somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভ্যাস বড় না ট্র্যানিং বড় । আসুন জেনে নেই ।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুই বন্ধু মধ্যে জোর তর্ক , “অভ্যাস বড় না ট্র্যানিং বড়” এই নিয়ে । প্রথম বন্ধু বলতেছে অভ্যাস বড় আর দ্বিতীয় বন্ধু বলতেছে ট্র্যানিং বড় । তাদের তর্কে বিতর্কে কেউ কাউকে হারাতে পারছে না, তারা দুইজন দুইদিক থেকে সঠিক মনে করছে নিজেকে । প্রথম বন্ধু বলতেছে আমারটা সঠিক, দ্বিতীয় বন্ধু বলতেছে আমারটা সঠিক । এমন পর্যায়ে দ্বিতীয় বন্ধু প্রথম বন্ধুকে বাসায় দাওয়াত দিল, আগামীকাল দুপুরে আমার বাসায় তোর দাওয়াত রইল । যথারীতি প্রথম বন্ধু গেল দ্বিতীয় বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেতে । খাওয়া দাওয়া শেষে দ্বিতীয় বন্ধু তাঁর পোষা বিড়ালটাকে ডাক দিল এবং পোষা বিড়ালটাকে যা বলা হল পোষা বিড়াল তাই করল । যেমন, এই লাফ দে , এই লঙ্কা পারহ , এই সালাম দে, এই নিত্য দে ইত্যাদি । বিড়ালটার পারদর্শীতা দেখিয়ে প্রথম বন্ধু বীরচিত হাসি হাসতে লাগল । বিড়ালটার কান্ডকারখানা দেখে প্রথম বন্ধু হতাশ হয়ে পড়ল এবং হতাশ মন নিয়ে বাড়ি ফিরে আসল । বাসায় এসে খাওয়া নাই দাওয়া নাই শুধু একটাই চিন্তা করতে লাগল, কিভাবে সম্ভব আমার মতে আমিই তো জয়ী হওয়ার কথা,কারণ অভ্যাসই তো বড় এবং কিভাবে তা প্রমাণ করব আর প্রমাণ করতে না পারলে আমি আমার বন্ধুর কাছে হেরে যাব । চিন্তার রেখায় কোন কিছুই আর তার মাথায় আসছে না । এমতাবস্থায় তাঁর বউ বিষয়টা খেয়াল করল স্বামীকে বলল, কি হয়েছে তোমার খাওয়া নাই দাওয়া নাই কি বিষয় নিয়ে এমন চিন্তা করতেছ । তখন প্রথম বন্ধু সবকিছু খুলে বলল তাঁর বউকে, সবশুনে তাঁর বউ বলল এই একটা বিষয় হল যান খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমানগা আমি তোমাকে সকালে একটা বুদ্ধি দিব নে । বউ সারারাত খুঁজে একটা ইঁদুরের বাচ্চা যোগার করে রাখল এবং সকালে উঠে তাঁর স্বামীকে বলে দিল কি করতে হবে । প্রথম বন্ধু তাঁর বউয়ের কাছ থেকে বুদ্ধি পেয়ে বন্ধুর বাসায় গেল এবং বন্ধুকে বলল কই তোর বিড়ালটা , দোস্ত তোর বিড়ালটা তো খুব জোশ, ভাল ট্র্যানিং শিখিয়েছিস, কাল খুব দেখাইছে, আজকে একটু দেখা না । দ্বিতীয় বন্ধু প্রথম বন্ধুর কাছ থেকে প্রসংসা পেয়ে বিপুল উৎসাহে তাঁর বিড়ালটাকে ডাকল এবং বিড়ালটা তাঁর পারদর্শী ট্র্যানিং দেখাইতে লাগল । হঠাৎ এই লাফ দে , এই লঙ্কা পারহ , এই সালাম দে, এই নিত্য দে এর ফাঁকে প্রথম বন্ধু তার বউয়ের দেওয়া ইদুরের বাচ্চাটা তার পকেটের ফাঁক দিয়ে বিড়ালটাকে দেখিয়ে আবার লুকিয়ে ফেলল । বিড়াল ইঁদুরের বাচ্চাটাকে দেখামাএই তার যাবতীয় কার্যকলাপ থামিয়ে দিল এবং একজায়গায় চুপ করে বসে রইল । এখন দ্বিতীয় বন্ধু যতই তাকে বলে, এই লাফ দে , এই লঙ্কা পারহ , এই সালাম দে, এই নিত্য দে । কিন্তু বিড়াল কিছুই করে না বরং এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকে । দ্বিতীয় বন্ধু বিরক্ত হয়ে লাটি দিয়ে মারল গালি দিল কিন্তু কোন কাজই হলনা, বিড়াল তার ট্র্যানিং বেমালুম ভুলে গিয়ে তার অভ্যাস মত ইদুর ধরার জন্য খাপ ধরে বসে রইল । প্রথম বন্ধু দ্বিতীয় বন্ধুকে বলল, আর বিড়ালটাকে মেরে লাভ নেই বন্ধু , বিড়ালের কাজ হল ইদুর ধরা তুমি যতই তাকে ট্র্যানিং দেওনাকেন তাঁর অভ্যাসটা তুমি ফেরাতে পারবে না । প্রথম বন্ধু বিজয়ীবেশে বাসায় ফিরে আসল ।

প্রথম বন্ধু দ্বিতীয় বন্ধুর সাথে তর্কে বিজয়ীবেশে বাসায় ফিরে গেলেও আমি কিন্তু ফিরে যাব না এই ব্লগ থেকে যতদিন সমস্ত ব্লগারদের মন জয় করতে না পারি । ফিরব না আমি শূন্য হাতে, ফিরব না আমি খালি হাতে, ফিরব আমি ঋদয়ের রক্তশতদল ঋদয়ের সরসতা নিয়ে ।


আসুন আমরা পরের অভ্যাস নিয়ে সমালোচনা না করে নিজের অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করি ।

প্রথমেই শুরু করি আমাকে দিয়ে তারপর একেএকে আপনাদের পালা ।

আমার অভ্যাস ।
1/ আমার অভ্যাসগুলা বর্ণনা করা খুব কঠীন কাজ । কারণ নিজেরটা বলা যত কঠীন অন্যেরটা বলা তত সহজ কাজ । তাই বলে অন্যের গীত গাওয়া আমার অভ্যাস না ।
2/ আমি যা বলি তাই সঠিক বলে বিবেচনা করি ।
যদিও এটা ঠিক না, কারণ অন্যের মতামত প্রাধান্য দেওয়া উচিত । কারণ, ‘’সবাই নিজের বিদ্যে-বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা দিয়েই সত্য –মিথ্যা ওজন করে । কিন্তু এ জিনিস সকলের এক নয় । তুমি যাকে সত্য বলে বুঝতে পার, অন্য জন তা নাও পারে ।‘’ বা অন্য জন যা পারে তুমি তা নাও পার ।
3/ নিজের দোষ নিজে স্বীকার করি না । অন্যের দোষ ধরতে সদা তৎপর থাকি ।
4/ অন্যের অন্যায় দেখে তাকে শুধরানোর উপায় বের করি না বরং না দেখার ভান করে থাকি ।
5/ রাগের মাথায় কর্তব্য করার চেয়ে অকর্তব্য করি বেশি ।
6/ বুঝি বেশি কিন্তু না বুঝার ভান করে থাকি ।
7/ আমি কোনদিন বলি না মানুষ ইচ্ছা করলে সব পারে বরং বলি ইচ্ছা এবং উপায় থাকতে হয় ।
8/ আমি স্বপ্ন দেখতে জানি না, যদি অন্যজনে না দেখায় ।
আমার মধ্যে এত বেশি অভ্যাস বিদ্যমান যে বলে শেষ করা যাবে না ।
আমাদের অভ্যাসের মাঝেই ভালমন্দ নিহিত । আমাদের অভ্যাস যদি ঠিক না থাকে হাজারো ট্র্যানিংয়ে কাজ হবে না । বিড়াল সেই ইঁদুরেই ধরবে ।

সকলকে উদ্দেশ্য করে বলতেছি, আপনাদের অভ্যাস গুলো আলোচনা করুন বা শেয়ার করুন তাহলে ঋদয়ের সরসতা বাড়বে ।ভাল লাগলে মন্তব্য করুন ।

---------------****------------------
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×