রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পে বালিশ, তোষকের কোটি টাকার খেলাধুলায় বদলে গেছে পুরো দেশের সংস্কৃতি।
বিবিসি বিশ্বস্ত সুত্রের খবরে জানিয়েছে- এই প্রথম বাংলাদেশের বিজয়ী ক্রিকেটাররা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবকিছু বাদ দিয়ে শুধু বালিশই উপহার চেয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অফিস আদালত ঘুরে দেখা গেছে-ঘুষের যাবতীয় লেনদেন বালিশে হচ্ছে। সবার বগলে-বগলে বালিশ, হাতে হাতে বালিশ, মাথায় মাথায় বালিশ।
ভাই, আপনাকে আগেই বলেছিলাম- দশ বালিস না দিলে বস ফাইলে স্বাক্ষর করবেন না।
বালিশ যত বেশি, বস তত খুশি।
আরে মিয়া ফাইল ছাড়েন। এইগুলো সব এক নাম্বার শিমুল তুলার বালিশ।
এক বালিশই পুরো দেশ জুড়ে অন্য রকমের শান্তি নিয়ে এসেছে।
দেশে আর কোনো হাউ কাউ নাই।
বালিশ সংস্কৃতি চালু হওয়ার পর আমাদের অনুসন্ধানী রিপোটাররা বিভিন্ন অফিস ঘুরে দেখেছেন-
দুই উরুর মাঝখানে একখানা কোলবালিশ আর মাথার নীচে আরেকখানা বালিশ রেখে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যার যার অফিসে বেদুম ঘুম ঘুমাচ্ছেন।
কাজের আর কোনো প্রেশার নেই। শুধু শান্তি আর শান্তি। ঘরে বাইরে শান্তি।
বিশ্রামের জন্যও কাউকে কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে হয়না। ফলে রাস্তাঘাটে ট্রাফিক জ্যাম নাই বললেই চলে।
চাঁদাবাজির ধরণও পাল্টে গেছে। টাকা-টুকার পরিবর্তে এখন ব্যাপকভাবে তুলা আদায় হচ্ছে।
তোলাবাজরা হয়ে গেছে তুলাবাজ।
এদিেক শুধু ঘুষ আর চাঁদার বাজার না বিবাহের বাজারেও এর প্রভাব দেখা গেছে।
বিসিএস ক্যাডার, ডাক্তার, প্রকৌশলী সবাইকে টেক্কা দিয়ে তুলার কারবারিরা এখন জামাই নাম্বার ওয়ান। যে যত বড় তুলার কারবারী জামাই হিসাবে তার তত বেশি ডিমাণ্ড। বিয়ের মোহরানা ধার্য্য করা হচ্ছে দশ ভরি সোনার সাথে মোট পাঁচখানা বালিশ।
আবার বরপক্ষও গাড়ী, হোন্ডা, ফ্রীজের পরিবর্তে কনের বাপের কাছ থেকে বালিশ চেয়ে বরের বাবা বলছেন-
বেয়াই সাব- পাঁচখানা নতুন বালিশ না দিলে গ্রামেতো আমার আর কোনো ইজ্জত থাকেনা।
আগে মানুষের নামডাক ছিলো- লোকটি খুব পয়সাওয়ালা।
সেদিন আর নাই। ঘটক পাখি ভাই বলছে-
কইন্যা একটু শ্যাম বর্ণের। কিন্তু কইন্যার বাপ মাশাল্লাহ বিশাল বালিশওয়ালা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে "পিলো এণ্ড কটন" নামে লুটপাট অনুষদের আণ্ডারে নতুন বিভাগ ইতোমধ্যে চালু হইয়া গিয়াছে............
ছেলে ফোন করে- বাপকে বলছে- আর কোনো চিন্তা নেই বাপ। পিলো এণ্ড কটন বিভাগে চান্স পেয়ে গেছি। এখন, ধনী হওয়া আর ঠেকায় কে?
বিশ্বের সেরা রেসলাররা ভিজিটিং প্রফেসর হিসাবে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে লাইন দিয়েছেন। বালিশ আর তোষককে কীভাবে কাজে লাগিয়ে লুটপাটের চুড়ান্ত করা যায়-সেইজন্য বিশেষ টকশোর আয়োজন চলছে।
টকশোতে একজন বলছেন। সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি কেন আপনারা করছেন। একবার চিন্তা করে দেখেন- বালিশের জায়গায় যদি বাঁশ হতো। তখন, ব্যাপারটা কেমন হতো।
এখনতো একজন আরেকজনকে গোপনে বাঁশ দেয় তখন প্রকাশ্যে দিতো।
গদগদ সোয়ামী খুশীতে বউকে বলতো-
কাজটা মনে হয় এখন হয়ে যাবে। অফিসের বড় সাহেবকে আজ উন্নতমানের পাঁচখানা বাঁশ দিয়ে আসলাম।
মানুষ ঘুষের সাথে চিরকুট লিখতো-
স্যার, আপনার আর ম্যাডামের জন্য বাঁশ পাঠালাম। একটা মাথার নীচে আরেকটি পাছার নীচে দিবেন। দেখবেন সব টেনশন ভুলে গিয়ে কী শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছেন।
একটু পজেটিভ চিন্তা করতে শিখুন ভাইলোগ। সুতরাং প্লিগ লাগে, বালিশ নিয়ে আর কোনো নালিশ না।
বেয়াকুপ জনগণ ইস্যু পাইলেই শুধু চিল্লায়। এতোটুকু বুঝেনা, বালিশের পেছনেইতো এতো টাকা খরচ হয়েছে-বাঁশের পেছনেতো আর হয়নি।
কাজেই যার যার বালিশ সে সে সামলান। দেশজুড়ে শান্তি বিরাজমান। সবাই দুই রানের চিপায় আর মাথার নীচে বালিশ রেখে আরামে ঘুমান।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৯ রাত ৯:৪২