বাংলার হারানোর পথে যে খেলাধুলা ১
গোলাপ-টগর
গোলাপ-টগর অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের একটি দলবদ্ধ খেলা। সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে দুই দলের মধ্যে এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। দলের প্রধানদ্বয়কে বলা হয় রাজা। পনেরো-বিশ হাত দূরত্বে দলদুটি মুখোমুখী অবস্থান করে। খেলার শুরুতে এক দলের রাজা ফুল-ফলের নামে নিজদলের সব সদস্যের প্রতীকী নাম রাখে। পরে সে বিপক্ষ দলের যেকোনো একজনের চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে ‘আয় রে আমার গোলাপ ফুল’, ‘আয় রে আমার টগর ফুল’ ইত্যাদি নামে ডাকে। সে তখন অতি সন্তর্পণে এসে বালকটির কপালে মৃদু টোকা দিয়ে নিজ অবস্থানে ফিরে যায়।

পরে চোখ খুলে দিলে উক্ত খেলোয়াড়, যে টোকা দিয়েছে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। সফল হলে সে সামনের দিকে লাফ দিয়ে এগিয়ে যায়, না পারলে যে টোকা দিয়েছে সে-ই এগিয়ে যায়। এবার বিপক্ষের রাজা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। এভাবে লাফ দিয়ে মধ্যবর্তী সীমানা অতিক্রম করে প্রতিপক্ষের জমি দখল না করা পর্যন্ত খেলা চলতে থাকে। যে দল সফল হয় সেই দলের রাজাকে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা হাতের দোলায় পদ্মাসনে করে সীমানা পারাপার করে। কোথাও নিয়ম আছে, বিজয়ী দলের রাজা ব্যতীত অন্য সবাই বিপক্ষের নিজ নিজ জুটির পিঠে চড়ে সীমানা পারাপারের সুযোগ পায়। এ খেলায় যুদ্ধ, ভূমিদখল ও বন্দিকে দাসরূপে ব্যবহার করার মধ্যে প্রাচীনকালের গোষ্ঠীচেতনার ছায়াপাত ঘটেছে। অঞ্চলভেদে এটি ‘বউরানী’, ‘চড়নখেলা’ (মুর্শিদাবাদ), ‘টুকাটুকি’ (ময়মনসিংহ) ইত্যাদি নামে অভিহিত।
মুর্গার লড়াই

মোরগের লড়াই, মুর্গার লড়াই বা মুরগীর লড়াই এক ধরনের রক্তাক্ত ক্রীড়া যাতে দুই বা ততোধিক মোরগজাতীয় প্রাণী বৃত্তাকার ককপিটে অংশগ্রহণ করে। সেলক্ষ্যে এজাতীয় মুরগী লালন-পালন, পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে ক্রীড়া উপযোগী করে তোলা হয়। সাধারণতঃ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মোরগ নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে একে-অপরের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত লড়াইয়ের ন্যায় প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। শক্ত ঠোঁট ও নখের সাহায্যে এ লড়াই চলে। যে-কোন একটি মোরগের মৃত্যুবরণ কিংবা লড়াইয়ে অপারগতা প্রকাশ করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় সমাপ্তি ঘটে। এ লড়াইয়ে বাজী ধরা অন্যতম ক্রীড়া অনুসঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

....
চলবে.....

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



