somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

THE OTHERS (নিজের সম্পর্কে কতটুকু অবগত আপনি?)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




রিভিউ শুরু করব মুভির জেনর দিয়ে। কোন জেনরের মুভি আপনার পছন্দ? আলাদা করে বলতে পারছেন না? কোন সমস্যা নাই। এই মুভি দেখতে শুরু করেন... আমার গ্যারান্টি ... আপনার পছন্দের জেনরের ছোঁয়া পাবেনই।:) ভাবছেন আমি কেন গ্যারান্টি দিচ্ছি? সেটা মুভি দেখার পরই বুঝবেন (আর না হলেই বা কি করবেন? আমারে কই পাচ্ছেন?)।:P এবার আসুন মুভির রিভিউ শুরু করি সেই চিরায়ত নিয়মে..;)
মুভির নামঃ THE OTHERS
জন্মদিনঃ আগস্ট ১০(আমেরিকা), সেপ্টেম্বর ৭(স্পেন), নভেম্বর ২(ইংল্যান্ড) {ওরে বাবারে}
সালঃ ২০০১
দৈর্ঘ্যঃ ১০৪ মিনিট
পরিচালনাঃ Alejandro Amenábar
লেখকঃ Alejandro Amenábar
অভিনয়ঃ Nicole Kidman, Christopher Eccleston, Fionnula
Imdb রেটিং- ৭.৭
Rotten Tomatoes রেটিং- ৮৪%



*** আলোচনা অংশঃ

চিন্তা করুন তো এমন একটা হরর ফিল্ম এর কথা যেখানে কোন রক্তারক্তি নেই, নেই কোন বীভৎস দৃশ্য দেখিয়ে অযথা ভয় দেখানোর চেষ্টা, অথবা কোন সস্তা যৌনতা। কি? পারছেন না মনে করতে? পারবেন আজকের পর থেকে পারবেন। অথবা চিন্তা করুন তো এমন একটি মুভির কথা যা প্রায় ১টি জায়গায় ধারণ করা হয়েছে কিন্তু মুভি দেখার সময় বিষয়টি হয়ত আপনি খেয়ালই করেন নি। মনে আসতে পারে 12 Angry Men এর কথা। আবার আমার গ্যারান্টির পালা। আজকের পর থেকে সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় আরেকটি নাম যোগ হচ্ছে।;)

Goya পুরষ্কার এ এই মুভি সেরা পরিচালক এবং সেরা ফিল্ম সহ মোট ৮ টি পুরষ্কার জিতে নেয়। এটিই প্রথম কোন ইংরেজী ভাষার মুভি যা Goya পুরষ্কার (স্পেন এর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার) পায় যদিও মুভিতে একটি কথাও ইংরেজী ছাড়া বলা হয় নি। এছাড়াও Saturn Awards এ ছয়টি category তে মনোনয়ন পায় যার মধ্যে তিনটিতে পুরষ্কার জিতে নেয়। আরও আছে... Nicole Kidman এই মুভির জন্য গোল্ডেন গ্লোব এ মনোনয়ন পায়....। হাঁপিয়ে গেলাম... আপনাদেরও বিরক্ত করছি... তাই আর বলব না।:-*

এইবার একটু কাহিনী বলতে হয়... ভয় পাবেন না... আপনাদের মুভি দেখার মজা নষ্ট করব না।;)
সময় তখন ১৯৪৫ সন। এক পরিত্যক্ত বাড়িতে বসবাস করত এক জনৈকা মহিলা... সাথে থাকে তার ২ ছেলে মেয়ে। স্বামী আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। মহিলার যন্ত্রণার শেষ নাই। একে তো কাজের লোক নেই বলে এত বিশাল বাড়ির কাজ এক হাতে সামলাতে হয় তার উপর তার আছে বিশেষ রোগে (xeroderma pigmentosa) আক্রান্ত দুইটি বাচ্চা। (আমার মত আপনারও কি দাঁত ভাঙ্গছে ?? তাহলে বলি, এই রোগ হইলে পোলাপান রোদে যেতে পারে না... চামড়া পুড়ে যায়)... যাকে শুদ্ধ বাংলায় বলে অসূর্যস্পশ্যা। তার উপর আবার মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে আছে এই বাচ্চাদের অসম্ভব ভুতের ভয়। এই মহিলা অত্যন্ত ধার্মিক প্রকৃতির... সে নিজে তার বাচ্চাদের বাইবেল পড়ায় আর বিভিন্ন পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলে।:D একদিন তার বাসায় কাজ করার জন্য আসে ৩ জন লোক। এরপর থেকে শুরু হয় আসল ঘটনা... ওমা? আপনারা এখনও ঘটনা পড়বেন বলে বসে আছেন? তাহলে আর মজা থাকল কোথায়? এরপর একে একে আপনার জন্য এমন কিছু থাকছে তাতে আপনারা স্থাণুর মত বসে থাকতে বাধ্য হবেন...। আর নড়াচড়া যাতে মোটেও না করতে পারেন তার জন্যই কাহিনী আর বললাম না।;)



*** সমালোচনা অংশঃ

প্রথমেই আসি অভিনয়ে......। Nicole Kidman হলিউডের একজন নামী অভিনেত্রী। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি আজ পর্যন্ত তার বলার মত অভিনয় খুব কম মুভিতেই দেখেছি।/:) আমার মত কারও যদি এই ধারনা থেকে থাকে তাকে আমি এই মুভি দেখার জন্য বলব। আমার দেখা সেরা অভিনয় করেছে সে এইখানে। তিনি তার চরিত্র এত ভাল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে আপনি নিজেও তার আবেগ অনুভূতি গুলো চাইলেই হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিতে পারবেন। এরপর আসি বাচ্চাদের অভিনয়ের কথাতে। মেয়ে চরিত্রে Alakina Mann যে খুব ভাল অভিনয় করেছে এমন কিন্তু নয়। তবু প্রথম ছবি হিসেবে তার অভিনয়কে কোন ভাবেই খারাপ বলা যায় না। আর ছেলে চরিত্রে James Bentley এক কথায় অসাধারণ। এটি তার প্রথম মুভি তা আমি বলে দিলাম বিধায় আপনারা বুঝতে পারবেন। এত ভাল অভিনয় করতে অনেক দিন লেগে যায়। আমি এর ভক্ত হয়ে গেলাম এক মুভি দেখেই।:) এর পর আছে কাজের লোক হিসেবে Fionnula Flanagan এর অভিনয়। অসম্ভব সুন্দর অভিনয় করেছেন উনি বরাবরের মত। বাগান রক্ষক চরিত্রে Eric Sykes ও ছিলেন উপযুক্ত। তবে বাকী চরিত্র গুলি অতটা ভাল লাগে নি। তবে ভয় পাবেন না তারা শুধু আসা যাবার জন্যই মূলত মুভিতে আছে।:)

এবার আসি অন্যান্য দিক নিয়ে...। ছবিতে ডার্ক ইফেক্ট যারা পছন্দ করেন তাদের ছবিটা বেশ ভাল লাগবে বলে মনে হয়...ডার্ক ইফেক্ট বেশ ভাল ভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। গল্প আমার দারুণ পছন্দ হয়েছে। আর পরিচালনা তো এক কথায় অসাধারণ। হরর মুভিতে আবেগ ফুটিয়ে তোলা খুবই কঠিন কাজ। এটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করেছেন পরিচালক। তবে ক্যামেরার কাজ আমার মনের মত হয়নি... এত ভাল মুভিতে সামান্যতম খুঁতও চোখে পড়ে। তাই ক্যামেরার কাজে আরও যত্নশীল হওয়া উচিৎ ছিল। তবে সিনেমাটোগ্রাফীতে Javier Aguirresarobe আমার কাছে এ+ নাম্বার পাবে। তার কাজ প্রশংসা করার মত হয়েছে।

আরও একটি দিক হল মুভিটি প্রথম দিকে একটু ধীর ধরনের। এই কারনে অনেকের কাছে প্রথম দিকটা বোরিং লাগতেও পারে। তবে কথা দিচ্ছি একবার মূল ঘটনা শুরু হবার পর আপনি নিঃশ্বাস নিতেও ভুলে যেতে পারেন।

এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এইটি মূলত হরর মুভি। তবে জগত-খ্যাত পরিচালক Stanley Kubrick এর জগত-খ্যাত মুভি The Shining এর সাথে যার তুলনা করেছেন অনেক মুভি বোদ্ধা তার মান নিয়ে কোন ধরনের সন্দেহ থাকলে তা ঝেড়ে ফেলে দেবার জন্য বলছি। একে আপনি শুধু আরেকটা অতিপ্রাকৃত থ্রিলার মুভি ভাবলে ভুল করবেন। এটি আমার দেখা সেরা হরর মুভির তালিকাতে উপরের দিকে থাকবে। এখনও যদি আপনারা কেউ এই মুভি না দেখে থাকেন তাহলে আর একটা কথাও না বলে দেখতে বসে যান। না হয় মিস করবেন অনেক কিছু...।;)



*** রিভিউয়ারের রেটিং-
গল্প এবং চিত্রনাট্যঃ ২.৫/৩
পরিচালনাঃ ২.১/২.৫
অভিনয়ঃ ২.২/২.৫
মিক্সিং (শব্দ এবং দৃশ্য)ঃ ১.৬/২
মোটঃ ৮.৪/১০............
ডাউনলোড লিংকঃ720p Blure ray
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:১১
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×