somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগে হাসুন পরে ভাবুন : ইগ নোবেল-২০১৫

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর যাবতীয় অদ্ভুত ও উদ্ভট উদ্ভাবন, আবিষ্কার আর তত্ত্বের জন্য প্রতিবছর ইগ নোবেল পুরস্কার দেয় অ্যানালস অব ইমপ্রোবাবল রিসার্চ নামের মার্কিন ম্যাগাজিন । ১৯৯১ সাল থেকে "আগে হাাসুন, তারপর ভাবুন "স্লোগানকে সামনে নিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইগ নোবেল। আর এবার ছিল ইগ নোবেলের ২৫তম বার্ষিকী! প্রতিবারের মতো হার্ভাডে বসেছিল ইগের আসর। আর ছয়জনকে দেওয়া হয় নোবেল! যার পুরুষ্কারের অর্থমূল্য দশ ট্রিলিয়ন ডলার! (তবে সেটা জিম্বাবুইয়ান ডলার)!


আসুন দেখে নি কারা পেলেন এবছর ইগ নোবেল!


“প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকে পড়েছে যে। কি সর্বনাশ! তাড়াতাড়ি সার রে হতভাগা –  পইপই করে বললাম এত জল খাসনে। ভাগ্যিস পাবলিক টয়লেট খানা ছিল!” নিজের কি সহযাত্রীর – এই অভিজ্ঞতা নেই এমন লোক বোধ হয় খুব কম আছে!
ভেবে দেখেছেন কি প্রাণীজগতে কার ‘মূত্র বিসর্জন’ করতে কত সময় লাগে?
হ্যা! এই বছর (২০১৫) পদার্থবিদ্যায় ইগ নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন প্যাট্রিশিয়া ইয়াং, ডেভিড হু, জোনাথন ফাম, এবং জেরোম চু । এরা সকলেই জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সাথে যুক্ত। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ওনারা দেখিয়েছেন যে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মূত্রত্যাগ করতে মোটামুটি কুড়ি সেকেন্ড সময় লাগে এবং এই সময়টা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আকার ও আয়তনের উপর নির্ভর করে না। এই কুড়ি সেকেন্ড হল গড় সময়, ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে এর একটু এদিক ওদিক হতেই পারে। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হল, চেহারায় আকাশ-পাতাল পার্থক্য থাকলেও এই সংখ্যাটা সাত থেকে তেত্রিশ (কুড়ি প্লাস মাইনাস তেরো) সেকেন্ডের মধ্যেই থাকে। মানে একটা ইঁদুরের মূত্রত্যাগ করতে যতক্ষণ সময় লাগে, একটা হাতিরও মোটামুটি একই সময় লাগে!


মুরগিরাও নাকি এখন হাঁটতে পারে ডাইনোসরের মতোই। এর ফলে মুরগির নাম বদলে ‘মুরগিসর’ রাখা যেতে পারে! মুরগির পেছনের দিকে ভারী লেজ লাগালেই ওদের হাঁটা নাকি ডাইনোসরের হাঁটার মতো হয়ে যায়। বাস্তবে এই তত্ত্ব প্রমাণ করে ছেড়েছেন জীববিজ্ঞানেইগ নোবেলজয়ী পাঁচ বিজ্ঞানী।


এত দিন মানুষ ডিম খেত সেদ্ধ করে। এবার সেদ্ধ ডিম আবার তাজা করে চাইলে বাজারেও বেচতে পারবে! এমন উদ্ভট কল্পনা কোনো বিজ্ঞান কল্পগল্পেও আছে কি না সন্দেহ! তবে সেই অকল্পনীয় কাজটিই করে রসায়নে ইগ নোবেল জিতেছেন অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন বিজ্ঞানী। তাঁরা এমন এক যন্ত্র বানানোর নকশা দিয়েছেন, যেখানে সেদ্ধ ডিম আবার তাজা ডিমে পরিণত হবে!
আর এবারে তারা রসায়নে নোবেলজয়ী!

আপনার সব অ্যালার্জি সমস্যার সমাধান আছে চুমুতে। এমনই বায়োমেডিকেল উপযোগিতার তত্ত্ব আবিষ্কার করে চিকিৎসাবিদ্যায় ইগ নোবেল পুরস্কার বাগালেন আট গবেষক। পরীক্ষা করেছেন দু হাজার মানুষের উপর! আমাকে কেন ডাকল না :( :(


শরীরবিজ্ঞান (ফিজিওলজি) ও পতঙ্গবিজ্ঞান (এনটমোলজি)-এ পুরস্কৃত হয়েছেন জাস্টিন স্মিট আর মাইকেল স্মিথ। প্রথমজন তৈরী করেছেন বিভিন্ন পতঙ্গের কামড় কত যন্ত্রনা দেয় তার তুলনা করার জন্য একটা স্কেল (‘স্মিট স্টিং পেইন ইন্ডেক্স’)। দ্বিতীয়জন নিজের সারা শরীরে মৌমাছির কামড় খেয়ে দেখেছেন কোথায় কত যন্ত্রনা পেতে হয়, এবং স্মিট ইন্ডেক্সে তাদের মান কত। তার অভিজ্ঞতায় সবথেকে বেশী কষ্ট হয় নাকের ফুটোয়, উপরের ঠোঁটে আর যৌনাঙ্গে কামড় খেলে!

ব্যবসার দুনিয়ার যাঁরা সফল, তাঁরা নাকি ছোটবেলায় দুর্যোগের সময় ঝুঁকি নিতে পছন্দ করতেন! দুর্যোগ বলতে একেবারে প্রাকৃতিক দুর্যোগই। যেমন: ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, সুনামি, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও দাবানল উল্লেখযোগ্য। সাফল্যের এই গোপন সূত্র আবিষ্কার করে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ইগ নোবেল জয় করেছেন তিন বিজ্ঞানী।

মরক্কোর আলাওতে রাজবংশের দ্বিতীয় সম্রাট ছিলেন ইসমাইল ইবনে শরিফ। ভীষণ দুর্নাম ছিল এই শাসকের। তাঁর আমলে প্রজারা ছিল মহা অশান্তিতে। তবে ইসমাইল ইবনে শরিফ নিজে ছিলেন মহা সুখে। অন্যায়-অত্যাচার চালানোর পাশাপাশি বিয়ে-শাদিও করেছিলেন বেশ কয়েকবার। আর তাঁর সন্তানের সংখ্যা ছিল মোটে ৮৮৮ জন! ১৬৯৭ থেকে ১৭২৭ সালের মধ্যে এতগুলো সন্তানের জনক তিনি কীভাবে হলেন? ইউরোপের দুই গবেষক গাণিতিক উপায়ে দেখিয়েছেন সেটা কীভাবে সম্ভব! এত কিছুর পরও তাঁরা ইগ নোবেল না পেলে ভারি অন্যায় হতো!


এছাড়াও অর্থনীতিতে এবারের ইগ নোবেল পেয়েছে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বাহিনীর কেউ যেন ঘুষ না নেন, এ জন্য কর্তৃপক্ষ তাঁদের আগে থেকেই অতিরিক্ত টাকা দেয়। আর এই মহৎ উদ্যোগের জন্যই তাঁদের হাতে উঠল অর্থনীতিতে ইগ নোবেল। আর হাই শব্দটা শিখলেই শিখে যাবেন সব ভাষা! এমন আবিষ্কারের জন্য জুটেছে সাহিত্যে নোবেল পুরুষ্কার!

তথ্যসূত্র :ইম্পোসিবল ডট কম।

প্রথম আলো
বিজ্ঞান ম্যাগাজিন
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×