somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“একজন মাহাথির ও বাংলাদেশ”

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




রাজনীতিতে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি এক শব্দে ব্যবহার হলেও বাস্তবিক অর্থে তা এক হয় না, যেমনটা হয় না পানি আর তেল।

মাহাথির মোহাম্মদ যখন প্রথমবার মালয়েশিয়ার ক্ষমতার মসনদে রাষ্ট্রক্ষমতার অধিশ্বর হয়ে বসেন, তখন সাল ছিলো ১৯৮১। যদিও এর আগে উনার দল ১৯৭৪ এ জয়ী হবার পর উনাকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়, সাথে ১৯৭৬ সালে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও হস্তান্তর রাখা হয়।

সবকিছু তিনি দায়িত্ব সহকারে, নিষ্ঠার সাথে পালন করেন।

মাহাথির মোহাম্মদ যেদিন মালয়েশিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, তখন মালয়েশিয়ার জনগণের মাথাপিছুর আয় ছিলো ১৩০ ডলার। সাথে শিক্ষিতের হার মাত্র ২০%।

সর্বশেষ যখন তিনি স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছাড়েন, তখন সাল ২০০৩, অর্থাৎ তিনি একটি দেশকে, মালয়েশিয়াকে টানা, একটানা ২২ বছর চালিয়ে চালিয়েছেন।
আর, সেদিন দেশের মাথাপিছু আয় ছিলো ৩,০০০ ডলার। শিক্ষিতের হার ৯৯ শতাংশ।

ক্ষমতার মসনদে বসার পর মাহারির মোহাম্মদ দেশের অর্থনীতিকে ঠিক করার জন্য ‘দাইম জয়নুদ্দিন’কে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। একই সাথে, দাইম মাহারির মোহাম্মদের ভগ্নিপতির বন্ধুও ছিলেন।

ফলে, এদিক থেকে তিনি স্বজনপ্রীতি’র চোখে পড়ে যান।

তবে, ‘কাজ পারনেওয়ালা’ ব্যক্তিকে যদি কাজ দেওয়া হয়, তখন কাজের গুরুত্ব দেখা উচিত, ‘কাজ কে/কারা’ করলো সেটা নয়।
মাহারির মোহাম্মদ দাইম জয়নুদ্দিনকে নিজের মন্ত্রী সভায় আমন্ত্রণ জানালে বন্ধুত্ব রক্ষায়, দেশের স্বার্থে কোটি টাকার বাণিজ্য ছেড়ে তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়ার ‘ব্যক্তি খাত’ এ বিরাট ভূমিকা রাখেন, আর একই সাথে বিশৃঙ্খলা অবস্থায় রাখা রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও কোষাগারকে দাইম জয়নুদ্দিন সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরিয়ে আনেন।

কথায় আছে না, ‘যার লাইগা করো চুরি, হেয় ই কয় চোর!’ কথাটা যেন মালয়েশিয়ায়ও গিয়ে ঠেকেছে।

দাইম যখন দেখলেন যে, অযোগ্যরা মালশেয়িরার উন্নতি করতে পারছে না, তখন তিনি আস্থাভাজন ও দক্ষ লোকদের বিভিন্ন দায়িত্বশীল জায়গায় বসিয়ে দিলেন।
ফলস্বরূপ, দাইম জয়নুদ্দিন তখন স্বজনপ্রীতির দায়ে অভিযুক্ত হন। আর, ক্ষোভে-কষ্টে তিনি আত্নপক্ষ সমর্থন না করে পদত্যাগ করলেন!

মাহারির মোহাম্মদ এর কাজের চমৎকার আর দৃষ্টিবহ সৌজন্যতা ছিলো, যেখানে তিনি আত্মীয়স্বজন, দলের আস্থাভাজন লোকদের বড় বড় কাজ পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে বেশ কিছু ‘নীতিমালা’ মেনে চলতেন, অন্যদেরও মানাতেন।

মাহাথিরের নীতি ছিল এ রকম যে, যেকোনো ‘সুবিধা’ দেওয়া হবে মাত্র একবার। আর, কাজ পাওয়ার পর তিনটা দায়িত্ব অবশ্যই পালন করতে হবে।

কাজগুলোকে বেশ নিয়মিতের সাথে মেনে নিয়ে উনি নিজের রাজ্য চালিয়ে ছিলেন, জনগণের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। কাজগুলো ছিলোঃ

(ক) নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা,
(খ) ব্যয় না বাড়ানো, এবং
(গ) কাজের উন্নত গুণগত মান নিশ্চিত করা।
আর, এভাবে মাহারির মোহাম্মদ মালয়েশিয়াকে নিয়ে গেলেন শীর্ষে, উন্নতির চূড়ায়।

একই সাথে, আমাদের দেশ, বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক চিত্রগুলোর দিকে নজর দিলে আমরা অবশ্য ই খুব সহজ সমাধান পেয়ে যাবো।

এজন্য, ইচ্ছা পোষণ করবো, রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিবর্গরা নিজস্ব ক্ষমতাবলে থাকা কাজগুলোকে দেশ ও জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে।

যাতে করে দেশের ভঙুর অর্থ ব্যবস্থা ও ব্যাংক ব্যবস্থা মত করে অন্যান্য অংশগুলো আশার মুখ দেখে, আমরা বাঙালিরা সূর্যের হাসি দেখি!


#বিশ্বরাজনীতি
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×