somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Full Metal Jacket {দেখুন গভীরভাবে, ভিতরটাকে}

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মুভি রিভিউ-[Full Metal Jacket]
imdb রেটিং-৮.৪
আমার রেটিং-৮.২
রটেন টম্যাটো রেটিং- ৯৭% ফ্রেশ
পরিচালনাঃ Stanley Kubrick
লেখকঃ Gustav Hasford (বই), Stanley Kubrick(স্ক্রিনপ্লে)
দৈর্ঘ্যঃ ১ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট।
অভিনয়ঃ Matthew Modine, R. Lee Ermey and Vincent D'Onofrio


*** যুদ্ধের মুভি বললেই আমাদের সামনে ভেসে উঠে action এ ভরপুর টানটান উত্তেজনাপূর্ণ কিছু দৃশ্য। কিন্তু Full Metal Jacket আপনার এই অভিজ্ঞতাকে বদলে দিবে। Full metal jacket কথাটি আসলে আসলে ব্যবহার করা হয় রাইফেল-ম্যানদের গুলি বুঝাতে। এই মুভিতে যতটা না যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে, তারচে বেশি দেখান হয়েছে সৈনিকদের জীবন কাহিনী। সাথে রয়েছে কৌতুকে ভরা dialouge। পরিচালনায় মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন পরিচালক (Stanley Kubrick)। এছাড়াও Matthew Modni, R.Lee Ermey, Vincent D’onofrio দের অভিনয় এবং camera work ছিল প্রশংসা করার মত। Full Metal Jacket কে আসলে কোনও একটি বই না বলে কতগুলি খণ্ড খণ্ড বই হিসেবে কল্পনা করা যায়। এর মধ্যে কোনও কোনও অংশ দেখে আপনি হয়ত নিজেই তাদের জীবন কল্পনা করতে পারবেন। আপাতদৃষ্টিতে মুভিটা অনেকটা shapeless বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একজন মানুষ যখন চিন্তা করে তখন সবসময় গুছিয়ে চিন্তা করে না। তাই এই ব্যাপারে আমি পরিচালককে ধন্যবাদই দিব।





*** এই মুভিটির প্লট তৈরি হয়েছে ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। Full Metal Jacket এর প্রধান শক্তি সম্ভবত এর সেট। এত ভাল সেট খুব একটা চোখে পড়ে না। শেষের দিকে এসে একটা সেট কে এতভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে আপনার নিজেরও ধারনা হয়ে যাবে sniper কোথায় আছে অথবা ভিয়েতনামের ওই এলাকা কেমন। তবে একটা কথা ঠিক যে মুভি যেভাবে শুরু হয়েছিল সেভাবে শেষ করা হয়নি (তাই imdb থেকে আমার রেটিং কম)। প্রথম দৃশ্য থেকেই R.Lee Ermey, Vincent D’onofrio দারুণ অভিনয় করে যা সম্ভবত তাদের অভাবেই পরে আর ধরে রাখা যায়নি। তবে এই মুভির কাহিনী নিয়ে কিছু বলার নাই কারন এতগুলি কাহিনী তুলে ধরা সম্ভব না। যারা war based মুভি পছন্দ করেন তারা একবার মুভিটা try করে দেখতে পারেন।





*** এক কথায় এই মুভিকে এক অনবদ্য সৃষ্টি হিসেবে মেনে নিতে আমি রাজি আছি। অনেকের এই মুভি দেখে অনেক কিছু খাপছাড়া বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একটা মুভিকে গ্রেট বলার জন্য কি কি উপাদান দরকার? চোখ বন্ধ করে মনে মনে একবার চিন্তা করুন, এরপর চোখ খুলে মুভিটি দেখে চিন্তা করুন কোথায় এর ঘাটতি? কথাও খুঁজে পাবেন না বলেই আমার বিশ্বাস। পরিচালনার ক্ষেত্রে বলতে পারি শুধু স্ট্যানলি কুবরিকের নাম। তার কাজ নিয়ে মনে যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহ কারো মনে থেকে থাকে তবে আমার তার প্রতি অনুরোধ, আগে তার মুভি গুলি সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে লেখাপড়া করুন। এরপর তার মুভিগুলি দেখুন। আপনি নিজে অবাক হয়ে যাবেন এই কারনে যে, একজন মানুষ কি করে তার সামান্য এক মুভির মধ্যে এত প্রতীকী ভাবে,এত স্বাভাবিক আর সুন্দর ভাবে এত চরম সত্য কথা তুলে ধরতে পারে। আমি আমার এই ছোট্ট মুভি দেখার জীবনে তার মত এত প্রতিভাধর পরিচালক যেমন দেখিনি, তেমনি এত সাবলীল ভাবে প্রতীকী ভাবে অপ্রিয় সত্য ঘটনা প্রকাশ করতেও দেখিনি। সত্যি অবিশ্বাস্য, কি করে এই লোক এমনটি করতে পারত? তো সেই স্ট্যানলি কুবরিক যখন এই মুভির পরিচালক তখন কিছুটা নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পেরেছেন যে পরিচালনার দিক দিয়ে এই মুভির অবস্থান কতটা উঁচুতে।





*** আগেও একবার বলেছি, এবার আবার বলছি, পুরো মুভি জুড়ে সেট ছিল অসাধারণ। এই ধরনের ডেকোরেশন আমি অন্য কোন মুভিতে পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। সেই সাথে অনবদ্য ছিল ক্যামেরার কাজ। এত নিখুঁত আর এত বিশ্লেষণ করে ক্যামেরার কাজ দেখানো হয়েছে যে আপনি পুরোটা দৃশ্য সম্পর্কে ধারনা পাবেন। কার অবস্থান কোথায়, তা থাকবে আপনার নখদর্পণে। সেই সাথে দেখবেন কিছু অসাধারণ এঙ্গেল থেকে নেয়া শট। অনেক সময় বিশেষ এঙ্গেল থেকে শট না নেবার কারনে দৃশ্য বোধগম্যতা হারায়। কিন্তু আমারা এই রকম দৃশ্য দেখতে দেখতে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে এগুলো এখন আর আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। সে ক্ষেত্রে এই মুভি দেখতে হবে আপনাকে তাহলে বুঝবেন এতদিন দেখা মুভি গুলোতে কোথায় যেন একটা ঘাটতি থেকেই গিয়েছিল।





*** এই মুভির শুধু না কুবরিকের সব মুভির বৈশিষ্ট্যই হল তার মধ্যে অনেক দিন মুখে রাখার মত কিছু সংলাপ আপনি পাবেনই। এই মুভি অনেক সিরিয়াস হলেও এতেও আপনি মনে রাখার মত এবং একই সাথে হাসির অনেক সংলাপ পাবেন। কমেডি আর ডার্ক কমেডির জগতকে কুবরিক অনেক উপহার দিয়ে গিয়েছেন। তার মধ্যে এই মুভিও একটি। খেয়াল করে শুনলে অনেক কিছুতেই আপনি বেশ মজা পাবেন। সেই সাথে এই মুভির অর্জনের ভাণ্ডারে রয়েছে অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফি। আপনি নিজেও এর প্রশংসা করবেন বলেই আমার বিশ্বাস।





*** এই মুভির সবচেয়ে দুর্বল দিক বলে আমার মনে হয় ২ টি জিনিসকে, প্রথমেই আছে কাহিনীর অ-ধারাবাহিকতা। কাহিনী পুরো সময় জুড়ে আমার কাছে ধারাবাহিক বলে মনে হয় নি। আর এর সাথে রয়েছে স্ক্রিনপ্লে। বলতে দ্বিধা নেই এই মুভির স্ক্রিনপ্লে দেখে মনে হয়েছে এর চেয়ে ভালো কাজ আমি কুবরিকের মুভিতেই আরও অনেকবার দেখেছি। এই ২ টা জিনিসকে আমার আনাড়ি দৃষ্টিতে দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। আর এটা আমার সম্পূর্ণ নিজস্ব মতামত। অন্য সবার সাথে এর মিল নাও থাকতে পারে।


*** এতক্ষণ অনেক কথা বলে গেলাম। এই মুভি কিন্তু অস্কারের নমিনেশন সহ বেশ কিছু পুরস্কারও পেয়েছে। তো কথা না বাড়িয়ে দেখে ফেলুন এই মুভিটি।





ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://thepiratebay.se/torrent/6675425


>ENJOY
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৭:৫৯
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×