফোর ঘোষণা আরও সন্দেহের সৃষ্টি করে । এই ঘোষণায় ইহুদীদের জন্য ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র ঘোষণার কথা বলা হয় । ফলে আরবের শুধু মাত্র পশ্চিম অংশের হেজাজ অঞ্চল (বর্তমানে মক্কা ও মদিনা হিসাবে পরিচিত) হুসাইন বিন আলীর নেতৃত্বে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয় । হুসাইন বিন আলী নিজেকে এই নবগঠিত মুসলিম রাষ্ট্রের খলিফা হিসাবে ঘোষণা করেন এবং ১৯২৫ সাল পর্যন্ত স্বাধীনতা বজায় রাখেন । এর পর বৃটিশরা তাদের সমর্থন সৌদ পরিবারের দিকে ঘুরিয়ে দেয়, সৌদিরা ইবনে সৌদের নেতৃত্বে হেজাজ দখল করে নেয় । আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ বর্তমান সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা ও সৌদি আরবের প্রথম বাদশা ।

আব্দুর রহামান বিন ফয়সাল ছিলেন আব্দুল আজিজ ইবনে সৌদ এর বাবা । আল সৌদ তথা তার পরিবার মধ্য আরবে পূর্বে প্রায় ১৩০বছর ধরে শক্তিশালী ছিল । তারা ওয়াহাবি মতাদর্শের সমর্থক ছিলেন। সৌদিরা আরব উপদ্বীপের অনেকাংশ জয় করে প্রথম সৌদি রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন । পরে ১৯শতকের প্রথম দিকে উসমানীয় শাসনাধীন মিশরের হাতে তা ধ্বংস হয়ে যায় ।

ইবনে সৌদ ১৯০২ সালে রিয়াদে তার পূর্ব পুরুষদের অঞ্চল জয় করতে সমর্থ হন। ১৯২২ সালে তিনি নজদে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং ১৯২৫ সালে হেজাজ জয় করেন। তার বিজিত অঞ্চল গুলো নিয়েই ১৯৩২ সালে সৌদি আরব রাষ্ট্র গঠন করা হয় ।
তিনি বাদশা থাকাকালীন সময়ে সৌদি আরবে তেল আবিস্কার হয় এবং উন্নতির সূচনা ঘটে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সৌদি আরব সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠে । বাদশা ইবনে সৌদের অনেক স্ত্রী এবং ৪৫জন পুত্র সন্তান ছিল। পরবর্তীতে প্রত্যেকটি বাদশাই তার সন্তানদের মধ্য থেকে মনোনীত হয়েছেন । সৌদিরাও পূর্ববর্তি মুসলিম শাসকদের অনুকরণে ইসলামের গণতান্ত্রিক খেলাফত প্রতিষ্ঠার বদলে ইসলামিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ধারাকে বজায় রাখেন ।

এই পর্যন্ত আমি যা বর্ণনা করলাম তা হচ্ছে ইসলামের ইতিহাসের একটি সংক্ষিপ্ত রূপ । এ ক্ষেত্রে আমি চেষ্টা করেছি একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামের সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরার । কারণ আমি মনে করি অক্ষরজ্ঞান সম্পূর্ণ প্রতিটা মুসলমানেরই প্রয়োজন রয়েছে ইসলামের নির্মোহ ইতিহাস জানার । এই জানার মাধ্যমেই আমরা সত্যিকার অর্থে উপলব্ধি করতে পারবো ইসলাম কতটা ধর্মীয়, আর কতটা রাজনৈতিক মতবাদ । আমি শুরুতে লিখেছিলাম আমার লিখার মূল বিষয় নবী মুহাম্মদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্ম । যেহেতু নবী মুহাম্মদ ইসলামী বিশ্বাস মতে একজন নবী এবং একজন নবীর প্রধানতম কাজ ধর্ম প্রচার, সেহেতু তুলনামূলক আলোচনায় ধর্মীয় দিকটিকে একেবারে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই । তাই প্রসঙ্গগত কারনে এটি হয়তো বারবার আলোচনায় এসে যাবে ।
আমরা এই বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলোর দিকে যদি দেখি, তার মধ্যে আব্রাহামিয় ধর্ম গুলো প্রচারের সময়কার সত্যিকার যে ইতিহাস আমরা জেনেছি ও আল-কুরআনের বিভিন্ন সুরায় বর্ণীত আহলে কিতাবীদের সম্পর্কে যেসব ঘটনা আমরা পড়েছি তা থেকে অন্তত এটুকু বোঝা যায় যে, কোন ধর্মমতই খুব সহজে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়নি । প্রতিটা ধর্ম প্রচারকই যার যার সময়কার সমাজের প্রচলিত ধ্যনধারণায় বিশ্বাসী সাধারণ জনগণ এবং ক্ষমতাসীনদের কাছে প্রচন্ড ভাবে বাঁধাগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি তাঁরা নানা ভাবে নির্যাতিত হয়েছেন এবং কেউ কেউ নির্মম ভাবে খুন হয়েছেন । এবং দেখা যায় সে সময় যে জনগোষ্ঠী দ্বারা তাঁরা নির্যাতিত বা নিহত হয়েছিলেন পরবর্তীতে সে সকল জনগোষ্ঠী তারা তাদের নিজেদের মত করে এসব নবীদের ও তাদের মতকে ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে ।

এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম নবী মুহাম্মদ, যিনি জীবিত অবস্থায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন যা আজ বিশ্বের অন্যতম একটি ধর্মবিশ্বাস । কিভাবে নবী মুহাম্মদের পক্ষে এই দুরহ কাজটি সম্ভব হল ?

চলবে ...............।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×