মহিয়ষী নারী মাদার তেরেসা যে কক্ষে ঘুমোতেন সেই কক্ষের দেয়ালে কথাগুলো ইংরেজীতে লিখা ছিলো।১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে এই মহান নারী ভারতের কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
উনার মৃত্যু দিবসে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য কবিতাটির ভাবানুবাদ করেছিলাম।
ভাবছো বুঝি মানুষ কেমন, বলছি আমি শোন
যুক্তিহীন, অবিবেচক আর স্বার্থপর জেনো।
তারপরও এই মানুষ স্রষ্টার সবচেয়ে প্রিয়,
মানুষকে তাই মানুষ ভেবে ক্ষমা করে দিও।
তুমি যদি হও সদাশয়, যত্নশীল ,দয়াময়
ভাববে মানুষ নিশ্চয় কোনো স্বার্থ আছে নিশ্চয়
হিংসা, ঘ্বণায় পুড়ছে মানুষ এমন তুমি দেখো
তবুও তুমি তোমার হৃদয়কে সদয় করে রেখো।
যদি তুমি সফল হও, ভাবছো তাতে আবার কি?
কিছু অবিশ্বাসী বন্ধু পাবে, পাবে নিঁখাদ অভিঘাতী।
বিশ্বাস অবিশ্বাস,ঈর্ষা,ঘৃণায় একলা তুমি নও
তারপরও এই ভূমে তুমি সফল মানুষ হও।
যদি তুমি সৎ হও, খুব পূত তুমি কি রবে ?
কারো ছলে, কৌশলে তুমি প্রতারিতই হবে।
এমন জালে অথবা ফাঁদে জড়াবে তোমার জীবন,
তারপরও তুমি সৎ থেকো, সুচিন্তা করো লালন।
মানুষের প্রতি তোমার ভালোবাসার স্তুতি হবেনা।
এসব কিছু চূর্ণ হবে, হয়তো পাবে সামান্য করুণা।
উপহাস হবে, অবমাননা হবে, ধ্বংস হবে হোক,
তারপরও তোমার ভালোবাসা নিয়ত চলতে থাকুক।
সুখি, প্রশান্তিময়,নির্মল, জীবন যদি তোমার হয়,
তা দেখেও মানুষের চিত্ত্বে সদা দাহনতেজের ভয়।
তোমার সুখে জ্বলবে কেউ, অঙ্গার হবে কারো মন
তবুও তুমি সুখে থেকো,জীবন দুদিনেরই আয়োজন।
মঙ্গলময় যে কাজ করলে তুমি, সে কাজ কজনেই করবে।
নিন্দা চর্চা করবে কেউ, কেউ বেমালুম ভুলে যাবে।
এইযে তোমার সব শুভকাজ মানুষ উড়িয়ে দিলো হাওয়ায়,
তবু তুমি শুভকাজে থেকো, প্রার্থণা রেখো মঙ্গল কামনায়।
তুমি তোমার সর্বোচ্চ দিলেও ভাববে মানুষ তা খুবই তুচ্ছ,
সারা আঙ্গিনা ফুলে সাজিয়ে দিলেও তা নিতান্তই এক গুচ্ছ।
উজাড় করে সব দিয়ে দিলেও তা মানুষের কাছে অল্পই হবে
তবু তুমি মানুষ হিসাবে তোমার সর্বোচ্চ দিয়ে যাবে।
কে কি বললো, কে মূল্যায়েন করলো তাতে কিবা আসে যায়,
মানুষ হিসাবে তোমার সৌন্দর্য্য কেবল স্রষ্টার সৃষ্টির সেবায়।
পরিশেষে শুধু মানুষ হিসাবে শেষ দুটো কথা বলতে চাই,
মানুষ আর স্রষ্টার সম্পর্কটাই আসল মাঝখানে অন্য কিছু নাই।
মূল লিখাঃ Kent Keith And Mother Teresa
অনুবাদঃ Arif Mahmud
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:১২