somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চ্যালেঞ্জ

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“নাস্তিকের কলম বা কি-বোর্ডের শক্তি সম্পর্কে আমরা আগেই জেনেছি। এবার জানলাম নাস্তিকের চায়ের কাপের শক্তি। আরো জানলাম- পৃথিবীর সবচেয়ে সাম্প্রদায়িক, অবৈজ্ঞানিক আর ভুলে ভরা মধ্যযুগীয় পুস্তক কোরাণকে অবমাননা করা কত সহজ। তবে কোরাণকে অবমাননা করতে হলে নাস্তিক বা ভিন্ন ধর্মের মানুষ হতে হবে, ধর্মান্ধ মুসলমান হলে হবেনা। যেমন আমরা প্রতিদিন অসংখ্য মুসলমানকে অর্থ না বুঝে তোতা পাখির মতো কোরাণ পড়তে দেখি,- তাতে কোরাণের অবমাননা হয়না। মুসলমানরা দিনে পাঁচবার নামাজের নাম করে না জেনে অন্য ধর্মের মানুষদেরকে গালাগালি করে,- তাতে কোরাণের অবমাননা হয়না। কোরাণে লিপিবদ্ধ হয়েছে অসংখ্য সাম্প্রদায়িক, মিথ্যা, ভুল আর অবৈজ্ঞানিক আয়াত, কোরাণে আছে যুদ্ধ আর জিহাদের নির্দেশ,- তাতে কোরাণের অবমাননা হয়না। নারী নির্যাতন, বহুবিবাহ, ধর্ষণ, দাসী ভোগ, হত্যা আর লুন্ঠনের নির্দেশ, পরকালে মদ, বেশ্যালয় আর গেলমানের লোভ, এমনকি একটি ৬ বছরের কন্যা শিশুকে বিয়ে করার ষড়যন্ত্রে মুহম্মদ কতৃক বানানো আয়াত,-তাতেও কোরাণের অবমাননা হয়না। নাস্তিকের একটা সামান্য চায়ের কাপ বিশ্বের দেড়'শ কোটি মস্তিস্কহীন ধর্মান্ধ মুসলমানের কোমল মন ভেঙ্গে দিয়ে কোরাণের অবমাননা ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। দেশের কুখ্যাত মৌলবাদী ছাগু সম্রাটরা যখন কোরাণের উপর নাস্তিকের চায়ের কাপ দেখে আহত হয়, তখন অবাক হইনা। আজ অবাক হয়েছি কয়েকজন শ্রদ্ধেয় প্রগতিশীল আর সচেতন ব্লগারকে এ বিষয়ে তাদের একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখে, যাদেরকে মুক্তচিন্তার মানুষ বলেই জানতাম। আবারো পুরাণ কথা বলতে হচ্ছে।- যে গ্রন্থটি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, অশান্তী আর ঘৃণা ছড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী, তার উপর চায়ের কাপ রাখা যাবে না, তার উপর রাখতে হবে AK-47 রাইফেল অথবা ধারালো তলোয়ার। তাতেই তার সম্মান বাড়ে। ধর্মান্ধ মুসলমানদের আচরণ দেখে আবারো মনে পড়ে গেলো- মুসলমানদের মস্তিস্ক বলে কিছু নেই, মুসলমানদের মস্তিস্ক বলে কিছু থাকতে নেই। তাদের কাছে সবচেয়ে দামী হচ্ছে- তাদের ঈমান আর অন্ধবিশ্বাস। আমি যদি নিজের টাকায় একটা বাইবেল কিনে ইউরোপের লক্ষ লক্ষ খ্রিষ্টানদের সামনে সেই বাইবেলটিকে পোড়াই, মাড়াই বা নষ্ট করি, তারা সবাই আমাকে পাগল বলবে, আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে, কিন্তু তাতে তাদের বাইবেলের অবমাননা হবে না, আর তাদের ধর্মানুভূতিতেও আঘাত লাগবে না। তারাও ধর্মান্ধ, তবে তারা ধর্মানুভূতির সেই অসভ্য আর অন্ধকার সময়টাকে অতিক্রম করে এসেছে। মুসলমানরা পারেনি”-(কার্টেসী Omar Farooq Lux)।

-ঠিক এমনই একটি পোষ্ট কিছুদিন আগে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন জাতির এক পথহারা নারী সাদিয়া আফ্রিন মিলি। যার মূল লেখক উমর নামক এক কথিত মুক্তমনা। আমি উনার পোষ্টের জবাবে পাল্টা পোষ্ট দেবার কয়েকদিন পরেই আমার আইডিটি ১ মাসের জন্য ব্লক মেরে দেন জুকার মামা। কারণ আমি নাকি উক্ত পোষ্টে জঘন্য সাম্প্রদায়িক তত্ত্বের গন্ধ ছড়াচ্ছি। অথচ আমার উত্তরই ছিল ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেই। খুব সম্ভবত নাস্তিক্যবাদের রিপোর্টের সুবাদেই উক্ত পোষ্টের জন্য আইডিটি ব্লক হয়ে যায়। সেই সাথে জুকারের কোম্পানি “চ্যালেঞ্জ” শিরোনামের পাল্টা উত্তরের পোষ্টটির নোটটিও রিমুভ করে দেয়। তাই উত্তরটি এখানে পোষ্ট করা সমীচীন মনে করলাম।

আমি দুঃখিত বোন মিলি। আপনার অভিযোগ প্রকৃত সত্য থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।
শপথ মহাবিশ্বের!! আপনার বিদ্রোহ শুধুমাত্র সত্যকে খণ্ডন করবার অক্ষমতা মাত্র- যে অক্ষমতায় আজ মুসলিম সমাজ আক্রান্ত। কিন্তু একজন বিশ্বাসীর উত্তর আপনাকে সন্তুষ্ট করবেনা জানি। তথাপিও একটি অর্থহীন প্রয়াস!!!

বাঙ্গালীদের জাতির পিতা হল- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আর ইসলাম ধর্মের তথা আত্মসমর্পণকারীদের (মুসলিম-জাতির) জাতির পিতা হল- মাসেঞ্জার আব্রাহাম-[ইব্রাহিম(আঃ)]।

অতএব-এই দুই ধর্ম বা জাতি এক নয়।

নবিজী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন-"যে জাতীয়তাবাদের দিকে আহবান করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়" তিনি (সাঃ) জাতিয়তাবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আরও বলেন- ওইসব (আশারিয়াত/জাতিয়তাবাদি) মতাদর্শ বর্জন করো- ওইসব (বস্তাপচা-চেতনা) পচে গেছে।
-(বিশুদ্ধ হাদিস-বুখারি,মুস্লিম,আবু-দাউদ)।

ইসলামের জাতিগত দর্শন হল বিশ্বাসভিত্তিক আন্তর্জাতিক চেতনা যা কোন মানচিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যারা স্রষ্টার নিকট নিজেকে সমর্পণ করে স্রষ্টার প্রভুত্ব মেনে নিয়ে স্রষ্টার আইন-বিধান মেনে চলে তারাই মুসলিম জাতির অন্তর্ভুক্ত। আপনে বংশপরস্পরায় রেডিমেট মুসলিম হতে পারবেন না। অপরদিকে বাঙ্গালী জাতির অন্তর্ভুক্ত তারাই যারা এই দেশের মানচিত্রের মধ্যে বসবাস করে এবং বাংলা ভাষাকে নিজ মাতৃভাষা এবং বাংলাদেশকে নিজের দেশ বলে মানে।
সুতরাং- ভাষাগত জাতিয়তা আর ইসলামের বিশ্বাসভিত্তিক আন্তর্জাতিক জাতিতত্ত্ব এক জিনিস নয়।

যারা বলে ধর্মের সাথে রাজনীতির আবার কি সম্পর্ক??
তদের পুস্তকবহনকারী গাধা ছাড়া আর কিছুই বলা যায়না। তারা ধর্ম কি তাও জানেনা –রাজনীতির অর্থ কি তাও বোঝেনা। ধর্মের শাব্দিক কিংবা পারিভাষিক অর্থ কি?? ধর্ম বা রাজনীতির সংজ্ঞা বা ইতিহাস কি সে সম্বন্ধে তাদের কোন জ্ঞানই নেই।

ধর্ম অর্থ কি ?–রীতিনীতি, আইন বা বিধান, নীতি-মালা।এই ধর্ম শব্দটি আমরা পদার্থবিজ্ঞানের low বা আইনসমূহকে বোঝাতেও ব্যবহার করে থাকি। যে ব্যক্তি স্রষ্টাপ্রদত্ত ধর্মগ্রন্থের আইন-বিধান, নীতিমালা মেনে চলে সেই ধার্মিক। রাষ্ট্রের সংবিধান অস্বীকার করলে যেমন একজন নাগরিক রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত হয়। ঠিক তেমনি ঐশী বিধান অস্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করলেও একজন স্রষ্টাদ্রোহী হিসেবে পরিগনিত হয়। হোক সে ব্যক্তি বা সমাজ বা রাষ্ট্রযন্ত্রে। স্রষ্টার প্রদত্ত ধর্মীয় বিধান প্রত্যাখ্যান করলে বা লঙ্ঘন করলে যেমন একজন ব্যক্তিকে ধার্মিক বলা যায় না ঠিক অনুরুপভাবে কোন রাষ্ট্রযন্ত্র যদি স্রষ্টা প্রদত্ত বিধি-বিধান অনুসারে পরিচালিত না হয় তবে সেই রাষ্ট্রকেও রাষ্ট্রধর্মের সাথে যোগ করা যায়না। কোন শাসক যদি আল্লাহ্‌ প্রদত্ত ধর্মগ্রন্থের দিকনির্দেশনা ও বিধি-বিধান অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে অস্বীকার করে তবে সেই শাসকগোষ্ঠীও আল্লাহ্‌দ্রোহী হিসেবে পরিগনিত হয়, ঠিক যেমনি একজন নাগরিক রাষ্ট্রের সংবিধান অস্বীকার করলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী পরিগনিত করা হয়। এবং প্রতিটি ঐশীগ্রন্থেই এইসব আল্লাহ্‌দ্রোহী (তাগুত) ব্যক্তিবর্গ বা শাসকের আনুগত্য পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশকে তখনই ইসলামী রাস্ত্রে বলা যেত, যদি এদেশের আইন-বিচার-শাসন আল্লাহ্‌ প্রদত্ত ধর্মীয় আইন-বিধান অনুসারে পরিচালিত হত।তাহলে আমরা বুঝলাম ধর্ম অর্থ আইন-বিধান বা নীতিমালা। এই কারণে বিজ্ঞানমহলও ধর্ম শব্দটি ব্যাবহার করে থাকে বস্তুজগতের আইন বা Low বোঝাতে।
বস্তুজগতের পরতে পরতে কিছু প্রাকৃতিক আইন প্রোথিত রয়েছে যা তারা মেনে চলে। যদি বস্তুজগত সেইসব প্রাকৃতিক আইন লঙ্ঘন করে তবে তার ধ্বংস অনিবার্য। প্রকৃতিজগতের এইসব প্রাকৃতিক আইনসমূহ যেমন-নিউক্লিয় বল, মধ্যাকর্ষণ শক্তি, আন্তঃআণবিক বল, তড়িৎ চম্বুকিয় বল, এন্টিমিউট্রাজেনেটিক আমব্রেলা, বায়ুমণ্ডলের স্তরসমুহে প্রভৃতিতে যেসব প্রাকৃতিক আইন প্রোথিত রয়েছে সেইসব আইনের আনুগত্য পালনে তারা বাধ্য।এক্ষেত্রে বস্তুজগত তথা পদার্থ জগতকের সবাইকে খুব ধার্মিক বলেই মনে হয়। যেমন পৃথিবী র ঘুর্নণ ও তার স্বীয় কক্ষপথে পরিভ্রমণ করবার আরোপিত যে আহ্নিক গতি ও বার্ষিকগতির যে ধর্মের তথা আইনের আনুগত্যে তাদের প্রতিনিয়ত আমরা প্রতিশ্রুতিশীল দেখতে পাই সেই কারণেই আজ আমারা এক সুশৃঙ্খল জীবন পরিবেশে বেঁচে আছি।এক্ষেত্রে পৃথিবী নিরলস ভাবে তার প্রতি আরোপিত নিয়মের আনুগত্য পালন করছে, যার সামান্যতম সীমালঙ্ঘনেই পৃথিবী আমাদের জন্যে বয়ে আনতে পারে চিরধ্বংস। বস্তুজগতের মাঝে প্রথিত এমন হাজারও নিয়মের আনুগত্যে মহাবিশ্ব অবিচল।
ঠিক এই কথাটিই পবিত্র কুরানে প্রভু বলেছেন- “তোমরা কি চাও আল্লাহ্‌র বিধান ছাড়া অন্য কারও বিধান, অথচ মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর সব কিছুই ইচ্ছা কিনবা অনিচ্ছায় একমাত্র তারই প্রতি অনুগত হয়ে তারই বিধানে আনুগত্যশীল (৩:৮৩)।” এই বিষয়টির যৌক্তিকতা কুরআনে ধ্বনিত হয়েছে-“ তোমরা সেই প্রকৃতির অনুসরণ করো, যেভাবে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। এটাই যৌক্তিক আনুগত্যের বিধান।(সূরা রোম:৩০)”

কুরআন-বাইবেলে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করলে তারা বুঝতেন-যে আল্লাহ্‌ প্রদত্ত ধর্মীয় রাজনীতি ছাড়া সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যবস্থা, মতাদর্শের চর্চা তথা দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ। তারা কখনও মানব সভ্যতার ইতিহাস-মিশরীয়-হিব্রু-ব্যাবিলন সভ্যতার ইতিহাস অদ্ধ্যায়ন করেছেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। তারা জানেনা যে-“ধর্মের সাথে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই” –এই অদ্ভুত বক্তব্য যদি তারা আজ থেকে ৫০০ বছর আগেও তথা ইউরোপে রেনেসাঁ বিপ্লবের আগে প্রদান করত তবে তাদের ধারনাকৃত তথাকথিত চরম্পন্থি মুসলিমতো দুরের কথা- তাদের পূজনীয় পশ্চিমা সমাজের ইহুদী-খ্রিষ্টানগণ কিংবা চার্চের পাদ্রীরাই হয়ত তাদের ‘উয়িচ বর্ড়ের”-ডাইনীদের ন্যায় ঈশ্বরদ্রোহিতা তথা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে তাদের ফাঁসীর কাষ্ঠে ঝুলিয়ে রাখত।

মানব সভ্যতার সমগ্র ইতিহাস জুড়ে রাজনীতির মূলনীতি ও প্রেরণায় ছিল ধর্ম। এই সব 'আল্প বিদ্যা ভয়ংকর'-মার্কা জ্ঞান নিয়ে যারা ধর্ম ও রাজনীতির সম্পর্ক নিরূপণে অক্ষম- তারা মূলত তাগুতের দাস বা চাকর ব্যতীত আর কিছুই না। তারা স্রষ্টার ক্ষমতাকে মসজিদ-গির্জার চার দেয়ালে আবদ্ধ রাখতে চায়-সেই রেনেসাঁ বিপ্লবের গর্ভে জন্ম নেয়া ডেমোক্রেটিক কুফুরি চর্চার আঁধারে। কিন্তু ওরা জানেনা যে- প্রভুর প্রভুত্ব শুধুমাত্র মক্কা-মদিনা কিংবা পাড়া গ্রামের ভাঙা মসজিদের চার দেয়ালের কারাগারের বন্ধীশালায় আবদ্ধ রাখার ক্ষমতা পৃথিবীর কারও নেই। যারা ইসলামকে আরবিয় ট্র্যাডিশনাল ফ্রেমে বন্ধি করতে চায়-তারা আক্ষরিক অর্থের অন্ধিশালায় আবদ্ধ পুস্তক বহনকারি গাধা ছাড়া আর কিছুই নয়। ওইসব নেশাগ্রস্থ নামাজি যারা অর্থ না বুঝে তোঁতা পাখির মত নামাজ পড়ে সেইসব রেডিমেট মুসলিম কখনই ইসলামের মানদণ্ড হতে পারেনা। নেই। ট্র্যাডিশন কখনও ইবাদত হতে পারেনা।
ওরা জানেনা যে জনগন নয় বরং “আল্লাহ্‌ই সারা মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী”-[কোরানঃ-৯-১১৬]।
এর চেয়েও ভয়ানক বিষয় এই যে- সারা পৃথিবীতে বংশপরস্পরায় জন্ম নেয়া রেডিমেট মুসলিমদের এক বিশাল অংশের ধার্মিকগণ- যারা তোঁতা পাখীর ন্যায় না বুঝে কুরআন পাঠ করে-এই ধর্মান্ধরাও আবার-“আল্লাহ্‌র পরিবর্তে তাদের আলেমদের নিজেদের প্রভু/রব বানিয়ে নিয়েছে”-(৯:৩১)।

প্রকৃত প্রেক্ষাপট এই যে- ধার্মিকরাও জানেনা তাদের প্রভু কে? রাজনীতিবিদরাও জানেনা যে-তার অর্থ কি??

কয়েক বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-লীগ বনাম ছাত্র-শিবিরের কলেজ ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্র-লীগের কিছু ছাত্র-সন্ত্রাসীরা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল অফিসে প্রবেশ করে যখন দেখতে পায় যে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে শেখ মুজিবের দেয়াল ছবির পাশাপাশি মৌলানা-ভাষানীর ছবিও ঘুলানো আছে, তখন তারা উত্তেজিত হয়ে এতোটুকু কাল বিলম্ব না করে সাথে সাথে ভাষানীর ছবিটি দেয়াল থেকে নামিয়ে ভেগে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়।
কারণ ওই ‘অল্প বিদ্যা ভয়ংকর” মার্কা ছাত্র-নেতারা মৌলানা-ভাষানীর দাঁড়িওয়ালা ছবি দেখে ভেবেছিল ওটা হয়তো জামাতি ইসলামের কোন ব্যক্তিত্বের ছবি...!!! ...!!! (এও কি সম্ভব...??)!!
অতএব- এইসব গণ্ডমূর্খ ছাত্ররা কি কখনও সুস্থ ধারার রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতা হবার যোগ্যতার সনদ পাতে পারে? এবং এইসব অসুস্থ ছাত্রদের সনদদাতাগণও যে কতোটা অসুস্থ তা বলাই বাহুল্য...!!!

আমি একটি নাস্তিক পরিবারে বেড়ে উঠেছি। আমার মরহুম দাদু কম্যুনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী সংশয়বাদী ছিলেন। আমার বাবাকে কখনও আমি ঈদের নামাজও পড়তে দেখিনি। সেই হিসেবে এই জেনারেশনেতো আমার চরমপন্থি নাস্তিক হয়ে উঠবার কথা ছিল।
কিন্তু না! ঘটলো তার উল্টোটা। জাহেলিয়াতের এমন কোন দিক নেই যেই জগতে আমি বিচরণ করিনি- যা আপনার মানব সভ্যতার উৎকর্ষতার অংশ মনে করেন। আমিও একজন মেটালহেড। আমিও রিফের স্পন্ধনের উদ্দীপনার হেডব্যাংকের অনুভবে আন্দোলিত করেছি হাজারবার!!

এখন আপনার মুক্তমনা মনে হয়তো ভাববেন- আমার ব্রেইন ডেবলপ ঠিকভাবে হয়নি কিংবা আমি অশিক্ষিত। কিন্তু আজকের পশ্চিমা শিক্ষায় দিক্ষিত উচ্চ-শিক্ষিতরাই কেন আজ পশ্চিমা হাওয়া-বাতাসে আন্দোলিত না হয়ে মধ্যযুগের একটি সেকেলে মতাদর্শকে বরণ করে নিচ্ছে-ভেবে দেখেছেন কি?

হ্যাঁ! আমি স্বীকার করছি যে- আজ মুসলিম সমাজ তোঁতা পাখির মত না বুঝে কুরআন স্টাডি করে-অর্থ না বুঝেই অন্ধের ন্যায় ধর্মীয় বিধানের আনুগত্য করে- যার কোন অনুমোদন কুরআনেও নেই। তবে এটি মুসলিম সমাজের অজ্ঞানতার কিছু ভুল ধারণামাত্র??

আপনি জানেন কি? কুরআনে আল্লাহ্‌র অন্ধ আনুগত্য পালনে নিষেধ করা হয়েছে। যারা কুরআনের অর্থ বুঝেনা তাদের পুস্তক বহনকারী গাধা বলা হয়েছে??
যারা ইসলাম ও স্রষ্টার আনুগত্য তথা ইবাদতকে আরবিয় ফ্রেমে বন্ধী করে রেখেছে তারা নিছক পথভ্রষ্ট সাম্প্রদায়িক ফ্যানাটিক গ্রুপমাত্র। তাদের কুসংস্কার কখনো ইসলামের সত্যমিথ্যার মানদণ্ড হতে পারেনা।

টিন পর্নগ্রাফি কিংবা ইলিগাল টিনেজার সেক্স লাইফকে যৌনতার উৎকর্ষতার অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছে আজ পশ্চিমা যৌন বিশেষজ্ঞগণ- ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়। কিন্তু মধ্যযুগের আরবরা এই বিকশিত ধারার অনিয়মগুলো প্রতিরোধ করতে এর মাঝে কিছু জনকল্যাণমূলক পদ্ধতির কিছু নিয়মতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলিত বুদ্ধিবৃত্তিক সুফল আইন প্রণয়ন করেছে বলেই আপনাদের সন্দেহের উদ্রেক হয়।

কোন সেক্সুয়াল উৎকর্ষতার কথা বলছেন আপনারা-“আজল”??
-যা আজকের প্রতিটি পর্নগ্রাফি মুভি কিংবা অনিয়ম ঠ্যাকাতে বর্তমান যুগের মানব-যৌনজীবনের বিকশিত ধারায় এই বুদ্ধিবৃত্তিক যৌনপদ্ধতিকে সভ্যতার আরও একটি বিকশিত রুপরেখা পরিগ্রাহ করেছে বলে মনে হয় কি?

ইতিহাসের প্রতি দৃকপাত করুন- আরবরা যখন সেক্সে আজলের প্র্যাকটিস করত ; ইউরোপের তখন সেটা মহাপাপ। তাই একটি রীতিনীতি পুরনো হয়ে গেলেও তাকে সবক্ষেত্রে তা সামাজিক উৎকর্ষতার মানদণ্ড নাও হতে পারে। [সহি মুসলিমের ‘আজল’ অধ্যায়-৩৩০৮-৩৪০০] ।

আবার পশ্চিমা জগতের বহুল প্রচলিত অ্যাঁনাল সেক্সকে আধুনিক মানব সভ্যতার যৌনজীবনের বিকশিত রুচি কিংবা প্রগতিশীল যৌন-অনুশীলনের আধুনিক রূপরেখা ভাবছেন কি?

সহি বুখারিতে দেখুন- যখন হজরতের প্রিয় বন্ধু উমর অ্যানাল সেক্সর জন্য অনুতপ্ত হয়ে মোহাম্মাদের নিকট অনুতাপ প্রকাশ করল- ঠিক তখনই অ্যানাল সেক্সের অনুমোদনে আল্লাহ্‌ আয়াত নাজিল করলেন-“তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্রস্বরূপ। যেদিক থেকে ইচ্ছা তুমি তোমার (জমিতে) গমন কর”-[ কুরআন-২:২২৩, বুখারি-৯৬-১৩৭৫ু/ সুনান-তিরমিজিঃ ২৯৮০]। যদিও অন্যান্য সনদের ভিত্তিতে পরবর্তীতে ইসলামী ফিহাহবিদ কর্তৃক ইসলামে আইনগতভাবে অ্যানাল সেক্স নিষিদ্ধ করা হয়- তথাপিত সেই ৭তম শতাব্দীতে আরবে বহু পূর্ব থেকেই এই যৌনশিল্পের অনুশীলন প্রচলিত ছিল।
অতএব- আপনাদের যৌন-অনুশীলনের আধুনিক রূপরেখা কখন আধুনা-প্রগতিশীলতার মানদণ্ড হতে পারেনা।


আজকের পলিয়ামরি বা সুইঙ্গিন দাম্পত্য জীবনকে ব্রেন ডেবলপের নিদর্শন ভাবছেন কি??

আরে হজরতের (সাঃ) একজন স্ত্রী তার নিজ বোনের সাথে হজরতকে বিয়ে করবার প্রস্তাব প্রদান করেছিল। নবিজি ইচ্ছা করলেই বিয়েটা করতে পারতেন। নারী স্বাধীনতার একি উদারতা!! দাম্পত্য জীবনের আদর্শে একি মুক্ত মানুষিকতা যে একজন নারী তার স্বীয় স্বামীর সাথে তার নিজের বোনকে ভাগাভাগি করত চায়!! - [মুসলিমঃ-৩৪৫০]।

অতএব- বোন সাদিয়া মিলি। সামাজিক প্রকর্ষতার বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টাল জীবন পদ্ধতি বা বিচিত্র মাত্রাও কখনো কোন উন্নত জীবনদর্শনের শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড হতে পারেনা। আজকের জনপ্রিয় ইমো হেয়ার কাটতো ভাইকিংসরা কয়েক হাজার পূর্বের ফ্যাশন ছিল। তাই একটি সেকেলে সংস্কৃতি সবক্ষেত্রে কোন উন্নত কিংবা আধুনিক সংস্কৃতির মানদণ্ড নাও হতে পারে।

আবার প্রযুক্তিগত উন্নতিও কি বৈষয়িক জীবন পদ্ধতির ভাল-মন্দের মানদণ্ড হতে পারে?
যেখানে এতোসব উন্নত আবিষ্কারও আজ বিশ্বমানবজাতির অনুভূতির গভীরতাকে ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে। জীবনধারা সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ কি উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে পৃথিবীর এই এতোসব আবিষ্কার ও প্রযুক্তি?

তাহলে কোন প্রগতিশীলতার কথা বলছেন আপনারা?
কিছুদিন আগে একটি টেলিভিশন টক শো-তে একজন প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী স্বনামধন্য জনাব সলিমুল্লাহ সাহেব বললেন- "কিছু যুবক নাকি আজকাল স্বর্ণযুগের সেই মধ্যযুগীয় খেলাফতি রোমান্টিসিজমে ভুগছে"।
- আমি উনাকে বলতে চাই- পৃথিবীর কোন মহান আদর্শে রোমান্টিসিজম নেই ?
৫০-৬০ এর দশকে কমরেডগণ কি অথর্ববাদের প্রাকৃতিক নির্বাচন আর লেলিন-ভ্যাড়াদের সমাজতন্ত্রের রোমান্টিসিজমে ভোগেননি ?? আকাশে উড়বার দুর্বার সপ্ন ও আবেগ ছিল বলেই রাইট ব্রাদারগণ উড়োজাহাজ নির্মাণ করতে পেরেছিলেন-অথচ ২০০ বছর আগেও যা ছিল নিছক অলীক- কল্পনা। আবেগ ছিল-কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে রাইট ব্রাদারগণ আবেগের বানে ভেসে যাওয়া বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান কোন আবেগ মানেনা-যদিও তার আবিষ্কার ও তত্ত্ব মানুষকে আবেগতাড়িত করে।
দেখুন না- বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত টেলিভিশনের পর্দায় আবেগ তাড়িত হয়ে বস্তাপচা হিন্দি সিরিয়াল দেখে কতশত নর-নারী আজকাল পরকীয়ার ট্রেনিং নিচ্ছে... আর বাঙালি ধর্মের অনুসারিরা এইতো সেদিন তাদের মাসেঞ্জার বঙ্গবন্ধুর জাতীয়তাবাদী শ্লোগান জয় বাংলার রোমান্টিসিজমে আক্রান্ত হয়ে দেশটাকেই স্বাধীন করে ফেললো।

অতএব জনাব সলিমুল্লাহ সাহেব ! পৃথিবীর সব আদর্শেই রোমান্টিসিজম থাকতে হবে- এখানে দেখতে হবে কার আদর্শ সত্যের অধিক নিকটবর্তী । সৃষ্টিকর্তা বলেন- "তোমার প্রভুই ভালো জানেন- কে সত্যের অধিক নিকটবর্তী পথে আছেন।"-[আল-কুরান]।
একটি মতাদর্শ পুরনো হলেই কি সেই মতাদর্শকে ফেলনা অচল হয়ে যায় কি?

আর কোন সাম্প্রদায়িকতার কথাই বা বলছেন আপনারা ?

ইসলাম কখনই কোন সাম্প্রদায়িক বিপ্লব ছিলনা। বরং সেটা ছিল একটি আন্তর্জাতিক মতাদর্শের বিপ্লব। যার মূল লক্ষ্য হল সারা পৃথিবীর মানুষ স্রষ্টার সুশাসন উপভোগ করানো- কোন জাতির ইচ্ছা করুক কিংবা না করুক। এখানে কোন বর্ডার-মানচিত্র-জাতিবর্ণ কোন অন্তরায় হতে পারবেনা।
কিন্তু জানি, এটা যতই বলিষ্ঠ রাজনীতিক তত্ত্ব হোক। আপনি তা মানবেন না। কারণ মহাজাগতিক কোন বুদ্ধিবৃত্তিক ফসলকে আপনারা একটু বেশীই অলৌকিক মনে করেন। তাই অবশেষে অস্বীকার করে বসেন।

আমরা অলৌকিকতার বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই ।

মেজর জাহান মিয়ার যথার্থই বলেছেন-
“ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন- রাঁধতে রাঁধতে রাধুনী কিংবা গাইতে গাইতে গায়েন জাতীয় অতি সাদামাটা প্রস্তাবটিকে টিকিয়ে রাখতে বিশ্বজোড়া অনেক সাধ্য সাধনা ঘটেছে , উদ্দেশ্য – অলৌকিক নয়, প্রাকৃতিকভাবে ক্ষুদে অনুজীবি হতে ডাইনোসোর ও জটিল মানুষ সৃষ্টি হয়েছে । জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এসে তাঁদের মাথায় হাঁড়ি ভাংলো, এরপর আর এই অথর্ববাদে বিশ্বাস করার কিছুই থাকল না । তথাপিও বাদটি প্রিয় হয়ে রয়েছে অনেকের কাছেই। এরও কারণ, এটি অলৌকিক বাদকে প্রতিহত করবে-এই প্রত্যয়!

যারা বলেন, অলৌকিক বলে কিছু নেই, তারা কেবল না জেনে মিথ্যা বলেন। তারা যেন মহাবিশ্বের অতি অন্ধকার ও অতিশীতল পরিবেশে কিভাবে একটা আলোকময় ও উষ্ণ আবাস স্থলে আনন্দে বসবাস করেন – সে প্রশ্নের উত্তরটি খুঁটিয়ে দেখতে চেষ্টা করেন । তাদের জানা দরকার – এই লৌকিক, জাগতিক ও প্রাকৃতিক জীবনময়তা কেবল একটুখানি অলৌকিক ব্যবস্থারই অতিক্ষুদ্র দান ! নাজুকতায় ও সূক্ষতায় তা এমন যেন একটি চুলের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া একজন পথিকের বাঁ দিকে পতিত হবার অর্থ হলো – আগুনের সর্বগ্রাসী মহাকুণ্ডে আত্মাহুতি দেয়া আর ডান দিকে পতিত হবার অর্থ হলো চরম শূন্য উত্তাপের সর্বনাশী ছোবলের বিষে তৎক্ষণাৎ প্রাণ বিয়োগ হওয়া । পথচারীকে এ চুলের উপর পা ফেলে ফেলে অতি দ্রুত যেতে হবে, ভুল করলে চলবে না । কারণ, তার গতিতে কমতি হলে হবে আরেক সর্বনাশ । ধ্বংশের রাহুটান তাকে গ্রাস করবে মুহুর্তেই।
আপনি জানেন কি ? যে এই পথিকটি আর কেহ নয়–আপনারই সুখের এই পৃথিবী !
অদৃশ্যের শাসন এর বায়ুমণ্ডলে বেঁধে দিয়েছে এক মহা অলৌকিক ব্যবস্থা, যার সামান্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তারতম্য চিরসর্বনাশের ঠিকানার সন্ধান দেখিয়ে দেবে । অদৃশ্য ও অলৌকিক শাসনের ফলস্বরূপ পৃথিবীর মত মূলতঃ একটি প্রাণ ধারণে অক্ষম গ্রহে জন্মেছে প্রাণের অফুরন্ত সম্ভার ! শুধু তা-ই নয়; এই অদৃশ্য অলৌকিকতাই প্রতিটি অলৌকিক বিরুদ্ধবাদীর প্রতিটি নিঃশ্বাস, নিজের জিহ্বার প্রতিক্ষণের রসনা, ক্ষুধার অন্ন, পিপাসার পানি আর মনের সকল আনন্দের যোগান দিয়ে যাচ্ছে নিশ্চিতভাবে । এই আকাশেই অলৌকিকভাবে সৃষ্টি যার রয়েছে এক অদৃশ্য অলৌকিক জীবনলীলার কারখানা ! তারা কি দয়া করে বুঝবেন যে, অলৌকিক বলতে কিছু নেই! এই মিথ্যাবাদটি কেবল তাদের না জানা হতেই উৎসারিত ? যারা জানে না, বড় সিদ্ধান্তগুলো কেবল তারাই সহজে নিয়ে ফেলতে পারেন।

যে অলৌকিক স্পন্দন ডিমের অভ্যন্তরে নবজাতক পাখির অক্সিজেনের মজুদ কতটা রয়েছে তা যাচাই করে সৃষ্টি হয়নি, সে স্পন্দনটি মাতৃগর্ভে এক অজ্ঞাত ক্ষণে শুরু হয়ে শেষ-নিঃশ্বাস পর্যন্ত এই লৌকিক জগতেই মহা অলৌকিকতার নিদর্শন ঘোষণা করে-সে স্পন্দনজাত নিঃশ্বাস টেনে এই অলৌকিকতা—তথা রবুবিয়াতের মহামালিক আল্লাজাল্লা শানুহুর অস্তিত্বের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করতে যারা সদা নিয়ত ব্যস্ত, তারা যখন কোন শুভ মুহূর্তে নিজ সীমাবদ্ধতার কথা বুঝবেন, হয়তো তখনই অবলোকন করবার সুযোগ পাবেন যে, তাদের দেহের প্রত্যেক কোষে কোষে প্রতি মুহূর্তে জীবনের এক অবর্ণনীয় হৈ চৈ হাঁক ডাক লেগে রয়েছে । যা ঘটছে, তার সবটাই ব্যাখ্যার অসাধ্য !

কি করে মৃত এমিনু এসিড জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে?

কি করে প্রাণহীন ভাইরাস লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আন্ত নাক্ষত্রিক পথ পরিক্রম করে পৃথিবীতে এসে জীব ও জীবনের মহা হুমকির কিংবা কল্যাণের অসামান্য ভূমিকা রাখতে পারে?

সমস্ত বুদ্ধি ও সমস্ত জীব সবকিছুর পেছনে এক মহাশক্তিধর অদৃশ্য প্রভু তাঁর অলৌকিক মহিমাতেই বিরাজ করে আছেন । বুদ্ধিজীবিরা হয় তো জানেন না যে স্রষ্টার অলৌকিক মহিমাটি মানবিক জ্ঞানের বাইরেই ফেলে রাখা হয়েছে । স্রষ্টা অলৌকিক মহিমাতে উদ্ভাসিত ! সৃষ্টিজোড়া মহাকর্ষ বলয়কে একজন বুদ্ধিজীবি যতই প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে সনাক্ত করতে চান না কেন – মহাকর্ষ বিদ্যায় যিনি পারদর্শী ও বিশেষজ্ঞ, তাঁর কাছে বুদ্ধিজীবি সাহেবের ঐ মতামতটি একটি ফেলনা খেলনা কেবল । সে বিশেষজ্ঞ কিন্তু দ্বিধাহীনভাবেই বলছেন – ”We do not yet know what causes gravity, but we know what gravity does.” অথচ বুদ্ধিজীবি সাহেব কিন্তু অন্ধের মতই বলবেন – অভিকর্ষ একটি প্রাকৃতিক ব্যাপার...!!! হায়রে বুদ্ধিহীন বুদ্ধিজীবি... !!!

অতিপরিচিত নাম ভাইরাসের প্রাণ বলে কিছু নেই – শুধু তার শুকনো ডি এন এ ফিতাটিতে লিখে দেয়া আছে কিছু নির্দেশ, লক্ষ লক্ষ বছর পরও সে নির্দেশ কার্যকর হয়ে যাবে! এ নির্দেশকে আগুনে পুরিয়ে শেষ করা যায় না, পানিতে ডুবিয়ে ক্ষতি করা যায় না।
কোন প্রাকৃতিক আইন দ্বারা জ্ঞানহীন বুদ্ধিজীবি সাহেবরা তার ব্যাখ্যা দেবেন ? প্রাকৃতিক আইন তো কখনোই জীবনকে সমর্থন করে না, সে বুদ্ধিজীবির দল তা জানেন কি”?"

যদি সত্যিকার অর্থেই সত্যকে মেনে নেবার উদারতা কিংবা মুক্তমনে চিন্তা করবার সক্ষমতা আপনাদের মাঝে উপস্থিত থাকে- আমাদের মতাদর্শের বিরুদ্ধে কাপুরুষের ন্যায় ফেবুতে রিপোর্ট না মেরে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মুকাবেলা করুন।

ইসলামী মতাদর্শ বা ধর্মের কথা না হয় বাদই দিলাম; আগে মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে স্রষ্টার অনুপস্থিতি প্রমাণ করে দেখান!!
আমরা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম...!

শুভ বুদ্ধি উদিত হোক!!!

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×